মনের কুঠিতে আবদ্ধ।
মনের কুঠিতে আবদ্ধ।


চারদিক অন্ধকার। রবি নিজের নিয়মে গেছে চল অস্তাচলে। অমাবস্যা তাকে আজ বিদায় সম্বর্ধনা দিচ্ছে গভীর আনন্দে। কি জানি হয়তো কারো আলো শুষে নিয়ে সবার এমনই আনন্দ হয়! ওই যে বলে না, কারো পৌষ মাস, তো কারো ভাদ্র মাস।
শীতের সন্ধ্যা, জবথবু হয়ে বসে আছি জানলার ধারে, ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে বাড়ির কিচেন বাগানে। মেঘ গুর গুর করে। অকালে বৃষ্টি নামলো ঝেপে। বাগানের দিকে আলোর বাল্বটা ফটাস করে ফেটে গেল। উঃ অন্ধকার, নিকশ অন্ধকার। একটু পরে বিজলি গেল চলে। অন্ধকার ভিতরে-বাইরে।
একটু দুরে বাজছে সানাই,কোলাহল আসছে ভেসে।ফটফট জেনারেটরের শব্দ। এটা নিশ্চয় বিয়ে বাড়ির শব্দ। শব্দ ঢুকতে চাইছে আমার মনের ভিতরে। ঘুলঘুলি বিহীন এ. সি. মনের ঘরে বন্দী ইচ্ছা গুলোকে বালিশ চাপা দিয়ে মারবে বলে। ভিতরে চলছে রাগ, ঘৃণা, অনুকম্পার সিড়ি ভাঙা ওঠানামা খেলা। কখনো রাগ, কখনো ঘৃণা, কখনো অনুকম্পা একে অন্যের গায়ে চেপে পরছে। আর বলছে তুই গরীব তোর উঠে দাঁড়ানোর স্বাদ কেন এতো।
আজ সুচেতার বিয়ে। আমার অর্ধমৃত ইচ্ছাগুলো দিয়ে তৈরি রাস্তা দিয়ে বরের গাড়ি ঢুকলো পাড়াতে। ইচ্ছাগুলোর অবশ্য চোখ নষ্ট হয়ে গেছে একমাস আগে থেকে। ওগুলো আজ অন্ধ। ঘুলঘুলি বিহীন মনের এ.সি. ঘরে বন্দী হয়ে আছে। ছদ্মবেশেও বের হওয়ার উপায় নেই। বের হলেই উলুধ্বনি দেবে গলা টিপে। তাই ওরা আজ স্বেচ্ছা বন্দী মনের অন্ধকার কুঠিতে।
কি আর করবে ওরা, ইচ্ছা, ভালোবাসা, স্বপ্ন গুলোর যে একটাই সূর্য ছিল। সে আজ যাচ্ছে অস্তাচলে। নিকশ অন্ধকার আসছে ধেয়ে। অন্ধকারে তো বাইরে বের হওয়া যায় না! তার চেয়ে ঘরে বন্ধী থেকে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করা ভালো;তাতে অন্ততঃ অন্যের কোন অসুবিধে হয় না। জগতে স্বাভাবিক নিয়মে খাওয়াদাওয়া,ঘোরাফেরা চলতে, কেউ কোন টেরটি পর্যন্ত পায় না।