পরিবার
পরিবার
What app video কলটা রেখে শিব ঠাকুরের মনটা একটু খারাপ হয়ে গেলো। ওরাতো খুব খুশি আছে মর্তলোকে। ছেলেমেয়েদের এমনিতে আনন্দ হয় মামা বাড়ি গেলে।ওই কথায় বলে না
" মামাবাড়ির আবদার"
কিংবা
" তাই তাই মামা বাড়ি যাই। মামাবাড়ির ভারি মজা কিল চড় নাই"
কিন্তু ছেলেমেয়েরা নয়। দূর্গা ও বোধহয় ভীষণ খুশি মর্ত লোকে গিয়ে। হবেই বা না কেন দূর্গাকে কি বা দিতে পেরেছে শিব ঠাকুর। বিয়ে করে ভাত কাপড়ের দায়িত্বভার নিয়েছে মুখে। কিন্তু সে দায়িত্ব ভার কোথায় আর পালন করতে পারলো না কোন দিনই। উল্লটে নেশা ভান করে পয়সা নষ্ট করেছে ।এসে ঝগড়া ঝাটি করেছে।
দূর্গা চাকুরী বাকুরি করে সংসারটা টেনেছে। লোকজন বলে আজকালকার মেয়ে হলে কবে ডিভোর্স দিয়ে চলে যেতো। এখন তো কাগজ বিয়ে, মেয়েদের অনেক বেশি ক্ষমতা। লোকজন ভাবে ওরা সমবয়সী হলে ঝগড়া ঝাটিটা হতো না। ও বুড়ো বয়সে বিয়ে করেছে বলে, বয়সের পার্থক্যটা এতো ঝগড়া ঝাটি। কিন্তু ও দেখেছে বয়সটা আসলে কোনও ব্যপার নয় । আবার ব্যপার ও।
বয়সটা বেশি বলে চাকুরী পাচ্ছে না তাই সংসারে দায়িত্বভার নিতে পারছে না ও। তাই ঝগড়া অশান্তি। তাবলে ওদের ভালোবাসা কমে নি। ওর নাচ দেখেই ওর প্রেমে পরেছিলো পার্বতী। কিন্তু এখন বয়স হয়েছে, পার্বতীর আদর যত্নে ভুড়ির বড়ে চাল কুমড়া মতো হয়ে গেছে তাই তেমন আর স্টেজ শো পাচ্ছেনা। এদিকে you tube , vite met , TikTok, like কতকি হয়েছে , সিনেমার হল গুলোই বন্ধ হয়ে গেলো , ওর নাচ কে আর দেখবেন।, এখনতো মঞ্চ বাঁধে আর জলসা হয় না। যাত্রাপালা, ডংপুতূল, বেনিপুতুল, পুতুল নাচ, কবিগান, কীর্তন দলের লোকজন মতো ও কাজ হারিয়েছে। তাই সংসারের দায়িত্ব ভার নিতে পারে না শিব ঠাকুর আর তাই যতো ঝেমেলা।
দাপত্য জীবনে বয়সটা একটা শর্ত ভাবে মানুষরা কারন যৌন জীবনের কথা ভেবে হয়তো। কিন্তু ওগুলো কোন ব্যাপার নয়। নয়তো বুড়ো ব্রম্ভাও তো সরস্বতীর মতো কচী মেয়েকে বিয়ে করেছে। আবার সরস্বতী শিক্ষিত সুন্দরী ও বটে। মেয়েরা চাকুরী বাকরি করলে , শিক্ষিত হলেই খিটখিটে হয়ে যায়, অহংকারী হয়ে যায় এটা একে বারেই ঠিক নয়। ব্রম্ভা আর সরস্বতীর মধ্যে ঝগড়া হয়েছে বলে কেউ কোন দিন শোনেন নি। কারণ ব্রম্ভা সরস্বতী দায়িত্ব ভার নিয়েছেন। শিব দায়িত্ব ভার নেয়নি তাই যত অশান্তি।
লোকজন বলে চার চারটে ছেলে মেয়ের টানেই দূর্গা নাকি ওর সাথে থেকে গেছে। কিন্তু সেটাও ঠিক নয়। ব্রম্ভা সরস্বতী ,লক্ষী নারায়নের ছেলে মেয়ে কোথায় তবু ও তো ওরা সুখী। ছেলেমেয়ে থাকলেই সংসারে সুখ আসে এটাও তাহলে ঠিক নয়। সুখের একটাই শর্ত দায়িত্ব ভার নিতে হবে।
ভেবে দেখো নারায়ণ ছয় মাস ঘুমিয়ে থাকলেও লক্ষীতার তার পা টিপে দেয় কখনো খেঁকিয়ে বলে না। " অফিসে যাও নি যখন তখন জামাকাপড় কেচে দাও, বা বাসনপত্র মেজে দাও। " অথচ আপনারাও লকডাউনে যখন বাড়িতে ছিলেন এসব কাজ করতে হয়েছে, ঘর দোর বোধহয় ঝাঁটাও দিতে হয়েছে। শিব ঠাকুর তো ঘরেই বসে থাকে তাকে কত কাজ করতে হয় বুঝে দেখুন। দূর্গা ওর দায়িত্ব ভার নিয়েছেন। তাই দূর্গার কথাতো শুনতেই হয়। পাড়া পড়শীরা আওয়াজ মানে টিপুনি কাটতে ছাড়ে না।
নারায়ণ ওকে বুদ্ধি দিয়েছিলো পলিটিক্যাল পার্টি জয়ন করতে। নেতা হলেতো কথাই নেই, এইট পাশ করেও কোটি কোটি টাকা ইনকাম করে নিতে পারবে সে অল্প সময়ে। ভোলা ভালা মানুষ, দলের জন্য ওর সাঙপাঙ নিয়ে, দেয়াল লিখলো, মিছিল করলো বুথ জ্যাম করলো, রিগিং করলো। তবু পার্টি থেকে ওকে নেতার পজিশন দিলো না। বলে সংসারে দায়িত্ব ভার নিতে পারে না সে আবার পার্টির দেশের ভার নেবে কি করে। ভেবেছিলো সিন্ডিকেট করে কিছু টাকা কামাবে , সেটাও দল নেত্রী হতে দিলো না, ও ভোলা ভালা নেত্রী বললো "কাটমানি ফিরত দাও জনগনকে।" ও ফিরত দিলো। ওর সততার পুরস্কার হিসেবে ওকেই সবাই দল থেকে বার করে দেওয়া হলো।
দুই টো পয়সার মুখ দেখে সংসারের দায়িত্ব আর নেওয়া হলো না। রাজনীতি করা হলো না ওর, ওতো আর চোর নয়। সৎ মানুষের ভাত জোটে না। ওর আর সংসারের দায়িত্ব ভার নেওয়া হলো না। তাই দূর্গার মুখ ঝামটা খেয়ে সারাজীবনটা কাটাতে হলো। কিন্তু ও জানে দূর্গা ওকে খুব ভালোবাসে। আর ওর ভুড়িটাই দূর্গার ভালোবাসার অত্যাচারে প্রমান।
,,,,,,,,,,,,,,,,,...,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,