STORYMIRROR

Manab Mondal

Abstract Drama Romance

3.0  

Manab Mondal

Abstract Drama Romance

মেকআপ

মেকআপ

6 mins
20

ওএনড্রিলার খুব ভয় পেয়ে গেছে। ফোনে ওর গলাটা বড়ো কাঁপছে। ও এখন  যে আমাকে বিশ্বাস করে এটাই আমার পাওয়া।  আমারও যতো সব ভুলভাল ভাবণা , তবে এ শহরে অনেক বন্ধু আছে কিন্তু আমাকে বিশ্বাস করার কথা গুলো বললো কেন ভাবছো? আসলে ও জানে তন্ত্র সাধনা করি।
যদিও আমি ওকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম, তারাপীঠ শ্মশানে গিয়ে আমি শান্তি খুঁজে পেতাম তাই যাই। বিখ্যাত এক তন্ত্র সাধকের কিছু কাজ আমি  সাহায্য করে দিই মাত্র। আমি তান্ত্রিক না। উনি আমাকে কিছু গোপন বিদ্যা শেখাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমি ওনাকে সাহায্য করি তাও এক ঘটনা চক্রে। ঐ সাধকের আমার এক নিকট আত্মীয়,আমার এক নিকট আত্মীয় একসময় তার প্রধান শিস্য হয়ে মানুষ জন কে ঠাকাছিলো। কিন্তু তন্ত্র সাধনা সিদ্ধ লাভ অত সহজ ব্যপার নয়। দেহতত্ত্ব বুঝতে হবে। পাতি কথায় যে তান্ত্রিক সে মুক্তি চায় এ সংসার থেকে। তাবিজ কবজ বিক্রেতা সে নয়। তবে মানুষের উপকার জন্য সে কাজ করে বিনা মূল্যে ই।  
কারণ যে ঈশ্বরের সন্তান তাকেতো ইশ্বর দেখবে।
আমি এক শতাংশ সৎ মানুষ নয়। ও চেয়ে ওর ফিয়ানসের দীপঙ্কর ওপর আমি রাগটা পুসে রেখেছি বহু বছর ধরে। দীপঙ্কর এখনো তিন মাস দেশে ফিরেবে না , এর মধ্যে ওর ওপর আমার অধিকার বসিয়ে নেবো। কারণ একদিন দীপঙ্করও একদিন ছল চাতুরী করে ওকে আমার থেকে কেড়ে নিয়েছিলো।
মনে পড়লো গেলো দশ বছর আগে করা কথা।  এসি কোটাতে APC মতো কলেজে সুযোগ পেয়েছি সেটাই আমার চাপ হয়ে গেছে। ক্লাসটা আমাকে ভালো করে করতে হয়। আসলে পলিটেকনিকে সবাই গ্রুপ স্টার্ডি করলেও , ইয়ার ব্যাক পাওয়া বড়লোকের বেটা দীপঙ্কর সাথে আমার একটু ঝামেলা হয়েছিল। আমি কলেজে সাইকেল নিয়ে আসতাম। আমার মামা বাড়ি কাছেই । যেদিন আমি মামাবাড়ি থেকে আসতাম, আমার সাইকেল পিছনের সিটি বাসে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া দাদা আসতো।  ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে কোনো রাজনৈতিক দলের ইউনিয়ন চলতো না আগে ভোটে লড়াইটা হতো ডিপার্টমেন্ট ডিপার্টমেন্টে। সে হিসেবে সিভিল মেকানিকাল ছত্রিশ কা আখড়া। কিন্তু আমার তাতে কি ? ও আমাকে সাইকেলের হাওয়া খুলে দিতো, হাতে নাতে একদিন সব সিনিয়র ধরে ওকে নিয়ে  গিয়ে  প্রিন্সিপাল ঘরে নিয়ে যায়। তারপর থেকেই ওর কথায় কেউ আমাকে  হেল্প করতো না । অনুরোধ করলে  ওর চ্যালা চামুণ্ডা রা বলতো " sc কোটায় গ্রুপ ডিতে চাকুরী পাওয়া যায় ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যায় না।"

দ্বিতীয় বর্ষে কোন VIP কোঁটতে ওএনড্রিলার এলো আমাদের কলেজ।  মোমের পুতুল মতো দেখতে। মেকআপ করেছিল হালাকা, তবু ও কোন কবির কবিতা মতো সুন্দর, আর ছন্দময় ছিলো ওর চলাফেরা।  আমি প্রথম ব্যাঞ্চেই বসতাম,  মুনমুন ছাড়া আমার বেঞ্চ কেউ বসতো না।  আমার হৃদপিণ্ডের গতি বাড়িয়ে ও বসলো আমার পাশে। কিছু দিনের মধ্যেই, প্রথম দিন থেকেই ওকে নিয়ে টিস করছিলো, সেই দিন ওর একটু ঢোলা টপ পরে এসেছিল। ওর ব্রায়ের ফিতাটি দেখে , বাজে বাজে কথা বলছিলো দীপঙ্কর। আমি হাত দিয়ে ওটা ঠিক করে দিতে গেছি বলে আমাকে ওল্লটে, সটাং আমার গালে চড় বসিয়ে দিলো। প্রফেসারকে  ও বললো আমি ওকে টিস করি রোজ আর  আজ সাহস দেখিয়ে গায়ে হাত দিয়ে ফেলেছি।

যদিও প্রফেসার কথাটা মানলে না। কারণ সে বছর আমি আর দীপঙ্কর নির্বাচনে প্রতিদন্দ্বিতা করবো সবাই জানতো। আর দীপঙ্কর আর ওএনড্রিলা মধ্যে প্রেম চলছিলো সেটা আমি জানতাম না। আমি যে নির্দোষ ছিলাম, তাঁর প্রমান ছিলো। আমাকে বাচাতে মুনমুন আমার লেখা চিরকুট দেখালো। যেখান আমি দুইদিন আগে ওকে বলেছিলাম ওকে একটু সতর্ক করে দিতে। আমি সে বছর নির্বাচন থেকে নাম সরিয়ে নিলাম। সবাইকে বললাম আমার কাছে বন্ধুত্ব আগে। আর ঐ ঘটনা কে গুরুত্ব না দিয়ে আগের মতোই বন্ধুর মতো মিসলাম সবার সাথে।
ওর মন গোলতে শুরু করলো। একদিন বাড়িতে ডাকলো ও আমাকে।যাইহোক sorry সাথে, বাড়তি একটা কিস পেয়ে ছিলাম সেইদিন আর কিছুটা আদর। যদিও ও হয়তো প্রেম প্রস্তাবটা দিয়েছিলো ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রইং গুলো করিয়ে নেবার জন্য। যাইহোক ইঞ্জিনিয়ার হওয়া হলো না আমার। এখান মুম্বাই এ একটা খাবারের রেস্টুরেন্ট চালাই দুই বন্ধু মিলে।
দীপঙ্কর বড়োলোকের ছেলে, মার্চেন্ট নেভিতে কাজ করে, লন্ডন থেকে বারো লক্ষ টাকা খরচ করে Bsc পাশ করেছে। যানে আমাদের বাড়িটা তৈরি করতে দশলক্ষটাকা খরচ হয়েছিল। তাও তো ব্যাঙ্ক লোন শোধ করলাম তেরো বছরের। ওএনড্রিলা শুনেছিলাম এম বি এ করেছে কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তবে বাবার অনেক পয়সা আছে, নিজে নায়িকা হয়েছে, কয়েকটি সিনেমাতে  ওর বাবাই প্রোডাকশন হাউজ খুলে দিয়ে ছিলো। সুবিধা না করতে পেরে কিছু রিয়ালিটি শোতে বিচারক সাজার কাজ এসেছে মুম্বাই এ।  যাইহোক এখনে উঠেছে ও দীপঙ্কর এর ফ্লাটে।  যদিও ওতে দেশে ফেরে ছয় মাসে নয় মাসে, তবু এতে আপত্তি ছিলো দীপঙ্কর এর।
এখনে এসে বোধহয় নাইট ক্লাবে ট্লাবে গিয়ে ওএনড্রিলা মদ হুঁকা সব খায়। ও বলছে প্রতি দিন ওর মেকবক্স কেউ ব্যবহার করে ফাঁকা করে দেয়। রাতে ওর সব পোশাক ব্যবহার করে। ঘরটা সাদা ধুয়াতে ভরে যায়।
যাই একটা হোমের সামগ্রী  কিনে রাখতে বলে ছিলাম। কিন্তু হোমে বসে আমার , গা ভয়ে হিম হয়ে গেলো হোমের জন্য যে যন্ত্র তৈরি করবো, কে যেনো তাতে আমাকে সাহায্য করছে। নীল রং , ভেরে দিলো কয়েকটি পাঁপড়িতে, হলুদ রং ভরে দিলো। সবচেয়ে বড়ো কথা কাঠ গুলো সাজিয়ে দিলো। আমি ভয় পেয়েছি দেখে। ওএনড্রিলা আরো ভয় পেয়ে গেলো ।
আমি সাহস করে জিজ্ঞেস করলাম " আপনি কে?"
একটা হাসি হেসে  একটা মেয়ে বললো " ওরে তান্ত্রিক তুই জেনে নে।  আমি কে ? ভুত তাড়াতে তুই কার্যসিদ্ধির যজ্ঞ করছিস কেন?"
আমি বললাম " ওএনড্রিলা আমার বন্ধু আমি , ভেবেছিলাম ও ফ্যাস্টেশানে আছে, তাই ভুল ভালা জিনিস কল্পণা করেছে। ভালো কাজ পেলেই সবভুলে যাবে। ভুত কখনো মেকআপ ব্যবহার করে? আর আপনি কি ভাবে জানলাম আমি কার্যসিদ্ধি হোম করছি। "
মেয়েটা একটু নিচু গলায় বললো "আমি কে??
এ ঘরটা আমার ছিলো একদিন।জানিস আমি যখন বুঝতে পারলাম , আমি দীপঙ্কর এর বাচ্চা কনসিভ করেছি, তখন দীপঙ্কর  যাতে  বিয়ে করে নেয় তখন  আমি এরকম হোম যজ্ঞ করিয়েছি কতো। কিন্তু ও তো আমাকে মেরে ফেললো H2s gas দিয়ে। নিজে আগে থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে এসেছিলো তাই ঠিক বেঁচে বেড়িয়ে গেলো । তাই ওএনড্রিলা কে আমি সাদা ধোঁয়া দেখাই। এই ফ্লাটটা ও আমাকে দেবে বলেছিলো এখন ওকে এনেছে। আমি মেকআপ করি রোজ দেখি, ওর পোশাক পরে দেখি। আমাকে  ওর মতো ভালো দেখতে লাগি কিনা ।  কিন্তু ওর চেয়ে বেশি সুন্দরী । জানিস আমি ও তো সফল মডেল ছিলাম, কিন্তু বাইরে রূপ জৌলুস তো দুই দিনের, একটা মেয়ে সফলতা মা হওয়াতে আমি নায়িকা হতে চাইনি মা হতে চেয়েছিলাম ।"

আমার আর ভয় লাগছে না , কিন্তু কষ্ট হচ্ছে বুকের ভিতর।  আমার চোখে জল চলে এলো উনার কথা শুনে।  আমি বললাম " ওএনড্রিলা তো কোন দোষ করেনি ওকে ছেড়ে দিন আপনি।"
উনি বললেন " ওরে পাগল তুই কাঁদছিস কেন? বোকা তুই বুঝি এখনও ওএনড্রিলাকে ভালো বাসিস? কিন্তু তুই ও তো একটা ছেলে ।মেয়েদের মতো বেহিসাবি নস। ঝুঁকি  সেফটি ফ্যাস্ট আসার সময় কনডম কিনে আনতে ভুলিস নি অথচ কামাক্ষ্যার সৌভাগ্য কুণ্ডের জল আর তোর গুরুর রুদ্রাক্ষের মালাটা আনতে ভুলে গেছিস। ঠিক আছে। এন জয় কর আমি আসবো ফিরে দীপঙ্কর ফিরলে।"
ঘরটা আবহাওয়াটা বদলে গেলো , আলো গুলো একটু জোরালো হয়েছে। ওএনড্রিলা আমার পকেটে থেকে  কনডম প্যাকেট বেড় করে কেমন যেনো কামাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে  আমাকে  জিজ্ঞেস করলো। "এটা কি জন্য এনেছিস? "
কি কথা বলে মেকআপ দেবো আমি বুঝতে পারলাম না।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract