পুনরাবৃত্তি
পুনরাবৃত্তি
গাড়িটা খারাপ হয়নি, তবুও অহনকে বেরোতে হলো গাড়ি থেকে। বেরোতে হলো বলাটা ভুল হবে, বরং সে প্রাই লাফিয়ে পড়ল চলন্ত গাড়ি থেকে। ড্রাইভিং সিটে বসে নিজেই ড্রাইভ করছিল অহন। হঠাৎ দুটো জিনিস একই সাথে ঘটে গেলো। তীব্র একটা গন্ধের সাথে সাথে কি একটা শব্দ কানে যেতেই ব্যাক সিটে চোখ ঘোরালো। কিন্ত অস্বাভাবিক কিছু চোখে না পড়ায় সামনে ফিরে ড্রাইভিংয়ে মনোনিবেশ করল। কিছুক্ষন পরে আবার সেই একই শব্দ কানে গেলো আর এবার সে ঘাড় না ঘুরিয়ে রেয়ার ভিউ মিররে চোখ রাখলো, কিন্তু দৃশ্যের কোনো বদল নেই, ব্যাক সিট আগের মতই নরমাল। অথচ গন্ধটার তীব্রতা ক্রমশই বাড়ছে। শান্ত দুটো ওয়াইপার হটাৎ চঞ্চল হয়ে উঠলো। অহন বুঝতে পারলোনা যে বিন্দুমাত্র জলকণা না থাকা সত্ত্বেও ওয়াইপার দুটোর অস্থিরতার কারণ কি। কিন্তু পরক্ষণে যে দৃশ্যের সম্মুখীন সে হলো তাতে তার বুকটা খুব দ্রুত উঠানামা করতে থাকলো। তারপরই ডানদিকের দরজাটা খুলে লাফিয়ে ছিটকে পড়ল গাড়ির বাইরে। পোরে কিছুটা গড়িয়ে গেলো, তারপর উঠে দাঁড়িয়ে দিক শূণ্য হয়ে ছুটতে লাগলো। সে ছোটার বিরাম নেই।
উদভ্রান্তের মত ছুটতে ছুটতে রাস্তার ধারে একটা টেলিফোন বুথ দেখলো। ঘটনা চক্রে মোবাইলটা সে গাড়িতেই ফেলে এসেছে। সুতরাং বুথের ফোনই এখন ভরসা। বাড়ির নম্বরটা ডায়াল করলো কিন্তু সেটা ব্যাস্ত। কেটে দিয়ে আবার ডায়াল করলো, এবারেও ব্যাস্ত। তারপর আবার। আবার। আবার। এমনভাবে কএকবার ব্যাস্ত থাকার পর যখন অহন বাড়ির লাইনটা পেলো, ওপাশ থেকে তখন একটা চেনা শব্দ ভেসে এলো ওর কানে। না শব্দটা কোনো ব্যক্তির নয়, বরং কিছুক্ষন আগে শোনা সেই বিশ্রী শব্দ তার সাথে সেই বিদঘুটে গন্ধটাও তার নিশ্বাসের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল। অহন এতক্ষন খেয়াল করেনি কিন্তু এবার সে বুথের বাইরে চোখ ঘোরাতেই দেখলো যে জায়গায় সে এই মুহূর্তে আছে সেখানে পিন পড়লেও কএক কিলোমিটার দূর থেকেও সেই শব্দ শোনা যাবে। এমন জনমানবহীন প্রান্তরে সে হঠাৎই কীকরে এসে পৌঁছাল সেটাই সে বুঝতে পারছে না।
এমন নেরা ড্যাংড্যাঙ্গে গ্রামীণ রাস্তা সে আগে কখনো দেখেনি। চিন্তা ভাবনাই বিঘ্ন ঘটলো পুরনো সেই শব্দে, তার সাথে সেই বিশ্রী গন্ধ। অহন দেখলো গাড়ির কাঁচে যে একরাশ কালো পোকার দল সে দেখেছিল, যেগুলো ধীরে ধীরে তার গাড়িটাকে গিলে নিচ্ছিল, সেই একই পোকার দল ধেয়ে আসছে বুথটার দিকে। বুথ থেকে এক লাফে বেরিয়ে বিভীষিকাকে পিছনে ফেলে আবার দৌড়াতে শুরু করলো অহন। গতবারের তুলনায় অনেক কম ছুটতে হলো তাকে, কারণ সে এবার আশার আলো দেখতে পেয়েছে। রাস্তার এক ধারে একটা গাড়ি দার করানো। গাড়িটার কাঁচ তোলা ছিল। ফলে সে ভিতরের কোনো কিছুই দেখতে পেলোনা। দরজায় হাত রাখতেই বুঝলো গাড়িটা লক করা নেই। হাতল ধরে টানতেই খুলে গেলো। সর্বত্র চোখ বুলিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়িটাকে স্টার্ট দিলো অহন। আশ্চর্য ভাবে তার গাড়ির চাবি দিয়েই এই গাড়িটা স্টার্ট দেওয়া সম্ভব হলো। অহনের তখন এত কিছু ভাবার মতো মানসিকতা নেই। সে হাই স্পীডে গাড়ি নিয়ে ছুটলো। কিছুদূর যাওয়ার পর যদিও গাড়িটা খারাপ হয়নি তবুও তাকে আবার গাড়ি থেকে বেরোতে হলো। অবশ্য বেরোতে হলো বলাটা ভুল হবে, বরং সে প্রাই লাফিয়ে পড়ল চলন্ত গাড়ি থেকে। ড্রাইভিং সিটে বসে নিজেই ড্রাইভ করছিল অহন। হঠাৎ দুটো জিনিস একই সাথে ঘটে গেলো। তীব্র একটা গন্ধের সাথে সাথে কি একটা শব্দ কানে যেতেই ব্যাক সিটে চোখ ঘোরালো। কিন্ত অস্বাভাবিক কিছু চোখে না পড়ায় সামনে ফিরে ড্রাইভিংয়ে মনোনিবেশ করল। কিছুক্ষন পরে আবার সেই একই শব্দ কানে গেলো আর এবার সে ঘাড় না ঘুরিয়ে রেয়ার ভিউ মিররে চোখ রাখলো, কিন্তু দৃশ্যের কোনো বদল নেই, ব্যাক সিট আগের মতই নরমাল। অথচ গন্ধটার তীব্রতা ক্রমশই বাড়ছে। শান্ত দুটো ওয়াইপার হটাৎ চঞ্চল হয়ে উঠলো। অহন বুঝতে পারলোনা যে বিন্দুমাত্র জলকণা না থাকা সত্ত্বেও ওয়াইপার দুটোর অস্থিরতার কারণ কি। কিন্তু পরক্ষণে যে দৃশ্যের সম্মুখীন সে হলো তাতে তার বুকটা খুব দ্রুত উঠানামা করতে থাকলো। তারপরই ডানদিকের দরজাটা খুলে লাফিয়ে ছিটকে পড়ল গাড়ির বাইরে।

