মুক্ত আকাশ
মুক্ত আকাশ
যতীন বাবু ছেলের ফ্ল্যাটের ছাদে বসে বসে পাশের মাঠে বাচ্ছাদের খেলাধুলা করা দেখছিলেন। ওনার ছেলে সীমন্ত অফিসের কাজে বর্ধমান গেছে। বৌমা একটা বুটিকে কাজ করে, সেও বাড়িতে নেই। ছোটো একটি বছর পাঁচেকের নাতনি আছে। সে নিত্য দিনের মত মিসের কাছে পড়তে বসেছে। যতীন বাবু সংবাদ পত্রের অফিসে কাজ করতেন। এখন ওনার জীবনে কাজ বলতে বসে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করা আর নাতনির সাথে একটু খুনসুটি। তবে ইদানিং মনটা খুব চঞ্চল হয়ে আছে, বয়স বাড়লে বুঝি এমনই হয়!এটাই মনে মনে ভাবতে থাকেন বার বার। বিকেলের পড়ন্ত রোদ একটু মুষরে পড়লে, উনিও অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ওনার মনে হয়, বর্তমানের জীবনটায় কোনো অ-কৃত্রিম রসবোধ নেই, সবই শুধু ক্ষণিকের মোহের পিছনে ছুটছে অনবরত।
হঠাৎ চোখ পড়লো রামতুলসি গাছটার উপর। পনেরো তলা ফ্ল্যাটের বিশাল খোলা ছাদে নিশ্চিন্তে মাথা দোলাচ্ছে রামতুলসি গাছটা। অনেক বয়স হলো, সাধারণত এত দিন বাঁচে না তবু কি ভাগ্যিস জীবনযুদ্ধের খেলায় নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এখনও সক্ষম। মাঝে মাঝে রামতুলসি গাছটা ছাদের উপর থেকে মুখ বাড়িয়ে নিচের মাঠ, চওড়া রাস্তা, ছেলের দল কে সমস্ত দিন নিরীক্ষণ করছে, ঠিক অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ যতীন বাবুর ন্যায়।
