Manik Boiragi

Abstract Tragedy

3.9  

Manik Boiragi

Abstract Tragedy

মনে পড়ে পহেলা বৈশাখে

মনে পড়ে পহেলা বৈশাখে

2 mins
276



মা ফজরের নামাজের পর পরই ঘরের চারপাশ আমশরতি,সোনা-রুপা একটি মাটির কলশিতে ডুবিয়ে রাখতো। আমশরতির চুবিয়ে চুবিয়ে পানি ঝাড়ত ,চুলায় রান্না চাপানোর পূর্বে শুকনা নিমপাতা-ডালের লাকডি দিয়ে আগুন জ্বালাত। গিরমিতিতা নামক শাকের সাথে বিভিন্ন প্রকার সিমের দানা১ছই,২ফেলু৩রঙ্গুম্যা চই৪কামরাঙা চই৫ মটর আরোকত কি রান্না করে খাওয়াত।দুপুরে চালের রুটি দিয়ে শিরনি(পায়েস)খেতাম,ভিন্নিধানের মধুভাত,পাক্কন পিটা,চইপাক্কন,আতিক্কা পিটা আরো কতকি খেয়েছি।

আমাদের পাড়ার পাশে হিন্দু পাড়া তারপর বিশাল বিল।বিলে ধানকাটা সারা হয়েছে কিছু কিছু। ধানের নাড়া ছাফকরে মেলা বসতো। আমরা সকাল সকাল নতুন রঙিন জামা পড়ে মেলায় যেতাম।

মেলায় হিন্দু মুসলমান কোন ভেদাভেদ ছিলো না। 


বাবার বান্ধু নরেন কাকা,নরেন কাকার মেয়ে নবনী আসতো আমাদের বাড়িতে মেলার খই লাড্ডু নারকেল নাড়ু নিয়ে। তার সাথে ভাব ভাব ছিলো।

চারদিকে গোমড়া ভাব,দ্যাশে পুলিশ আর্মিতে গিজগিজ করছে।বাবা বলছে শেখ সাহেব কে খুন করে মুস্তাক ক্ষমতা নিছে,এরপর জিয়া।রাতের আঁধারে খুব সন্তর্পণে ভারতে চলে যায়।বাবার মুখে শুনেছি রাজাকারেরা একাত্তরে যা পারেনি এখন তারও অধিক হবে। জিয়া ক্ষমতায় এসেই নবনীদের বাড়িঘর লুট করে কিছু লোক। 

নবনী কাকা কাকিমা ইন্ডিয়ার কোথায় আছে কেমন আছে জানিনা।নবনী কে বৈশাখ এলেই মনে পড়ে।মা নবনী কে বউ বলে খ্যাপাতো, মনে পড়ে।

মাঠের উত্তর পাশে নবনীদের বাড়ি,সেই বাড়ি, মাঠ এখন নেই, মাঠে ধান চাষ নেই,নেই কোন মেলা, নেই দাড়িয়াবান্ধা, ডাংগুলি খেলা। মাঠে এখন উঁচু উঁচু দালান।এই দালানের জঙ্গল কে বলা হয় আবাসিক এলাকা।

আবাসিক এলাকায় নতুন নতুন সাহেবি মানুষ,ছোট ছোট গাড়ি করে আসে যায়,সেই গাড়ির ভেতর সাজানো মেমসাহেব দেখাযায়। 

আমাদের পাড়ার শিক্কিত নারিরা ওসব জানেনা, করেও না ।হাবিবা খাতুন নেই সোনা-রুপার পানি দিয়ে গোসলও করতে হয়না।

প্রতিটি বৈশাখে মা তোমাকে দারুন ভাবে মিস করছি। প্রতিবছর বাংলা আকবরি সন এলেই আমার মা- নবনী কে কমনে পড়ে।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract