Nityananda Banerjee

Classics Fantasy Thriller

4  

Nityananda Banerjee

Classics Fantasy Thriller

প্রান্তিক প্রেম দশম পর্ব

প্রান্তিক প্রেম দশম পর্ব

3 mins
417


পর্ব ১০

দুপুর গড়িয়ে বিকেল, বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হল । মদনমোহন ছাড়া আর কেউ কোন কিছু বিস্ময়ের দেখা পেল না । কমলসাধনদের আশা শুধু ওই রাতটুকু। প্রসঙ্গক্রমে বলি কমলসাধনদের এই অভিযান নেহাতই ব্যক্তিগত । তথাপি যাতে কোনরকম আনপ্রিসিডেন্টেড কনসিকোয়েন্স না ঘটে সেইজন্য পবিত্রবাবু পুলিশে খবর দিয়ে রেখেছেন । এমনিতে সাধারনত কেউ বা কোন দলগত প্রচেষ্টা সচরাচর করে না । গায়ে উল্কি কে কাটবে ? শুধু বিজ্ঞানমঞ্চের লোকজন মাঝেমাঝে পুলিশ প্রসাসনের সাহায্য নিয়ে অভিযান চালায় । উদ্দেশ্য একটাই বেগুনকোদর রেলস্টেশনের তকমা থেকে 'ভুতুড়ে' কথাটা তুলে দিয়ে আশেপাশের গ্রামবাসীদের সাহায্যার্থে রেল যাতে আরো বেশি ট্রেনের স্টপেজ দেয় বা স্টেশনটিকে পুরোদস্তুর রেলস্টেশন হিসাবে মান্য করে । লেখকের উদ্দেশ্য ধনাত্মক। কিন্তু যেহেতু এটি একটি প্রেমের গল্প সেহেতু কিছু ভয়াবহতা ধরে রাখার চেষ্টা। লক্ষ্য কিন্তু একটাই বিজ্ঞানমঞ্চের মত লেখকও চান স্টেশনটি পুনরায় জাগ্রত হোক এবং দেশ ও দশের কাজে আসুক।

এবারে বলি পবিত্রবাবু বি এস এন এলের আধিকারিক এবং পুরুলিয়া বিজ্ঞান মঞ্চের সঙ্গে জড়িত । সেইজন্য থানায় তাঁর একটা পরিচিতি আছে; যার সুবাদে তিনি পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছেন। হয়তো ব্যাপারটি ব্যক্তিগত তথাপি অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই এমন আহ্বান।

রাত সাড়ে ন'টা নাগাদ একদল পুলিশকর্মী নিয়ে মি: নীলমণি রাউতরায় সশরীরে হাজির হলেন বেগুনকোদরে এবং অভিযাত্রী দলের সঙ্গে মিলিত হলেন । এরপর চলল চিরুণী তল্লাশী। সব সম্ভাব্য জায়গা খোঁজা হল । জলা জঙ্গল কিছু বাদ গেল না। সার্চ লাইটের আলো ঝলসে উঠল। কাউকে দেখা গেল না। তবে পদসঞ্চারের ধ্বণি শোনা গেল । ভারি বুটের আওয়াজের পাশাপাশি ক্ষীণ পদধ্বণিও বুকের রিখটার স্কেলে ধরা পড়ল । তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কাউকে পাওয়া গেল না। শুধু কিছু ফেলে দেওয়া মদের বোতন এবং কাঁড়ি কাঁড়ি তাস পাওয়া গেল ।

নীলমণি দারোগা হাঁক দিলেন - বনওয়ারী লাল পট্টবর্ধন! যেখানেই লুকিয়ে থাকো সারেণ্ডার কর। তোমার আজ পালাবার কোন পথ নাই।

মদনমোহন মুচকি মুচকি হাসছেন । কমলসাধন পবিত্রবাবুকে বললেন - পুলিশের কাছে তো সার্চলাইট রয়েছে । একবার বটগাছটা আলো ফেলে দেখলে হত না !

- ঠিকই তো ! আপনি ঠিক বলেছেন। এই বিশাল সুযোগ।

দারোগাকে বলতেই বটগাছ ঘিরে তীব্র আলোর ফোয়ারা গোটা গাছ ঘিরে ফেলল । শয়ে শয়ে পাখি, বাদুড়, পেঁচা ডানা ঝাপটা দিল । কেউ কেউ উড়ে চলেও গেল ।

মদনমোহন স্বগতোক্তি করলেন - পাখি হাওয়া।

সায়ন্তিকা চমকে উঠল। এ কি বলছেন স্যার !

তাঁকে যেন একটু অচেনা লাগছে। বিকেলেই তাকে সায়নী বলে ডেকেছেন। এখন আবার বলছেন ' পাখি হাওয়া '! 

ব্যাপারটা কেমন গোলমেলে মনে হচ্ছে না !

মদনমোহনের তখন ভর হয়েছে। সায়ন্তিকাকে বলছেন - সায়নী! তুমি আমার সঙ্গে এমনটা করলে কেন ? 

- কে সায়নী ?

- তুমি। তুমি আমার প্রিয়া। আমার সাতপাকে বাঁধা বউ।

পবিত্রবাবু সব শুনেছেন। নীলমণিকে দেখিয়ে দিতেই মদনমোহন বললেন - আই এ্যাম বানওয়ারী লাল পট্টবর্ধন। নাউ এরেস্ট মি এণ্ড ইফ নট, আই উইল কিল ইউ।

কি ভুলভাল বকছিস মদনা ? বাগাড়িয়ার যেন বিস্ময়ের সীমা নেই।

- ধূর শালা নন-বেঙ্গলী ! আমার বউটাকে ভোগ করেও তোর শান্তি হয় নি? দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা !

মি: রাউতরায় ' এরেস্ট হিম, এরেস্ট হিম ' বলে নির্দেশ দিতেই জনাদশেক পুলিশকর্মী মদনকে টানতে টানতে নিয়ে প্রিজন ভ্যানে তুলল। 

সায়ন্তিকার তখন প্রাণবায়ু ওষ্ঠাগত । নিজেকে কেমন তুলোর মত হাল্কা মনে হচ্ছে। হঠাৎ তারও মনে হল একটা মেয়ে কান্নাকাটি করছে। ' আমাকে যা শাস্তি দিবে মাথা পেতে নেব ' ।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics