ওলাবিবি ও ওলাই চন্ডী
ওলাবিবি ও ওলাই চন্ডী
কি এক??
বাংলার লৌকিক দেবীদের মধ্যে একজন হলেন এই ওলাইচন্ডী। ওলাওঠা মহামারী কলেরা রোগের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। এদিকে ওলাবিবি নামেই সে পর জনপ্রিয় হয়,পশ্চিমবঙ্গের অনেক জায়গাতেও দেবী প্রচলন আছে । ওলাবিবির পূজা প্রতি বছর বৈশাখ মাসে হিন্দু-মুসলমান এর পূজা হয়। ওলাবিবি বা বিবিমা তার এমন নামের কারণ হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ই দেবীর পূজা করে। তার সাধারণত মূর্তি আমরা দেখি না।
তবে ওলাই চন্ডী ঘটক বাহিনী দেবী শঙ্খে ফুৎকারের মাধ্যমে ওলাওঠা রোগের আহ্বান করেন,দেবীর আরাধনার মাধ্যমে সন্তুষ্ট করে সবাই পরিবারের উপর মানুষের উপর থেকে কলেরা রোগের ভয় দূর করেন। তবে মহামারীর দেবী বলে দেবী কিন্তু কুৎসিত নয় আমাদের অলৌকিক দেবদেবী লক্ষ্মী-সরস্বতীর মতো সুশ্রী ও সুন্দর এবং ওলাইচন্ডী হলেন মা মঙ্গলচন্ডী অর্থাৎ দেবী পার্বতীর ছিন্ন কেশ থেকে সৃজিত দেবী তাই জন্য বর্ণিত হন ঘোটক বাহিনী হয়ে অলঙ্কারে ভূষিতা এবং হস্তে শঙ্খ ও বরাভয়মুদ্রা। এরকম জানেছি আমি কিছু শাস্ত্র নিয়ে চর্চার করা পন্ডিত মানুষদের কাছ থেকে। আমার পর্যবেক্ষণ এর ছলন ঘোড়া দেওয়া হয় ওলাবিবির মন্দিরে।
হুগলীর চুঁচুড়া ব্যান্ডেল অঞ্চলে কয়েকশ বছর ধরে পূজিত হয় ওলাইচন্ডী। প্রতিবছর দোলযাত্রার ঠিক পরের শনিবার হয় বাৎসরিক উৎসব । জাগ্রত মায়ের মন্দির বহু থেকে বহু মানুষের সমাগম হয় ।
বাৎসরিক উৎসবে দুদিন ধরে মেলা বসে এখানে। সাধারণত ডাব দিয়ে মাকে নিবেদন করা হয়।অন্নকূট উৎসব হয়।সব চন্ডী মতো মূলত প্রাচীন একটি গাছ ও তার গুঁড়িতেই মায়ের অবস্থান। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি সাথে এখানে মিল ওলাই চন্ডীর।
তবে লক্ষনীয় বিষয় হলো মা ওলাইচন্ডী হলেও স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস তাঁরা তিন বোন মা চন্ডী, মা শীতলা এবং মা কালী। বড়ো বোন মা ওলাইচন্ডী, মেজ মা শীতলা এবং ছোট মা কালী, তাই যে কোন উৎসব এ তিন বোনের আরাধনা সমান ভাবে করা হয়। এখন এনার সাথে শীতলা দেবীর পূজা , প্রমান করে কি ওলাইচন্ডী হয়তো ওলাবিবিতে পরিনত হয়েছে??