মরা সাহেবের কোট
মরা সাহেবের কোট
কলকাতা, এক ভারী অদ্ভুত শহর। এখানে পাওয়া যায় না এ হেন জিনিস নেই। অতি সৌখিন দ্রব্যাদি থেকে শুরু করে অতি সস্তার বস্তাপচা তারিখ উত্তীর্ণ হওয়া নষ্ট জিনিসপত্র - সব পাওয়া যায়। শুধু স্থান পরিবর্তন করলেই হল - কোনটা পাওয়া যাবে এসপ্লানেডে, কোনটা চাঁদনীতে, কোনটা বা বিধান মার্কেটে!
কলকাতায় আসার আগে প্রদীপ এই কথাগুলো বহুবার শুনেছে - আগে এই শহরে এসেছে যারা তাদের মুখে। তার অবশ্য ওদিকে যাবার সুযোগ খুব একটা হয়নি কখনও। সে তো গঙ্গা পার হয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে এসে ঢোকে এজরা স্ট্রীটে, তারপর তার প্রয়োজন এবং চাহিদা মাফিক বৈদ্যুতিন সামগ্রী কিনে নিয়েই, আবার দৌড় দেয় ফেয়ারলী ঘাটের দিকে, ট্রেন ধরতে হাওড়ায়।
তো সেই প্রদীপের ওপর এবার ভার পড়েছে - গ্রাম প্রধানের ছেলের জন্য ব্লেজার কিনে নিয়ে যেতে হবে। তাদের ঐ অজ পাড়াগাঁয়ের অর্ধেক লোক আজও সারাদিনে গায়ে একটা জামা দিয়ে উঠতে পারে না, ব্লেজারের তো বোধ হয় নামও শোনে নি!
প্রধানের ছেলেও সে জিনিস কখনও চোখে দেখেছে বলে তো মনে হয় না, কিন্তু পেটে ভাত জুটুক ছাই না জুটুক মোবাইল কিন্তু হাতে তার ঠিকই আছে। আর সেখানেই সিনেমার হীরোকে দেখেছে বিয়ের রীসেপশানে ব্লেজার স্যুট পড়তে। অমনি তারও হুজুগ উঠেছে, সেও বিয়েতে ঐ রকম ব্লেজার পরবে!
এখন, ও জিনিস এলাকার দোকান থেকে কিনতে পারার কথা তো কেউ ভাবতেও পারেনা, আর বানানোর কথা তো নয়ই। তাই ভার পড়েছে বেচারা প্রদীপের ওপর। সে যেহেতু প্রতি সপ্তাহেই কলকাতা আসে, সুতরাং সেই পারবে একটা সস্তায় ভালো ব্লেজার কিনে নিয়ে যেতে।
গাঁয়ের লোকেরা অবশ্য একে ব্লেজার বলে না, বলে কোট। তা সেই কোট কেনার জন্য প্রদীপকে দিয়েছে মাত্র পাঁচশ' টাকা। প্রধান আবার বলেছেন - দু চারশ' টাকা যদি আরও লাগে তো প্রদীপকে এখন দিয়ে দিতে, তিনি পরে দিয়ে দেবেন।
প্রদীপ ভালোই জানে, ঐ অতিরিক্ত পয়সা যদি খরচ করে সে আর তার জুটবে না কোনোদিনই। তা ছাড়া অত বেশি টাকা তার কাছে থাকেও না। ট্রেনের আর লঞ্চের মান্থলী করা, স্টেশনে নেমে সাইকেলেই সে নিজের মালপত্র বয়ে নিয়ে যায়। তাই অতিরিক্ত পয়সা সে একটাকাও নিয়ে বেরোয় না, শুধু জিনিসপত্রের দামটুকু ছাড়া।
আর পাঁচশ' কেন হাজার টাকাতেও যে একটা ভালো ব্লেজার মানে ঐ কোট আর কি, সেটা যে কেনা যাবে না - এটা তাদের বোঝায় কে? উল্টে আবার হুকুম হয়েছে - কোট যেন দেখবার মত হয়! বোঝো? একে মা রাঁধে না, তায় পান্তা ভাতে ঘি!
প্রদীপ পড়লো মহা ফ্যাসাদে। কি করা যায়? তখন ট্রেনের এক সহযাত্রীই ওকে প্ল্যানটা দিল - টীবোর্ডের কাছে ব্র্যাবোর্ন রোডের ফুটপাথে খোঁজ করলেই সস্তায় কোট পেয়ে যাবে। ওখানে সস্তায় মরা সাহেবের কোট পাওয়া যায়, দরদাম করতে পারলে, প্রধানের ঐ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবে!
প্রদীপ এতদিন ঐ পথ দিয়ে আসা যাওয়া করছে, এটা তো খেয়ালই করে নি সে! আজ দেখলো - একদম ঠিক, ফুটপাথে ঢেলে বিক্রী হচ্ছে সেই মরা সাহেবের কোট! সেই সহযাত্রীর পরামর্শ মত দরদাম করে একটা বেশ পছন্দসই ঝকঝকে ব্লেজার কিনেই ফেলল সে সাড়ে চারশ' টাকায়!
ফেরার পথে লঞ্চে সেদিন ভীষণ গণ্ডগোল - তার প্রপেলরে না কোথায় যেন ছেঁড়া জাল আটকে গিয়ে বিষম বিপত্তির সৃষ্টি করল। কোনমতে, যে ট্রেনটা বর্ধমান পৌঁছে ওদের লাইনের শেষ ট্রেনটা ধরায় সেটা ধরলো হাওড়ায়। বর্ধমান থেকে ওদের ট্রেনে উঠতে না উঠতেই আর এক বিপত্তি - শুরু হল প্রবল ঝড়।
শেষ পর্যন্ত মাঝরাতে যখন নামলো ট্রেন থেকে, তখন সাইকেল স্ট্যাণ্ডের লোকেরাও বাড়ি চলে গেছে। অগত্যা, পায়ে হেঁটেই অত মালপত্র নিয়ে বাড়িতে ফিরতে হল তাকে। বাড়ি পৌঁছেও আর এক সমস্যা - লোডশেডিং চলছে, দরজা খুলতে পারলো না অন্ধকারে। অগত্যা আবার দোকানে গিয়ে মালপত্র সব রেখে খালি হাতে বাড়ি ফিরল যখন, দেখে কারেন্ট এসে গেছে!
পরদিন দোকানে গিয়ে দেখে - দরজা হাট করে খোলা, মালপত্র সব ঘরময় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। চুরি হয়নি কিছু কিন্তু জিনিসপত্র সব যেন কেউ লণ্ডভণ্ড করেছে! যাই হোক, সব গোছগাছ করে তুলে রাখতে শুরু করলো প্রদীপ।
এমন সময় প্রধানের ছেলে এসে হাজির হল - তার কোট নিতে! প্রদীপ তাড়াতাড়ি দোকান ঘর থেকে বেরিয়ে এসে, তার হাতে সেটা তুলে দিতেই, সে দর্পভ'রা এক হাসি দিয়ে, ব্লেজারটা নিয়ে চলে গেল! প্রদীপ একটু মুচকি হাসলো তার ব্যবহারে, তার পর ঘুরে দোকানে এসে ঢুকলো।
দোকানে ফিরে দেখে - জিনিসপত্র সব যেমনকার তেমনই গুছিয়ে তুলে রাখা আছে! কে বলবে যে, এগুলোই একটু আগে লণ্ডভণ্ড অবস্থায় পড়ে ছিল এখানে? প্রদীপ খুব আশ্চর্য্য হল ব্যাপারটা দেখে! প্রদীপের মাথায় কিছুতেই ঢুকলো না - কাল বিকেল থেকে তার সাথে হচ্ছেটা কি?
কিন্তু তার অবাক হবার, বলা ভালো আশ্চর্য হবার মত আরও দারুণ চমক তখনও অপেক্ষায় ছিলো! আর সেটা স্বচক্ষে সে দেখলো সেদিন রাতের বেলা। পুরো কাহিনী তার কাছে ততক্ষণে পরিষ্কার, কি ঘটছে, কেন ঘটছে সব - কিন্তু সাহস করে সে কাউকেই সেকথা বলতে পারলো না!
পরের দিন ট্রেনে কলকাতায় আসার সময় সেই নিত্যযাত্রী বন্ধুটিকে বললো সে আগের দিন রাতের ঘটনার কথা। শুনে তো যেন বিশ্বাসই হয় না তার। বলে এমনও হয় নাকি আজকালকার দিনে? এ তো সেই ছোটবেলায় গল্পে পড়েছিলাম, মজা করে বন্ধুমহলে এর নাম ছিল এম.এস.কোট, মানে মরা সাহেবের কোটই অ্যব্রিভিয়েশন করে।
ঠিক কি কি ঘটেছে একটু গুছিয়ে বলো তো দেখি, আজ অপিসের লাঞ্চটাইমটা তোমার কাহিনীতেই জমে পুরো ক্ষীর হয়ে যাবে মনে হচ্ছে। বলো বলো, একটু গুছিয়ে শুরু থেকেই বলো। ছোট বড় কোন ঘটনাই বাদ দিও না, সবটাই শুনবো, নাও শুরু করো।
প্রদীপ - কাল রাতে ছিল প্রধানের ছেলের বিয়ের রীসেপশন। এমনিতে তো আমার মত হার হাভাতে গরীব ঘরের বেকার ছেলেদের তিনি পোঁছেনও না, কিন্তু গাঁ ষোলোআনা জেনে গে'ছিল কিনা, যে আমিই তার ছেলের জন্য ঐ কোটটা কিনে এনে দিয়েছি কলকাতা থেকে, তাই আমায় যেতে বলে ছিলেন মুখেই।
তাই গাঁয়ের ক'জন মুরুব্বির সঙ্গে আমিও রাতে গিয়েছিলাম তাদের বাড়ি ঐ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। যাই হোক, আমরা কেউই সেই অর্থে কার্ড দিয়ে নিমন্ত্রিত তো আর নই, আমরা হলাম যাকে বলে ডাক নেমন্তন্নে গিয়েছি। তাই আমরা কেউই যেমন কোন উপহার নিয়ে যাই নি (অবশ্য আমাদের অত সামর্থেও কুলোত না), ওরাও তেমনি আমাদের জন্য কোন অভ্যর্থনার ব্যবস্থা করেনি।
আমরা ওদের বাড়িতে ঢুকে বর বধূ যেখান হাসি মুখে দাঁড়িয়ে অতিথিদের থেকে উপহার নিচ্ছিল সেদিকেই গেলাম। দেখি, প্রধানের ছেলে সেই মরা সাহেবের কোট গায়ে দিয়ে, পাশে নববধূ সুন্দরী স্ত্রীকে নিয়ে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে। কিন্তু মুখটা দেখেই মনে হল, মুখে হাসি থাকলেও তার কিছু একটা বোধ হয় অসুবিধা হচ্ছে।
বিষয়টা অবশ্য আমাদের মুরুব্বীদেরই নজরে প্রথম আসে। তাঁদের আলোচনাটা কানে আসতেই, একটু আগ্রহ ভ'রে ওর হাবভাবটা লক্ষ্য করতেই আমিও বিষয়টা বুঝতে পারি। কিন্তু অসুবিধাটা যে তার কি থেকে হচ্ছিল, সেটাই আমাদের কেউই ঠিক বুঝতে পারলাম না।
এমন সময় হঠাৎ লোড শেডিং হল। যদিও ওরা জেনারেটরের ব্যবস্থা রেখেছিলো, তবুও দু' চার মিনিট তো লাগলোই আবার সমস্ত আলো জ্বলে উঠতে! আর তখনই দেখতে পেলাম ঘটে গেছে প্রথম অঘটনটা - প্রধানের ছেলের মাথার চুল সব উস্কো খুস্কো, জামা কাপড়ও সব এলোমেলো হয়ে গেছে! দেখে মনে হচ্ছে যেন - ঐ অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে, তার চুলের মুঠি ধরে কেউ তাকে বেশ করে উত্তম মধ্যম দিয়েছে!
ভারী আশ্চর্যের ব্যাপার, কেউ কোনও শব্দ পর্যন্ত শোনেনি। এমনকি পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা তার স্ত্রীও ঘুণাক্ষরেও কিছু টের পায়নি! তাছাড়া, এমন অনুষ্ঠানের দিনে বাড়িভর্তি লোকজনের মাঝে, গ্রাম প্রধানের বাড়িতে এসে, তার ছেলের গায়ে হাত তুলতে কেউ যাবেই বা কেন? আর এত সাহসই বা কার আছে এই এলাকায়?
ছেলেটা নিজেও দেখলাম কেমন ভ্যাবাচাকা খেয়ে গেছে! কি ঘটে গেছে ঐ দু' চার মিনিটের মধ্যে, তা বোধ হয় সে নিজেও ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলো না, বা হয়তো তার বিশ্বাসই হচ্ছিল না! যাই হোক, তার বুদ্ধিমতী স্ত্রী দেখলাম বিষয়টা আঁচ করে, এগিয়ে এসে তাকে একটা চিরুণি দিল চুলটা ঠিক করার জন্য৷ আর নিজে তার পরনের কোটটা ঠিক করে দিতে লাগল।
তখনই ঘটলো দ্বিতীয় বিপত্তিটা - নতুন বর তার বেশ পরিপাটী করে ছাঁটানো চুল আঁচড়াতে গিয়ে দেখে - তার চুল যেন হঠাৎ বেড়ে গিয়ে কান ঢাকা পড়ে যাচ্ছে তার! এমনকি জুলফি দুটোও লম্বা হয়ে মাঝগাল অবধি নেমে এসেছে! আর তার অমন সুন্দর সাধের কার্তিক ঠাকুর মার্কা সরু গোঁফজোড়াও পেল্লাই সাইজের ইয়ামোটা হয়ে উঠেছে!
চমক এখানেই শেষ না, তার স্ত্রী কোটের বোতাম গুলো ঠিক করে আটকে দিয়ে, বুক পকেটের রুমালটা ঠিক করতে গিয়ে দেখে - গলগল করে রক্ত বের হয়ে আসছে সেখান থেকে! দেখে, সে তো ভয়ে আঁতকে উঠে চিৎকার করে ওঠে। তারপর নিজের বরের মুখ পানে চেয়ে দেখে - এ কে? এ তো তার বর নয়!
তার বরের জায়গায় দেখে এক লালমুখো সাহেব সেখানে দাঁড়িয়ে! পড়নে সেই কোটটাই, আর তার বুক পকেটের ওপর দিয়ে শরীর থেকে বেরিয়ে আসছে তাজা রক্তের স্রোত! যেন এখনই কোন বুলেট এসে সদ্য বিঁধেছে তার হৃৎপিণ্ডে! নতুন বৌ তো ওখানেই মাথা ঘুরে পড়ে, সঙ্গে সঙ্গেই জ্ঞান হারায় তখনই।
ওদিকে নিজের বেড়ে ওঠা চুল, গোঁফ, জুলফিতে হাত বোলাতে বোলাতে ভয়ানক ঘাবড়ে গিয়ে, অবাক চোখে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে, সবাইকে দেখতে দেখতে প্রধানের ছেলেটারও নজর যায় - পাশের দেওয়ালে ঝোলানো আয়নার দিকে।
নিজের সেই সাহেবী রূপ নিয়ে গর্ব করাটা - যে কোন কারণেই হোক, সেই মুহুর্তে তার পক্ষে ঠিক সহনীয় হয়ে উঠলো না এবং সেও যথারীতি তার সহধর্মিনীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে, মাথা ঘুরে পড়ে অজ্ঞান হয়ে গেলো ওখানেই। সবাই ধরাধরি করে দু'জনকেই তখন তুলে এনে, সেখানেই রাখা দুটো চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে চোখে মুখে জলের ছিটে দিতে থাকে।
কিছুক্ষণ পরই তাদের জ্ঞান ফিরলে অবশ্য দেখে তারা যেমন ছিল ঠিক তেমনটাই আছে! না বরের চুল দাড়ি বেড়েছে, না কোটের বুকে রক্তের কোন ছিঁটে ফোঁটাও লেগে আছে! তাদের দুজনেই দেখি পরস্পরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে - যেন বুঝতে চেষ্টা করছে, এতক্ষণ হচ্ছিলো টা কি? সব স্বপ্ন দেখলো নাকি সত্যিই কিছু ঘটলো?
আসে পাশের লোকজনকে দেখে কিন্তু মনে হল না যে তারা ঐরকম কিছু ঘটতে দেখেছে! এমনকি আমার সঙ্গে আসা সেই মুরুব্বিদের হাব ভাবের দিকে চেয়েও মনে হল না - তারা কোনও অস্বাভাবিক অস্বাভাবি কিছু ঘটতে দেখেছে বলে! তাহলে শুধু আমরা তিনজনই দেখলাম পুরো ঘটনাটা?
আজ সকালে প্রধানের ছেলে এসে চুপি চুপি আমায় কোটটা ফেরত দিয়ে বললো - আমার বউয়ের এই কোটটা একদম পছন্দ হয়নি, জানো! বললো, আজই ফেরত দিয়ে আসতে। তোমায় দিচ্ছি, ফেরত দিতে পারলে দিও, নয়তো গঙ্গায় ফেলে দিও। আমিও আর এটা চাই না। শুধু একটা অনুরোধ, বাবা বা গাঁয়ের কাউকে এই বিষয়ে তুমি প্লীজ কিছু বলো না!
কথা বলতে বলতে ট্রেন তখন হাওড়া পৌঁছে গেছে। প্রদীপ ব্যাগ থেকে সেই কোটটা বের করে দেখালো তার সহযাত্রী বন্ধুটিকে, বললো - এই যে নিয়ে এসেছি, আজ এটাকে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেব বলে।
বন্ধুটি হাত বাড়িয়ে সেটা নিয়ে বললো - দেখি, বাঃ। এ তো সত্যিই খাসা জিনিস। তুমি তো গঙ্গায় ফেলেই দেবে বলছিলে, তা আমি এটা রাখি? প্রদীপ ঘার নেড়ে সম্মতি জানালে, ছেলেটা সেটা তার ব্যাগে ঢোকালো। পরক্ষণেই প্ল্যাটফর্মে পড়ে থাকা ছানার জলে পা পিছলে আছাড় খেয়ে পড়লো সে!