লেখালেখির অনুপ্রেরণা
লেখালেখির অনুপ্রেরণা
রিনা একদম সাদামাটা গৃহবধূ। সংসারের কাজ ছাড়া কখনো কিছু করেওনি আর করতেও চায়নি। ইতিহাস নিয়ে স্নাতক হওয়ার পরেই বাবা সরকারি চাকরি করা পাত্র দেখে বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন। সেই বিয়ের পরে যে শ্বশুরবাড়িতে এসে ঢুকেছে তারপর থেকে পরিবারের সাথে ঘুরতে যাওয়া ছাড়া আর বাইরে বেরোয়নি। বিনোদন বলতে শুধুমাত্র শাশুড়িমায়ের সাথে বসে টেলিভিশন সিরিয়াল দেখা। বিয়ের পরেই শ্বশুরমশাই বলেছিলেন যে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে। রিনা সেসব কথা সযত্নে এড়িয়ে গেছে। বিয়ের দুবছরের মাথায় ছেলে অর্কের জন্ম। সেই থেকে ছেলেকে নিয়েই সময় কেটে গেছে।
অর্ক বড় হয়ে পড়াশোনার জন্য চেন্নাই যাওয়ার পর থেকে খুব ফাঁকা ফাঁকা লাগতে শুরু করে রিনার। স্বামীর ব্যবসা বলে কোনোকালেই ওকে সময় দিতে পারেনা। সেইজন্য রিনা হঠাৎ করেই একাকিত্বে ভুগতে শুরু করে।
পুজোর ছুটিতে অর্ক বাড়ি এসে মায়ের মনখারাপের কথা বুঝতে পেরে ফোনে ফেসবুক খুলে দিয়ে যায়। কয়েকদিনের মধ্যেই পুরোনো বেশ কিছু বান্ধবীর সাথে যোগাযোগ হয়। এক বান্ধবী সুমনা রিনার একাকিত্বের কথা মেসেঞ্জারে যেনে ওকে একটা ফেসবুকের সাহিত্য গ্রুপের সাথে যুক্ত করে দেয়।
সারাদিন ধরে বিভিন্ন মানুষের লেখা গল্প পড়ে বেশ সময় কেটে যাচ্ছিল। এমন সময় একদিন রিনা দেখে সেই সাহিত্য গ্রুপে একটা অনুগল্পের ইভেন্ট হচ্ছে। রিনাও একটা গল্প লিখে জমা দেয়। ফলাফল বেরোলে রিনা দেখে যে ও দ্বিতীয় হয়েছে। তারপর থেকে গল্প পড়ার সাথে সাথে লেখাটাও নেশার মতো হয়ে যায়। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নিয়মিতভাবে রিনার লেখা ছাপা হয়। ফেসবুকের সাহিত্যগ্রুপই রিনার লেখালেখির অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়ায়।