মুক্ত বিহঙ্গ
মুক্ত বিহঙ্গ
অনেক দিন তো হলো নিলু এবার তো তুই সব কিছু ভুলে নতুন করে জীবন শুরু কর। তোর বাবা তোর জন্য পাত্র দেখেছেন কাল ওনারা আসছেন কাল তোর অফিসে যাওয়ার দরকার নেই । ...... বললেন কথা দেবী।
আমার জীবন টা নিয়ে তোমরা ছেলে খেলা আরম্ভ করেছ কেনো জানতে পারি কি। আমি আমার অফিস নিয়ে সুখেই আছি আমি স্বনির্ভর মা তাছাড়া আমি প্রাপ্ত বয়স্ক এবার তো আমার জীবনের ডিসিসন আমায় ভাবতে দাও । আর আমার জন্য যদি তোমাদের প্রবলেম হয় তাহলে আমি অন্য কোথাও সিফট করবো। দ্বীপ কে তো তোমরাই পছন্দ করেছিলে । আর বিয়ে তে আমার বিতৃষ্ণা ধরে গেছে। একবার সংসার করে অনেক শিক্ষা হয়ে গেছে আর নয়।
নীলাঞ্জনা ওরফে নীলুর সঙ্গে আড়াই বছর আগে সম্বন্ধ করে বিয়ে হয় দ্বীপ এর। সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল ওদের সংসার জীবনের কিন্তু নীলুর চাকরি পাওয়ার পর দ্বীপ আর তার পরিবার এর মানুষগুলো বদলে যায় ওদের একটাই দাবি নীলুকে চাকরি ছাড়তে হবে । নিলু অনেক চেষ্টা করেছিল সংসার আর চাকরি দুই দিক মানিয়ে নিয়ে চলতে কিন্তু দ্বীপের সাথে নিত্য দিনের অশান্তি তাই বাধ্য হয়ে ওরা ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেয় আর ছয় মাস আগে ওদের ডিভোর্স হয়ে যায়। নীলুর বাবা মা চান মেয়েকে অন্য জায়গায় আবার বিয়ে দিতে তাহলে ওনারা চিন্তা মুক্ত হবেন। কিন্তু নীলুর এখন বিয়েতে ঘোর আপত্তি।
আজ সকাল থেকেই বাড়িতে ব্যস্ততার শেষ নেই পাত্র পক্ষ আসবে বলে নীলুর মা বাবা তাদের অ্যাপ্যায়নের আয়োজন করে চলেছেন।
কথা দেবী নীলুর রুমের দরজা ধাক্কা দিলে সেটি খুলে যায় । ভেতরে প্রবেশ করে তিনি দেখেন নীলু রুমে নেই। সকাল থেকে তিনি মেয়েকে একবারও বেরোতে দেখেন নি। তাই রেডি হওয়ার জন্য তাড়া দিতে এসেছিলেন। নীলুর পড়ার টেবিলে একটা নোট প্যাড দেখতে পান কথা দেবী। আর তাতে তাদের উদ্দেশ্যে তাদের মেয়ে কিছু লিখে গেছে ।
প্রিয় মা বাবা ;
তোমাদের জানানো হয়নি আমার দিল্লিতে পোস্টিং হয়েছে তোমাদের সুখবর টা দেব ভেবেছিলাম কিন্তু তোমাদের আমার বিয়ে নিয়ে যত চিন্তা। তোমরা দুজনেই চাও এই চাকরি টা আমি ছেড়ে দি। কিন্তু আমার মেধা আর পরিশ্রম করে পাওয়া চাকরি এতো সহজে ছেড়ে দেব কেন । একবার বিবাহিত জীবনে আমার অনেক শিক্ষা হয়েছে। আমি চাইনা নতুন করে আবার ডিপ্রেশনের স্বীকার হতে। তাই তোমাদের মানে আমার কাছের মানুষের মানসিক আঘাত আমি আর নিতে পারছিনা । তাই আমি এবার নিজের মত করে বাঁচতে দিল্লি এসেছি। আমায় তোমরা পারলে ক্ষমা কর কিন্তু আমি মুক্ত বিহঙ্গ হতে চাই ।
ইতি ; নিলু ......
