প্রাপ্তির স্বাদ
প্রাপ্তির স্বাদ
-- রনিত আজ ক্লাবে যাবি?
-- আজ যাওয়া হবে না ভাই, আমার কাজ আছে।
-- চল না ভাই, আজই শুধু।
-- না রে, আজ একজনকে কথা দিয়েছি তার সাথে দেখা করতে যাবো।
-- তুই গেলে রিনি আসবে বলছিল। কতদিন ওকে আমরা দেখিনি।
-- আসতে বল, তোদের সাথে দেখা করে যাক।
-- তুই গেলেই আসবে বলেছে। আমাদের থেকে ও তোকে বেশি গুরুত্ব দেয়।
-- ও দিলেই তো আমাকেও দিতে হবে তার কোনো মানে নেই। ক্লাবে যাওয়ার থেকে যে কাজে যাচ্ছি সেটা বেশি জরুরি।
-- আচ্ছা তোর যা ইচ্ছে...
রণিত তার বাইকের চাবিটা নিয়ে বেরিয়ে এলো রুম থেকে। আজ তার জীবনের সাথে জড়িত বিশেষ একজনের জন্মদিন। উইশ তো করেছে কিন্তু সে চেয়েছে তার একটু সঙ্গ। তাকে উপেক্ষা করা রনিতের সাধ্য নয়। সেই বিশেষ মানুষটি হলো আয়েশা। তার জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। জীবনে যখন কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, একটার পর একটা বিপদ ঘনিয়ে আসছে। তখনই একটা শক্ত হাতের সন্ধান পায় রনিত, আর সেই হলো আয়েশা। সুখে, দুঃখে, কষ্টে, যন্ত্রণায় প্রতিটা মুহূর্তে মেয়েটা পাশে থেকেছে। আর তার জন্মদিনে সে থাকবে না এটা হয় নাকি! কৃতজ্ঞতাবোধ বাদ দিলেও যে আরো একটা শক্ত বন্ধন আছে তাদের মধ্যে, ‘ভালোবাসার বন্ধন'।
-- কি গো, এতক্ষণে আসার সময় হলো!
-- একটু লেট হয়ে গেল অয়সু।
-- সে তুমি কবে সঠিক সময়ে আসো! আমি রাগ করেছি...
-- আমার অয়সু রাগ করেছে!
-- হুঁ...
-- ভাঙাতে হবে নাকি রাগটা?
-- দরকার নেই... যাও তুমি তোমার কাজে।
-- আরে... আরে... অয়সু। সব কাজ ফেলে তোমার কাছে ছুটে এলাম, আর তুমি এইভাবে রাগ করলে আমার ভালো লাগবে!
-- তোমার রিনি তো এসেছে।
-- তুমি কী করে জানলে? আজ ক্লাবে যেতে বলছিল, ও নাকি দেখা করতে আসবে।
-- চলে যেতে পারতে।
-- পাগল নাকি! আমার অয়সু কোটিতে একটা। আমার লাইফে যতই সাইড অপশন আসুক না কেন, আমার লাইফে একজনই থাকবে, আর সেটা তুমি।
-- কি করছো কি! ছাড়ো... সবাই দেখছে...
-- আমার বউকে আমি জড়িয়ে ধরলে কার কি অসুবিধা হচ্ছে তা আমার দেখে লাভ নেই, কিন্তু সে যে খুশি সেটা বুঝতেই পারছি।
-- ধুর, কি যে করো না!
-- এখন তো ছাড়ছি না...
আবেগ আপ্লুত কন্ঠে আয়েশা বলে উঠলো, “আমার নিঃসঙ্গ জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি তুমি।"
রনিত তার অয়সুর গালে একটা চুমু এঁকে দিলো। অয়সু লজ্জায় লাল হয়ে চোখগুলো বন্ধ করে রনিতের হাতটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।

