রিয়াজ (রিয়া -রাজ)
রিয়াজ (রিয়া -রাজ)


আজ আমরা একটা ভালোবাসা গল্পের সাক্ষী হতে চলেছি।
এই গল্পে আছে একটা নায়ক এবং নায়িকা, রাজ এবং রিয়া। দুজনেই কলেজের ব্যাচমেট । রিয়া ছিল খুব সাহসী এবং একটু করা। রিয়া সত্যি কে সত্যি বলার এবং মিথ্যাকে মিথ্যা বলার সাহস রাখত, কাউকে ভয় পেত না।
মোটামুটি কলেজের সব ছেলেরাই রিয়াকে ভয় পেতো।
কিন্তু রিয়াকে প্রথমবার দেখে রাজ প্রেমে পড়ে যায় ওকে সত্যি ভালোবেসে ফেলে। কিন্তু একথা বলার সে কোনদিন সাহস পাইনি ।
তারপর একদিন কলেজের ক্যান্টিনে রাজ রিয়ার সাথে খুব সাহস করে যায় কথা বলতে।
সে যখন কথা বলছিল মনে হচ্ছিল যেন একটা খুব কড়া শিক্ষকের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছে ।
খুব কষ্ট করে সেদিন রিয়ার সাথে কথা বলে কিন্তু রাজ যতোটুকু করা ভেবেছিল রিয়া ততটুকুই মনের নরম ছিল।
তারপর থেকে ওদের বন্ধুত্ব শুরু হয়ে যায় এবং বন্ধুত্ব অনেক গভীরে চলে যায়।
কিন্তু রাজ এ কথা জানত না যে রিয়া ও মনে মনে রাজ কে ভালবাসতে শুরু করে কিন্তু সব কিছুরই একটি অতীত থাকে।
তেমনি একটা অতীত ছিল রিয়ার। রিয়া একটা অনাথ আশ্রমের মেয়ে ছিল ওর মা-বাবা নেই সে বড় হয় অনাত আশ্রম ই।
একদিন রাজ ঠিক করল রিয়াকে মনের কথা বলবে। মনের কথা বলার জন্য রিয়াকে একটা পার্কে আসতে বলে ।
পার্কে যখন রিয়াকে তার মনের কথা বলছিল তখন হঠাৎ রিয়া মাথা ঘুরে পড়ে যায়।
রাজ খুব ভয় পেয়ে যায় ।তারপর রাজ অ্যাম্বুলেন্স ডাকে।
যখন রিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন রিয়ার মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল ।
রাজ তারপর আরও ভয় পেয়ে যায় ।রিয়াকে হাসপাতলে ভর্তি করানো হয় ।
রিয়ার চিকিৎসার পর ডাক্তার বাবু একটা খারাপ খবর নিয়ে আসেন এবং ডাক্তার বাবু রাজ কে বলেন যে রিয়ার বুকে একটা ছিদ্র আছে এবং রিয়ার পরিস্থিতি খুব সংকটজনক অবস্থায় আছে।
এ কথা শোনার পর রাজ খুব ভেঙ্গে পরে।
আস্তে আস্তে রাজ কাঁদতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পরে রিয়া তার কেবিন রুম থেকে রাজ কে ডেকে পাঠায় এবং রাজ কে সে বলে কিরে আজ তোকে খুব সুন্দর লাগছে তাই না ?
তারপর রাজ হঠাৎ করে রিয়াকে গলায় জড়িয়ে বলে আমি তোকে
ভালবাসি আমি এবং রিয়া ও রাজকে বলে যে আমিও তোকে ভালোবাসি ।
কিন্তু ওদের ভালোবাসা যে বেশি সময়ের জন্য ছিল না।
পরে আবার ডাক্তারবাবু রাজকে একা একা বলে রিয়ার কাছে আর বেশি সময় নেই যেকোনো সময় যেকোনো কিছু হয়ে যেতে পারে।
এবং তারপর যখন রাজ রিয়ার কাছে আসে তখন রিয়া বলে আমি আর বাঁচবো না নারে ?
একথা শুনে রাাজ চমকে যায় এবং জানতে পারে রিয়া আগে থেকে জানত যে ওর বুকে একটা ছিদ্র আছে এবং ওর কাছে বেশিদিন সময় নেই ।
হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার পর রিয়া রাজকে অনাথ আশ্রম এ নিয়ে যায় এবং অনাথ আশ্রম এ বাচ্চাদের মাঝে রাজকে দেখে বলে ওদের জন্যই আমি এতদিন বেঁচে আছি ওরাই আমার বাঁচার সম্বল এরাই আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে আমার পড়ে যে ওদের কি হবে কিছু বুঝতে পারছিনা।
এ কথা বলে রিয়া আবার মাথা ঘুরে রাজ এর কোলে পড়ে যায় এবং আবারও রক্ত বেরোতে সুুরু করে।
রিয়া তারপর রাজ এর কোলে থেকে ই বলে আমার সময় চলে এসেছে এ জন্মে আমরা এক হতে পারিনি কিন্তু পরের জন্মে আমি তোর জন্য অপেক্ষা করে থাকব।তোর জন্য অপেক্ষা করে থাকব।
এ কথা বলে রিয়া ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করতে শুরু করে এবং রাজ এর কোলেই রিয়া মারা যায়।
রাজ খুব কষ্ট পায় । তারপর কিছুদিন পর রাজ ভাবতে লাগছিল "আমি এবার কাকে নিয়ে বাঁচবো" ভগবানকে বলছিল "তুমি আমাকে কেন নিলে না ?
রিয়ার কথা খুব মনে পড়ছিল রাজ এর তাই সে অনাথ আশ্রমে যায় এবং বাচ্চাদের দেখে মনে পড়ে ওই বাচ্চাদের জন্য রাজকে বেঁচে থাকতে হবে এবং রিয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে হবে বাচ্চাদের একটা ভালো জীবন দেওয়ার তাই রাজ সিদ্ধান্ত নিল বাচ্চাদের নিয়ে বেঁচে থাকবে তাদেরকে খুব ভালো জীবন দেবে।
গল্পের নৈতিক -----
ভালোবাসার জন্য শুধু মরতে হয় না ভালোবাসাকে বাঁচিয়ে রাখতে নিজেও বাঁচতে হয় এবং ভালোবাসার জন্য কোনদিন নিজেকে মেরো না কারণ ওদের জন্যই তোমাকে বেচে থাকতে হবে।