কুহেলী
কুহেলী
শুভ্রাংশু! শুভ্রাংশু! কোথায় তুমি?
এই তো আমি এদিকে দেখো। প্লিজ এসো!কাছে এসো। শুভ আমি... আমি.. তোমাকে ভালোবাসতাম। ভীষন ভালোবাসতাম। তোমার অরণ্যের মত বুকে কত লুটোপুটি খেয়েছি। সবই মনে মনে যদিও।তবুও তো সেসব দিনে ভেজা শরীর নিয়ে ঘুমিয়েছি। আমি ভালোবেসেছিলাম তোমাকে। তুমি মিতার জন্য আমাকে কত দূরে ঠেলে দিচ্ছিলে। কি পেয়েছিলে ওর মধ্যে যা আমার ছিল না? আমি কি কম রুপসী ছিলাম বল?
শুভ্রাংশু! এই দেখো আমার এখনকার শরীরখানা।কেমন বাজে, হাড় কখানা বাদে সবটুকু জ্বলে গেছিল যে। আমাকে কি খুব ঘেন্না করবে? আমার সুন্দর রেশমী চুল,উঠে কেমন রোঁয়া -রোঁয়া। শুভ্রাংশু আমাকে ঘেন্না কোরো না প্লিজ। তোমার ঘেন্না আমাকে বাঁচতে দেয়নি আমাকে মরেও শান্তি দেয়নি।
শুভ তোমার আর মিতার বিয়ের দিন আমি গেছিলাম তোমাদের বাড়ি।কি সুন্দর লাগছিল তোমাকে। আর ওকে, একটা প্রানহীন পুতুলের মত লাগছিল। তুমি একটা কথাও বলোনি। কেন শুভ? কেন? মিতা আমার নিজের বোন হয়ে যে বিশ্বাসঘাতকতা করল, তুমি তা মেনে নিলে? একদিন তো আমাকে ভালোবাসতে বল। বিয়ে করেছিলে আমাকে।
আমি বড় একা শুভ। আমার শরীরে কৃমি ঘোরে, হাড়ে বাসা বেঁধেছে কেঁচো। নিজেকে চিনতেই পারিনা। শুভ আমার।সোনা আমার। তুমি শুধুই আমার। তাই যেদিন মিতা কে বিয়ে করবে বলে,ছলনা করে আমাকে রান্নাঘরে পুড়িয়ে মেরেছিলে। আমি শুধুই তোমাদের ভালোই চেয়েছিলাম। একটুও কষ্ট হয়নি। কিন্তু আমার বুবাই ও কেন কষ্ট পাবে সোনা। ওর কি দোষ।তুমি ওর খেয়ালটুকুও রাখোনা।
আর না শুভ আর না। আমি যে মুক্তি পাচ্ছিনা শুভ। এসো আমার কাছে। শুভ্রাংশু? কোই তুমি।চল না। একা একা বড় কষ্ট। ক্ষয়ে গেছি দেখো। দেখো আমায়।
তাকাও আমার দিকে শুভ।আমি আশাবরী।
রেডিওয় অদ্ভুতুড়ে নাটকটা শুনতে -শুনতে রক্তিমের মনে হল, গাড়িতে ওর পাশের সিটে বসে আছে ওর মৃতা স্ত্রী মালিনী। মালিনী কে রক্তিম খুন করেছিল , ওর স্ত্রীর বোন শালিনীর জন্য। সামনে লেভেল ক্রসিং এ তখন ঝড়ের বেগে দ্রুতগামী এক্সপ্রেস ছুটে আসছে।