লক্ষ্মী প্রবেশ
লক্ষ্মী প্রবেশ
সারা বাড়িতে ও আলাপনা দিয়েছে নিজে হাতে। পূরো বাড়িতে প্রদীপের আলো দিয়ে সাজিয়ে দেওয়ায় দারুন লাগছে বাড়িটাকে। প্রদীপের আলো থেকে উজ্জ্বল আর সুন্দর আমার বাড়ির সদ্যাসদের মুখের আনন্দ হাসি। পাঁচ ছয় বছর পর মা বাবার মুখে হাসি ফিরে এসেছে। বাড়ি থেকে যেনো মনখারাপ অন্ধকারটা দূর করে দিলো দীপান্বিতা এই আলোকময় রাত্রি।
মা বললো আজ প্রথমবার আমাদের দেশের বাড়ির নিয়ম মেনে পূজা হচ্ছে এ বাড়িতে। যদিও রূপার সহযোগিতায় আজ সব নিয়ম মেনে পূজা হচ্ছে তবুও সব কেরিডটা রিয়া ম্যামেএর । ধুর আমিও কি রকম না আজকের দিনেও ওকে ম্যাম বলছি।
হিন্দুদের উৎসব দীপাবলি। রাম আর সীতা এই দিন অযোধ্যায় ফিরেছিলেন। তাই আলো দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয় সব বাড়িকে আজ। কিন্তু বাংলার নিজস্ব একটা সংস্কৃতি আছে এই উৎসবকে ঘিরে । অলক্ষী বিদায়। অলক্ষ্মী অমঙ্গল ও অশুভের প্রতীক। তাই অলক্ষ্মী বিদায় করে লক্ষ্মীবরণই এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য। রিয়া নাকি আজ নিজে গোবর দিয়ে অলক্ষ্মীর এবং পিটুলি দিয়ে লক্ষ্মী, কুবের ও নারায়ণের মূর্তি তৈরি করেছে। উঠানের এক কোণে অলক্ষ্মীর মূর্তি রেখে প্রথমে পূজা করেছে। পূজা শেষে আমার ভাইএর বৌ রূপা , রিয়া , আমাদের কাজের মেয়ে মিঠাই কুলো পিটাতে পিটাতে অলক্ষ্মীকে তেমাথায় নিয়ে গেছে। সেখানে সমবেত কণ্ঠে 'লক্ষ্মী আয়, অলক্ষ্মী যা' ধ্বনি সহকারে মূর্তিটি ফেলে এসেছে। ফেরার পথে, আলোর রোশনাই মশালের চল। কোথা থেকে ঢাকিও জোগাড় করেছে ও। তাই ঢাক, কাঁসর, ঘণ্টা বাজতে ফিরে ওরা । এরপর গৃহিণীরা লক্ষ্মীর পূজা হবে রাতে। রিয়া আর রূপা বাড়িটা প্রদীপ দিয়ে সাজিয়েছে।
বাবা মা খুব খুশি। দেশের বাড়িতে এরকম ভাবে লক্ষী পূজা হতো আমাদের শহরে কোন দিন করা হয়নি। মায়ের চোখে জল ওকে বাবার দেওয়া লাল শাড়িটা পড়তে দিলো। শাড়িটা পুরানো কিন্তু। বাবা চাকুরি পেয়ে প্রথম মাইনে পেয়ে মাকে এই শাড়িটা কিনে দিয়েছিল।
রিয়া কাল পর্যন্ত আমার ম্যাম ছিলো। আমি ওদের রেস্টুরেন্ট হেড সেফ হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলাম বছর দুয়েক আগে। কাজ কর্মে করার প্রয়োজন ছিলো না। কারণ বিদেশে থাকাকালীন আমার রোজগার করা পাঠানো টাকা দিয়ে আমাদের পরিবারিক দুটো ব্যবসা গড়ে উঠেছে। আমার ইঞ্জিনয়ার ভাই প্রোমটারি ব্যবসা করে। আমার ভাইএর বৌ রূপা লজিস্টিক ব্যবসা সামলায়। দুই জায়গায় গিয়ে কাজ করতে দেখেছি বস গিরি করার প্রবল ইচ্ছা থাকলেও বস হবার যোগ্যতা নেই। অথচ এই দুই ব্যবসায় কর্মচারী হবার যোগ্যতা নেই। তাই রিয়াদের রেস্টুরেন্ট আমি কাজ যোগ দিয়েছিলাম। কারণ বিদেশে গিয়ে চাকুরী ইচ্ছে আমার ছিলো না।
রিয়া হোটেল ম্যানেজমেন্ট করা। আর আমি সাফাই কর্মী থেকে সেফ হওয়া মানুষ। তাই অনেক সময় আমাদের কথা কাটাকাটি হতো কারণ থিউরি মেনে বাস্তব সব সময় কাজ করা যায় না। রিয়া সাথে আগে কেউ এভাবে কথা বলতো না। হয়তো চাকুরী বাঁচাতে। এটা দেখে ওর বাবা সুজন বাবু আমার বাড়িতে ওর বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে। বিশ্বাস করুন সেইদিন রাত আমি ভয় শহর ছেড়ে গোয়া পালিয়ে যাই। রিয়া হয়তো আমাকে বিয়ে করতে রাজি ছিলো না। কিন্তু পালিয়ে গিয়েছিলাম সেটা আমার ভুল ছিলো তাই আমাকে তুলে নিয়ে এসে বিয়ে করে ও। কিন্তু বিবাহ হলে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক গড়ার সুযোগ দেয় নি ও আমাকে। তাই দুই একদিন আগে। রিজাইন লেটার আর ডিভোর্স লেটার রেখে বেশ করে কথা শুনিয়েছিলাম। মেয়েদের মন বোঝা দায়। ও আত্মহত্যা করা চেষ্টা করলো। স্বামী হিসেবে নয় একটা সাধারণ মানুষের যা করা উচিত তাই করলাম। রাতদিন এক করে ওকে ফিরিয়ে আনলাম মৃত্যু মুখ থেকে। উপহার হিসেবে ঘর জামাই এর জীবন থেকে মুক্তি দিয়ে । ও চলে এলো এ বাড়িতে ।
এখন ও আমার জীবনের বস হিসাবে মেনে নিয়েছে। পূজা করবে বলে স্নান করছে ও। কিন্তু শাড়িটা ঠিক মতো পড়তে পারেনি। পরে দিলাম ঠিক মতো । শাড়ি পরাতে গিয়ে ওর পেটে বুকে একটু হাত লেগে যাওয়ায় বুঝতে পারলাম আমার খাইসটা বশের ভিতরেও আদর খেতে চাওয়া একটা মেয়ে লুকিয়ে আছে। ওর চুলটা ভিজে আছে। আমি কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হঠাৎ ওর ঠোঁটটাকে ভিজিয়ে দিলাম আমার ঠোঁট দিয়ে।
,,,,,,

