গল্প হলেও সত্যি
গল্প হলেও সত্যি
রথীনবাবু বাড়ি আজ সকাল থেকেই গমগম করছে। অনেকদিন পর একমাত্র মেয়ে শ্বশুড়বাড়ি থেকে এসছে। তাই বাবা, মা ও ছেলে অমলেন্দু ব্যস্ত, নানা রকম রান্নার আয়ােজনে।
রথীনবাবু আমাদের কয়েকটা বাড়ির পরেই থাকেন। দু-বছর হলাে সরকারি চাকুরি থেকে অবসর নিয়েছেন। স্ত্রী – সুপর্ণাদেবী সংসার ও ছেলে মেয়ের ভবিষ্যৎ চিন্তা নিয়ে ব্যস্ত। ছ-মাস হলাে মেয়ে রিজার বিয়ে হয়েছে, পুত্র শান্তিনিকেতন থেকে সুনামের সঙ্গে চিত্রকলা বিভাগে পাশ করে গুটি কয়েক ছেলেকে অঙ্কন শিক্ষা দিতে শুরু করেছে। সেইদিন খাওয়া দাওয়ার পর দুপুর বেলা দুই-ভাই-বােনে বেশ করে গল্প শুরু করেছে। হঠাৎ দিদি রিজা ভাইকে বলল - বঙ্কু তাের আঁকা একটা ছবি দিবি ড্রয়িং রুমে সাজিয়ে রাখবাে? বঙ্কু বলল তেমন তাে ছবি নেই, তবে এক্ষুনি এঁকে দিচ্ছি, বলে সে বসে গেলাে, দিদি মায়ের সঙ্গে গল্প করতে লাগল।
বেশ কিছুক্ষণ পর বঙ্কু নিজের আঁকার দিকে তাকিয়েই গুমরে গুমরে কেঁদে উঠলাে। একি ছবি আঁকলাম মা কোনদিন আমি কল্পনাতেই ভাবতে পারিনি। সে কী করে দিদিকে বলবে? এই ভাবনার মাঝেই হঠাৎ কলিং বেলের আওয়াজ। ছুটে গিয়ে দরজা খুলে বন্ধু দেখলাে এক অপরিচিত ব্যক্তি খবর দিতে এসেছে জামাইবাবু তাদের বাড়িতে আসার সময় অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছে। ছুটে ঘরে ঢুকে তার আঁকা দিদির বিধবার ছবির দিকে তাকিয়ে রইল বিমূঢ় হয়ে।

