ফেরা
ফেরা


কি যে সর্বনাশ হলো আমার, গোপালের আর ঘরে ফেরা হলো না। আমি বললাম কি হয়েছে?কেনো যে বাপ মরা ছেলেটিকে ভিন রাজ্যে কাজের জন্যে পাঠিয়েছিলাম, ছেলেটি বাড়ির কাছে এসেও বাড়িতে পৌঁছাতে পারলো না। কত কষ্টই না পেয়েছে বাবা আমার! "করোনা" আর "লকডাউন" এর জন্যে আমার গোপাল কে হারালাম। ১৫ বছরের ছেলে আমার,মাত্র ৮ মাস হলো বাবা গত হয়েছেন। কষ্টের সংসার, ও নিজেই বন্ধুদের সাথে দিল্লি তে কাজে চলে গেলকিন্তু হঠাৎ দুনিয়া সুদ্ধ "করোনা"র আতঙ্ক,আর হঠাৎ "লকডাউন" ঘোষণা। ছেলেটি কাজ হারালো, আশ্রয় হারালো। ট্রেন বাস বন্ধ হলে গেলো।নিরুপায় হয়ে বন্ধুদের সাথে রেল স্টেশনে থাকতে লাগলো,"যদি ট্রেন চলে" এই আশায়। কিন্তু ট্রেন বাস সব বন্ধ।সবাই মিলে পায়ে হেঁটে বাড়িতে আসার সিদ্ধান্ত নিল।রেল লাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতে ক্ষুধা তৃষ্ণায় কাতর হয়ে পরে তবু মনের জোরে বাড়িতে ফেরার প্রবল ইচ্ছায় হাঁটতে থাকেপরশু সন্ধায় বাড়ি থেকে মাইল দশেক দূরে একটি রেল স্টেশনে এসে বেশি অসুস্থ হয়ে পরে।বন্ধুদের বলে,তোরা চলে যা,রাতটা বিশ্রাম নিয়ে ভোরে আবার হাঁটতে থাকবোসাথীরা এসে সব বললো,কাল ভোরে ছুটে গেলাম সেই স্টেশনে।গিয়ে দেখি প্ল্যাটফর্মের এক কোণে গোপালের নিথর দেহটা পরে আছে। শীর্ণ দেহ, কখনো জ্বলজ্বল করছে চোখ দুটি।গায়ে হাত দিয়ে দেখি আমার গোপাল নেই।এই বলে গোপালের মা হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো।
আমি হতবাক হয়ে গোপালের মায়ের মুখের দিকে হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।।
।
ো।