Dibakar Karmakar

Abstract Fantasy Others

4.5  

Dibakar Karmakar

Abstract Fantasy Others

কলঙ্কিত

কলঙ্কিত

2 mins
1.0K



এই কাহিনীটা বিদীপ্তার, যে নাকি একজন সমাজের নাম দেওয়া so called "হিজরে"। 


অন্যদের মতোই ট্রেনে , বাসে হাততালি দিয়ে বিদীপ্তা টাকা রোজগার করে । সে পড়াশোনা করে ডাক্তার ও হতে চেয়েছিল, কিন্তু কিছু লোকেরা সেটাও করতে দিল না। ওকে জোর করে এরকম কাজ করতে বাধ্য করলো। 


কিন্তু হার মানিনি বিদীপ্তা। ট্রেনে বাসে হাততালি দিয়ে  যত টাকা রোজগার করত বেশিরভাগ টাকা জমিয়ে জমিয়ে সে পড়াশোনার কাজে লাগাতো । 


ওর স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করবে এবং সমাজকে জানাবে যে "হিজরে" হওয়া কলঙ্কিত হওয়া নয়। 


অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করে দ্বাদশ শ্রেণী পাস করল করল সে । ওর পরিবারে চাইছিল না আর পড়াশোনা করুক বিদীপ্তা।  কিন্তু ও হার মানেনি সে যতটুকু রোজগার করত তা দিয়ে তার পরিবারও চালাত এবং তার পড়াশোনার খরচ ও টানতো।  


বিদীপ্তা Neet পরীক্ষা দিয়ে কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশুনা করে  ডাক্তার হতে চেয়েছিল। 


একদিন ট্রেনে ওর কাজ করছিল তখন সে একটা মহিলার কাছে এসে হাততালি দিয়ে টাকা চাইতে লাগলো । ওই মহিলার একটা ছেলে ছিল ওই মহিলার ছেলেটা ওর মাকে বলল মা ওরা এভাবে হাততালি দিচ্ছে কেন তারপর বিদিপ্তা ওই ছেলেটার মাথার ওপর হাত বুলিয়ে বলছে এটাই আমাদের জীবন। তারপর ওই মহিলা টা তাড়াতাড়ি ওর ছেলের মাথার উপর থেকে বিদীপ্তার হাত সরিয়ে বলছে "এই ছুবেনা তুমি" এবং ওর ছেলেকে বলছে ওদের কাছে যাবি না বাবা ওরা "কলঙ্কিত"। এ কথা শুনে হাসি দিয়ে বিদীপ্তা বলল হ্যাঁ আমরা কলঙ্কিত কিন্তু আপনাদের মত মানুষের জন্যই। এ কথা বলে ওরা চলে গেল। 


কিছুদিন পর সে Neet পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল তখনই রাস্তা পার হবার সময় হঠাৎ করে দেখে একটা বাচ্চার এক্সিডেন্ট হয়েছে এবং সে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার ধারে পড়ে আছে । তারপর সেখানে গিয়ে দেখে রক্তাক্ত অবস্থায় সে বাচ্চাটা, ট্রেনে যার মাথার উপর হাত বুলিয়ে ছিল বিদীপ্তা । আশেপাশে কেউ ছিলনা ।বাচ্চাটাকে তাড়াতাড়ি করে সে হসপিটালে নিয়ে যায়। 


বাচ্চাটাকে দেখে সেখানে ডাক্তাররা বলে যে ওর "o negative" রক্ত খুব তাড়াতাড়ি দরকার না হলে বাচ্চাটার প্রান যেতে পারে। সে সিদ্ধান্ত করলো যে, ও রক্ত দেবে  কারণ তার রক্ত "o negative" ছিল । বাচ্চাটাকে রক্ত দেওয়ার পর বাচ্চাটা নিরাপদ হয়ে যায়। 


তারপর ছেলেটির মা এসে বিদীপ্তা কে  ধন্যবাদ বলে এবং সেদিনের জন্য ক্ষমা চায়। তখনই ডাক্তারবাবু তাকে বলে তুমি আজকে ছেলেটাকে বাঁচিয়েছো। তুমি না থাকলে মনে হয় ছেলেটাকে বাঁচানো যেত না। কিন্তু তুমি ব্যাগ কাঁধে নিয়ে কোথায় যাচ্ছিলে । 


বিদীপ্তা বললো    আমি Neetপরীক্ষা দিতে যাচ্ছিলাম। তারপর ওকে রাস্তায় পরে দেখে তাড়াতাড়ি হাসপাতলে নিয়ে আসি ।তারপর ডাক্তার বাবু বললো তোমার এত বড় পরীক্ষা ফেলে দিয়ে তুমি এই বাচ্চাটাকে বাঁচালে যার মা তোমাকে অপমান করেছিল । 


বিদিপ্তা হেসে বলছে পরীক্ষা আরেকবার এসে যাবে ডাক্তার বাবু, কিন্তু এই বাচ্চাটা আরেকবার আসবেনা। ওর প্রাণ আর একবার ফিরে পাবেনা । ওর মা আর একটা সন্তান পাবেনা। আসলে কি ডাক্তার বাবু আমরাও মানুষ আমাদেরকে শুধু অন্য নজর দিয়ে দেখে সবাই ।আমরা অন্য মানুষের মত বাঁচতে চাই কিন্তু সমাজ আমাদের সেই সুযোগটা দেয় না। 

    আর দিনের শেষে আমরা তো আবার "কলঙ্কিত"


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract