দিপ্তী পাইলট
দিপ্তী পাইলট


দীপ্তি, পেশায় একজন পাইলট। নিজের বর এবং পাঁচ বছরের ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে দিল্লিতে থাকে। ওর বর সমীর, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ।ভারতের একটি বিমান সংস্থার সাথে পাইলট হিসেবে কাজ করে দিপ্তী। শেষ 22 তারিখে মার্চের শেষবারের মতো সিঙ্গাপুর থেকে আসে দিপ্তী ।তারপর ভারতে করোনার দাপট বাড়ার ফলে পরিপূর্ণ ভাবে lockdown হয়ে যায় 24 তারিখ থেকে। দিপ্তী, সমীর এবং ওদের ছেলেকে নিয়ে ওরা একসাথে বাড়িতে খুব ভালো সময় কাটাচ্ছিল যেটা সব সময় ওরা পায় না কাজের জন্য।
ওরা নিজের কাজে এত ব্যস্ত থাকে, একসাথে সময় কাটাতে পারেনা। ওরা একসাথে থাকতে পেয়ে খুব খুশি ছিল, কিন্তু কিছু ভারতীয় লোক এখনো বিদেশে আটকে পড়েছিল যারা নিজের পরিবার থেকে খুব দূরে ছিল। কিছুদিন পর ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিলো যে যারা বিদেশে আটকে আছে ওদেরকে ভারতবর্ষে আবার আনা হবে। এজন্য কিছু আপৎকালীন বিমান চালানো সিদ্ধান্ত নিলো ভারত সরকার। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরের দিন ফোনে আসে দীপ্তির কাছে ,বিমান সংস্থা থেকে যেখানে দিপ্তী কাজ করে। বিমান সংস্থা থেকে ফোন করে বলে দীপ্তি তুমি ভারতীয়দের আনতে আমেরিকায় যাবে কিনা
।ভারতীয়দের জন্য, অন্য কিছু কথা না ভেবে দিপ্তী সঙ্গে সঙ্গে হ্যাঁ করে দেয় ।তারপর হঠাৎ ঐদিন রাতেই দীপ্তির ছিল "আয়ুসে
র" খুব জ্বর আসে। রাত্রিবেলা কোন ডাক্তার ছিলনা যে চিকিৎসা করবে তাই ঘরে যা ওষুধ ছিল তা দিয়ে রাত্রি কাটিয়েছে ।দীপ্তির বিকেল ছটার সময় যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু এখানে আয়ুসের জোর কমছিল না ।তারপর দিপ্তী মনে করলো বিমান সংস্থা কে ফোন করে বলে দেবে যে সে যাবে না। যখন ফোন করতে যাচ্ছিল তখন সমীর এসে বলল দীপ্তিকে "তুমি যাও আমি ঘরে সব খেয়াল রাখবো এবং আমাদের আয়ুশেরও খুব ভালো ভাবে যত্ন নেব,আজ তোমার অপেক্ষায় বিদেশে অনেক ভারতীয় নাগরিক বসে আছে ওদের মা বাবা থেকে দূরে আছে তুমি যদি আজকে না বলো তাহলে ওরা ওদের মা-বাবার সঙ্গে থাকতে পারবে না এক সাথে দেখা করতে পারবে না তাই আমি বলছি তুমি যাও আমি এখানে দেখে নেব"।
তারপর বিকেলবেলা দীপ্তি অযূষকে রেখে সমীরের কাছে আমেরিকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিল ।আমেরিকা থেকে 205 জন ভারতীয়দের নিয়ে আসলো ভারতে এবং আসার পর ওকে 15 দিনের মতো home quarantine এ থাকার কথা বলা হয়েছিল। হঠাৎ 12 দিনের মাথায় দীপ্তির জোর উঠলো এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হচ্ছিল, দীপ্তি বুঝে গেছিল যে মনে হয় ওর করোনা পজিটিভ হবে । তারপর ও যখন টেস্ট করে তখন ওর করোনা পজিটিভ ই আসে। তখন হাসপাতালে নিয়ে যায় সমীর। সেখানেই দীপ্তির চিকিৎসা হয় এবং কুড়ি দিনের মাথায় আবার দীপ্তি সুস্থ হয়ে যায় এবং বাড়ি ফিরে আসে।