AYAN DEY

Horror Classics

4.7  

AYAN DEY

Horror Classics

মরণধাঁধা

মরণধাঁধা

3 mins
260


একটি নির্জন জায়গা খুঁজে বাস করার ইচ্ছে অনেকদিনের । এতদিনে ঝাড়গ্রামের প্রত্যন্ত একটি অঞ্চলে খালি একটি ভিলার সন্ধান পেয়ে ঘর বাঁধতে দেরী করলো না অখিলেশ । বাড়িটির দোতলার একটি ঘর মালিক রতন সেনের থেকে পেলো অখিলেশ । অখিলেশ চক্রবর্তী বর্তমানের বিখ্যাত থ্রিলার গল্পের লেখক । হ্যাঁ , ঠিকই ধরেছেন ওই কাজটির জন্যেই শহরের কোলাহল থেকে দূরে এই জায়গাটিতে আসা । বন্ধু রতন সেনের এটা আদিবাড়ী । কাজের সূত্রে ওরাও কোলকাতায় থাকে । অখিলেশ বলতে এক কথাতেই ঘরটির কথা জানায় রতন ।

নির্বিঘ্ন নির্ঝঞ্ঝাট জীবন । কাছেই শ্যামা হোটেলে সবজি , ভাত , রুটি সব মেলে । কিন্তু বাথরুমটা ...

রাত্রে একটি বার উঠবেই অখিলেশ । প্রথম কদিন চোখে কিছুই পড়েনি । কিন্তু ঠিক এক সপ্তাহ পর হঠাৎ নজর গেলো বাথরুমের জানলায় । ও কীসের ছায়া ? সামনে যেতে স্পষ্ট হলো জানলার দুহাত দূরের লম্বা অশ্বত্থ গাছের ছায়া ওটা । কি প্রচণ্ড ঘামতে ঘামতে ঘরে এসে শুয়েছিলো অখিলেশ তা বলার নয় ।

এর কদিন পর রতনের ফোন ।

" লেখালেখি কেমন চলছে ? "

" চলছে ভাই । "

" ভয়েসে জোশ নেই কেন ? কী ব্যাপার মামা ? "

" আরে কিচ্ছু না , এই একটানা লিখে ক্লান্ত । "

" ও তুই লিখতে থাক । খুব শীঘ্রই দেখা করতে আসছি । "

" হ্যাঁ একদম । "


বিষয়টা বোঝা সত্ত্বেও কিরকম অস্বস্তি হয় প্রতিদিনই । অখিলেশ মন থেকে বহুবার ভাবে যে না রাতটা কোনোভাবে কাটিয়ে দেবে । কিন্তু কেবন এক দুবারই সক্ষম হয় । রাতে একবার ওঠা থামাতে অক্ষম হয় পুরোপুরি ।

আজ যেন ভয়টা একদম ঠোঁটে এসে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে দিতে চায় । সে জানলার দিকে তাকানো সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রেখেছিলো । কিন্তু আজ যেন মন তার কেবলই বলতে লাগলো , " তাকা একবার । একবার জানলার দিকে দেখ ! কিছু নেই যখন ভয় কী ? "

ওদিকে ষষ্ঠেন্দ্রিয় সাবধান করে , " সাবধান ওদিকে তাকালেই বীভৎস কিছু দেখবি ... একদম না । "

মাথা ও মনের দ্বৈরথের মাঝে পিষতে থাকে অখিলেশ । বাথরুম থেকে বেরিয়েই আসছিলো কিন্তু চোখ যেন জাদুবলে জানলার দিকে গেলোই । আর চোখ যেতেই সর্বাঙ্গে বিদ্যুত খেলে গেলো । সেই অশ্বত্থ গাছের ছায়া যেন জমাট অন্ধকার হয়ে তার জানলায় এসে হাজির হয়েছে । তার সাথে যেটা সবচেয়ে ভয়ের সেটা হলো ছায়াটা স্থির নয় ... সচল ।

মনকে একবার বোঝালো " গাছের পাতাও নড়ে ... ডালপালাও ... " কিন্তু না এটা তা নয় । ক্রমশ বাথরুমের অল্প ওয়াটের আলোয় বোঝা গেলো ওই ছায়া একটা প্রাণীর ।

প্রাণীটা কী ? বিড়াল ? না । অত্ত বড়ো হয় না । তবে ভাম জাতীয় কিছু ... না ওই যে ওই যে কিছু বললো ওই ছায়া ।


" অখিলেশ ... কেমন আছো ? " 

এবার সামনে আসতে লাগলো ওই ছায়া । ক্রমশঃ হাত পা জমাটি বরফ হয়ে এলো । মুখটা স্পষ্ট হতেই আর্ত চিৎকার বেরিয়ে এলো অখিলেশের । এ কি ! এ তো সে নিজেই ... তার প্রতিমূর্তি দাঁড়িয়ে তার সামনে ... 

আতঙ্কে চৈতন্য হারাতে যাবে কি মুখোশ খুলে সামনে দাঁড়ালো রতন । প্রস্থেথিকসের কাজ করে রতন । তার পক্ষে এটা করা মামুলি । একদম দরদর করে ঘামতে থাকা অখিলেশকে ধরে ফেলে বললো , " খুব ভয় পেয়েছিলিস না ! বড়ো বেশী বাড়াবাড়ি করে ফেলেছি বোধহয় ! "

" বাড়াবাড়ি বলে বাড়াবাড়ি ... আরেকটু হলে হার্টটা বেরিয়ে আসতো । "

ঠিক এই সময় ওরা দুইজন বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে বাথরুমের লাইট নেভাতে যাবে বাথরুমের মেঝের দিকে তাকাতে রতন নিজে ইলেকট্রিক শকের মতো কিছু অনুভব করলো । মাছি ভনভন করছে ও কার দেহ ... অখিলেশ ... তবে তার পাশে কে দাঁড়িয়ে ।

" কই রে রতন এখনও দাঁড়িয়ে ... ভোর হতে খানিক বাকি ... একটু শুয়ে নে । "

একটা কথাও না বলে দরজা খুলে পাঁইপাঁই করে ছুটে পালালো রতন । " কই রে রতন ... আমায় ভয় দেখিয়ে কোথায় চললি ? রতন ... রতন ... রতন ... "


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror