STORYMIRROR

Manab Mondal

Abstract Inspirational

4  

Manab Mondal

Abstract Inspirational

ইউদ

ইউদ

4 mins
285

দিঘাতে ছুটি কাটাতে আসাতে মা বাবা বেশ রাগ করছিলো মাত্র ২৮ দিনের ছুটি এসে , এদিক ওদিক ঘুরতে যাওয়াটা পছন্দ নয় ওদের। তাছাড়া যেখান সমুদ্রের মাঝখানেই কাজ করি সেখানে, কি করতে আবার দিঘা ঘুরতে যাওয়ার কারণটা ওদের মাথায় ঢোকে না।

কলকাতা থেকে দিঘা একদিনে ঘুরতে যাওয়া যায়। এদিনের বেশি মৌ বাড়ি থেকে বেড়াতে পারে না। ওর জন্য দিঘা আসা। ওতো সমুদ্রের মতোই একা। একা কত বছর ধরে লড়ে যাচ্ছে লড়াইটা। যারা সমুদ্রের পারে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সমুদ্রটাকে দেখেন তারা সবসময উত্তাল ঢেউটা দেখতেই পছন্দ করেন। তারা কোন দিনও সমুদ্রের ক্লান্তি আসে সেটা বোঝার চেষ্টা করে না। কিন্তু আমি সমুদ্রের মাঝখানে গিয়ে সেই ক্লান্তিকে অনুভব করেছি। মৌও ক্লান্ত হয়, তাই জোর করেই মাস ছয়েক পর পর ওকে জোর করে বাড়ি থেকে বের করি। এবার ও নিজেই বললো দিঘা যাবে। কারণ অফিসের কাজে ও দুই একবার বাড়ি থেকে শহরের বাইরে গেছে তাই দিঘা আস্তে ওর কোন অসুবিধা হলো না।

সমুদ্র সাথে সাথে একসাথে অনেকটা সময় কাছে থাকতে পাবার আনন্দটা উপভোগ করলাম।

দিঘা থেকে আসার পর দুইদিন ও দেখা করলো না। ফোন তুললো না । আমার ওর জন্য খুব চিন্তা হয়। মৌ এরকম জীবনটার জন্য আমিও কিছুটা দায়ী। ওরা আমার এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়। ওর দাদা আমি সমবয়সী ভালো বন্ধু। আমি মৌ জীবনের সমস্ত প্রথম পুরুষ। আসলে মৌ অনেক ছেলে বন্ধু ছিলো তখন। বাবা মায়ের ভালোটাকা পয়সা ছিলো তাই মেয়েটা একটু ব্যেয়াদপ টাইপের ছিলো। কোন নিয়ম কানুন মানতো যা মন চাইতো করতো। কিন্তু সুযোগটা ছাড়ি নি আমি ও। তখন আমার উচ্চমাধ্যমিক, ওর মাধ্যমিক দেবে। টেস্ট পরীক্ষার পর খবর কানে এলো ও প্রেগন্যান্ট, ওর বাড়ি সবকিছু সামলে দিলো‌। কিন্তু কে এই কান্ড ঘটিয়েছে সে নামটা ও বললো না। ঐ সময় থেকে ভয় ওর বাড়ির মুখোমুখি হয় নি। হঠাৎ ওকে বিয়ে দিয়ে দিলো ওর বাড়ি লোকজন।

তারপর আমি ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম জীবন সংগ্রামে। একটা বিয়ে করলাম , কিন্তু টিকলো না বেশি দিন অর্থনৈতিক ভাবে দূর্বল ছিলাম বলে। তারপর বিদেশে চাকরি করতে গেলাম। আত্মীয় স্বজনহীন একটা জীবন তখন মোটামুটি ভালোই কাটছিল। সোস্যাল মিডিয়া আমি খুব একটা করি তখন একদিন দুবাই এয়ারপোর্টে ওয়েটিংয়ে ছিলাম আমার ফ্লাইটের জন্য। রাজার প্রোফাইলে দেখলাম একটা বাচ্চা মেয়েকে আদর করে চুমু খাচ্ছে। ক্যাপসান ছিলো না কোন। উত্তেজনায় লিখে ফেললাম " বিয়ে করে, বাচ্চা হয়ে গেলো একটা খবর দিলি না বন্ধু।"

সাথে মৌ রিপ্লাই করলো " না না এটা আমার মেয়ে"

একটু ভাবনা চিন্তা করে ওকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টা পাঠিয়ে দিলাম, কথায় কথায় অনেক কথাই হলো এভাবেই আমাদের ঘনিষ্ঠতা বাড়লো। সবাই বড়োরা বুঝতে পরেও না বোঝার ভান করলো। তবে বড় বলতে তখন ও জীবনে শুধু মা আর ওর দাদা। মেয়েকে হঠাৎ বিয়ে দিয়েছিলো ওর বাবা, বেশি কিছু খোঁজ খবর না নিয়ে। তাই বিয়ের দুই বছরের মধ্যে ও বাড়ি ফিরে আসতে হলো ওকে। ওর বাবা অসুস্থ হয়ে হঠাৎ মারা গেলেন। পার্টি পলিটিক্স নিয়ে ব্যাস্ত রাজা রাজনীতি যেমন সফল হতে পাড়লো না তেমন ব্যবসাতেও সফল হলো না। তাই মৌকেও চাকরি করতে যেতে হলো।

কলিং বেল বাজতেই দেখলাম ওর মেয়ে দরজা খুললো। ওর মেয়ে আমাকে বসতে বলে কফি। করে আনলো। আমি ওকে একটা চকলেট আর টেডি বিয়ার উপাহার দিলাম‌ ।

ও বললো " uncle টেডি বিয়ার আর আমার জন্য এনো না। বরং তুমি যে পারফিউমটা ব্যবহার করো সেটা আমায় দিও। তবে মেয়েদের টা দিও।"

মনে পরে গেলো আমার স্ত্রীয়ের গায়ে সুন্দর সুন্দর গন্ধ থাকতো। তবে তখন গন্ধের লিঙ্গ আছে জানতাম না । আমার ঘামের গন্ধ ওর আর পছন্দ হতো না সম্পর্কে শেষ দিকটায়। তাই বিদেশে চাকুরী পাবার পর আমি, দামি দামি পারফিউম ব্যবহার করেছি। কখনো এতো দামী যেটা আমার প্রাক্তন স্ত্রীর মাস মাইনের চেয়েও বেশি ‌।

আমি বেশ গর্বের সাথে বললাম " এটা পারফিউম না। ইউদ।প্রিন্সেস ডায়ানার প্রিয় সুগন্ধ ছিল একটি ইও ডি । বিষয়টি আসলে ছেলেমেয়েদের না পার্থক্যটি আসলে এর চেয়ে অনেক সূক্ষ্ম, এটি অ্যালকোহল এবং জলে সুগন্ধি তেলের ঘনত্বের সাথে সম্পর্কিত।ঘ্রাণের শক্তি এবং দীর্ঘায়ু নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হয় এগুলো বিভিন্ন অনুপাতে। আর তবে সুগন্ধির যেমন লিঙ্গ আছে। তেমন ধর্মও আছে। ইউদ সব ধর্ম এর লোকজন ব্যবহার করতে পারে। Floris London প্রায় তিন শো বছর ধরে পৃথিবীর অভিজাত পরিবারের জন্য এই পারফিউম তৈরি করে।"

বেলের শব্দ , মৌ ঘর ঢুকলো। আমাকে দেখে ও আজ কেমন যেনো ইতস্তত বোধ করছিলো। তিতলি বললো " ও মা তো এসে গেছে। গল্প করো। তুমি আজ বাড়ি যেও না। মামা দিদাকে নিয়ে ভেলোর গেছে। আমিও বান্ধবীর দিদির বিয়েতে যাচ্ছি আজ ফিরবো না। বাইদাওয়ে মাকে দুইদিন আগেই বলছিলাম তোমার পারফিউমটা খুব ভালো। মায়ের গায়ের লেগে থাকে অনেকক্ষণ।"

তিতলি বেড়িয়ে যেতে মৌ চোখটা জলে ভরে গেলো। তিতলির জন্যই ও আমাকে বিয়ে করে নি। যদিও আমি ও আছি ওর অপেক্ষায়। আমি ওকে জোর করে জাপটে ধরলাম। ওর গায়ে পরিশ্রমী ঘামের গন্ধ, পারফিউম কোন কৃত্রিমতা নেই । ও বললো " আমি ভীষন ক্লান্ত।"

,,,,,,



ಈ ವಿಷಯವನ್ನು ರೇಟ್ ಮಾಡಿ
ಲಾಗ್ ಇನ್ ಮಾಡಿ

Similar bengali story from Abstract