Chitta Ranjan Chakraborty

Romance Tragedy

4  

Chitta Ranjan Chakraborty

Romance Tragedy

ভালোবাসার টানে

ভালোবাসার টানে

8 mins
23.2K


আমি হায়ার সেকেন্ডারিপাস করে স্কলারশিপ নিয়ে, কানাডায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা করে যদি সেখানে ভালো চাকরি ব্যবস্থা হয় তবে সেখানেই চাকরি করব ঠিক করে নিয়েছি। কিন্তু সমস্যা হল বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান আমি, বাবা-মা কেউ চাইছে না আমি বিদেশে গিয়ে চাকরি করি। কিন্তু আমার জীবনের লক্ষ্য আমি বিদেশে গিয়ে চাকরি করব।।


যাবার আগে মা-বাবা ভীষণ কান্নাকাটি করলেন আমার জন্য। আমিও কাঁদলাম এই প্রথম একা একা এমনি কঠিন সিদ্ধান্ত নিলাম। যা আমি নিজে কখনো ভাবি নি। আমার যাবার ভিসা প্লেনের টিকিট সব ঠিক হয়ে গেছে। আমি মাকে বুঝালাম, গিয়ে দেখি যদি ভালো লাগে তবে থাকবো, নইলে চলে আসব। তুমি আমার জন্য একটু চিন্তা করো না। তাছাড়া বাসন্তী তোমাকে দেখাশোনা করবে নিজের মায়ের মত। আমি ওকে ডেকে সব বুঝিয়ে বলে যাচ্ছি।

বাসন্তী। সে আমার গ্রামে আমাদের পাড়াতেই থাকে। ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে পড়াশোনা করেছি, পুতুল খেলা খেলেছি। ঝড়ের দিনে হাম করিয়েছি। বিয়ে বিয়ে খেলা ও আমাকে বলতো আমরা দুজন বর বউ। বড় হয়ে আমরা বিয়ে করে সংসার করবো। সেদিন ঠিক বুঝতে পারিনি বিয়ে বিয়ে খেলা কি, বড় বউ সংসার এসবের মানে কি।

আমাদের দুজনের ভালোবাসা ছিল অতি গভীর। রোজ দুজনে একসঙ্গে স্কুলে যেতাম। ও আমার চেয়ে বয়সে দু বছরের ছোট। কিন্তু ওর জ্ঞান বুদ্ধি ছিল প্রখর। আমরা একসঙ্গে থেকে বড় হয়েছি। আমাদের বাড়িতে যাতায়াত করত। মার সঙ্গে থাকত । রান্না থেকে ঠাকুর পুজোর জোগাড় সব বাসন্তী নিজের হাতে করে দিত।


কিন্তু সমস্যা হল আমরা ব্রাহ্মণ ,মুখার্জি। বাসন্তী রা ছিল খিষ্টান। প্রোটেস্ট্যান্ট পন্থী। তাই তাদের ঘরের বউরা হিন্দুদের মত শাঁখা সিঁদুর পরে। ছোটবেলা থেকে ওকে ভীষণ ভালবাসতাম, এবংযখন একটু বুঝতে শিখলাম তখন ওকে একদম নিজের করে কাছে পাওয়ার আকুতি বেরেগেলো। আমি একদিন ওকে আমার ঘরে ডেকে নিয়ে বললাম, বাসন্তী তোকে আমি ভীষণ ভালোবাসি, তোকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না। আমি বিদেশ থেকে ঘুরে এসে তোকে বিয়ে করবো। তুই কি রাজি আছিস?

ও আমার মুখের দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল, তা হয় না শিবু দাদা। তোমরা হিন্দু ব্রাহ্মণ, আর আমরা খ্রিষ্টান। আমাদের এ বিয়ে তোমাদের সমাজে মেনে নিবে না। আমি বললাম, সমাজ সমাজ আমি কিছু মানি না। মা যদি রাজি হয়, তবে সেটাই আমার সমাজ আমি মার কথা মেনে মেনে তোকে বিয়ে করবো।


তুই আমার জন্য অপেক্ষা করবি তো? ও বলল, তা হয় না শিবু দাদা, তোমার মা বাবাও এ বিয়েতে রাজি হবে না। আমি বললাম, সে চিন্তা তোর নয়, সে চিন্তা আমার। কি করে রাজি করাতে হবে বাবা আমাকে আমার উপর ছেড়ে দে। তুই শুধু আমার জন্য অপেক্ষা করবি কথা দে।


ও আমতা আমতা করে বলল, আচ্ছা ঠিক আছে তুই আগে, ভালোভাবে পড়াশোনা করো, চাকরি করো পরে সব দেখা যাবে।

আমি ওকে জোর করে বুকের কাছে টেনে নিয়ে ওর হাত দুটি আমার মাথার উপর রেখে বললাম, এবার বল আমার মাথায় হাত রেখে দিব্যি করে বল, তুই আমার জন্য অপেক্ষা করবি। এমন সময় হঠাৎ ঘরের সামনে এসে মা বাসন্তী কে ডাকতে লাগল। বাসন্তী তাড়াতাড়ি করে আমার হাত ছাড়িয়ে দ্রুত পায়ে বেরিয়ে গেল। আমি হতাশ হয়ে বোকার মত চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলাম।


তার কয়েকদিন পর মাকে আমি আমার মনের সব কথা খুলে বললাম, মা শুনে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে, না সে হয় না রে বাবা। আমরা হিন্দু ব্রাহ্মণ, আর ওরা খ্রিষ্টান। ওদের সঙ্গে আমাদের বিয়ে হয় না। তুই বিদেশ যাচ্ছিস ভালো করে পড়াশোনা কর ভালো চাকরি করে পরে দেখবি কত সুন্দর সুন্দর মেয়ে তোকে বিয়ে করার জন্য অপেক্ষায় থাকবে।

আমি বললাম, ধর্ম ধর্ম ধর্ম, এসব আমি মানি না, আমি বাসন্তী কি ধর্মের খোলস নিয়ে জন্মেছি। না আমাদের জন্মের পর আমাদের গায়ে ধর্মের তকমা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে? ওরাও মানুষ, আমরাও মানুষ ওদের রক্ত আমাদের রক্ত একি রক্ত। ওদের আমাদের তফাৎ কিসের? ওরা গির্জায় যায় আর আমরা মন্দিরে যাই, এটুকুই তফাৎ। এখনো যেও তোমার সঙ্গে তোমার রান্নার সব ব্যবস্থা, এবং ঠাকুর পুজোর সব জোগাড় করে দেয় তাতে দোষের হয় না,?

আমি তোমাকে সাফ জানিয়ে দিচ্ছি, আমি বাসন্তী কে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবো না। মা আমার মাথাটি তার বুকের উপর নিয়ে আদর করে বলল, পাগল ছেলে আমার। এখনো সে ছেলেমানুষি যায়নি।


তারপর বেশ কয়েকদিন বাসন্তী আমাদের বাড়িতে আসেনি, মাকে তারা না আসার কারণ জানতে চাইলে, মা বলে, হয়তো ওর শরীর খারাপ হয়েছে। তাই কদিন আসেনি।


আমার যাবার দুদিন আগে থেকে আমার জিনিসপত্র সব গুছিয়ে নিচ্ছিলাম। একদিন সন্ধ্যা সময় দেখি বাসন্তী এসে বলে, তোমার সব জিনিসপত্র গোছানো হয়ে গেছে শিবুদা? আমি বললাম, হ্যাঁ, প্রায় সব গোছানো হয়ে গেছে। ও আমাকে একটু সরিয়ে দিয়ে বলে, যে ভুল মনের মানুষ তুমি, আমি তোমাকে বেশ জানি। একটু সরে দাঁড়াও, আমি সব বুঝিয়ে দিচ্ছি। আমি কিছু না বলে চেয়ারে গিয়ে বসলাম। মা আমার জন্য চা করে নিয়ে এসে বলে, বাসন্তী, তুই সবকিছু ঠিকঠাক গুছিয়ে দে।

আমি আর আমার মনের কথা সেদিন বাসন্তী কে আর কিছুই বলতে পারলাম না।

যাবার দিন শুধু দেখলাম ও আমাদের বাড়িতে জাম গাছের নিচে দাঁড়িয়ে অপলকে তাকিয়ে থেকে আমার যাওয়া দেখছিল। আর আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছছিল। আমি ওকে শুধু একটি কথাই বলতে পেরেছিলাম, বাসন্তী, মা-বাবাকে দেখিস, যেন কোন কষ্ট না হয়। আমি গিয়ে ফোন করবো।


তারপর আমি কানাডায় গিয়ে, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পড়তে একটি চাকরি ও পেয়ে গেলাম। চাকরি পেয়ে ভীষণ খুশি হলাম। ভাবলাম এবার বাসন্তী কে বিয়ে করতে আর কোন সমস্যা হবে না। মা বাবা নিশ্চয়ই রাজি হয়ে যাবেন।

নিয়ম করে বাড়িতে ফোন করতাম, মাঝেমধ্যে বাসন্তী সঙ্গে কথা হতো। কিন্তু হঠাৎ কিছুদিন যাবত আর বাসন্তীর সঙ্গে কথা হয়না। আমি প্রথম দিকে এ বিষয়টি গুরুত্ব না দিলেও মনটা যেন কেমন হঠাৎ বিষিয়ে উঠলো। আমি মার কাছে জানতে চাইলাম, বাসন্তী কেমন আছে, কেন ফোন করে না।

মা বললেন, ওর বাড়ির কাজে ভীষণ ব্যস্ত আছে। তাই কদিন থেকে আমাদের বাড়িতে আসেনা।


একদিন হঠাৎ মা ফোন করলো, বলল, বাবা ভীষণ অসুস্থ। তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসতে। আমি সেদিনই আর্জেন্ট প্লেনের টিকিট কেটে বাড়িতে রওনা হলাম। তারপর দিন বাড়িতে গিয়ে দেখি বাবা ভীষণ অসুস্থ। কথা বলার শক্তি নেই চোখ দুটো যেন কেমন বুঝে আসছে। ক্ষীণ দৃষ্টিতে আমার দিকে বার করে তাকিয়ে থেকে আমার হাতটি টেনে নিয়ে ক্ষীণ কণ্ঠে বললেন, মাকে দেখিস খোকা। দুচোখ ভরে উষ্ণ জল বিন্দু গড়িয়ে পড়লো আমার হাতে। তারপর সব শেষ। বাবা চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে।

মা আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন। সেদিন আমি মায়ের কান্নার ভিতর খুঁজে পেলাম নতুন ভবিষ্যৎ। আবার নতুন করে আমাদের যাত্রা শুরু হবে। আমারও দুচোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়তে লাগল। বাবার অভাবটা আমি অনুভব করলাম।

কিন্তু সে সময় বাসন্তী কে আমার কাছে পাওয়ার খুব প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বাসন্তী এলোনা।


কয়েকদিন পর বাবার সব পর অলৌকিক কাজ শেষ হলো। কিন্তু এর মধ্যে একদিনও বাসন্তী দেখা পেলাম না। সব গুছিয়ে মাকে বুঝিয়ে আমি আবার ফিরে যাবার প্রস্তুতি নিলাম। মাকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, বাসন্তী কেন আসছে না? মা বলল, তোকে আমি আগে বলিনি, মাস তিনেক হয় ওর বিয়ে হয়ে গেছে। শুনেছি ওর বর একটি কোম্পানিতে কাজ করে।

এ কথা শোনার পর আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পরল। রাগে ক্ষোভে আমি যেন কেমন পাগলের মত হয়ে গেলাম।

আরও ভীষণ রেগে গেলাম, সেদিনই সন্ধ্যে বাসন্তী আমাদের বাড়িতে এসেছে আমাকে দেখতে। হাতে শাঁখা কপালে সিঁদুর বেশ মানিয়েছে।

ও আমার পাশে এসে ভীতকন্ঠে বলল, শিবুদা তুমি কেমন আছো? আমি ওর দিকে না তাকিয়ে বললাম, বেশ ভালো আছি। তোকে আর আমার খোঁজ নিতে হবে না। ও তখন কাঁদতে কাঁদতে বলল, আমাকে ক্ষমা করে দাও শিবু দা। সময় পরিবেশের সঙ্গে যুদ্ধ করে আমি পরাজিত। বাধ্য হয়েই আমাকে বিয়ে করতে হলো। আমি বললাম, বেশ করেছিস বিয়ে করেছিস, আমার চেয়ে ভালো বর পেয়েছিস। কিন্তু একটি বারও কি আমার কথা তোর মনে হলো না? ও বলল, আমি অনেক চেষ্টা করেছি শিবুদা। আমি কিছুই করতে পারিনি। কেউ আমার কথা শোনেনি। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। আর একটি ভালো মেয়ে দেখে বিয়ে করে নাও। আমি বললাম, থাক তোকে আর উপদেশ দিতে হবে না। তুই এবার যা। আমার ভালো লাগছে না। আর কোনদিন আমার সামনে আসবি না। আমার কথা শুনে বাসন্তী জোরে জোরে কাঁদতে লাগল।


পিতৃহারা শোক আর বাসন্তী কে না পাওয়ার বেদনা আমাকে ভেঙে চুরমার করে দিল। আমি মাকে ডেকে বললাম, অফিস থেকে জরুরী ফোন এসেছে আজি আমাকে চলে যেতে হবে। মা বললেন, সেকিরে তুই না বললি আগামী পরশু যাবি। হঠাৎ তোর কি হলো, এখনই তোকে যেতে হবে? আমি বললাম, অফিস থেকে বারবার ফোন আসছে। তাই আজই চলে যাব। তুমি কোন চিন্তা করো না মা, আমি ক'দিন পরে এসে তোমাকে নিয়ে যাব।


আমি কানাডায় এসে সিদ্ধান্ত নিলাম, খুব তাড়াতাড়ি মাকে নিয়ে আসবো। আর কোনদিন বাড়িতে যাব না। বাড়ি যাব কার জন্য? যার টানে যেতাম সে তো আর আমার নেই। আর মনে ভাবলাম আর কোনদিন, বিয়ে করব না। এমনি আগোছালো ভাবনার মধ্যে দিয়ে কেটে যাচ্ছিল। একদিন মা ফোন করলেন, বললেন তার শরীর খুব খারাপ তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে। আমি ভীষণ চিন্তায় পড়ে গেলাম। আবার সেদিনই টিকিট কেটে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।


বাড়িতে গিয়ে দেখি, সত্যি মা খুব অসুস্থ। আমার কাকাতো ভাইয়েরা মাকে ডাক্তার দেখিয়েছে।

কিন্তু আমি আরো বেশি অবাক হলাম, বাসন্তী আমার মায়ের পাশে বসে তাকে ওষুধ খাওয়াচ্ছে। খাবার খাইয়ে দিচ্ছি।

আমি ওকে রাগতস্বরে বললাম, তুমি কেন এখানে? অসুস্থ মা আমার হাত দুটো ধরে বললেন, এখন সব থাক খোকা। আমি একটু সুস্থ হই, তারপর তোকে সব বলবো। মেয়েটা বড় পোড়া কপালি রে। ওর ভীষণ দুঃখ। বিয়ে হওয়ার মাত্র চার মাস পরেই কয়েকদিনের জ্বরে ওর বর মারা গেছে।

কথাটা শুনে আমি শিউরে উঠলাম। আর কিছু না বলে বাসন্তীর দিকে তাকালাম। দেখলাম অঝোরে কাঁদছে বাসন্তী। আমি আর কথা বাড়ালাম না। ধীরে ধীরে মা সুস্থ হয়ে উঠলেন। আমি মাকে বললাম, এভাবে তোমাকে রেখে আমি যেতে পারব না। তোমাকে আমি নিয়ে যাব। মা প্রথমে ভীষণ আপত্তি করলেন। কিন্তু আমি নাছোড়বান্দা। মাকে ছাড়া কিছুতেই ফিরতে চাইলাম না। অবশেষে মা রাজি হলেন।

কিন্তু বললেন, একটি কাজ কর খোকা। তুই বিয়ে করে নে। তাহলে তোর দেখাশোনা লোকের সমস্যা হবে না। আমি বললাম, না মা আমি কোনদিনই বিয়ে করব না। মা হেসে বললেন, পাগল ছেলে আমার, আমি তোর জন্য তোর মনের মত মেয়ে দেখে রেখেছি।

আমি বললাম, কোথায় সে মেয়ে? মা বললেন, এইতো তোর সামনে বসে আছে। আমি বাসন্তী কে দেখে মাকে বললাম, এ কী করে সম্ভব হবে মা। ওর বিয়ে হয়েছে, তাছাড়া ওরা খ্রিষ্টান ওকে বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।

মা বললেন, আমি তোর মনের কথা বুঝতে পেরেছি খোকা। কিন্তু বাসন্তীর কোন দোষ নেই। ওকে এক প্রকার জোর করেই বিয়ে দিয়েছে। আর ওর বর ছিল হিন্দু ব্রাহ্মণ। পুরা কপাল মেয়েটার, কপালে সুখ হইল না। বিয়ে হবার 4 মাস পরেই স্বামী মারা গেল।

ও ভীষণ ভালো মেয়ে আমাকে ভীষণ ভালোবাসে শ্রদ্ধা করে। তোকে এখনো মনে মনে ভীষণ ভালবাসে। ওসব কথা মন থেকে মুছে ফেলে তুই আমার কথা রাখ বাবা।

তুই ওকে বিয়ে করলে জীবনে সুখী হবি।

আমি মায়ের কথার কোন উত্তর দিতে পারলাম না। শুধু অপলোকে বাসন্তী দিকে তাকিয়ে থাকলাম। ভাবলাম, এরই নাম কি নিয়তি? দেখলাম বাসন্তী কোন কথা না বলে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। এবং একটু পরে আমার এবং মায়ের জন্য চা করে নিয়ে এলো।


আমি অনেক ভাবনার পর স্থির করলাম। আমি মায়ের কথা মত বাসন্তী কে বিয়ে করবো। এই বলে মাকে আমার সম্মতির কথা জানিয়ে দিলাম। মা ভীষণ খুশি হলেন।


তারপর দুদিনের মধ্যে বাসন্তীর সঙ্গে আমার বিয়ে হয়ে গেল। বাসন্তী খুব খুশি হলো। কিন্তু আমার খুশি হওয়ার কথা বাসন্তী কে বুঝতে দিলাম না।


তারপর তাড়াতাড়ি করে বাসন্তী এবং মায়ের পাসপোর্ট ভিসা করে আমরা তিনজনে কানাডার দিকে রওনা হলাম।

প্লেনে আমি আর বাসন্তী পাশাপাশি সিটে বসেছি। আমি ওর কানের কাছে মুক্তি নিয়ে বললাম, কেমন লাগছে, আমাকে পেয়ে তুমি খুশি তো। বাসন্তী আমাকে হাউ টু করে ধাক্কা দিয়ে বলল, যা এসব কথা কি এখানে বলতে আছে?

আমি ওর কানের কাছে মুখটিনিয়ে আবার বললাম, আমাদের ফুলশয্যা টা কানাডাতে হবে। বিদেশি ফুল দিয়ে।



Rate this content
Log in