পরিবর্তন
পরিবর্তন
গ্রামের এক দস্যি ছেলে রাকেশ, সে এত দুরন্ত গ্রামের কারও ক্ষমতা নেই তাকে আটকানাে। বাবা-মার কাছে তাে লােকের দিনরাত নালিশ আসছে। আজ কারও গাছে আম পাড়ে, তাে কাল জলের কলসি ভেঙে দেয়। সত্যি ! একটি ছেলেতেই গােটা গ্রামকে অতিষ্ট করে তুলেছে। বাড়িতে সে এত মার খায়। বাবার এই নিয়ে সাতটি বেত ভাঙা হল। মার দুটো খুন্তি বেঁকে গেছে। তবুও ছেলেটার দস্যিপনা যায় না। এমনকি বুড়াে লােকদেরও লাঠি কেড়ে নেয়। পেছনে পটকা ছেড়ে দেয়। ঠাকুর দেবতা থেকে ভূত-প্রেত কাউকে না আছে কোনও মান্যি। না আছে কোনও ভয়। এমন দূরন্ত ছেলে নিয়ে সত্যিই চিন্তায় তার বাবা-মা।
রাকেশের দিনরাত বলে কিছু নেই। সর্বদা টো টো করে ঘুরে বেড়ায়। এমনটি রাত্রি দশটাতেও গাছে। চেপে লােককে ভয় দেখাতে ছাড়ে না। একদিন রাতে তাকে ঘরে ঢুকতে দেয়নি। অগত্যা তাকে ঘড়ের গাদায় ঘুমােতে হয়। তারপর একদিন ঘটনা ঘটল। এক রাতে সে যাত্রা দেখে পাশের গ্রাম থেকে বাড়ি ফিরছিল। যথারীতি অকুতােভয় রাকেশ রাত্রিবেলা ঘুটঘুটে অন্ধকারে বাড়ি ফিরছে। তাদের গ্রাম ঢুকতই পড়ে একটা বাঁশবাগান। যেটা সে শনিবার অমাবস্যার রাতেও অনায়াসে অতিক্রম করে। তবে সেদিন যেন কেমন একটা লাগছিল তার। রাকেশ বাগানের মধ্যিখ
ানে আসতেই দেখে খুব নীচু কয়েকটা তারা জ্বলছিল। কৌতূহলী হয়ে সে ছুটে যেতেই দেখে সেটা তারা নয়, ভূতের রাজার মুকুটের হীরে। হযা এই তাে সেইভূতের রাজা সেই গুপীগাইন বাঘাবাইনের। এবার তার মনে একটু ভয় হল। তবু সে গলা ঝাঁঝিয়ে বলল "কে তুমি, রাস্তা ছাড়ো ।” "ভূতরাজ বলেন - আমি হলাম ভূতের রাজা ভূতের রাজা। তুমি বড় দস্যি ছেলে দস্যি ছেলে দস্যি
ছেলে। কেন তুমি এমন করাে, ভালাে হয়ে পড়াশুনা করাে। সবাইকে সাহায্য করাে সাহায্য করাে। তােমার মা বাবার বড় কষ্ট তােমার জন্য, তুমি তাদের করাে না মান্য লােকে তাদের নালিশ জানায় তােমার জন্য তােমার জন্য। তুমি ভালাে হও দেখ কেমন মজা পাবে, এই বলে ভূতের রাজা চলে গেলেন। পরদিন থেকেই সবাই রাকেশকে দেখল অন্যভাবে, সেদিন তার বাবা মার কাছে কেউ নালিশ জানায়নি। উপরন্ত অন্তর মা এসে বলে "তােমার ছেলে শান্ত হয়ে গেছে।"
সতিইে রাকেশের দস্যিপনা ঘুচল। এখন সে আর বদমীসি করে না। মন দিয়ে পড়াশুনা করাে। সবাই তাকে খুব ভালােবাসে। তাই রাকেশ সেই ভূতের রাজাকে ধন্যবাদ জানায়। সে এর জন্য প্রত্যেকদিন সেই दাশবাগানে যায়। কিন্তু আর কোনদিনও সেই ভূতের দেখা পায়নি। কেবল পেয়েছে তার মুকুটের একটি পাথর।