playboy
playboy
বিগত দুই বছরের মহামারির প্রকবে প্রিয়দর্শনের চাকরিটা চলে যায়। সবে মাত্র বিয়ে করেছিল প্রিয়দর্শন। বিয়ের মাস দুয়েক পরেই পৃথিবী জুড়ে মহামারির প্রকপ বহু মানুষকেই নাজেহাল করেদিয়েছে। প্রথম মাস তিনেক কম্পানি তাদের সম্পূর্ণ স্যালারি দিলেও তারপর সেটা অর্ধেক অবশেষে দ্বিতীয় বারের লকডাউনে অফিসটাই বন্ধ হয়ে যায়। অগত্যা বর্ধমান ছেড়ে প্রিয়দর্শন কোলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হয় সে। অচেনা অজানা শহরে একটা বাড়ি শেয়ারে পেয়ে যায় সুদর্শন কিন্তু কাজ। যদসামান্য অর্থ সাথে নিয়ে এসেছে সে, ওদিকে বৃদ্ধা মা, নব বিবাহিত স্ত্রী, ছোট বোন প্রত্যেকেই প্রিয়দর্শনের পথচেয়ে বসে থাকবে তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে একটা চাকরি যোগার তাকে করতেই হবে। কোমর বেঁধে নেবেপড়ে সে কিন্তু প্রতিদিনই খালিহাতে ফিরতে হয় তাকে। তার রুমমেট রাজু বিষয়টা বুঝতে পারে। একটা ইয়ং ছেলে রাতভোর জলমুড়ি খেয়ে দিনের পর দিন কিভাবে বাঁচতে পারে, রাজু দুটো রুটি একটু তরকা নিয়ে তাকে দিয়ে বলে খেয়ে নাও নইলেযে মারা যাবে আর নিজে মরলে পরিবারকে বাঁচাবে কি করে প্রিয়দর্শন এরিয়ে যাবার চেষ্টা করলে এবার রাজু একটু ধমক দিয়েই বলে চুপচাপ খেয়ে নাও ওনা নইলে কালকে অন্য বাড়ি দেখে নিয়ো।
দুচারদিনের মধ্যে তাদের মধ্যে বন্ধুত্য গড়েওঠে। একদিন রাতে প্রচন্ড ক্লান্ত হয়ে ঘরেফিরে প্রিয়দর্শন রাজুকে বলে আর বোধহয় কিছু হবেনা আমার, তুমি থেকে তুই হয়েছে তারা তোর কাছে কোন কাজের সন্ধান আছে নাকি? তোর কম্পানিতে একটা কিছু ব্যবস্থা করা যায় যদি দেখনা। রাজু হেঁসে ওঠে বলে তোর মতোই আমি অনেক আশানিয়ে এসেছিলাম তারপর তোর মতই ফেডাব হয়ে নিজেকে শেষ করে দেবার সিদ্ধান্ত নিলাম কিন্তু কপালে মৃত্যুছিলনা সুইসাইড করতে গিয়ে আলাপ হলো মুন্না বলে একটি ছেলের সাথে সে আমাকে রেললাইন থেকে টেনে এনে চরথাপ্পর মেরে দুচারটে গালিদিয়ে বললো কাপুরুষ মরতে এসেছো এখানে। আমি তাকে সব বলি সে আমাকে বলে তোমার আপত্তি না থাকলে আমার কাছে একটা কাজ আছে তুমি চাইলে করতে পারো। আমি কিছু নাভেবেই রাজি হয়ে গেলাম ওখানে যাবার পর যানতে পাড়লাম ওটা প্লে ব য়ের কাজ। চোখের সামনে অসুস্থ বাবা, অসহায় মা, ছোট্ট বোনটার মুখ ভেসে উঠলো। প্রথম প্রথম প্রতিটা রাতি কারনা কারো বিছানায় কাটাতাম লকডাউনের মধ্যেউ দুই লক্ষ টাকা কামালাম। মহামারিতে আক্রান্তও হলাম আবার সেরেও উঠলাম। তারপর থেকে সপ্তায় দু - একটা টিপ করি মাস গেলে ত্রিশ চল্লিশহাজার আসে বেশ চলছে, প্রথমবার বাড়িতে যেতে বিবেকে বাঁধছিলো কিন্তু বাড়িতে গিয়ে যখন দেখলাম তাদের হাঁসিভরা মুখগুলোকে দেখে আমার সকল মান সন্মান জলে মিশে গেল মনে মনে ভাবলাম আমার যা হচ্ছে হোক তিনতিনটে প্রানতো আনন্দে আছে আমার যা হচ্ছে হোক তুই ওসব পারবিনে ভাই তোর বাড়িতে বৌ আছে।
প্রিয়দর্শন বলে পারতেই হবে আমাকে তুই আমাকে নিয়ে চল ভাই।
রাজু প্রিয়দর্শনকে নিয়ে পার্কস্ট্রিটের একটা হোটেলে যায় সেখানে দেখা হয় প্লে বয়দের নেতা রকির সাথে। রকি বলে কিরে রাজু কি বেপার ঐ মালটা কেরে রাজু বলে দাদা ও খুব বিপদে আছে কাজ না পেলে মা বৌ না খেয়ে মরবে ও নিজেও না খেয়ে খেয়ে মারা যাবে। রকি বলে বিবাহিত পুরুষ মানে অভিঞ্জতা একেরারে ভরপুর, কিরে কতদিন হলো বিয়ে করেছিস? প্রিয়দর্শন বলে এইতো দুই বছর হলো দাদা। রকি বলে আর দাদা মারাতে হবেনা রকি, রকি ভাই। কি নাম? প্রিয়দর্শন, প্রিয়দর্শন চ্যাটার্জী। মানে বামনা দেখ বামনারা কিন্তু প্রচন্ড ড্যাবনা হয়, কাজ করবে নোট নেবে আর কেটে পরবে কেমন মালদার পাটি দেখে ফাঁসাবার চেষ্টা একদম করবেনা কেমন। প্রিয়দর্শন বলে ঠিক আছে দাদা। রকি দাদা নয় কি বলবি? প্রয়দর্শন রকি ভাই, রকি বলে এইতো শিখে গিয়েছে।, রাজু ওকে কাজ বুঝিয়ে প্রথম ট্রিপটা দিয়ে দে শোন প্রিয়দর্শন কোন ঝেল যেন না হয়। প্রিয়দর্শন ঘার নারে। রকি চলে যায় রাজু বলে যার বাড়িতে যাচ্ছিয় সে কিন্তে যেসে মেয়ে নয় খুশি করতে পারলে মালামাল করে দেবে। প্রিয়দর্শন বলে আমাকে কি করতে হবে, আবছা ভাবে শোনা যায় স্ত্রীর সাথে যা করিস তাই করতে হবে।
পরের দিন সকালে প্রিয়দর্শন রূমে ফিরে জামা কাপরটা ছেড়ে বাথরুমের আয়নায় সামনে গিয় দাঁড়ায়, নিজের প্রতি ঘেন্না হয় তার তার পর একদিকে মা, বোনের আর বৌয়ের মুখটা অপর দিকে টাকা। সাওয়ারটা চালিয়ে নিজেকে সাফ করে ফেলে সে। বেড়িয়ে দেখে রাজু এসেছে। রাজু বলে কখন এলি? প্রিয়দর্শন বলে এই তো একটু আগেই। কিরে সব ঠিক ছিলোতো? কত পেলিরে? দশ হাজার। রাজু বলে বাজি মেরে দিয়েছিস তুই তার মানে রকি ভাইয়ো মোটা কমিশন পাবেন, তোর কাজ একেবারে পাক্কা।
দেখতে দেখতে ছয়মাস কেটেযায় অনেক টাকা উপার্যন করেছে প্রিয়োদর্শন। এখন কোলকাতার বহু মেয়েরা তাকে রমিয়ো প্লেবয় বলেই জানে। হঠাৎ প্রিয়দর্শনের মনটা বাড়ির জন্য হু হু করে ওঠে পরেরদিনই সে বেড়িয়ে পড়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে। গিড়ি থেকে নেমে বাড়িতে যাবার অটোতে চেপে বসে সে। অটো ছেড়ে দেয় প্রিয়দর্শন বাড়ির সামনের গলিতে নেবে পড়ে সে কিন্তু বাড়িতে যেতে পারেনা প্রিয়দর্শন মনে পড়েযায় তার কাজের কথা থেমে যায় প্রিয়োদর্শন, তারপর একটা গাছের তলায় বসে তার ডায়রির পাতায় একটি চিঠিতে তার স্ত্রীকে লেখে আমি তোমার কাছে এসেও তোমার সামনে আসতে পারলামনা আজ আমি আর তোমার যোগ্য নই নিরূপায় হয়ে আজ আমি প্লে বয়। তোমার ভালোবাসা পাবার অধিকার আমি হারিয়েছি তাই বাড়ির সামনে এসেও আমি তোমার সামনে এলামনা, ফিরে যাচ্ছি কেমন, পাড়লে আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো। গ্রামের একটা বাচ্চা সেখানথেকে যাচ্ছিলো প্রিয়োদর্শনে দেখে সে চিনতে পেড়ে বললো কাকা তুমি বাড়ি ফিরলে বুঝি। প্রিয়োদর্শন বললো হ্যাঁ এসেছিলাম তো কিন্তু যেতে পারবোনা একটা ফোন এসে গিয়েছে আমাকে ফিরতে হবে তুই কাজ করেদিবি আমার? বাচ্চাটা বলে কি কাজ কাকা। প্রিয়দর্শন বলে এই চিঠিটা তোর কাকিকে একটু দিয়ে দিবি। বাচ্চাটা বলে দাও দিয়ে দিচ্ছি। বাচ্চাটা চিঠিটা নিয়ে ছুটে চলে যায়। প্রিয়দর্শন চোখের জল মুছে পুনরায় ফেরির অটোতে গিয়ে বসে।
প্রিয়দর্শন অটোতে বসে আছে, সে বার বার অটোওয়ালাকে বলে দাদা কখন ছারবেন। লোকটি বলে দাদা তুমিতো জানো এখানথেকে একঘন্টা অন্তর অটো প্যাশেনজার না নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ইতি মধ্যে চিঠিটা পড়ে ছুটে আসে প্রিয়দর্শনের স্ত্রী তাকে অটোথেকে নাবিয়ে আনে। প্রিয়দর্শন মাথা নিচুকরে তার স্ত্রীর সামনে দাঁড়ায়। তার স্ত্রী বলে কিহলো তুমি এভাবে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলে কেন? কঁদতে কাঁদতে প্রিয়দর্শন বলে আমি কোন মুখে তোমার সামনে মাথাতুলে দাঁড়াবো। তার স্ত্রী বলে তুমি যেটা করেছ আমাদের বাঁচাবার জন্য করেছো নইলেতো আমরা মারাযেতাম তাইনা। চলো বাড়িতে চলো। প্রিয়দর্শন বলে নাগো ঐ বাড়িটা আমার কাছে মন্দির আর অপবিত্র দেহে মন্দিরে ঢোকা যায়না। স্ত্রী বলে যে অপবিত্রতা মন্দিরে বসবাস কারি মানুষ গুলোর প্রান বাঁচায় সে অপবিত্রতাকে সয়ং ভগবা ক্ষমা করেন, আর আমিতো তোমার সাথে আছি আমরা আবার নতুন করে সব কিছু শুরু করবো, দেখবে সব আগের মতো হয়ে যাবে……..।
