এক সদ্য বিধবা স্ত্রীর প্রেমের উপাখ্যান অধ্যায় চার এর পরবর্তী অংশ থেকে
এক সদ্য বিধবা স্ত্রীর প্রেমের উপাখ্যান অধ্যায় চার এর পরবর্তী অংশ থেকে
লেখক-:
ডাক্তার (প্রফেসর) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য
এম.ডি (কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়) ;এফ আই সি প্যাথলজি, ডব্লু.বি.এম.ইএস (অবসরপ্রাপ্ত)
প্রাক্তন অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান, প্যাথলজি বিভাগ, কলকাতা স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন, কলকাতা -700073, পশ্চিমবঙ্গ, এবং জে.এম. এন মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ, জেএমএন এডুকেশনাল অ্যান্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশন, চাকদহ, জেলা- রানাঘাট, পশ্চিমবঙ্গ এবং বর্তমানে অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান, প্যাথলজি, জে আই এস মেডিক্যাল স্কুল এবং রিসার্চ, সাঁতরাগাছি, হাওড়া ,পশ্চিমবঙ্গ
ই মেইল করুন -: profpkb@yahoo.co.in (বেশিরভাগ ব্যবহৃত)
prof.pranab@Gmail.com ( কম ব্যবহৃত)
বাসস্থান এর ঠিকানা-:
মহামায়া অ্যাপার্টমেন্ট, ব্লক-বি, ফ্ল্যাট -৩, ২য় তলা, মহামায়াতলা, ৫৪ এন এস সি বোস রোড, পোস্ট অফিস- গড়িয়া, কলকাতা ৭০০০৮৪, পশ্চিমবঙ্গ
কপি রাইট -:
Belongs primarily to Prof. Dr. Pranab Kumar Bhattacharya under strict Copyright acts and laws of Intellectual Property Rights of World Intellectual Property Rights organisations ( WIPO) , RDF copyright rights acts and laws and PIP copyright acts of USA 2012 where Prof Dr Pranab Kumar Bhattacharya is a registered member . Please Don't try ever to infringe the copyright of the manuscript to protect yourself from criminal offences suit file in court of law in any places of india and by civil law for compensation in few millions US dollar or in pounds or in Euro in any court of laws in India
পূর্ব প্রকাশিত অধ্যায় চার এর পরবর্তী অংশ থেকে...
আমি এখন না হয় বাড়ি যাই। নয়টা বাজতে চললো যে সবাইকে রাতের খাবার দিতে হবে। তোমার কাছে এলে সময় যে কথা দিয়ে ফুরিয়ে যায় টেরও পাই না। তোমাকে ধন্যবাদ।
আলোকের সাথে আমার প্রথম পরিচয় এই হেলথ সেন্টার হাসপাতালেই ,আলোক পায়ে গুলি খেয়ে ভর্তি হবার পরে। অলোক মাঝ থাইতে গুলি খেয়ে ভর্তি হয়েছিলো হাসপাতালে, বামনগাছিতে কোথাও কোনো এনকাউন্টারে। আমার তখন বোধকরি মাস তিনেক হয়েগেছে এই হেলথ সেন্টারে। একদিন দুপুরে ভাতঘুম ঘুমাচ্ছিলাম কোয়ার্টারে, হাসপাতালের আউটডোর আর রাউন্ড শেষ করে, খেয়েদেয়ে । সাথে সেই সপ্তাহে আমার সংগে বাবা এসেছিলেন। হঠাৎ বাবা আমার ঘুম ভাঙিয়ে তুলে বলেছিলেন " তোকে অনেক লোকে ডাকছে বাইরে কেনো দেখ ! কোনো খারাপ রোগী এসেছে হয়তো "। কোয়ার্টারের বাইরে দেখি , গ্রামের অনেকগুলো অচেনা লোক জড়ো হয়েছে " এদের আগে কখনোই দেখিনি হাসপাতালে। সেটা মার্চ মাস ছিলো মনে আছে। আমি তখন গেঞ্জি আর পায়জামা পরে ছিলাম। সেই অবস্থায় বের হতেই, হৈ চৈ করে বেশ কিছু লোক আমাকে প্রায় পাজাকোলা করেই তুলে নিয়ে ইমার্জেন্সিতে এসেছিলো। যতোই তাদের বলেছিলাম যে জামা প্যান্টটা পরে আসতে দিন তারা শোনেনি। তাদের কয়েকজনের হাতে দেখেছিলাম পাইপগান, রিভলভার, দা, হাসুয়া, লাঠি। যেনো কোনো যুদ্ধক্ষেত্র থেকেই ওরা আসছে। ইমারজেন্সিতে এক গাদা লোক জমায়েত। ঢুকে দেখি বছর তিরিশের লিকলিকে, হাড় গিলগিলে, তামাটে গায়ের রং একটা লোক স্ট্রেচারে শুয়ে কাতরাচ্ছে আর তার ডান দিকের থাই বেয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। সিস্টার দিদিও ভয়ে সিঁটকে আছে। কী ভাবে হলো ওদের জিজ্ঞেস করতে,একজন বললো পায়ে গুলি লেগেছে। আমি দ্রুত ক্ষত স্থানটা গজ দিয়ে টাইট করে ব্যান্ডেজ করে কম্পাউন্ডার বাবুকে ডাকতে বললে দুতিন জন দ্রুত বেড়িয়ে গিয়ে মিনিট দশ এর মধ্যে ওনাকে নিয়ে এসেছিল। আমরা দুজনে মিলে ঠিক করেছিলাম ও টি তে নিয়ে গিয়ে গুলিটা বার করতে হবে আর ব্লিডিং হচ্ছে যে ধমনীটা থেকে সেটা বাঁধতে হবেই। বারাসাতে রেফার করা যাবে না। যেতে যেতে জারকিংয়ে আরও ব্লিডিং বাড়বে। কম্পাউন্ডার বাবু নাকে ইথার অ্যানাসথেসিয়া দেবে আমি আর নার্স দিদি নামবো অপারেশনে। তখনই নামটা জেনেছিলাম । ছেলেটার নাম অলোক দাস । নার্স দিদি অলোককে তৈরি করেছিলেন ও টি র জন্য। প্রায় একঘন্টার অপারেশনে গুলিটা বেরিয়েছিল। ফেমরাল ধমনীর একটা ছোট ব্র্যাঞ্চ ছিঁড়ে গেছিলো। সেটা ভালো করে বেধে দেওয়া হয়েছিলো। গুলিটা অলকের ফিমার 🦴 হাড়ও ফ্র্যাকচার করেছিলো। তখন হেলথ সেন্টারে কোনো এক্সটার্নাল ফিক্সেটর বা এলিসারোভার বা ফিক্স করার প্লেট বা নেল না থাকার জন্য , গুলিতে lacerated মাসলগুলো বাদ দিয়ে মাসলগুলোকে এন্ড টু এন্ড স্টিচ করে ক্ষত স্থান সেলাই করে বেড়িয়ে এসেছিলাম। অলকের সাঙ্গোপাঙ্গোরা কোনোরকম পুলিসকেস না লিখতে আমাকে হুমকি দিতে থাকলে ,কম্পাউন্ডারবাবুও ইশারা করে আমাকে ওদের কথায় সায় দিতে বলেছিলেন। অলোক এরপরে প্রায় তিনমাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলো পায়ের হাড় জোড়া লাগাতে ট্রাকশন দিয়ে। অলোকের বাড়ীর লোক ওকে বাড়ি নিয়ে যেতে চাইলেও সে যায় নি। আমি প্রতি সপ্তাহের তিনদিন ওর ক্ষতস্থান ড্রেসিং করে দিতাম নিজে দাড়িয়ে থেকে। সেই সময়ই ওর সাথে আমার পরিচয় হয় । অলোক কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজের ইকোনমিকস এর প্রথম শ্রেণীর প্রথম হওয়া ছেলে শুনে প্রথমেই আমি সত্যিই ঘাবড়ে গেছিলাম। এরপরে ও নাকি ইকোনমিকসের মাস্টার্স ডিগ্রি করে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে। প্রেসিডেন্সিতে পড়বার সময় রাজনীতিতে হাতে খড়ি। সেটা আবার নকশাল পার্টির রাজনীতি। সেই ছেলেকে এখানে এই অবস্থায় দেখতে পাবো এটা সত্যিই আমার কল্পনার বাইরেই ছিলো। অলোককে দেখেছিলাম এই হেলথ সেন্টারের সকলেই চেনে একডাকে, । অলোক নাকি এই গ্রামেই অ্যাক্টিভ রাজনীতি করে আর তার রাজনীতি এখানেও ছিলো নকশাল পার্টিরই রাজনীতি। অলোক আমাকে বলেছিলো সে জাগুলিয়ার হাইস্কুল থেকেই প্রথম বিভাগে তিনটে সাবজেক্টে লেটার মার্কস নিয়ে পাস করে বেরিয়েছিলো। জাগুলিয়ার সচ্ছল এক পরিবারের ছোট ছেলে সে। সেই সময়ে জাগুলিয়া গ্রামে পাকা ইটের বাড়ির সংখ্যা ৩০০ এর মত ছিলো মনে পড়ছে। তার মধ্যে দোতলা বাড়ি হয়তো গোটা ২৪-২৫ এর মত। অলোকদের তিনতলা বাড়িটা ছিলো বেশ কয়েক কাঠা জমি নিয়ে আর অনেকটাই জায়গা নিয়ে । ইংরেজ আমলের কাঠামোতে তৈরি বাড়ি এবং সেখানে অনেক রকম মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকতে গাছও ছিলো। নানা রকম ফুলের গাছ,আম , জাম, কাঠাল, লিচু নারিকেল,সুপারী গাছ সবই ছিল। অলোক ক্র্যাচ নিয়ে হাঁটতে পারলে একদিন আমাকে নিয়ে গেছিলো ওদের বাড়ি। এর মধ্যে অলকের বাড়ির লোকজনের সাথে আমার পরিচয় হয়ে গেছিলো কিছুটা। আলোকের দুই দাদা বিদেশে থাকতেন। অলকের মা বাবা আগেই মারা গেছিলেন। বাড়িতে বড় দাদা , বড় বৌদি ,কাকা কাকীমা খুড়তুতো ভাই, ভাইপো ভাইজি বিধবা বোন আর তার মেয়েরা।
# ১৯৮৪-৮৭তে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশেষ করে শহরতলীর এবং গ্রামেগঞ্জের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিন্তু খুব বিশেষ একটা ভালো ছিলো না। বলা যায় টালমাটাল ছিলো । রাইটার্সবিল্ডিং এ এই রাজ্যের শাসন করার জন্য গদিতে তখন বাম ফ্রন্ট সরকার। ১৯৭৭ সাল থেকে শুরু করে দ্বিতীয় বারের জন্য গদিতে আসীন বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে। কংগ্রেস জনতা আর ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট এই পার্টি গুলো দ্বিতীয় বারের ভোটে একেবারে ধুয়ে মুছে সাফ। বি জে পি তো ধূলিসাৎ হতে চলেছে। অ্যাসেম্বলি এর বিরোধী আসন প্রায় শুন্য। চারিদিকে শুধুই ফ্রন্ট আর সি পি এম। আর সেই ফ্রন্ট সরকার চলতো ফ্রন্টের প্রধান পার্টি সি পি এম এর অঙ্গুলী হেলনে। সি পি এম এর কেন্দ্রীয় বা রাজ্য কমিটি যা করতে বলত সরকার সেটাই করবার চেষ্টা করতো। তাই এই রাজ্যে তখন কংগ্রেস, বি জে পি, জনতা সংঘ, স্বান্ত্রা পার্টি নকশাল পার্টির আন্দোলন এগুলোতো প্রায় সময় লেগেই থাকতো নিজেদের স্বর্থে। , তার সাথেই ছিলো কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে, প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও পরে রাজীব গান্ধীর দিক থেকে যত রকমের সম্ভব অসহায়তা করা এমন কি রাজ্যের প্রাপ্য টাকাটাও ও দিতো না তারা। সব দিক থেকেই এই অসহায়তা গুলো ছিলো পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উন্নয়নের জন্য বড় ধরনের বাধা। ১৯৮২ সালে কংগ্রেস পার্টি এবং কংগ্রেস জোট পশ্চিম বঙ্গে অ্যাসেম্বলি ভোটে দ্বিতীয় বার হেরে ভুত হয়ে পার্টির অস্বিত্ব কোনো ভাবে বজায় রাখতে তখন ব্যস্ত এবং সেটা করত ফ্রন্ট সরকারের প্রায় সমস্ত উন্নান্যান মূলক কাজে বাধা উৎপত্তি করে । নিজদের অস্বিত্ব টিকিয়ে রাখতে প্রায় রোজ কোনো না কোনো ইস্যু তে বনধ ডাকা ,মারপিট করে, দাঙ্গা হাঙ্গামা প্রায়সময়ই করতো । গোদের উপর বিষফরা ছিলো সি পি এম এল বা নকশাল পার্টির রাজনীতি , আন্দোলন, মানুষ খুন। এর ওপরে আবার ছিলো সি পি এম পার্টির মুসলিম লীগের নেতাদের সাথে সমঝোতা ভোটের বাক্স ঠিক ভাবে রক্ষা করবার জন্য আর বাংলাদেশ থেকে ১৯৭২- ১৯৭৪ সালের উদ্বাস্তুদের স্বার্থ রক্ষা করতে। সবটাই ছিলো ফ্রন্টের ভোটের বাক্স যাতে বজায় থাকে। ইউনিয়ন ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ও চেষ্টা করতো একইভাবে মুসলিম আর উদ্বাস্তু শরণার্থী দের ভোট তাদের দিকে ঘুরিয়ে টেনে আনতে সব কিছু দিয়ে চেষ্টা চালানো। এর ফলে রাজ্য রাজনীতিতে আরো দাঙ্গা ,মারামারি, আন্দোলন বেড়ে চলেছিল। ১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গান্ধী তার শিখ দেহরক্ষীর হাতে নিজের সরকারী ভবনে গুলি খেয়ে নিহত হলেন। এবং সারা দেশ জুড়ে শিখ নিধন কর্মসূচি শুরু হয়েছিলো। রায়ট দাঙ্গা শুরু হয়েছিল সমস্ত দেশ জুড়ে। পশ্চিমবঙ্গে ফ্রন্ট সরকার শিখদের পাশে দাড়িয়েছিল এবং কংগ্রেস দ্বারা সৃষ্ট সেই শিখ নিধন রায়ট কে সমর্থন করেনি
পশ্চিমবঙ্গে তাই তখন বেকারত্ব, গরিবী, ইনফ্লেশন, এবং জীবন ধারণের বেসিক আমিনিতিজের অভাব । তার মধ্যেও গ্রামেরগঞ্জের ইকোনমিক উন্নতি কিছু না কিছু ঘটেছিল । তার মধ্যে হেলথ সিস্টেম একটা।
অলক এই হাসপাতালে ট্রেকশনে থাকবার সময় নিজের জীবনের বেশ কিছুটা অংশ আমাকে বলেছিলো । অলক ছোটো জাগুলিয়া গ্রামের মোটামুটি এক সচ্ছল যৌথ পরিবারের ছেলে। তাদের বাড়িটা তিনতলা সরীকি বাড়ি , ইংরেজ আমলের কাঠামোতে তৈরি করেছিলেন অলকের ঠাকুরদার ,বাবা। এই গ্রামেরই উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকেই তার পড়াশুনো এবং বড় হয়ে ওঠা। তার দাদারা এবং বোনেরাও এই গ্রামের স্কুল থেকেই পড়াশুনো করেছিল। দুই দাদাদের একজন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ার আর একজন কলকাতার বোস ইনস্টিটিউট থেকে পদার্থবিদ্যায়
পি এইচ ডি করে দুজনেই বিদেশে চলে গেছিলো এবং সেখানে সেটেল্ড ওরা এখন। অলক স্কুলের বরাবরের ফার্স্ট বয় ছিলো কিন্ত ও নবম শ্রেণীতে আর্টস নিয়েছিল। এখানের স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় তিন তিনটে সাবজেক্টে লেটার মার্কস নিয়ে আর্টসে দ্বিতীয় স্থান নিয়ে পাস করে প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হয়েছিল ইকোনমিকস হনোরস নিয়ে। হিন্দু হোস্টেলে থাকত তখন অলক । সেখানেই সে নিশিকান্ত বলে প্রেসিডেন্সির এক সিনিয়র ছাত্রের সংস্পর্শে আসে এবং ধীরে ধীরে নকশাল রাজনীতিতে জড়িয়ে পরে। হিন্দু হোস্টেলে থাকা কালীন সে বিড়ি, গাঁজা, চরস আরো অন্য কিছুর নেশায় জড়িয়ে পড়ে। এর জন্যেও দায়ী ছিলো নিশিকান্ত। সেও নেশাখোর ছিলো। অলকের লক্ষ্য ছিলো তার গ্রাম ছোটজাগুলিয়ার গরীবগুর্বু রিফিউজি অল্প শিক্ষিত অশিক্ষিত প্রান্তিক চাষী বা কারখানার শ্রমিক মানুষগুলোর জন্য, তাদের সন্তানদের লেখাপড়া তাদের যাতে মাইক্রো ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর বা নন ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল কোম্পানিগুলোর যমদূত গুলোর ঋণের হাতথেকে বাঁচাতে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির, তাদের স্বাস্থের উন্নতির জন্য সে কাজ করবে পড়াশুনো শেষ করে। নকশাল রাজনীতিতে, নেশায় জড়িয়ে পড়লেও কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় কিন্ত সে প্রথমশ্রেণীতেই প্রথম হয়েই ইকোনমিকস নিয়ে বি এ পাস করেছিল। এর পরে সে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম এ ইকোনমিকস করতে ভর্তি হয়েছিলো। সেখানেই তার প্রথম চারু মজুমদারের সাথে সাক্ষাৎ হয়েছিলো। সে মুগ্ধ হয়েছিল চারু মজুমদারের সমাজ পাল্টানোর কথায়
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বার সময় মাঝারি ধরনের ঘরোয়া সুন্দরী কিন্তু বুদ্ধিমতী একটি তারই বয়সী মেয়ের "রোমানার " সংস্পর্শে এসেছিলো অলক। রোমানা তখন কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজরা আইন কলেজে, আইন নিয়ে এম এল এল বি পড়াশুনো করছিলো । ও উত্তর কোলকাতার হেদুয়ার ভেংগে যাওয়া , আলাদা হয়ে যাওয়া এক মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে ছিলো। ওদের ভাগে ছোটছোট দুটো ঘর পড়েছিল। তার মধ্যেই ওর বাবা রান্নার একটা চিলতে ঘর তুলে নিয়েছিল। রোমানারা দুই বোন ছিলো। রোমানা ছোট ।ওর বড় দিদি এনাক্ষ্মী প্রেম করে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিল তাদের গানের টিচার এর সাথে। বাড়িতে কেউ মেনে নেয়নি তাদের বিয়েটা । তাই তারা আসতে পারেনা এই বাড়িতে। রোমানার বড় দিদির পুঁচকে একটা মেয়ে হয়েছিল। রোমানার তাকে কোলে নিয়ে দুই হাতে কচলাতে খুব ভালো বাসে। তাই সেইই দিদির বাড়ি যেতো। অলক আর রোমানার মেলামেশা একসময় প্রেমের পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছিল। রোমানা কিন্তু অলকের নকশাল রাজনীতি করাটা একদমই পছন্দ করত না। রোমানা সাধারণ ঘরোয়া একটা মেয়ে ছিল। যেমন সব মেয়েরা হয়। কোনো স্পেশাল গুন ছিলো না তার মধ্যে। তার ধারণা হয়েছিলো যে অলকের মত এতো ব্রিলিয়ান্ট ক্যারিয়ারের ছেলে এই নকশাল পার্টির সাথে নিজেকে জড়িয়ে সে ভুল করেছে। সে তার নিজের জীবন আর ভবিষ্যত নষ্ট করছে এবং করছেও। রোমানা অলককে অনেকভাবেই বোঝানোর চেষ্টা করেছিল যে রাজনীতির কোনো ভবিষ্যত নেই, যে রাজনৈতিক মতাদর্শের কোনো দিশা নেই, যে রাজনীতি শুধু মানুষ খুন করে কথায় কথায় তাকে বুর্জোয়া আখ্যা দিয়ে, তার সাথে নিজেকে জড়ানো ঠিক নয়। রোমানা অলকের নেশার কথা জানতো না। রোমানা কেবলই চাইত অলক তাকে বিয়ে করুক, সে একটা ভালো চাকরী করুক, বা তাকে বিয়ে করে তার দাদাদের মত বিদেশ যাক সেখানে তাদের ছেলেমেয়ে নিয়ে একটা সুখের সংসার করুক এবং অলককে সে প্রায়ই বোঝাবার চেষ্টা করতো যাতে সে নকশাল পার্টির সাথে যোগাযোগ ছেড়ে নকশাল রাজনীতি ছেড়ে মেইন স্ট্রিম সোসাইটিতে ফেরৎ আসে। কিন্তু অলক তার কথা এক কানে শুনত আর অন্য কানে বের করে দিত। অলকের মধ্যে একটা বদ্ধ ধারণা হয়েগেছিল নিশিকান্তর প্রতি দিনের মগজ ধোলাইএর মাধ্যমে যে , সে এই নকশাল পার্টির মধ্যে দিয়েই তার
আইডিওলজি, তার ইগো ,তার স্বপ্নগুলো পূরণ করতে একদিন না একদিন সক্ষম হবেই এবং এই নকশাল পার্টি একবার রাজ্য ক্ষমতায় এলে এই ঘুণ ধরা পচে যাওয়া ধনতন্ত্রের ধ্বজা বহনকরি সমাজের পরিবর্তন আনতেও সক্ষম হবে। সে ও একদিন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবে। তাদের হাত ধরেই নাকি পশ্চিমবঙ্গে সত্যিকারের বিপ্লব আসবে। অলোক জানতো যে রোমানা তাকে ভালোবাসে হয়তো বা সেও ভালোবাসে রোমানাকে। প্রেম হলেও অলক আর রোমানার মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক কখনই কিছুই হয় নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্ব চুকে গেলেও রোমানা মাঝে মধ্যেই এই ছোটো
জাগুলিয়া গ্রামে আসে অলকের বাড়িতে। অলকের বাড়ির লোকজনেরা রোমানিয়াকে ভবিস্বত পুত্রবধূ
হিসাবে মেনেও নিয়েছেন সকলে। গ্রামের লোকজনেরা ও সেটা জানে। তাই তারা কিছুই মনে করে না রোমানিয়ার এখানে আসা নিয়ে।
রেবাকে তার শ্বশুড়বাড়ি থেকে বেড়িয়ে চলে আসতেই হয়েছিলো অনেকগুলো বছরের অপমান আর শারীরিক মানষিক যন্ত্রণা সহ্য করে শ্বশুড়বাড়ির লোকেদের থেকে, কোলের দুই মেয়েকে নিয়ে। বিভাস, রেবার স্বামী তার সাথে কিছুতেই ঘর করবে না। তখন রেবার বড়মেয়েটা তিন বছরের আর ছোটটা মাত্র পাঁচ মাসের। রেবার বুকের দুধ খায় সে তখনও। রেবার স্বামী আর শ্বশুড় বাড়ি ছিলো জোতদার ও ধনী চাষী। তাদের অনেক অনেক জমি জায়গা বর্গা হবার পরেও থেকে গেছিলো। গ্রামের ভেতরে যে কয়েকটা সিমেন্ট আর ইটের তৈরী তিনতলা বাড়ি ছিলো তাদের মধ্যে একটা ছিলো রেবার শ্বশুড় বাড়ি। তাই রেবার স্বামী বিভাস, দেওর, শ্বশুর ,শ্বাশুড়ি,ননদ এরা ছিলো অলকের পার্টির শত্রু পক্ষের লোক। রেবা নিজের স্বামীর এবং শ্বশুড় বাড়ির লোকেদের মুখে অলকের অনেক কথা শুনতে পেত। রেবা মনে মনে অলকের প্রেমে পড়েছিলো। পিঠোপিঠি বয়েস ছিলো তাদের। কয়েক মাসের বড় আর ছোট। অলক তার বাপের বেড়ার ঘরে আসতো মাঝে মধ্যে, রেবা স্বামীপরিত্যক্ত হয়ে ফিরে আসবার পরে।
অলককে দেখতে তেমন একটা ভালো না হলেও, ওর গায়ের রং তামাটে হলেও,সে হাড় গিলগিলে রোগাটে তামাটে চেহারা হলেও , রেবা কিন্তু অলোকের সম্বন্ধে অনেক কিছুই জেনেছিল। গ্রামের অন্য পুরুষদের থেকে অলক কিন্ত অন্য রকমের মানুষ ছিলো। সে গ্রামের লোকজনের স্বার্থে কাজ করতো।
এদিকে রেবাও যে মনেমনে ভালোবাসতে শুরু করেছিলো অলককে। সেটা রেবা কিন্ত গোপনই রেখেছিল প্রথমে অলকের থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখে । সে তখন বিবাহিতা ছিলো দুই মেয়ের মা ছিলো। এক সম্পন্ন চাষীর বাড়ির বউ ছিলো। যদিও কপালে তার স্বামীর অবহেলা, মারধর, শ্বশুড় বাড়ির লোকেদের দুর্ব্যবহার প্রায়সময় লেগেই থাকতো। অলকের প্রতি শ্রধ্যা থেকেই তার ভালবাসা জন্মেছিল মনে। আলোকও কিন্তু রেবার, (প্যান্ডেলের দেবী দুর্গার মত) অসাধারণ সন্দৌর্য্যটাকে কিছুতেই অবহেলা করতে পারতো না। রেবার প্রতি প্রথম থেকেই সত্যিই একটা শারীরিক আকর্ষণ অনুভব করতো অলক। যেটা রোমানার ক্ষেত্রে কিন্ত ততোটা ছিলোই না অলকের। অলকও সেটা রেবার কাছে কিন্ত গোপন করেনি , রেবা তার বাপের বাড়িতে ফেরৎ আসার পরে। রেবাতো স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির পরিত্যাক্ত বিবাহিতা আর দুই ছোট মেয়ের মা ছিলো। তার কাচ্ছে তাই খোলাখুলি ভাবে আলোচনা করতে অলকের শিক্ষাদিক্ষ্যায় বাঁধেনি। রেবাও অলকের জীবনে রোমানার কথা জেনেছিল। অলক নিজেই সেটা বলেছিলো রেবার কাছে । গোপন করেনি। রেবা কিন্ত প্রথমে কিছুতেই রাজী হচ্ছিল না তার সাথে অলকের এই শারীরিক মিলনের প্রস্তাবে। এইরকম প্রস্তাবতো গ্রামের অনেক উঠতি বয়েসের ছেলেই , সদ্য যুবতী হয়ে ওঠা অবিবাহিত বা বিবাহিতা মেয়েদের দেয়। গরীব চাষীর ঘরের, বাংলাদেশ থেকে রিফুজি হয়ে আসা ঘরের মেয়েরাও কিন্ত অভ্যস্ত হয়ে যায় কি ভাবে সেইসব প্রস্তাবগুলো পাশ কাটিয়ে বেড়িয়ে আসা যায়। অনেক মেয়ে আবার লোভে পরে রাজিও হয়ে যায় গোপনে মিলনের জন্য তার হওয়া প্রেম টিকিয়ে রাখতে বা এই আশায় যদি বা ছেলেটা তাকে বিয়ে করে ,সহবাস করে। বিয়ে করলে তাদের মা বাবার দুশ্চিন্তা কমে একটা খাবার মুখ কমে সেটা তারা বোঝে। বিয়ে হলে তাদের গরীব মা বাবার গলগ্রহ হয়ে আর থাকতে হবে না সেটাও বোঝে তারা। (শ্বশুর বাড়িতেও যে তারা সবাই ভালো থাকবে বা থাকে সেটাও নয়, সেটাও তারা জানে। ) যদি তার প্রেমিক তাকে বিয়ে করে সহবাসের পর সেই আশায় বা সেই প্রলোভনে তারা সহবাস করে। কেউকেউ সহবাসের পরেও অবশ্য প্রেমে প্রত্যাখিতও হয় ছেলেটির দ্বারা। বা কারুর প্রেমটাই ভেঙে যায় সামান্য কোনো কারণেই। এদের মধ্যে কেউ কেউ হঠাৎ করেই কুমারী অবস্হায় মা হয়ে গেলে তাদের পরিবার তখন কম্পাউন্ডার বাবুর সরণাপন্ন হয়। প্রাইমারী হেলথ সেন্টারে তারা MTP করতে আসে না। কম্পাউন্ডার বাবুটি তাদের বারাসাত শহরে নিয়ে গিয়ে পেট খালাস করে দেন , ওনার এই কাজের জন্য ঠিক করা কোনো গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে দিয়ে। এতে কম্পাউন্ডার বাবুর কিছু টাকাও আসে পকেটে। এই প্রেমিক প্রেমিকাদের মধ্যে আবার কেউ আবার প্রেমিক বা প্রেমিকার প্রত্যাখ্যানটা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করবার চেষ্টা করে হয় কিটনাশক খেয়ে , ইদুর মারার বা আরশোলা মারার বিষ খেয়ে ,এমন কি তুতে খেয়েও চেষ্টা করে। তাদেরকে তখন এই প্রাইমারী হাসপাতালে নিয়ে আসে তাদের বাড়ীর বা পাড়ার লোকজন। কম্পাউন্ডার বাবু স্টমাক ওয়াস দিয়ে কিছু Atropine ইনজেকশন intramuscular দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে বারাসাত হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে দিন দুই তিন কাটিয়ে তারা বাড়ি ফিরে আসে। এরপরে তাদের বিয়ে দেওয়া হয দুই পরিবারের বা গ্রাম পঞ্চাযেতের বা সালিশিদের মধ্যস্থতায় যত তাড়াাড়ি সম্ভব। তারাও কয়েক বছরের মধ্যে ছেলে মেয়ের মা ও বাবা হয়। কিন্তু সদ্য স্বামী বা বাবা হওয়া অল্প বয়েসী ছেলেটির পার্মানেন্ট কোনো চাকরী বা কাজ জোটে না গ্রামের মধ্যে। যদি বা হয় সেটা জলা মাঠে দৈনিক অল্প মজুরিতে নতুন প্রান্তিক চাষী হিসাবে বা দৈনিক অল্প মজুরিতে ঠিকা শ্রমিক হিসাবে কাছাকাছি বামনগাছি ,দত্ত পুকুর, বীরা , অশোক নগর, হাবড়া বা বারাসাতের দোকানের কর্মচারী বা কারখানাতে, রাজমিস্ত্রী হিসেব বা জোগানদার হিসেবে অল্পমজুরিতে তাদের আয় হয়। দিন আনে দিন খায়। এতে তাদের সংসারে দারিদ্রতা যে আরও বাড়ে। ছেলেগুলো বা লোক হাড়ভাঙ্গা খাটুনির শেষে সন্ধ্যের পর মদের ঠেকে এসে একসময় বাংলা মদ খেতে শুরু করে আর কোনো না কোনো দলের হয়ে রাজনীতিতে জড়িয়ে পরে। কেউ বা যোগ দেয় সি পি এম, কেউ বা কংগ্রেস, কেউ বা জনসংঘ, কেউ বা বি জে পি কেউ বা নকশাল। এদের মধ্যে ক্রমশ বাংলা মদের নেশা তৈরি হয়। এদের রোজগারের অর্ধেক বা কখনো হয়ত পুরোটাই বাংলা মদ আর বিড়িতে শেষ হয়ে যায়। এরা বাড়িতে মাতাল হয়ে ফিরে এসে নিজের বউকে পেটায় তখন । তারপরে মদের টাকা বিড়ির পয়সা আর সংসারের পরিজনের, ছেলে, মেয়ের, বউএর ,মা, বাবার পেটের খাবার জোগাড় করতে এদের কেউ কেউ সেখানের বন্ধন ব্যাংকের লোন অফিসার বা এজেন্টদের পাতা মৃত্যু ফাদের জালে জড়িয়ে পড়ে তাদের জন্য সহজে পাওয়া যাওয়া মাইক্রোক্রেডিট লোন চরা মাসিক সুদ বা কিস্তিতে বা কাছাকাছি শহরের অন্য কোনো মাইক্রোফাইন্যান্স কোম্পানি বা নন ব্যাঙ্কিং ফাইন্যান্স কোম্পানীর কাছে টাকা ধার করে মাসিক চরা সুদের হরর। এরা মাইক্রোক্রেডিট আর ক্ষুদ্র ঋন কোম্পানীর দনকরান কেন্দ্রীয় সরকারী বা রাজ্য সরকারের আইন কানুন কিছুই জানে না , যেহেতু অশিক্ষিত বা কম শিক্ষিত বলে বা পড়াশুনো জানে না বলে। তারা এটাও জানে না যে বন্ধনব্যাংক বা বাজারের অন্য যে কোন মাইক্রোফাইন্যান্স কোম্পানিগুলো বা ননব্যাঙ্কিংফিনান্সিয়াল কোম্পানিগুলো পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের ১৯৪০ সালের মাইক্রো ফাইন্যান্স কোম্পানি গুলোর টাকা ঋন দেওয়া ও পরিশোধ করবার আইন অনুযায়ী বা ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার বাজারে টাকা ঋন দেবার এবং ঋণের সুদ নিয়ে ব্যবসা করবার বৈধ লাইসেন্সে ছাড়া এবং লোকাল থানার পারমিশন ছাড়া কোনো মাইক্রো ক্রেডিট ঋন প্রদান করতে পারেনা এবং তার থেকে সুদও আদায় করতে পারেনা এবং রেজিস্টার্ড মাইক্রো ফাইন্যান্স কোম্পানি গুলো রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার দ্বারা নির্দ্ধারিত সুদের বেশী সুদ বছরে নিতে পারে না এবং ঋন পরিশোধ করতে ঋন গ্রাহকের বাড়ি গিয়ে কোনো রকম চাপ বা খারাপ ধরনের ব্যাবহার করতে পারেন না এবং এই ধরনের মাইক্রোক্রেডিট ঋন প্রদানকারি কোনো বেআইনি সংস্থা যদি ঋন হিসাবে কোনো ভারতীয় মুদ্রায় টাকা লেদেনের সাথে কোনোভাবে যুক্ত হয় বা থাকে সেটা ভারতীয় আইনের চোখে জামিন অযোগ্য একটা ক্রিমিনাল অফেনস , মাইক্রোক্রেডিট ঋন প্রদানকারি সংস্থাগুলোর লোন অফিসার, মালিক এবং ঋন আদায় করা এজেন্টদের জন্য। এদের ভারতীয় PMLA অ্যাক্ট এর অনেকগুলো ধারায় স্স্বাস্তি দেওয়া যায় প্রথেম জেনেরাল ডায়েরী এবং পরে FIR করে লোকাল পুলিশ স্টেশনে। গ্রামের প্রান্তিক বা গরীব চাষি পরিবারের লোকেরা যদি মাঠে চাষও ঠিক মত না হয়, বা প্রাকৃতিক কোনো দূর্যোগে বা অতি বৃষ্টি বা বিদ্যেধরী নদীর বন্যায় বা খরায় চাষবাসে লোকসান হয় তখনও হয় তাদের মহাজন বা বন্ধন ব্যাংক বা ঋন প্রদান কারি সংস্থা গুলোর কাছে চরা মাসিক সুদ হারে ঋন গ্রহন করা ছাড়া আর উপায় থাকে না। গতি থাকে না । বন্ধন ব্যাংকের লোন অফিসার বা এজেন্টরা এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে বসে থাকতো গ্রামে একটা অস্থায়ী অফিস খুলে যদি মুরগি তাদের জালে ধরা পড়ে। এর জন্য ট্ট্রেনিং প্রাপ্ত লোন অফিসার গ্রামের বাড়ি বাড়ী যেতো বোঝাতে মাইক্রো ক্রেডিট লোন নেবার সুবিধে। চরা মাসিক সুদে বন্ধনের মাইক্রো ক্রেডিট লোনের ফাঁদে তাদের জড়িয়ে ফেলত ভুল ভাল বুঝিয়ে যে লোনের জন্য তাদের বাড়ির কোনো কিছুই বন্ধক রাখতে হচ্ছে না। শুধু ব্যাংকের কয়েকটা কাগজে সই বা টিপ সই দিলেই বেশ কয়েক হাজার টাকা লোন পাবে তারা । তবে মাসিক একটা কিস্তি দিতে হবে প্রতি মাসে। তাতে যে শুধু লোনের সুদটাই মেটানো হয় মূল লোন তাদের থেকেই যায় সেটা উহ্য থাকত। এরপরে ঋণের সেই চরা সুদের টাকা মেটাতে গিয়ে ঋন গ্রাহক/ গ্রহীতারা আবারও লোন করে সেই ব্যাংকের কাছে ।, লোন পরিশোধের কিস্তির টাকা আরো বেড়ে যায়। অথচ লোনের পরিমাণ কমে। সেই বাড়তি লোনের সুদের কিস্তির টাকা মেটাতে গিয়ে গ্রাহক) গ্রহীতারা আবারও টাকা লোন করে অন্য কোনো বেআইনি ঋনপ্রদান কারি সংস্থাগুলোর থেকে বা অবৈধ কোম্পানির থেকে । এই ভাবেই গ্রামবাসীরা আস্তে আস্তে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং বাধ্য হয় এদের পরিবারের সব কিছু বিক্রি করে দিতে, যখন লোন রিকভারি এজেন্ট বা অফিসাররা এসে যমদূতের মত হানা দেয় তাদের বাড়িতে। এরা সত্যিই যমদূত কোনো পরিবারে জন্য। এদের কঠিন দৃষ্টা্তস্বরূপ শাস্তি হওয়া উচিৎ রাষ্ট্রের হাতে। প্রয়োজনে ফাঁসি । এই যমদূতের জন্য ঋন গ্রাহক/ গ্রহীতার পরিবারের সব লোকজন বাচ্চা গুলো অপুষ্টিতে ভোগে । একদিন এদের কারুর কারুর টিবি হয়। এরা তবুও হাসপতালে আসতে পারে না। একদিনের কাজের টাকা এদের কাছে অনেক বেশি মূল্যবান হয়, হাসপতালে এসে ফ্রিতে ডি ও টি তে টি বি র ওষুধ নিয়ে খাওয়া। এই ভাবেই গ্রামে টি বি ছড়ায়। ঋন গ্রাহক/ গ্রহীতার কেউ কেউ বা মানষিক ভারসাম্য হারিয়েও ফেলেন লোনের ই এম আই এর টাকা কোথা থেকে রোজগার হবে এই চিন্তায় যার চিকিৎসা আরো ব্যয়বহুল। কেউ বা যমদূত স্বরূপ লোন রিকভারি অফিসার বা এজেন্টদের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। নিরুদ্দেশ হয়ে যায় । কেউ বা এরপরে সুইসাইড করে। এটাই এখানকার জীবন চক্র ছিলো। অথচ এরা লোকাল থানার পুলিশের কাছে গিয়ে বন্ধনব্যাংক বা অন্যকোন মাইক্রোফাইন্যান্স কোম্পানি বা ননব্যাংকিং ফাইনান্সকোম্পানির বিরুদ্ধে বা তাদের লোন অফিসারদের বিরুদ্ধে বা তাদের লোন রিকভারি এজেন্টদের বিরুদ্ধে কোনো FIR করে না বা জেনেরাল ডায়েরি করে না শুধু মাত্র অজ্ঞতার কারণে আর ভয়ে। এমনকি লোকাল পুলিশ এর নাকের ডগায় এইসব অবৈধ টাকা লেনদেনের ব্যাবসা চললেও পুলিশ কোনো অ্যাকশন নেয় না এইসব মাইক্রোক্রেডিট ঋন প্রদানকারী সংস্থাদের কর্তাব্যক্তি দের বিরুদ্ধে বা অফিসার বা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে । যদিও বা কেউ যায় থানায় অভিযোগ নিয়ে এদের বিরুদ্ধে , থানার অফিসার বা ইন্সপেক্টর গণ ঋণ গ্রাহক/গ্রহীতাকেই প্রচুর ধমক দেয় গালাগাল দেয় কেনো সে বা তারা মাইক্রোক্রেডিট ঋন নিয়ে সেই ঋন ঠিক সময় পরিশোধ করছে না। পুলিশ অফিসার গণ এটা কিন্ত তদন্ত করে দেখে না যে মাইক্রোক্রেডিট ঋন নিয়ে ব্যবসা করার সংস্থটির আদৌ বৈধ রাজ্য সরকারের, কেন্দ্রীয় সরকারের, সর্বোপরি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের দেওয়া বৈধ মাইক্রোক্রেডিট লোন নিয়ে ব্যবসা করার লিখত অনুমতি আছে কিনা এবং সেই সংস্থাটি কেন্দ্রীয় সরকারের বা রাজ্য সরকারের এবং রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার পাবলিশড অর্ডার অনুযায়ী তাদের ব্যাবসা করছে কিনা। জিডি বা FIR তো নেই না। অথচ পুলিশের কাজ রাষ্ট্রের কাজ খবর পেলেই এইসব অবৈধ ব্যবসায়ীদের নিজের থেকে অ্যারেস্ট করে ১৯৪০ সালের রাজ্যের মানি লেন্ডিং অ্যাক্ট অনুসারে বা ভারত বর্ষের PAMLA অ্যাক্ট অনুসারে কোর্ট এইসব সংস্থার মালিক বা অফিসারদের বা ফিল্ড এজেন্টদের বিচারের ব্যবস্থা করা। পুলিশ বা রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতারা এই সব অবৈধ ব্যবসায়ী ঋন দিয়ে চরা সুদের টাকা লেনদেন করি সংস্থা গুলোথেকে তাদের অবৈধ ব্যাবসা চালিয়ে যেতে হয়তো বা মাসোহারা পেয়ে থাকে। তাই প্রশাসন জেনে শুনেও অন্ধ হয়ে বসে থাকে। মিডিয়া বা সংবাদ মাধ্যমে সামান্য কিছু নাড়া চাড়া পড়লে এই বন্ধন ব্যাংক বা মাইক্রো ফাইন্যান্স লোন এর জন্য কোন আত্মহত্যার ঘটনা ঘটলে পুলিশ সাফাই দেয় " আমাদের কাছে কোনো কমপ্লেইন আগে কেউ করেনি । আমরা দেখছি কি ঘটেছিল। যদি সত্যিই এই কারণে উনি আত্মহত্যা করে থাকেন আমরা নিশ্চয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব" অথচ তার আগে রাষ্ট্র কিচুই করবে না। আশ্চর্য নয় কি ডাক্তার?? অলক বলেছিলো আমাকে সেই ১৯৮৫ সালে। ১৯৮৬ -৯০ সালে এইসব বন্ধন ব্যাংক বা রিজার্ভ ব্যাংকের বৈধ লাইসেন্সে ছাড়া এবং রিজার্ভ ব্যাংক বা সরকারের বেধে দেওয়া সুদের চেয়ে বেশি সুদ গ্রহণকারী মাইক্রো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা নন ব্যাংকিং ফাইন্যান্স কোম্পানিগুওলো এই ভাবে তাদের ব্যাবসা চালিয়ে গেছে এবং আজকে ২০২৩ সালেও চালাচ্ছে। যদিও ২০১৫ সালে মাইক্রোফাইন্যান্স কোম্পানিদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সভায় বিল এনে মাইক্রোফাইন্যান্স কোম্পানিগুলো ব্যাংক গুলোকে নন ব্যাংকিং ফাইনান্স কোম্পানী গুলোকে কিছুটা হলেও আইনের বাধনে বেধেছেন এবং ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক ২০২২ সালের জানুয়ারি মার্চ ও এপ্রিল মাসের মাস্টার ডিরেকশন এবং রেগুলেশন এবং ২০২৩ সালে ৮ জুন মাসে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক এদের রেগুলেশন করতে অনেকগুলো অর্ডার জারি করেছেন কিন্তু আমার সন্দেহ হয় কোনো মাইক্রোফাইন্যান্স ব্যাংক বা কোম্পানি বা নন ব্যাংকিং ফাইন্যান্সকোম্পানি এই সরকারী আর রিজার্ভ ব্যাংকের নির্দেশ মেনে চলেকি আদৌ। ভারতীয় কমার্স এবং ফাইন্যান্স মন্ত্রক এর ডিপার্টমেন্ট এই সব মাইক্রোফাইন্যান্স ব্যাংক বা কোম্পানি বা নন ব্যাংকিং ফাইন্যান্স কোম্পানি গুলোর জন্য ২০২৩ এ মাইক্রোক্রেডিট ঋণ গ্রাহক / গ্রহীতার সুবিধের জন্য অনেক গুলো আইন তৈরি করেছেন। তার মধ্যে ইম্পর্ট্যান্ট হলো কোনো ব্যাংক বা মাইক্রোফাইন্যান্স ব্যাংক বা কোম্পানি গুলো মাইক্রোক্রেডিট ঋন গ্রাহক বা গ্রহীতাদের বিরুদ্ধে কোর্টে আর কোনো ফৌজদারি( যদি না ফ্রড বা ইচ্ছা কৃত ডিফল্টআর হয়) মামলা করতে পারবে না ঋন পরিশোধ না করতে পারবার জন্য বা কোম্পানির কোনো লোক ঋন গ্রাহকের / গ্রহীতার বাড়িতে গিয়ে চাপ দিতে পারবে না ঋন পরিশোধ করতে। ( রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার (RBI/2023-24/40 DOR.STR.REC.20/21.04.048/2023-24 ) । করতে হবে কম্প্রোমাইজ সেটেলমেন্ট ডিফল্টট্যার দের জন্য তার আয়ের ওপরে নির্ভর করে এবং পর্টিয়াল টেকনিক্যাল রাইট অফ করতে হবে যাদের লোন ফেরৎ দেবার আর কোনো ক্ষমতাই থাকবে না একটি সিভিল কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেটের রায় অনুসারে
অলকের বেশ কিছুদিন ধরেই পীড়াপীড়িতে, রেবা কেবলমাত্র একদিনই দুপুরের পর (ডাক্তার লাহার বাড়ির কাজের শেষে) অলকের সাথে শারীরিক মিলনে যেতে রাজি হয়েছিল। রেবার নিজেরও শরীর / মন সেটা চাইছিলো নিশ্চয়। যতোই হোক রেবারও রক্ত মাংস হাড় দিয়ে তৈরি মেয়েছেলের শরীর। তারও কিছু চাহিদাতো থাকবেই। আর সেটাই তো স্বাভাবিক ছিল। কোলের পাঁচমাসের মেয়েটাকে কোলে নিয়েই অলকের পিছুপিছু গ্রামের সব লোকজনের চোঁখ এড়িয়ে, ঘুরপথে রেবা এসেছিলো কিছুটা। সাইকেলের পিছনের সিটে বসিয়ে অলোক তাকে একটা অনেক পুরনো বাড়িতে এনেছিল। বাড়িটার চারধারে বেশ অনেকটাই জুড়ে লম্বা লম্বা ঘাস, জঙ্গল আর বড়বড় অনেক গাছ । সামনে আর পেছনে শুধু ধানচাষের জন্য জলাজমি তাতে ধান গাছগুলো বেড়ে উঠছে। চার ধারে স্মসানের নিরবতা। রেবার সেইসময়টা খুব ভয়ভয় করছিলো। অলক সাইকেল চালাতে চালাতে বলেছিলো এটাই নাকি তাদের পার্টির একটা গোপন ডেরা। গ্রামের কেউই, এমন কি পুলিশও জানে না এই ডেরার অস্তিত্বটা। রেবা ভয় পেয়েছিলো তাতে। রেবাতো জানতোই কেনো সে অলকের সাথে এখানে এসেছে। রেবার ভেতরে অনেকটাই শারীরিক মিলনের আগের উত্তেজনা হলেও অলক কিন্ত একেবারেই শান্ত আর স্বাভাবিক ছিলো দেখে রেবা সত্যিই কিছুটা অবাকও হয়েছিলো। অন্য কেউ হলে রেবাকে এই একেবারে ফাঁকা আর নির্জন জায়গায় নিশ্চয় একবার হলেও জড়িয়ে ধরতো, অন্তত রেবার শরীরে হাত তো দিত। সেটাই তো পুরুষ মানুষের লক্ষণ। সেটাইতো রেবার জানা ছিলো তার বিবাহিত জীবনের অভিজ্ঞতায়। রেবাও মনেমনে সেটাই কিন্তু আশা করছিলো অলকের কাছে। রেবাতো ভালো করেই জানতো যে তার মত সুন্দরী মহিলা এই গ্রামে আর কেউই নেই। অথচ অলক কেমন যেন স্বাভাবিক ছিলো। এই যে সে রেবাকে তার সাইকেলের পিছনের সিটে বসিয়ে নিয়ে এসেছিলো তাতেও কি তারমধ্যে একটুও উত্তেজনা অনুভব করেনি সে? সেও তো জানে এখানে তাদের আসবার উদ্দেশ্য। রেবার আরও একটা ভয় হচ্ছিলো যদি অলকের পার্টির কেউই হঠাৎ এসে পড়ে তাদের মিলনের মাঝখানে? রেবা কয়েকবার মৃদু গলায় জিজ্ঞেস করেছিল " কেডা আসবেক নাইতো হিখানে হঠাৎ কইরা?" আলোক রেবাকে অভয় দিয়েছিল " কেউই আসবে না" । অলোক নিজের পাঞ্জাবির পকেটথেকে একটা চাবি বেরকরে মরচে ধরা গ্রিল আর দরজাটার তালা খুলেছিল। দিনের আলোতেও ঘরটা বেশ আলোঅন্ধকারই ছিলো , জানালাগুলো বন্ধ থাকার জন্য। আলোক মেঝেতে বসে একটা হ্যারিকেন জ্বালিয়ে এনে সেটাকে টেবিলে রেখেছিল। ঘরটা বেশ অগোছালো। মেঝেতেই স্তুপাকৃত হয়ে পরে লালরঙের কালিতে লেখা পুরনো পোস্টার গুলো। একটা তাকে কিছু সি পি এম এল পার্টির বইপত্র, কাগজপত্র। একজায়গায় কিছু লিফলেট এর স্তূপ। কোনায় কিছু রান্নার বাসন , কয়েকটা ঢাকা হাঁড়ি। একটা মাটির কলস, খাবার জল ভরা হয়ত বা। একটা জনতা পুরনো স্টোভ, দু তিনটে প্লাস্টিকের চেয়ার আর একটা টেবিল, মেঝেতে পোড়া আধখাওয়া কিছু বিড়ির টুকরো। একটা দুজনের শোয়ার মত চৌকি আর তাতে পুরনো দুটো তোষক আর সস্তা চাদরের বিছানা পাতা। কোণে মশারীটা গুটিয়ে তুলে রাখা। সেটা অনেক দিন ধোয়া হয় নি। রেবা তার মেয়েকে কোলে নিয়েই বিছানায় বসেছিল আর অলককে সে অবাক হয়েই দেখছিল। এতোটা সময়েও এখনো অলক তাকে স্পর্শটুকু করেনি। করতেইতো পারতো। রেবাও বাধা দিতো না। কেই বা দেখবে তাদের এখানে? আর বাধা দেবেই বা কোনো রেবা? রেবারতো নিজেরই ইচ্ছে করছিলো অলককে দুহাতে জড়িয়ে ধরতে। ইচ্ছেটা দমন করেই রেখেছিল সে। ইশশ অলক কিন্ত তাকে উঠোন থেকে পাজাকোলা করেইতো ঘরে আনতেই পারতো। কোনো পুরুষ, এমন কি তার স্বামী বিভাস ও তাকে কখনো পাজাকোলা করে তোলেনি এখনো পর্যন্ত। অথচ শ্বশুড় বাড়ির টিভিতে, বারাসাতে গিয়ে সিনেমায় কতবার দেখেছ স্বামীরা তাদের স্ত্রীদেরকে বা প্রেমিকরা তাদের প্রেমিকাদের পাঁজাকোলা করেই কোলে তুলে নেয়। রেবা লজ্জা পেলেও রেবারও অনেক দিনের সখ ছিলো কোনো পুরুষ তাকেও পাজাকোলা করে তুলে বিছানায় নিয়ে যাবে। তবে অলকের যেরকম রোগা পাতলা চেহারা তাতে রেবাকে পাঁজাকোলা করে তোলা অসম্ভব ও ছিলো তার পক্ষে। রেবার শরীর আর মনের ভেতরেও যে একটা পুরুষের সাথে মিলনের জন্য উত্তেজনা তৈরী হচ্ছিলো। রেবা নিজের মধ্যে চেপে রেখেছিলো সারাটা পথ সাইকেলের পিছনের সিটে বসে । রেবা হাত দিয়ে ব্লাউজের ভেতর থেকে নিজের বাম দিকের স্তন বেশ কিছুটাই বেরকরে এনে নিপলটা মেয়ের মূখে গুজে দিয়েছিল মেয়েটাকে ঘুম পাড়াতে। আরেকটাও অনুচ্চারিত উদ্দেশ্য ছিলো মনেরভেতরে রেবার। অলক সেদিকে তাকিয়ে দেখতে রেবা কিন্তু মনেমনে খুব খুশিই হয়েছিলো। মুখ নিচু করে রেখে অলককে দেখতে দিয়েছিল। সে স্তন ঢাকেনি। তার স্তনে এখনও অনেক দুধ জমে। মেয়েটা ঘুমোলে পরে অলকের হাতে নিজের উপোষী শরীরটাকে তুলেদিলে পরেই তার শান্তি হবে। সেই জন্যিতো এইখানে আসা তাদের আজকে। তার মিলনের ইচ্ছেটা তখন গলা পর্যন্ত যে উঠে এসেছে রেবা সেটাও টের পেয়েছিলো। রেবার হৃদ স্পন্দন দ্রুত চলেছিল। তার শরীরটা তৈরি হচ্ছিলো অলকের জন্য । শরীরের ভেতরে মাঝে মধ্যে মৃদু মৃদু কাপুনীও হচ্ছিলো। শিরদাঁড়ার ভেতর দিয়ে একটা খুব চেনা বিদ্যুৎপ্রবাহ বইছিল রেবার মাথায়, কোমরের চারধারে আর নিচে জঙ্ঘা বেয়ে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত। গুহার ভেতরে ক্ষরণতো অনেক আগেই শুরু হয়েছিল। ক্লিটোরিসটাও শক্ত হয়ে উঠেছিল। রেবা তবুও অপেক্ষা করছিলো অলকের। দু চোখের তারায় সে ইশারা করেছিলো অলককে । অলক তবুও দাড়িয়ে হ্যারিকেনের আলোয় ছোট এক শিশুকে স্তনদাত্রী রেবার মাতৃত্বের অপরূপ সৌন্দর্য দেখছিল হ্যারিকেনের আলোতে। অপূর্ব সেই দৃশ্য। আলোক নিজের পাঞ্জাবি আর গেঞ্জি খুলতেই রেবা তার মুখে শাড়ির আঁচল চাপা দিয়ে হেসে ফেলেছিল অলকের অবস্থা দেখে। অলক বোকার মতোই জিজ্ঞেস করেছিলো -" কী হোল রেবা , হঠাৎ হাসছ কেন তুমি এভাবে?" রেবাও সেদিকে চোখের ইঙ্গিত করেই হাসতে হাসতে বলেছিল- " মহান বিপ্লবের করুন অবস্থা দেইখা! বিপ্লবের জয় হোক। বিপ্লব দীর্ঘ স্থায়ী হোক ! " রেবা তার সরু জিভ দিয়ে নিজের ওপরের ঠোট বার দুয়েক চেটে নিয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিল সেও মহান বিপ্লবের এক বিপ্লবীর জন্য সবরকম ভাবেই তৈরি। শিকারীর হাতে শিকার হতে সবরকম ভাবেই প্রস্তুত সে। রেবার মধ্যেও যে উত্তেজনা উঠেছিলো। রেবাও যে উপোষী ছিলো প্রায় এক বছরের । অলক রেবার পাশে গিয়ে বসে বলেছিলো -" এটাইতো স্বাভাবিক ব্যাপার" রেবাও হেসে মৃদু গলায় বলেছিলো " হুমম । হেডা তো বটেকই। আর একটুকু মহান বিপ্লবরে বাইরে না হয় ঠাওর করতে কও আসতে, মাইয়াটারে না হয় ঘুম পারাইয়িয়া লই। এখুনি হে ঘুমাইয়া পড়বো"। অলকের সেই সময়টুকু অপেক্ষা করার ধৈর্য্যটা ছিলো না। কী আর করা। মেয়েকে কোলে নিয়েই, স্তনপান করাতে করাতে,রেবাও নিজের ঘেমে যাওয়া গ্রীবা তুলে,অলকের মুখের নিচেই নিজের মুখ রেখেছিল । চোখ বুজে ফেলেছিল সে। রেবাতো দুই মেয়ের মা আর এক্সপেরিয়েন্সড মহিলা ছিলো। অল্প সময়ের মধ্যেই রেবা বুঝে নিয়েছিল যে অলোক একেবারেই আনাড়ি এক বিপ্লবী পুরুষ। ঠিক পুরুষও নয়। গ্রামের অন্য পুরুষদের মত সে অন্তত নয় । এমনিতেইতো লিকলিকে, হাড়গিলে রোগা সে । খালি গায়ে বুকের খাচার হাড়গুলো দেখাও যায়, গোনাও যায়। তাই এই ক্ষেত্রে যা করতে হবে তাকেই শুরু করতে হবে। অলকের নিজের দ্বারা কিছুই হবে না। কিছুই সে জানেনা ৩০ বছর বয়সে পৌছে। মেয়ে বুকের দুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে তাকে বিছানায় রেখে রেবা নিজেই উঠে এসে অলকের কোলে বসে অলককে শৃঙ্গার করেছিল। রেবা নিজের হাতে অলককে নগ্ন করিয়েছিল । কোনো ৩০ বছরের পুরুষও যে তার পরিচিত বিবাহিতা দুই মেয়ের মা এক নারীর কাছে নগ্ন হতে এতোটা লজ্জা পায় সেটা অলকের কাছেই রেবা প্রথম দেখেছিল এবং আশ্চর্য হয়ে বলেছিল -" এতো লজ্জাতো মেয়েরাও পায়না অলকবাবু, তুমি না আবার পুরুষ মানুষ?- " তুমি বিয়ে করলে কি করবে? উকীল বউকে সুখী করবে কি ভাবে?"। এরপরে রেবা উঠে দাঁড়িয়ে নিজেই নিজেকে নগ্ন করে অলকের সামনে এসে মুখোমুখি দাড়িয়েছিল । না । অলক হ্যারিকেনের আলোয় রেবার সেই নগ্নতা সহ্য করতে পারেনি। রেবার দেবী দুর্গাপ্রতিমার মত চোখ নাক মুখ গ্রীবা, মসৃণ ত্বক ,ভগবানের হাতে , প্রকৃতির হাতে নিখুঁত ভাবে তিলতিল করে গড়া রেবার নগ্ন নারী শরীর আর গলানো সোনার মত গায়ের রং নিয়ে জন্মদিনের পোশাকে রেবা যখন অলকের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল অলকের শরীরের ভেতরের উত্তেজনা তখন একেবারেই কোথায় যেন ভ্যানিশ হয়ে গেছিল। রেবা ও খুব আশ্চর্য্য হয়েছিলো সেটা দেখে। রেবার মধ্যে তখন যে উত্তেজনা উর্ধ গগনে। রেবা চেষ্টা করেছিল তবুও এক গ্রাম্য বধূ হিসেবে তার জানা বিভিন্ন উপায়ে অলককে উদ্দীপিত করতে । হয় নি, । কখনও বা কিছুটা হলেও স্থায়ীত্ব সামান্য কিছু সময়ের জন্য। অলক কিন্ত রেবাকেই সবই করতে দিয়েছিল রেবা যেমন ভাবে চাইছিল। সে রেবার সামনে বিছানায় চুপ করেই বসে ছিলো। আর একসময় রেবার হাতেই সে হঠাৎ করেই ফুরিয়ে গেছিলো। রেবা স্বগোক্তি করেছিল "ছি:" অলক তখন লজ্জায় একবারেই চুপসে গেছিলো রেবার সামনে। রেবা প্রথমে খুবই অপমানিত বোধ করেছিল , তারপরে রেগেই গেছিলো অলকের ওপরে। রোগা অলকের গায়ে কিল ঘুষি চর মেরেছিল। কামড়ে দিয়েছিল। তারপরে নগ্ন অবস্থায় এসে চেয়ারে বসে কেঁদে ফেলেছিল , টেবিলে দুহাতের মাঝে মাথা গুঁজে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদছিল সে তার নারীত্বের তার যৌবনের অপমানে। রেবা কিন্তু তখনও আশা করেছিল অলক তাকে হয়তো পাঁজাকোলা করে আবারও বিছানায় নিয়ে যাবে। একজন সমর্থ্য পুরুষ হয়ে উঠবে। অলক কিন্তু সেটা করে নি। অলক রেবাকে স্বান্তনা দেবারও কোনো চেষ্টা করেনি। একসময় রেবা ঘৃণার চোখে অলকের চোখে চোখ রেখে বলেছিলো -" তুমি ডাক্তার দেখাও অলকবাবু। অনেক তো বিপ্লব করেছ। অনেক দেশ উদ্ধারও করেছ। নিজের অবস্থা কি সেটা ভাবো এবারে। রোমানা জানলি কোনোদিনও তোমারে বিয়া করবো না। নিজেকে নিজেই শেষ করেছ তুমি । তুমি স্বাভাবিক পুরুষ মানুষ নও। তুমি বুঝতে পারছ কি বলছি আমি? আমার কাছে তুমি আর দয়া করে তুমি আর কখনো এসো না।" অলক নিজেকে তৈরি করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল। রেবাও তাকিয়ে দেখেছিল সেটা। কিন্তপারেনি। অলক বুঝেছিল হোস্টেল জীবনের নিশিকান্তর পাল্লায় পরে চরস, গাজার,বিড়ি, ড্রাগস এর নেশার ফল আজকের তার এই ব্যার্থতা। কিন্তু সেটা রেবা বা রোমানাকে বলা কখনোই সম্ভব নয়। সে তার পুরুষত্ব হারিয়েছে। ইমপতেন্ট।
ক্রমশ চলবে

