হলদে রাঙা বউ (৪)
হলদে রাঙা বউ (৪)
হলদে রাঙা বউ
লেখা-সুমিত
পর্ব-৪
আদি মেন গেটে এসে দরজার কলিং বেল বাজালো, আর ঐশী পেছনে হাত গুটিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই দুলছে, আদি বুঝতে পারে না, এই মেয়ে একটু আগেই ওর মাথা যে কারণে খাচ্ছিল , এখন সেখানে এসে ওনার মধ্যে চিন্তার লেশ মাত্র নেই । আবার কলিং বেল বাজানোর আগেই খট করে দরজা খুলে গেল! আদি চমকে উঠলো ,সাথে ঐশীও গোল গোল চোখ করে আগুন্তকের দিকে তাকিয়ে আছে । ঐশী দেখলো , একজন বুড়ি মুখে পাউডার লাগিয়ে , ঠোঁটে লাল লিপস্টিক , চোখে সানগ্লাস , আর একটা হিল জুতো পরে মিস ওয়ার্ল্ডের মত কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,। আদি তো হা করে তাকিয়েই আছে! এটা কে , চেনা চেনা লাগছে । আদির ভাবনার মাঝেই এই বিচিত্র মানব কিছু বলছে মনে হচ্ছে ।
ঠাকুমা- আরে দরজায় কী আঠা আছে যে , এমন সিঁটিয়ে গেলি, আয় ভেতরে আয় ! নয়তো আমার ত্বক পুরে যাবে। ওওও বাবা গো এত গরম লাগছে না বর কী বলবো তোকে, এই দেখ আমার মুখে এখুনি পিম্পল উঠা শুরু করলো । ঐশীর দিকে ভ্র নাচিয়ে বলল , এই মেয়ে তুমি কে?
আদি- বউ ,এসব কী করেছো । ওলে বাবা লে আমার বউ কে কী সুন্দর লাগছে রে। আমি তো আবার প্রেমে পরে গেলাম গো ।
এদের কান্ডকারখানা ঐশীর মাথার ১০০হাত উপর দিয়ে যাচ্ছে। এটা স্যারের বউ, ঠিকই আছে পাগলের বউ ছাগল। এই বুড়ি দেখি আবার লজ্জাও পাচ্ছে । আরো কত কী দেখার বাকি এই জীবনে।
ঠাকুমা- যাহ, কী যে বলিস বর। তুই খুব দুষ্টু ।
আদি - ওলে বাবা এত লজ্জা পেতে হবে না, এই বউ মা বাবা কোথায় গো..
ঠাকুমা - তারা সব ওপরে আছে! আদি এই মেয়ে টা কে ? আমার সতীন নাকি ।
আদি একপলক ঐশীর দিকে তাকিয়ে দেখলো , পারলে আদিকে গিলে খায় আরকি। আদি ঝড়ের পূর্বাভাস পেয়েই , সব ক্লিয়ার করে দিল , এই মেয়েকে দিয়ে বিশ্বাস নেই , কখন কী করে ফেলবে বোঝা মুশকিল।
আদি- ঐশী , এই হল আমার একমাত্র সুইটহার্ট ঠাকুমা । আর ঠাকুমা হল ঐশী , আমার পি .এ।
ঠাকুমা- তা তোর পি.এ তো দেখতে হেব্বি! দাদুভাই ঝুলে পর পি এর গলায় ।
আদি মহা মুস্কিলে পড়লো , আসলেই মানুষ বুড়ো হলে মুখে লাগাম থাকে না। কী সব বলে যাচ্ছে ! না জানি ঐশী কী ভাবলো, আদি টুক করে একবার ঐশীর দিকে তাকালো, । ও বাবা এখানে তো সব লাল নীল হচ্ছে , ঐশী কী কথাটায় লজ্জা পেল, আদি ঐশীর লজ্জা পাওয়া দেখে বুঝলো , রাস্তা একটু সহজ হল মনে হয়।
সবাই বাড়ির ভেতরে ঢুকলো, ঐশীর মাথা ঘুরছে! মনে হচ্ছে কোন স্বপ্নপুরী তে চলে এসেছে ও! পুরো বাড়ির রং ঝকঝকে সাদা, মেঝেতে টাইল্স এর উপর কার্পেট বিছানো। সোফা, টি টেবিল , সুন্দর সুন্দর সব পেন্টিং,আর ওপরের ঝাড়বাতি টা জাষ্ট অসাধারণ । ঐশী এসব জীবনে প্রথম দেখলো , কে কোথায় সে খেয়াল ওর নেই ! ও শুধু এই ঝকঝকে সাদা স্বপ্নপুরী দেখছে বিভোর হয়ে। প্রথমে লক্ষ করেনি ,এখন দেখলো বাড়িটা দোতলা। মেন দরজার ঠিক সামনে দিয়ে স্বপ্নপুরীর দ্বিতীয় কক্ষে ওঠার সিঁড়ি। তাতেও লাল কার্পেট বিছানো। একপাশে ডাইনিং, একপাশে সোফা সেট। আর নানান রকম শো পিস রাখা , ঐশী পুরো বাচ্চাদের মত লাফিয়ে লাফিয়ে পুরো বাড়িতেই চোখ বোলাচ্ছে।
এদিকে যে কেউ মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে ওর হাসি , ওর ওড়া কালো চুল, ওর এই খুশি দেখছে তার দিকে ওর খেয়াল নেই! আদির মনে হচ্ছে ওর খুশির কারনেই এই বাড়ির রুপ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। নিচে কিছুর আওয়াজ শুনে সবাই একে একে নিচে এল । আর অবাক হয়ে গেল! এই মেয়ে কে? আদিই বা অমন হা করে তাকিয়ে আছে কেন , আদির মা কিছুই বুঝতে পারছে না। যখনি পাশের দিকে মাথা ঘোরালো ওমনি চিৎকার করে উঠল । সবাই হকচকিয়ে গেল, সবচেয়ে বেশি ঐশী আর আদি ।
মা- আদি এই টা কে? । এমন সাতচুন্নির মত সেজেছে কেন?
আদি বুঝতে পারছেনা আজ ওর সাথে হচ্ছে টা কী ! যখনি ওর সাথে ঐশী থাকে ওর সব এলোমেলো হয়ে যায় । আদি ঠাকুমার দিকে তাকিয়ে দেখলো আবহাওয়া গম্ভীর । এবার ঝড় কেউ আটকাতে পারবে না।
ঠাকুমা- বৌ তোর সাহস তো কম না, আমাকে সাতচুন্নি বলিস।
মা- মাআআআআআ..আপনি !
বাবা-- মাআআ তুমি এসব কী করেছো!
বোন- ঠাম তুমি কী যাত্রা করবে এখন থেকে , হেব্বি লাগছে পুরো ঝিঙ্কু।
ঠাকুমা- চুপ কর মুখপুরি। আর বৌ তোর খবর আছে রাতে হু।
এই বলেই মিস ওয়ার্ল্ড কোমর ধরে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে লাগল । ঐশী ফিক করে হেসে উঠলো, তখনি পুরো বাড়ির নজর ওর দিকে, ঐশী একটু হকচকিয়ে গেল ।
বোন- দাদা ও কে রে? আমার ইয়ে নয়তো!!
আদি- দেবোনা একটা , মা ও হল ঐশী আমার পি.এ ।
মা- সে না হয় বুঝলাম ,তা এখানে কী দরকার তার।
বাবা- বাবু ব্যাপার কী খুলে বলতো।
আদি- এমনি তোমাদের সাথে পরিচয় করাবো বলেইইইইইইইইই। ইয়ে মানে এমনি ,এমনি। একটু কাজ আছে তো তাই। তাই না ঐশী..
আদি আপন মনেই বলছে,আদি রে এখনি কী করছিলি তুই, সব ফাঁস হয়ে যেত । হায় মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল কীভাবে কথাটা, সব ঐশীর সঙ্গ গুন । আমি ও বাঁচাল হয়ে যাচ্ছি ও মাই গড।
বোন- এই এই কী বলছিলি তুই , পরিচয় করাতে মানে কিসের পরিচয় রে দাদা।
আদি মা ,বাবা দুজনের দিকে তাকায় দেখে তাদের মনেও একই প্রশ্ন? আদি তো মহা মুস্কিল এ পড়লো , কেন যে যেচে আনতে গেলাম । যেই আমি এত বড়ো বড়ো লোককে মিট করি ! এত বড়ো বড়ো ডিল সাইন করি ,সেই আমার হাঁটু কাঁপছে ।
মা- আদি ব্যাপার কী খুলে বল তো?
ঐশী চুপচাপ এক কোনায় চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে। ওর কোন চিন্তা নেই, কোন ভাবনা নেই, বারবার শুধু আদির বোনের দিকে তাকিয়ে দুজনেই নিঃশব্দে হাসছে , কেন হাসছে ঐশী জানে না।
আদির বোনের ও ঐশীকে ভারি পছন্দ হয়েছে!
বোন- দাদা তুই মা,বাবার সঙ্গে কথা বলে নে, ততক্ষন আমি ঐশীকে আমার ঘরটা ঘুরিয়ে আনি।
আদি একবার ঐশীর দিকে তাকালো, আদির মনে হচ্ছে ওই চোখ ওর সম্মতি চাইছে। আদি নিজের অমতেই ও বলে ফেলল ।
আদি- ওকে যা ঘুরিয়ে আন।
আদি এমন কিছু হওয়াতে নিজের উপর নিজেই অবাক হল। ও কীভাবে ঐশীর চোখের ভাষা বুঝতে পরলো, এ কী যাদু নাকি, ও স্পষ্ট দেখলো ঐশী ওর থেকে সম্মতি চাইছে। তবে কী..
মা - আমার পছন্দ হয়েছে, আর তোর বাবার আগেই হয়েছে।
আদি মনে হয় আজ খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেছে , এত কিছু একদিনে হল যে ও এত কিছু ভাবতেই পারেনি। মা কীভাবে বুঝলো , আমি তো কিছুই বলিনি ।
আদি- মানে এএ। পছন্দ মানে , কী বলছো।
বাবা- এটাই যে , আমি একটা ফুটফুটে মেয়ে পাবো ।
মা- আর আমি একটা ঝগড়া করার সঙ্গি পাব। দুজনে জমবে মনে হয় কী বলো।
বাবা- নিশ্চয়ই , আমার ও সময় পার হয়ে যাবে তোমাদের ঝগড়া দেখে।
আদি দেখলো ওর মা, বাবা সেই মুডে চলে যাচ্ছে ঐশীর কথা বলতে বলতে । কী হয়েছে আজ এই বাড়ির সবার , ঐশী আসার পর থেকেই সবার কী মাথার তাঁর ছিঁড়ে গেল। আর বাবা ও বলিহারি ,সামনে যে আমি আছি ! সে খেয়াল নেই..
আদি দুই বার খুকখুক করে কাসি দিল। আদিকে দেখে ওনাদের হুস এল। আদির মা লজ্জা পেয়ে রান্না ঘরের দিকে চলে গেল । আর ওর বাবা মুচকি হেসে একটা সোফায় বসে পড়লো।
আদি- বাবা তখন কী বললে , পছন্দ মানে কী পছন্দের কথা বলছো।
বাবা- আমার পুত্রবধূর।
আদি- তোমার পুত্রবধূ, তাকে তুমি কোথায় পেলে।
বাবা- কেন তোর পি.এ ঐশী মা।
আদি- তুমিইই, তুমি ইইই ইয়েইইই মনে এএ।
বাবা- থাক আর তোতলাতে হবে না, আমি তোর বাপ ! সব বুঝি। আমার ছেলে যে ঐশীর মায়াতে পাগল হয়েছে ,তা তোর চাহনি দেখলেই বোঝা যায়। আমাদের ঐশী মা কে খুব পছন্দ হয়েছে । এমন একটা দুষ্টু বৌমা ই আমি চাইছিলাম।
আদি মুচকি হেসে বাবাকে বাই বলে নিজের রুমে চলে গেল । আর ওদিকে আদির বোন আর ঐশী একটা সুন্দর কান্ড ঘটিয়ে ফেলেছে ।
তর্নী ঐশীকে নিয়ে নিজের ঘরে এসে , খেজুরে আলাপ জুড়ে দিয়েছে। তর্নী ২য় বর্ষের মেডিকেলের ছাত্রী। ঐশীও মেডিকেল নিয়ে পড়তো , হঠাৎ একদিন কী ভুত চাপলো! বাড়িতে এসে বলল ।
ঐশী- বাড়ির সকল সদস্যগন এদিকে একটু আপনাদের ফালতু সময় দিন। আমি কিছু দরকারি কথা বলবো।
ঐশীর বাবা, মা চিন্তায় পড়ে গেল, ঐশী বলবে দরকারি কথা! হয়ে গেল তবে ...
বাবা- কী এত জরুরি কথা যে এত চেঁচামেচি করছিস, দরকারি কথা তো শান্ত ভাবে বলতে হয় । আচ্ছা বলতো শুনি কী তোর দরকারি কথা ।
ঐশী- বাবা, মা আমি আর ডাক্তারি পড়বো না ।
মা- কীইই কিন্তু কেন! তুই তো দিনরাত এক করে এই কলেজে ভর্তি হলি। তবে এখন পড়বি না কেন। টাকা কী গাছে ফলে , আর পড়বি না তো কী করবি । আমি কিন্তু তোকে সারাক্ষণ এই বাড়িতে থাকতে দেবো না। কখন কী করবি তার ঠিক নেই ।
বাবা- ঘটনা কী খুলে বল তো মা ।
ঐশী- আসলে আমি এই দুটো বছর স্যারেদের বোরিং লেকচার শুনতে শুনতে ,আর ঔই ছাইপাশ ঔষুধের নাম মুখস্ত করতে করতে হয়রান হয়ে গেছি! এই কষ্ট কেউ করে , শুধু মাত্র একটা ইনজেকশন ঢোকানোর জন্য , আর গলায় দড়ি ঝোলাতে কী যে বিরক্ত লাগে। বাবা , আমার স্বপ্ন অন্য কিছু , ডাক্তারি নয় । আমি ঠিক করেছি আমি চাকরি করবো ! তাও নিজের দমে হু।
এই পর্যন্ত বলে ঐশী ওর বাবা,মা এর মুখে দিকে তাকালো । না কোন ভাব বুঝতে পারছে না ও, কী মানুষ , কী যে ভাবছে বোঝার উপায় নেই। ঐশী একবার বাবার দিকে একবার মায়ের দিকে তাকাচ্ছে। দুজনেই চুপ !মনে হয় শক পেয়ে বোবা হয়ে গেছে, বাহ! ঐশী তোর কত গুন । যাক বাঁচা গেল , মায়ের চেঁচামেচি আর শুনতে হবে না। ও মহা আনন্দে সিঁড়িতে পা দেওয়ার আগেই ডাক পড়লো।
বাবা- ঐশী.... দাড়াও
এবার ঐশীর ভয় করছে, বাবা যতই শান্ত হোক , রেগে গেলে আর রক্ষে নেই । কী হবে আমার মত একটা মাসুম বাচ্চার,ঐশী আস্তে করে ঘুরে বাবা চোখে চোখ রাখলো। না ভয়ের কোন কারণ নেই সেখানে। শান্ত দেখাচ্ছে বাবার মুখখানি। কিন্তু, মায়ের মুখ কুঁচকে গেছে। সে যাক গে।
বাবা- দেখ মা তুই এখন যথেষ্ট বড়ো হয়েছিস , নিজের হাতে নিজের জীবন সাজাতেই পারিস । আমি সবসময় তোকে শিখিয়েছি যেটাতে মন টানবে না , সেটা কখনো করবি না। তুই এই বড়ো সিদ্ধান্ত টা কিছু ভেবেই নিয়েছিস তা আমি জানি। আর এর কারন যে অন্য তাও বুঝতে পারছি! তুই হয়তো সেই কারনটা আমাদের বলতে চাইছিস না, চিন্তা নেই আমি তোকে জোর করবোনা। তবে মা , যাই করবি ভেবেই করবি ! করার পরে যেন ভাবতে না হয়
, তোর উপর আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে। তুই জব করবি তাও নিজের ইচ্ছায়, কর না কে মানা করেছে। আমি আমার প্রিন্সেসকে সব সময় খুশি দেখতে চাই।
বাবা যে এমন ভাবে বলবে , তা না ঐশী বুঝেছে না ওর মা । ঐশী আনন্দে কেঁদে ফেলেছে। দৌড়ে গিয়ে বাবাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো । ঐশী ভাবছে বাবা কীভাবে বুঝলো , আমি মিথ্যা কথা বলছি। আসলেই বাবা সব বোঝে।
। আজ ওর মা বড়ো অবাক হয়ে বাবা মেয়ের ভালোবাসা দেখছে। তার স্বামী যতার্থই একজন পিতা। তিনিও কেঁদে ফেললেন। ঐশীর বাবা তার প্রিন্সেসের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন, আর ঐশী কাঁদতে কাঁদতে বলছে।
ঐশী- আই লাভ ইউ বাবা, আমি এমন কিছু করবোনা যাতে তোমার মাথা নত হয় । আমি তো তোমার ভালো মেয়ে তাইনা বাবা ।
তবে হঠাৎ করেই কী যে হল ঐশী বলে বসলো -
ঐশী- বাবা আমাকে ১০০০০টাকা দেও ,শাস্তি স্বরুপ ।
ওর বাবা,মা দুজনেই এই মেয়ের কান্ড দেখে অবাক হয়ে গেছেন । এই না ভ্যা ভ্যা করে কাঁদলো এখন আবার টাকা চায় ,
মা- এত গুলো টাকা তুই কি করবি । আর কিসের শাস্তি ।
ঐশী- বাবা আমাকে কাঁদালো কেন? তাই বাবাকে ফাইন ভরতে হবে ।
ওর বাবা মেয়ের কথা শুনে হেসে উঠলেন। আসলেই তো তিনি খুব বড়ো অন্যায় করে ফেলেছেন। তার প্রিন্সেসের চোখে জল এনে। তাই রায় হল দশহাজার টাকা ঐশী পাবে। এই কথা শুনে ঐশীর মা , যে কিনা তার স্বামীকে ভালো বলছিলেন, সেই এখন তার গুষ্টি উদ্ধার করেছে ।
ঐশীর এই কাহিনী শুনে তর্নীও হো হো করে হেসে উঠলো । তর্নী বুঝতে পারছে ঐশী যথেষ্ট দুষ্টু মিষ্টি একটা মেয়ে। দেখতেও হেব্বি! আচ্ছা ঐশী যদি আমার খরুস দাদাকে বিয়ে করে তবে তো আমি আর ঐশী এই বাড়ি মাতিয়ে রাখতে পারবো। আর দাদার চাহনি ও আমার সুবিধার ঠেকছে না । আর ,এত বড়ো বিজনেসম্যান তোতলায় কেন ঐশীর ব্যাপারে । হুম ভাবার বিষয়।
তর্নী- আচ্ছা ঐশী দি তোমার বস কে কেমন লাগে
ঐশী- কেমন লাগে মানে।
তর্নী- মানে মানুষ হিসেবে কেমন , তারপর কেয়ারিং , নাকি বোরিং।
ঐশী- আমি এই কদিনে যা বুঝলাম, কাজ ছাড়া অন্য কিছুই সে বোঝে না। তবে মানুষ হিসেবে যথেষ্ট ভালো। কেয়ারিং আছে, তবে বোরিং একদমই না।
তর্নী হা করে ঐশীর কথা শুনছে , তার দাদা এত ভালো । কী ভাবে সম্ভব , যার রাগে পুরো বাড়ি ,অফিস কাঁপে সে নাকি কেয়ারিং। এই মেয়েও তো দেখি বসের কথা বলতে বলতে নিজেই লাল নীল হচ্ছে । কী যে হচ্ছে দুজনের মধ্যে! তদন্তে নামতে হচ্ছে তো। দুজনকেই হাতে নাতে ধরতে হবে ।
ঐশী আর ও গল্প করলো , নিচে থেকে ডাক এলো খাবার । যখন ঐশী তর্নীর ঘর থেকে বের হল , পাশের ঘরের দিকে চোখ গেল । সাজানো গোছানো সুন্দর একটা ঘর , তর্নী বলল এটাই ওর দাদার ঘর । ঐশীর কৌতুহল হল , সে দরজায় নক না করেই ঢুকে গেল, সাথে তর্নীকে নিয়ে। ঘরটা চমৎকার, কচি কলাপাতা রং করা , সিলিং সাদা , তার মাঝে সুন্দর একটা ফুল আঁকা। তর্নী শুধু ঐশীকে দেখছে , কী মায়া লাগছে মুখটা। ঘরটা ইয়া বড়ো , ঐশীর মনে হল ওদের দুই ঘরের সমান এই ঘরটা। এই ভাবনার মাঝেই , বাথরুমে আওয়াজ হল । দুজনেই কেঁপে উঠলো।
তর্নী- ঐশী দি দাদা আছে বাথরুমে ,চলো নিচে যাই। আমার ভয় করছে ।
ঐশী- যাব তো নিশ্চয়ই যাবো ,তবে এটা করে,হাহা হা।
তর্নী - এসব করোনা, দাদা রাগ করবে।
কে শোনে কার কথা ,ঐশী ওর কাজ করে । ভালো মেয়ের মত নিচে নেমে গেল । ওরা ডাইনিংএ খেতে বসেছে। তখনি আদির চিৎকারে বাড়ি কেঁপে উঠলো। তর্নীর তো জান যায় অবস্থা । ঐশী শুধু মুচকি মুচকি হাসছে ।
পেজ-#মন_সায়রের_পারে

