ওয়ার্ক ফ্রম হোম:-
ওয়ার্ক ফ্রম হোম:-
লক ডাউনের কারণে এই মুহূর্তে বাড়িতে বসেই অফিসের কাজ করছে রথীন আর সুজাতা। রথীন আর সুজাতার দুই সন্তান পাখী আর বিন্তুর আনন্দ ধরে না, এত অধিক সময়ের জন্য কখনো বাবা মা কে পায়নি তো তারা। রথীন আর সুজাতা পাখি আর বিন্তু কে সেই সকাল সকালেই ডে-কেয়ারে রেখে দিয়ে অফিসে চলে যায়। ভাই বোন দুটোতে মন মরা হয়ে ডে-কেয়ারে পরে থাকে।
রথীন আর সুজাতাও বুঝতে পারে বাচ্চা দুটোর মনের অবস্থা। কিন্তু কি করণীয়! কাজ তো করতেই হবে, কিন্তু বর্তমানে লক ডাউনের কারণে রথীন আর সুজাতা যখন বাড়ী থেকেই কাজ করবে, অফিসে যাবেনা এই খবরটা শোনার পর থেকেই পাখী আর বিন্তু ভীষণ খুশি। সেদিন সকাল সকাল সুজাতা যখন ব্যাস্ত বাচ্চা দের নিয়ে রথীন তখন অফিসের কাজ সেরে নেয়। রথিনের কাজ সমাধা হলে সুজাতা ব্যস্ত হয় নিজের অফিসের কাজ নিয়ে। বাচ্চা দুটো সময়ে সময়ে বাবা মা উভয়ের স্নেহ প্রাপ্ত হয়। অফিসের কাজ শেষ হলে রথীন আর সুজাতা উভয়েই বাচ্চা দুজন কেও এনগেজ করায় ঘরের ছোট ছোট কাজ গুলো করার জন্য।
সুজাতার মন ভরে ওঠে বাচ্চা দুটোকে এতটা সময় দিতে পেরে, ওই দিকে বাচ্চা গুলোও ভীষন খুশি কারণ বাবা মা তাদের অমূল্য সময় যে নিজের সন্তানদের দিচ্ছেন। তারা চারজন একসাথে মিলে মিশে কাজ করে এখন। রান্তু যদিও বা প্রথম প্রথম খুব চেচাতো বাইরে যাওয়ার জন্য, খেলতে যাওয়ার জন্য, বেড়াতে যাওয়ার জন্য কিন্তু বাবা মায়ের স্নেহ ছায়ায় এখন জেদ করাও ছেড়ে দিয়েছে। বাচ্চাদের অপত্যস্নেহ তে সিক্ত হয় রথীন আর সুজাতাও। বাবা মায়ের সঙ্গে গোটা দিন থাকতে পেরে তাদের মনে আনন্দ ধরে না।
এই করোনা ভাইরাসের উৎপাতে যখন সমগ্র বিশ্ব তটস্থ, লক ডাউন চলছে সারা বিশ্ব জুড়ে তখন এই রকম পরিস্থিতিতে সুজাতা আর রথীন বাড়িতে থেকে অফিসের কাজ গুলো সুচারু রূপে করার পাশাপাশি বাচ্চাদের সঙ্গেও মহার্ঘ্য সময় ব্যতীত করছে। সত্যি বাচ্চাদের সংস্পর্শে থেকে করোনা আতংক আর লক ডাউনের বিরক্তি অনেকটাই কেটে গেছে। সুজাতা বাচ্চা দুটোর মুখের হাসি প্রাণ ভরে উপভোগ করে। মনে মনে ভাবে লক ডাউন উঠে গেলে অফিসের বড় কর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে রবিবার ছাড়াও সপ্তাহের অন্য যেকোনো দুই দিন সে 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' নেবে, কারণ বাচ্চা গুলোও তো চায় বাবা মা অফিসের কাজের পাশাপাশি নিজের মাতৃ পিতৃ স্নেহও উজাড় করে দিক সন্তানদের উপর ।