Unmask a web of secrets & mystery with our new release, "The Heel" which stands at 7th place on Amazon's Hot new Releases! Grab your copy NOW!
Unmask a web of secrets & mystery with our new release, "The Heel" which stands at 7th place on Amazon's Hot new Releases! Grab your copy NOW!

Manik Boiragi

Abstract

5.0  

Manik Boiragi

Abstract

অর্জুনের কান্না

অর্জুনের কান্না

3 mins
906



কাছারি ঘরে থাকতাম। কাছারি ঘর দোয়ানা বাঁশের তজ্জা করে বেডার ঘর।

ঘরের ছাঁট ছিল চাপালিশ কাটের,কাঠক্ষোদায় করা।সেই আদ্যিকালের বাড়ী।শুধুমাত্র দুটি জানালা কাটাছিল,লোহার শিকদিয়ে কাটের।একটি পশ্চিমে আমার শিতান বরাবর।বড় জানালা টি দক্ষিণ দিকে।জানালার পাশে দুটি জমজ ছাতিম গাছ ।পশ্চিমের জানালার পাশে দুটি আম ঘাছ ও কাটাল গাছ।

এখন আম্রমুকুল আর ছাতিম ফুলের উচ্ছল যৌবন।পুবের দরজার দু পাশে বেশি আর চাপা ফুলের গাছ।এই গাছ গুলি দ্বিজেশন শর্মা দেখলে দাদি বৃক্ষ বলতো।সেই দিদি মা মরে গেছে কত যুগ আগে।

ভর পূর্ণিমায় চাপা ও বেলি ফুল ফুটতো দিদি মা আসতো আমাকে সোহাগ করতে।তিনি আসতেন চন্দ্র দেশ থেকে।ঠিক একি ভাবে ছাতিম আর আম্র মুকুলের সময়, সাথেএক তাগড়া যুবক আসতো।সেই বলি খেলার মাঠে যেমন বার্মা মুলুক হাতি প্রকৃতি ও গয়ালের শিং উঁচিয়ে আসতো আমাকে তাড়াতে।

দিদি মা কে, কি অপরুপ লাগতো ততোবারই আমি তার প্রেমে পড়তাম।দিদি মা যখন আমার উস্কো কুস্কো চুল জৈতুন তেল মেখে মাথা আছড়ে দিতো তখোন ঐ বুনো গয়াল টি গুত গুত করতো।

দিদি দাত খিলখিলিয়ে হাসতো,কত ঢং করে পানের পিক ফেলতো।সেই পানের পিকের একটি মাদকিয় গ্রাণ আছে।সেই গ্রাণে উম্মাতাল হতাম।আমি দিদি মাকে বুকে জড়িয়ে ধরতাম।এভাবেই আমার স্বপ্ন ঘুমে ফজরের আজান হলে বাবা এসে ডাকতেন।

ইকামুতসালাতা,হাইরুম মিনান নাউম।দিদি কে আর খোজে পাইনা।


একদিন এক্কান্নবর্তী সংসারে ভাঙ্গল ধরলো।

প্রায় প্রতি রাতে চাচা চাচি ও বিবাহিত ভাই ভাবিদের তুমুল ঝগড়া হতো চিল্লা চিল্লি হতো।

হটাৎ সকালে চাচা চাচি ভাই ভাবিদের বিশাল বিশাল তর্ক যুদ্ধ হলো।আর একদিন

গলা ফাটা গাল মারামারি চিৎকার শুনে শুনে 

ফজর ইশরাকের নামাজ পড়ে বাড়ী ফেরার পথে উঠানে দুই পক্ষ হাড়ু হাড়ু খেলার মতো একে অপর আয় আয় করে একদল আর এক দল কে ডাকছে। এভাবেই সংসার পরিবার সংঘের যৌথ চাষাবাদের যৌথ জীবন ভেস্তে গেলো।

মুলত মানুষ প্রকৃতির অবাধ্য প্রাণী।মানুষ বড়ই ভোগী লোভী স্বার্থপর তার নিজের অজান্তেই।

মানুষের ভেতর যতদিন প্রাকৃতিক স্বত্বা বিরাজমান থাকবে মানুষ ততোদিন ততোধিক মানবিক থাকবে প্রকৃতির মতো

সুন্দর থাকবে অরণ্যের মতো।

আমি চিরকালই বুনো থাকতে চাই

আমি চিরকাল স্থীর বয়ে চলা নদ থাকতে চাই

আমি চিরকাল প্রকৃতির মতো প্রাকৃতিজ থাকতে চাই।


প্রকৃতির এক অদ্ভুত খাম খেয়ালি পনা হলো মানুষ 

মানুষ আমাকে দিবেনা প্রকৃতি হতে

মানুষ প্রকৃতিরও এক অদ্ভুত খেয়ালির মানুষের জাত আমি

পৃথিবীর প্রথম এক কোষি এমিবার প্রতি আমার চরম করুণা ও মায়া হয়।এককোষি ভাঙ্গনের ফলে মানুষ গোত্রে আমার জন্ম তন্তু।অথচ আমার বাস করার কথাছিলো সাগর জলে।মানুষের কোলে পিঠে স্থন্য পানকরে নিয়ত জ্বলছি।

তবুও মনেপড়ে মাকে মনে পড়ে।তবুও বাবাকে মনেপড়ে। মন কেউ কোনদিন দেখেনি।এটি একটি বায়ুবিয় স্বত্বা।

আমি যদি জলে থাকতাম মীনের মতো, কাসিমের মতো, আমার কোন মনই থাকতোনা। কাসিম যেমন তার মা বাবা কে চিনেনা জানেনা কে তার পিতা মাতা।চমৎকার এক দায়হীন স্বাধীন জীবন।


ঈশ্বর তাদের এক ভাই এক কন্যা করে পাঠিয়েছেন এ ধরায়।ঈশ্বরের কি অদ্ভুত খেয়ালি ও পরিহাস, কি নিষ্ঠুর পরিক্ষা নিরিক্ষা,তাদের ঔরসে গন্ডা গন্ডা সন্তান সন্ততি দিয়ে।তখোন বাংলাদেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি চালু হতে যাচ্ছা বা শুরু হয়নি,পাকিস্তান কালিন সময়ে নিষিদ্ধ ছিল।

তো আমাদের সকলের জন্ম পাকিস্তান কালিন সময়ে।

তো বংশবৃদ্ধি ই বংশের ঐক্যবদ্ধ শক্তি।জোত জমি দখলে রাখা, অধিক ফসল উৎপাদনের নিমিত্তে অধিক সন্তান উৎপাদন। গোলাভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ।শ্রম দাও খাও আর সন্তান উৎপাদন করো।

পালাপার্বণ এলে পিটাপুলি,খাও পান করো তালের রস,সোম রস আর নাছো।এটাও একপ্রকার প্রাকৃতিক জীবন উৎসবে মাতোয়ারা। 


তবুও আমি প্রকৃতির মতো একা হতেই জন্মেছিলাম।প্রতারিত হতেই জন্মেছিলাম।অর্জুন গাছ হয়ে জন্মেছিলাম।অর্জুন গাছই হয়ত আমার জন্মতন্তুর বৈশিষ্ট্য।

অর্জুন কাউকে কিছুই বলেনা,সে নিরব থাকে,ঠাই দাঁড়িয়ে থাকে।কাটে বাকল,কাটে শাখা প্রশাখা, ছিড়ে কচি কচি আদুরে পাতা।

কেউ কেউ মুকুলও নিয়ে যায়,কেউ নিয়ে যায় ফল।

কেউ মাটি খোঁড়ে শিকড়।তবুও অর্জুন কিছুই বলেনা।

ছুরির তিক্ন ফলায় খেজুরের রস বের করার মতো কি নির্দয় নিষ্ঠুরভাবে কেটে সাদা সাদা রক্ত বের করে নিয়ে যায়। তখোন আমি চিৎকার করি,কেউ শুনেনা। অর্জুনের কান্না কেউ দেখে না। 

মা আমার কাছারি ঘরের দক্ষিণা জানালার পাশে একটি অর্জুন গাছ কি ভেবে রোপন করেছিলেন,এখন আমি টের পাই।



Rate this content
Log in

More bengali story from Manik Boiragi

Similar bengali story from Abstract