হঠাৎ বৃষ্টি(তাতাইয়ের গল্প - ৩)
হঠাৎ বৃষ্টি(তাতাইয়ের গল্প - ৩)
"প্রতিবর্ত ক্রিয়ায় সামিল জীবন
দৈনিক দাবদাহের ফাঁকেই শরীরে হঠাৎ ধাক্কা খায়
এক দমকা শীতল বাতাস।
কল্পনার চক্ষু নির্মিলীত হয়ে
মুহূর্তে তৈরী করে ফেলে পুঞ্জীভূত মেঘ,
রংটা বেজায় কালো তার।
শ্রাবণ আসবে, অপেক্ষা শুরু…
কিন্তু কই শ্রাবণ তো আসে না!
প্রতিবর্ত ক্রিয়ার শেকলে বন্দি জীবনে
শ্রাবণ একটা অনন্ত অপেক্ষার নাম,
একটা না পাওয়া আবেশের নাম,
একটা বহু কাঙ্খিত ভালো থাকার নাম...
বুকের মধ্যে হাহাকার তোলা একটা অ-স্পর্শীত নাম শ্রাবণ।
ক্রমশ দগ্ধ হতে থাকে জীবনের কাছে ধরা দিতে
তার বয়েই গেছে;
তাই তো সে আসে না,
শুধু আসবে আশা দিয়ে ফাঁক গলে পালায়
যেখানে তাকে ধরাও যায়না, ছোঁয়াও যায়না।
শ্রাবণ একটা অনন্ত অপেক্ষার নাম। "
ইনবক্সে পিং করে একটা মেসেজ ঢুকলো। ফোনটার দিকে তাকাল তাতাই। ওর পেজ "আগুনপাখি"র ইনবক্সে ঢুকেছে মেসেজটা।
পেজ থেকেই ডাইরেক্ট ইনবক্সে শেয়ার করা হয়েছে ঘন্টা দুয়েক আগে পোস্ট করা একটা কবিতা, "অপেক্ষার শ্রাবণ"। কবিতাটা শেয়ার করে জনৈক মেসেজ দাতা লিখেছেন,
"অপেক্ষার টানে আজ ক্লান্ত মন
এবার শ্রাবণ হারাক এই ক্ষণ।।
আগুনের তাপে আজ পুড়তে রাজি
ধ্বংস থেকেই (নাহয়) জন্মাক নতুন পাখি।।"
লেখাটা পড়ে বেশ অবাক হল তাতাই। আজ বছর দেড়েক হল আগুনপাখি ছদ্মনামের আড়ালে সে লেখালেখি করে যাচ্ছে। এই অল্পদিনেই তার পাঠক সংখ্যা নেহাত মন্দ নয়, পেজের ইনবক্সেও রোজ নিত্যনতুন মেসেজ আসতে থাকে, তবে এই ধরণের মেসেজ এলো এই প্রথম। কি বলতে চেয়েছেন মেসেজ দাতা! এটা তাতাইয়ের "অপেক্ষার শ্রাবণ"এর প্রত্যুত্তরে লেখা চারটে লাইন, দেখেই বোঝা যাচ্ছে তাড়াহুড়োয় লেখা। কিন্তু লাইনগুলো পড়ে যা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে সেটাই কি? ধুরর এমনটা আবার হয় নাকি! কে পাঠিয়েছে মেসেজটা! ওপেন করার সময় নামটা ভালো করে দেখা হয়নি। এবার নামটা খেয়াল করতেই চমকে উঠল তাতাই, "ঋদ্ধিমান চক্রবর্তী"। বুকের ভেতরটা ধক করে উঠল। এই কি সেই!
কাঁপা কাঁপা হাতে আঙ্গুল ছুঁইয়ে প্রোফাইলটা খুলে ফেলল সে। কোনো সন্দেহ নেই, সেই এক মুখ, পাতলা গোঁফের নীচে সেই এক হাসি। ব্যালকনিতে কফি মগ হাতে দাঁড়িয়ে, নীচ থেকে ছবিটা তুলে দিয়েছে কেউ। ঋদ্ধিমান… তাতাইয়ের সেই অনন্ত অপেক্ষারই নাম কি?
"হুহ…!"
আচমকা পেছন থেকে আওয়াজটা আসতেই চমকে উঠল তাতাই। ফোনটা হাত থেকে প্রায় পড়েই যাচ্ছিল, কোনোমতে সামলালো সে।
---- কি ব্যাপার এভাবে চমকে দিলি কেন?
বিরক্ত মুখে বলল তাতাই।
ওর বিরক্তিটা গায়ে মাখল না দিশান,
---- বলি ম্যাডাম করছিলেনটা কি যে এমন করে চমকে উঠলেন?
---- ক্ক… কিছু না।
---- হুঁ, বলতে চাস না যখন বলিসনা। তবে হেডু অনেকক্ষণ থেকে ডাকছেন। আপনার তো পাত্তাই নেই, এদিক সেদিক থেকে খুঁজতে খুঁজতে এখানে এসে পেলাম।
---- এইচ.ও.ডি আমাকে খুঁজছেন!
---- তা নয়তো আর কি! হেডু কলেজের টপার কাম বিখ্যাত লেখিকা মিস আগুনপাখিকে না খুঁজে কি আর আমার মতো অকর্মণ্য, অখাদ্য বস্তুকে খুঁজবেন!
---- প্লিজ শান চুপ কর। নিজেকে এরকম করে বলবিনা, আর অনেকবার বলেছি সবার সামনে আমার এই পেন নামটা এক্সপোজ করিসনা।
---- আচ্ছা বাবা সরি সরি। এখন চল।
---- কিন্তু আমাকে কেন…!
---- রিল্যাক্স, শুধু তোকে নয়। থার্ড ইয়ারের সবাইকেই ডেকেছেন। লাস্ট ডে সাজেশন দেবেন মে বি।
"লাস্ট ডে" শানের মুখে শব্দটা শুনে বুকের ভেতরটা কেমন কেঁপে উঠল তাতাইয়ের।
★★★★★
ডিপার্টমেন্টাল টিচার্স রুমে দাঁড়িয়েছিল তাতাই আর শান। এইচ.ও.ডি সায়ক স্যার সমানে ল্যাপটপে খুটখাট করে যাচ্ছেন।
---- তোদের এতো বাড়ি যাওয়ার তাড়া কিসের বলতো? এই শেষ দিনও আর তর সইল না?
---- আমাদের কোথায় তাড়া স্যার? এই তো আমরা আছি।
---- সেতো তোরা দুজন আছিস, কিন্তু বাকিরা! অদ্ভুত তোরা সত্যিই।
এই তৃষা তোমাকে এইটথ পেপারের সাজেশনটা মেল করলাম, দেখোতো গেছে নাকি?
স্যারের কথায় মোবাইলটা অন করল তাতাই। পিং পিং করে কয়েকটা নোটিফিকেশন ঢুকলো।
---- এসেছে স্যার।
মেলটা দেখে নিয়ে ফোনটা অফ করতে যেতেই ভুল করে আঙুলের ছোঁয়া পেয়ে খুলে গেল আগুনপাখির ইনবক্স। আবার একটা নতুন মেসেজ, তবে মেসেজদাতা সেই একই,
"আপনার কবিতাগুলো আমার খুব ভালো লাগে। আমি নিজেও টুকটাক লেখালেখি করে থাকি তাই আপনার আজকের কবিতাটা দেখে উত্তর দেওয়ার লোভ সামলাতে পারিনি। যদি ধৃষ্টতা করে থাকি ক্ষমা করবেন।"
মেসেজটা পড়তে পড়তে আচমকা কানের পাশে ফুঁ লাগতেই চমকে গেল তাতাই। পাশেই শান ভালো মানুষের মত মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে। ও এরকমই ফাজিল। ভীষণ রাগ ওঠে তাতাইয়ের, একেক সময় বিরক্তিও লাগে ভীষণ। এখন নেহাৎ স্যার আছেন সামনে নয়তো কড়া করে ওকে শুনিয়ে দিতো সে।
★★★★★
স্যারের সাজেশন দেওয়া হয়ে যেতেই তাতাইরা এসে বসেছে ক্যান্টিনে। শান মহাশয়ের ট্রেন এখনও দু'ঘন্টা পর তাই সময় কাটানোর অছিলায় দু'জনে দু প্লেট চাউমিন অর্ডার করেছে।
---- শান
---- হুঁ?
---- বাঘা দার হাতের চাউমিন খাওয়ার আজকেই শেষ দিন বল?
---- শেষ কেন? এডমিট আনতে এসে খাবি, মার্ক্সশিট আনতে এসে খাবি।
এক মুখ চাউমিন নিয়ে চেবাতে চেবাতে কথাগুলো বলল শান।
---- ধ্যাত, এইজন্য তোকে আমার ভালো লাগে না। কোনো সিচুয়েশনের সিরিয়াসনেস বুঝতে চাস না।
---- জানি জানি আমাকে কি আর ভালো লাগবে! আমি কি আর গল্প কবিতা লিখতে পারি? তোমার তো পছন্দ…
---- চুপ করে যা শান, রাগাস না আমাকে।
---- আচ্ছা চুপ করলাম। মন দিয়ে চাউমিন খা আর মোটি হ।
---- শান
---- বলে ফেলো।
---- আমাদের আর কোনোদিনও দেখা হবে না বল?
---- হুম
ম।
---- কোনোদিনও হবে না তাই না?
---- হুমম।
---- কি হুমম হুমম করে যাচ্ছিস?
---- হুমম।
---- আবার…!(রেগে গিয়ে)
---- কি বলবো? আর কোনোদিনও দেখা হবে না এটাই তো সত্যিই। তোর বাড়ি একদিকে আর আমার বাড়ি উল্টোদিকে। কোথাও আমাদের রাস্তা ক্রস করে না।
শানের কথায় হঠাৎ করে বুকে একটা বড়সড় ধাক্কা লাগলো তাতাইয়ের। কি অবলীলায় কথাগুলো বলে দিতে পারল ও। কিচ্ছু যায় আসেনা ওর, কিচ্ছু না।
---- ঠিকই বলেছিস।
---- হুমম।
---- থ্যাংক্স, থ্যাংক্স ফর এভরিথিং।
---- এভরিথিংটা কি?
---- আগুনপাখি। আমাকে আগুনপাখি উপহার দেওয়ার জন্য থ্যাংক্স।
---- ধুরর…!
---- নাহ সত্যিই। তুই না থাকলে, তুই না সাহস আর উৎসাহ দিলে কোনোদিনও আগুনপাখির নতুন জন্মাই হত না। চিরটাকাল ওই ছাইয়ের মধ্যেই চাপা পড়ে রয়ে যেত সে।
---- বাবা রে বাবা রে, আমি এতো গুহ্য গুহ্য করে কথা বলতে পারব না। আমি সোজাসাপটা কথা বলি বাপু। আমি জানি তোর টার্গেট কলেজের লেকচারার হওয়া কিন্তু আমার একটাই অনুরোধ লেখাটা কোনোদিনও ছাড়িস না। আমার স্বপ্ন একদিন তোর নিজের বই বের হবে।
---- তোর স্বপ্ন?
---- হুমম। আমার স্বপ্ন ডাকে করে একদিন হঠাৎ একটা লাল খাম এসে পৌঁছাবে, যেটা ছিঁড়লেই দেখতে পাবো একটা বই। যার ওপর সোনালী অক্ষর দিয়ে লেখা থাকবে আগুনপাখির নাম।
---- ধুরর আমার আবার বই বের হবে কোনোদিন! তুইও না…
---- আমাকে পাঠাতে ভুলে যা ক্ষতি নেই, কিন্তু তোর বই বের হবেই। আর বের হলে আমি ঠিক খবর পেয়ে যাবো। আমার তো জীবনে কিছু হবে না, আমি হলাম গিয়ে একটা ট্যালেন্টবিহীন মানুষ। আমাকে হয়তো ভুলে যাবি কিন্তু তোর নিজের এই সত্তাটাকে কোনোদিনও ভুলিস না প্লিজ। এটাই আমার অনুরোধ।
তাতাই বুজতে পারছে ওর নিজের বুকের ভেতর একটা ঝড় শুরু হয়েছে। ওর এই মুহূর্তে ভীষণ ইচ্ছে করছে শানের হাতের ওপর হাতটা রাখে আর বলে, "এরকম বলিস না প্লিজ। তুই পারবি আমি জানি। আমিও যে চাই একদিন খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে। তোর যে স্বপ্ন আছে ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফির সেটা পূর্ণ হবেই।"
শানের হাতে হাত রাখতে পারেনা তাতাই, ইতস্তত বোধ হয়। কথাগুলোও বলতে গিয়ে টের পায় গলা দিয়ে স্বর ফুটছে না। তাতাই জানেনা কেন আজ এই মুহূর্তে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে ওর, ভীষণ কষ্ট। এটা কি শুধুই কলেজ ছাড়ার কষ্ট নাকি অন্য কিছু? তাতাই টের পাচ্ছে চোখের সামনে সব যেন ঝাপসা হয়ে আসছে। নাহ, জলটা আটকাতেই হবে ওকে। মুখটা ফিরিয়ে চশমার কাঁচের ফাঁকে আঙ্গুল গলিয়ে দেয় সে…
★★★★★
কথার মাঝে ওরা খেয়ালই করেনি কখন যেন সময় ঘড়ি ছুটেছে জোরে। বাইরে জোরে জোরে ঠান্ডা বাতাস দিচ্ছে।
---- তুই তাড়াতাড়ি বাস ধরে স্টেশনে চলে যা।
---- যাবো, তোকে আগে বাসে তুলে দিই।
---- আরে আমি তো বাস পেয়ে যাবো ঠিক, কিন্তু তোর ট্রেন মিস হলে….
কথাগুলো বলতে বলতেই তাতাই হঠাৎ খেয়াল করল শানের চোখদুটো হালকা লাল, আর ছলছল করছে সেগুলো। একটু আগেও তো এমন ছিল না!
---- তোর চোখে কি হয়েছে?
---- কি আবার হবে?
ইতস্তত গলায় বলল শান।
---- তোর চোখগুলো লাল লাগছে।
---- ও কিছু না। আমি টায়ার্ড হয়ে গেলে এরকম হয় মাঝেমাঝে।
---- কিন্তু আমি তো কখনও দেখিনি।
---- আরে ও কিছুনা। তুই চাপ নিসনা।
ওই তো তোর বাস আসছে।
তাতাই আরেকবার ভালো করে তাকাল ওর চোখের দিকে। ওগুলোও কি আজ তাতাইয়ের মত একই কারণে আদ্র!
---- এই তৃষা তোর মাফলার কোথায়?
---- হুঁ?
সম্বিৎ ফিরল তাতাইয়ের। কোনোমতে সে জবাব দিল,
---- আনতে ভুলে গিয়েছি আজ।
---- বাসে ঠান্ডা হাওয়া লেগে যাবে। উফফ তুই না…
কথাগুলো বলতে বলতে নিজের গলার মাফলারটা খুলে তাতাইয়ের গলায় জড়িয়ে দিলো শান।
---- কি করছিস কি? তোর ঠান্ডা লেগে যাবে তো।
---- চুপ। আমি এন সি সি ক্যাডেট, কিচ্ছু হবে না আমার।
---- কিন্তু শান এটা ফেরৎ দেব কিভাবে?
---- কোনদিনও যদি দুজনের রাস্তাটা ক্রশ করে সেদিন ফেরৎ দিস নাহয়।
কথাগুলো বলতে বলতে অন্তর্হিত হল শান। বাসটা সামনে এসে গেছে, উঠে পড়ল তাতাই। পা দুটো কাঁপছে। বাসে উঠেই ভাগ্যক্রমে জানালার ধারে সিট পেয়ে গেল সে। জানালাটার কাঁচটা নামানো ছিল। কাঁচের ওপ্রান্তে বাইরের দিকে চোখ পড়তেই চমকে গেল সে। শান কোথাও যায়নি, শান রাস্তার ওপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ক্রমাগত উঁকিঝুঁকি মেরে যাচ্ছে বাসটার দিকে, তার চোখে মুখে উদ্বিগ্নতা। শান কি তবে আমার জন্য….! ওরও তবে যায় আসে!
কাঁচটা ঠেলে নামানোর চেষ্টা করল তাতাই, পারলোনা। বাসের কন্ডাক্টার জানালো কাঁচটা নামেনা। হতাশ হয়ে বসে পড়ল তাতাই। ছেলেটা এখনও উদ্বিগ্ন মুখে তাকিয়ে আছে বাসটার দিকে। ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করে একটা নাম্বার ডায়াল করল তাতাই,
"আমি সিট পেয়ে গেছি। তুই তাড়াতাড়ি বাস ধরে স্টেশনে যা।"
শেষ কথাগুলো বলতে বলতে গলাটা ভিজে এলো তাতাইয়ের। ফোনটা কান থেকে নামিয়ে দেখলো ঋদ্ধিমানের তিনটে নতুন মেসেজ। ঋদ্ধিমান চক্রবর্তী… তাতাইয়ের টিনএজ ক্রাশ, যাকে এককালে মনে হয়েছিল ওর ড্রিম ম্যান, যে কোনোকালে তাতাইয়ের কবিতা দেখে হেসেছিল।
ড্রিম ম্যান ড্রিমেই ভালো। একটা জোরে শ্বাস নিলো তাতাই। "অপেক্ষার শ্রাবণ" বছর চারেক আগে লেখা একটা কবিতা। ঋদ্ধিমানের মেসেজ খুলে রিপ্লাই অপশনে গেল তাতাই,
"অপেক্ষার শ্রাবণ বহুদিন আগেই শেষ। আগুনপাখি এখন রোজ ভিজতে পারে বৃষ্টিতে। বৃষ্টির জন্যই আগুনপাখি আবার জন্ম নিতে পারে নতুন করে। ভালো থাকবেন।"
বাসটা চৌরঙ্গীতে আসা মাত্রই বৃষ্টি নামল ঝমঝমিয়ে। তাতাই টের পেল ওরও চোখ দিয়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আশেপাশের লোক কি ভাবছে কে জানে! গলায় জড়ানো মাফলারটা তুলে নাকের কাছে আনলো তাতাই, সঙ্গে সঙ্গে পরিচিত একটা গন্ধ পেল সে। তারপর মাফলারটা তুলে চোখের কোণে স্পর্শ করল তাতাই, মনে হল একটা আঙুলের উষ্ণ ছোঁয়া যেন মুছিয়ে দিল জল।