পরশমণি:-
পরশমণি:-


"আমায় ছেড়ে দাও ছোটকাকু, খুব লাগছে, যেতে দাও..."
কাদুনে গলায় বলতে বলতে গোঙাচ্ছিল অভীপ্সা। ৫ বছরের ছোট মেয়ে সে আর এই প্রাসাদোপম বাড়ির শিশুকন্যা। তার সিঁদুর সৌভাগ্যহীনা মা অভীপ্সার বাবার মৃত্যুর পর তেনার চাকরিটা পান। কাজে নিযুক্ত থাকায় মায়ের অনুপস্থিতিতে ঠাম্মাই লালন-পালন করেন অভীপ্সার, কিন্তু আজ দুপুরে তার ঠাম্মা যখন ঘুমে অচৈতন্য তখন কাকার পাশবিকতার শিকার হতে হয় এই ছোট্ট প্রাণটি কে। তার ঠাম্মা নিজ পরিবার ও নিজ পুত্রের সম্মান বাঁচানোর তাগিদে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করতে চান ঘটে যাওয়া ঘটনাটি। কিন্তু অভীপ্সার দৃঢ়চেতা মা এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে উপনীত হন সে রাতেই।
*********
কেটে গেছে অনেক বছর, হ্যাঁ প্রাসাদ-প্রাচুর্য্য নেই আর অভীপ্সার জীবনে কিন্তু আত্মসম্মান বোধটা আছে অনেক। খুব সাদামাটা জীবন তার, কেননা সেদিন রাতেই ধনসম্পত্তি, প্রাসাদ-প্রাচুর্য্যের মোহ কাটিয়ে অভীপ্সা কে নিয়ে বেরিয়ে আসেন তার মাতা। শুরু হয় নতুন করে বাঁচার লড়াই। যৌণ হেনস্থার শিকার অভীপ্সার ছোট্ট প্রাণে আগুনের পরশমনি ছুঁইয়ে, তাকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে নিজ পায়ে দাঁড় করিয়েছেন তার একক অভিভাবক তার মা। অভীপ্সা যে আর কোনো হেনস্থার শিকার হবে না, তার প্রাণে যে আগুনের পরশমনির ছোঁয়া। আর এই ছোঁয়া যে সে পেয়েছে তার মায়ের কাছ থেকে।