বাঙ্গালীর দীপাবলী এবং কালীপুজো
বাঙ্গালীর দীপাবলী এবং কালীপুজো
কালীপূজা এবং তার সাথে সাথেই দীপাবলী অনুষ্ঠান হল বাঙ্গালী এবং হিন্দুদের তেত্রিশকোটি দেবদেবীর মধ্যে একই সঙ্গে ,রুদ্র মূর্তি, সংহার মূর্তি, বরাভয় এবং অসুর নিধনে যুদ্ধরতা “দেবী কালীর” প্রতি উৎসর্গিত একটি ভারতীয় এবং পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের এক আনন্দ ও ধর্মীয় উৎসব। তবে দীপাবলী আর কালীপুজো পশ্চিমবঙ্গে একপ্রকার প্রায় সদার্থক হলেও এরা কিন্তু একই উৎসব নয় সেটা আমি আগেই বলে রাখছি। কালীপূজো হল এক শক্তির দেবীরপুজো আর দিওয়ালি বা দীপাবলী হলো নানা রকম আলোর আর প্রদীপের রোশনাই এর উৎসব। এই দুই অনুষ্ঠানের তাৎপর্যও সম্পূর্নভাবেই আলাদা” যদিও বাঙ্গালীদের এই অনুষ্ঠানদুটো পরপর দুদিন পালন করা হয় প্রতিবছর অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে। আমি এই দুই অনুষ্ঠানের ইতিহাস ও তাৎপর্য ব্যাখা করতে চেষ্টা করবো এই রচনার মাধ্যমে। প্রথমেই আসি কালীপুজো নিয়ে। দেবী কালীর” প্রথম উল্লেখ যতটুকু মনে হচ্ছে, পাওয়া যায় পুরাণ ও তন্ত্রমন্ত্রে। বাংলাতে “কালী” শব্দটি প্রথম এসেছছিলো কিন্ত ‘কাল’ শব্দের স্ত্রী রূপ হিসেবে, যার বাংলা অর্থ হলো কৃষ্ণবর্ণ বা যার গায়ের রঙ কালো। কালীকে অবশ্য আদি তিন ভগবানের প্রথমতম ভগবান শিব বা মহাদেব পত্নী মহামায়ার বা মা দুর্গার অন্য একটি রূপ হিসাবেও গণ্য করা হয়ে থাকে। মা কালীর বৈজ্ঞানিক একটা ব্যাখ্যা যদি আমি দেবার চেষ্টা করি তাহলে ‘মহাকালী “ হলো আমাদের মহাবিশ্বের সর্ববৃহৎ একটি ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর, যার থেকেই আমাদের মহাবিশ্বের বিগব্যাং এর শুরু হয়েছিল এবং এই ব্ল্যাকহোলের গ্র্যাভিটি আর সমস্ত শক্তির আঁধার এবং যার ভেতরেই আবার কোনো গ্যালাক্সি বা বিশাল আকার কোনো তারা বা তারাপুঞ্জের মৃত্যু বা বিগ ক্রাঞ্চ হয়। সেই জন্যই বোধ হয় দেবীকালীর গায়ের রং কৃষ্ণবর্ণ ধরাহয়ে থাকবে । কেননা ব্ল্যাকহোলের থেকে কোনো আলোই বের হতেই পারে না। এর ঘনত্ব অসীম। আর এর শক্তি এতোই যা কিছু এর মধ্যে যা কিছু ঢোকে সেটা দুমড়ে মুচড়ে ভেঙ্গে যায়। এমন কি আলো আর সময়ও দুমড়ে মুচড়ে ভেঙে যায় । যত আলোর খেলা সেটা ব্ল্যাক হোলের চার পাশে। ব্ল্যাক হোল হলো একই সঙ্গে তাই সৃষ্টির এবং ধ্বংসের আঁধার।
দেবীকালীর মাটির তৈরী প্রতিমা বিভিন্ন রকমেরই হতে পারে তাদের স্থান, পাত্র ও কাল বা সময় অনুসারে। কিছু কিছু প্রতিমায় উনি চারহাত ধারণ করেন, কিছুতে আবার দশহাত ধারণ করেন উনি। কিছু প্রতিমায় তিনি ওনার স্বামী শিবের উপর বসে থাকেন, কিছুতে আবার তিনি শিবের ওপরে নাচ করেন, কিছুতে আবার শিব নেইই। কিছু প্রতিমায় তিনি অসুরদের মাথা ধরে রাখেন, কিছুতে আবার না। কিছু প্রতিমায় তিনি হাসি মুখে থাকেন, কিছুতে আবার রৌদ্র মুখে। কিন্তু সাধারণত ভাবে কালীদেবীর প্রতিমায় তিনি কালো বর্ণের গায়ের রং, লাল লকলকে জিহ্বা বের করে, চোখ বড় করে, চুল বিক্ষিপ্ত করে, রক্তবর্ণের শাড়ি পরে, গলায় অসুরদের মাথার মালা পরে এবং হাতে খড়্গ, ত্রিশূল, শির, কপাল ও অন্যান্য অস্ত্র ধারণ করে থাকেন। একটা হাতে উনি পৃথিবীর সমস্ত জীবকে বারাভয় দ্যান।
দেবী কালীর আট রকমের বিভিন্ন রূপের বর্ণনা পাওয়া যায় বিভিন্ন পুরাণ ও তন্ত্রে। পুরাণেও দেবী কালীর আটটি রুপ রয়েছে। এই রূপ গুলির বর্ণনা দেবারও সামান্য চেষ্টা করলাম এই রচনার মাধ্যমেই। ঠিক কতোটা সফল হলাম সেটা জানিনা।
১) দক্ষিণাকালী: এই রূপে, দেবীকালী দক্ষিণদিকে মুখ করে থাকেন। তার চারটি হাত। তাঁর সেই চারটি হাতে থাকে খড়্গ, অসুরের ছিন্নমুণ্ড, বর ও অভয়মুদ্রা । তাঁর গলায় ঝোলে নরমুণ্ডের মালা, বিরাট তার জিভ, কুচকুচে কালো তার গায়ের রং, এবং তিনি তার স্বামী মহাদেব শিবের বুকের উপর বসে থাকেন। এই রূপে তিনি কিন্ত একই সঙ্গে শিবের শক্তি ও শান্তির প্রতীক হিসেবে পুজো পেয়ে থাকেন। দক্ষিনা কালীই হলেন সেই দেবী, যিনি আবার মহাকালী, শ্যামা কালী, কালরাত্রি, ভদ্রকালী, চামুণ্ডা, শ্মশানকালী ইত্যাদি নামেও আবার পরিচিত হন। তিনি মা দূর্গার একটি বিশেষ রূপ হিসেবেও বিবেচিত হন। তাঁর নামের অর্থ হলো তিনি সময় বা কালের স্ত্রী বা কালের শক্তি স্বরুপ। তিনিই আবার মৃত্যু, সময়, কাল, অন্ধকার, শত্রু ও অশুভের প্রতীক হিসেবে আমাদের কাছে বিবেচিত হয়ে থাকেন। তিনি শিবের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন এবং তাঁর মাটির তৈরি প্রতিমায় তিনি শিবের উপরে বসে থাকেন। তিনি অত্যন্ত ভয়ানক ও রক্তপিপাসু হিসেবে বর্ণিত হন, কিন্তু তাঁর ভক্তদের প্রতি তিনি অনুগ্রহময়ী ও মাতৃসুলভ হন। তিনি অসুরদের ও অধর্মীদের নাশ করেন এবং ধর্মীদের রক্ষা করেন।
২) সিদ্ধকালী: এই রূপে কালী দেবী সিদ্ধ বা সাধকদের প্রতি অনুগ্রহ করেন। তারও চারটি হাত তাঁর চারটি হাতে খড়্গ, অসুরের ছিন্নমুণ্ড, বর ও অভয়মুদ্রা থাকে। তাঁর গলায় ঝোলে নরমুণ্ডের মালা, বিরাট জিভ, কালো গায়ের রং, এবং শিবের বুকের উপর দাঁড়িয়ে থাকেন। এই রূপে তিনি সিদ্ধিদাত্রী হিসেবে পূজিত হন।বিশ্বাস করা হয় যে উনি শক্তিশালী এবং পরিণতিশীল। তিনি মহাকালীর একটি রূপ হিসেবেও পরিচিত। সিদ্ধ কালীকে অনেক ধরনের পূজা করা হয়, যেমন তান্ত্রিক পূজা এবং শাক্ত পূজা। তিনি অনেক কালের ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
৩) গুহ্যকালী: দেবী কালীর এই রূপে উনি গুহ্য বা গোপন শক্তির প্রতীক হিসেবে পূজিতা হন। তাঁর চারটি হাতে খড়্গ, অসুরের ছিন্নমুণ্ড, বর ও অভয়মুদ্রা থাকে। তাঁর গলায় নরমুণ্ডের মালা, বিরাট জিভ, কালো গায়ের রং, এবং তিনি শিবের বুকের উপর দাঁড়িয়ে থাকেন। এই রূপে তিনি গুহ্যতন্ত্রের মাধ্যমে পূজিত হন। তিনি দেবী শতাক্ষীর শরীর থেকে উৎপন্না অন্যতমা মহাশক্তি।কোনো কোনো সাধক এই রূপে কালীর আরাধনা করে থাকেন, তবে গৃহস্থের নিকট এই রূপ "অপ্রকাশ্য"।গুহ্যকালী , কালীর এক অতিব ভয়ংকরী রূপ। এই রূপ কালীর প্রচলিত রূপের চেয়ে অনেকটাই পৃথক। গুহ্যকালী কিন্ত দ্বিভুজা, সর্পভূষিতা ও খড়্গহস্তা। তাকে সূর্যকালী বা আকালি কালী নামেও অভিহিত করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার রামপুরহাট মহকুমার অন্তঃপাতী আকালীপুর গ্রামে দেবী আকালীর একটি বিখ্যাত মন্দির বিদ্যমান।এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন মহারাজা নন্দকুমার।
৪) মহাকালী: এই রূপে কালী দেবী মহাকাল বা মৃত্যুর প্রতিরূপ। উনি স্বামী মহাদেবের সঙ্গে অবস্থান করেন। তাঁর চারটি হাতে খড়্গ, অসুরের ছিন্নমুণ্ড, বর ও অভয়মুদ্রা থাকে। তাঁর গলায় নরমুণ্ডের মালা, বিরাট জিভ, কালো গায়ের রং, এবং তিনি শিবের বুকের উপর দাঁড়িয়ে থাকেন জিভ বের করে থাকেন লজ্জায়। এই রূপে তিনি মহাকালের ব্রহ্মাণ্ডের শক্তি হিসেবে পূজিত হন যেটা আগেই আমি বলেছিলাম। মহাকালীও দেবী কালীর অতিব ভয়ংকরী ও শক্তিশালী রূপ হিসেবেই ধরা হয়। তিনি মহাকালের (শিবের একটি রূপ, যাকে মৃত্যুরূপেও কল্পনা করা হয়) সঙ্গিনী এবং মানুষের চেতনার দেবী হিসেবে বর্ণিত হন। তিনি মহাবিশ্বের প্রাথমিক শক্তি এবং চূড়ান্ত বাস্তবতা রূপে বিবেচিত হন। মহাকালীর মূর্তিকল্প বিভিন্ন রকমের হতে পারে। তিনি প্রায়ই নীল রঙের শরীর নিয়ে চিত্রিত হন। তার চার থেকে শুরু করে দশটি হাত পর্যন্ত থাকতে পারে, যেখানে তিনি বিভিন্ন রকমের অস্ত্র ধারণ করেন। তার গলায় তারই বধ করা অসুরদের মাথার খুলির একটি মালা থাকে। তার চোখ লাল, চুল অগোছালো এবং জিহবা বের করে থাকে। তিনি মহাকালের উপর বসে থাকেন বা তার শবদেহের উপর নাচেন। তিনি মহাপ্রলয়ের কালশক্তি হিসেবে বিখ্যাত। মহাকালীর বিভিন্ন নাম ও উপনাম রয়েছে, যেমন কালী, কালিকা, চামুণ্ডা, শ্যামা, ভদ্রকালী, কালরাত্রি, কালভৈরবী, কালসর্পদমিনী, কালচক্রকা, কালকান্তকা, কালসংকর্ষিণী, কালহংসা, কালমুখী, কালবিম্বা, কালপাদ্মা, কালকুটা, কালমালিনী, কালসুন্দরী, কালমোহিনী, কালমুক্তা, কালমুক্তিকা, কালমুক্তিদা, কালমুক্তিপ্রদা, কালমুক্তিপ্রদায়িনী, কালমুক্তিপ্রদায়নী, কালমুক্তিপ্রদায়কা, কালমুক্তিপ্রদায়কী,এইসব
৫) ভদ্রকালী: ভদ্রকালী মহাশক্তির একটি বিশেষ রূপ। মার্কণ্ডেয় পুরাণ অনুসারে, মহিষাসুরমর্দিনী চণ্ডী ও ভদ্রকালী অভিন্না। মহাভারতে ভদ্রকালী দুর্গার অপর নাম। কালিকাপুরাণ ও দেবীপুরাণ অনুসারেও, ভদ্রকালী দুর্গারই রূপান্তর। আবার সরস্বতীকেও ভদ্রকালী নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে।এই রূপে কালী দেবী ভদ্র বা শান্ত স্বরূপে প্রকাশিত হন। তাঁর চারটি হাতে খড়্গ, অসুরের ছিন্নমুণ্ড, বর ও অভয়মুদ্রা থাকে। তাঁর গলায় নরমুণ্ডের মালা, বিরাট জিভ, কালো গায়ের রং, এবং শিবের বুকের উপর দাঁড়িয়ে থাকেন। এই রূপে তিনি ভক্তদের শুভ কামনা করেন এবং তাদের রক্ষা করেন।কালিকাপুরাণ অনুযায়ী, ভদ্রকালীর মূর্তি উক্ত পুরাণে বর্ণিত দুর্গামূর্তির অনুরূপ।এই মূর্তি ষোড়শভুজা, অতসীপুষ্পবর্ণা, মস্তকে জটাজুট ও চন্দ্রকলা শোভিতা, কণ্ঠদেশে নাগহার ও স্বর্ণহার পরিহিতা, দক্ষিণ হস্তসমূহে শূল, চক্র, খড়্গ, শঙ্খ, বাণ, শক্তি, বজ্র, দণ্ড এবং বাম হস্তসমূহে খেটক, ঢাল, ধনু, পাশ, অঙ্কুশ, ঘণ্টা, পরশু ও মুষল ধারিণী। সিংহপৃষ্ঠে দণ্ডায়মান অবস্থায় বামপদে মহিষাসুরকে আক্রমণ করে তিনি তাকে শূলের দ্বারা বিদ্ধ করেছেন।
৬) চামুণ্ডাকালী: এই রূপে দেবী কালী চামুণ্ডা বা চণ্ডমুণ্ডের হত্যার পর প্রকাশিত হন। তাঁর চারটি হাতে খড়্গ, ত্রিশূল, শির, খপর ও রক্তপূর্ণ বর ও অভয়মুদ্রা থাকে। তাঁর গলায় নরমুণ্ডের মালা, বিরাট জিভ, কালো গায়ের রং, এবং শিবের বুকের উপর দাঁড়িয়ে থাকেন। তিনি দেবী দুর্গা বা পার্বতীর সঙ্গে সম্পর্কিত। তার নাম চামুণ্ডা হল চণ্ড ও মুণ্ড নামক দুটি অসুরের শিরশ্ছেদ করার কারণে। তিনি ভয়ঙ্কর ও সংহারকারী রূপে প্রকাশিত হন। তিনি শ্মশানে বাস করেন এবং শিবের সঙ্গে সহচর হন। চামুণ্ডা কালীর উপাসনা বিশেষ করে কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে করা হয়। এই দিনটিকে কালি চতুর্দশী বলা হয়। এই দিনে ভক্তরা মা কালীর প্রতিমা বা চিত্রে পূজা করেন এবং তার কাছে প্রসাদ অর্পণ করেন। এই দিনে চোদ্দশাক খাওয়া এবং চোদ্দ বাতি প্রজ্জ্বলনের রীতি প্রচলিত আছে। এই দিনে মা কালী ভূত, প্রেত, অশুভ শক্তি ও নরকাসুরের সাথে যুদ্ধ করেন এবং ভক্তদের রক্ষা করেন। আপার বাঙ্গালী জন সাধারণ এই কালীরই পুজো করেন দীপাবলির আগের দিন।
৭)শ্মশান কালী হল দশমহাবিদ্যার প্রথমবিদ্যা স্বরূপ কালী বা কালিকার এক রূপ। শাস্ত্রমতে দেবী কালিকা এখানে ব্রহ্মময়ী। তিনি একদিকে নিরাকার ও আবার সাকারও । উভয় রূপেই তিনি জগৎ বাসীর কাছে অবস্থান করেন। কালীবিষয়ক আলোচনা ও পূজারআচার বা বিদ্যাকে মহাবিদ্যা বলাহয়। শাস্ত্রজ্ঞগণ মনেকরেন কালীকুল শরণাপন্ন হয়ে তান্ত্রিক কুল দীক্ষা ছাড়া এই কালীরূপ বা বিদ্যার প্রকৃত মর্ম উপলব্ধি অসম্ভব। দেবী এই রূপে অঞ্জন পর্বতের মত কৃষ্ণবর্ণ ও শুস্কশরীর বিশিষ্টা। রক্তিমাভ চক্ষু। এনার কেশ আলুলায়িত। এইদেবীর ডান হাতে সদ্যছিন্ন নরমুণ্ড ও বাম হাতে আসবপূর্ণ নরমুণ্ড নির্মিত পানপাত্র। দেবী সর্বদা ক্ষুৎ পিপাসান্বিত ও শবরূপী সদাশিবের উপর দন্ডায়মানা। কপালে অর্ধচন্দ্র শোভিতা। শ্মশান কালীর পূজা তান্ত্রিকগণ মাছ ,মাংস আর মদ্ উপাচার দিয়ে পূজা করে থাকেন। তবে , এই তান্ত্রিক মৎস,মাংস বা মদ্য বলতে যা জিনিসকে নির্দেশ করে আসলে সেটি একটি সঙ্কেত মাত্র। শাস্ত্রীয় মতে সদগুরুর সাহায্য পেলে তবেই এই পঞ্চ ম-কারের প্রকৃত অর্থ উপলব্ধি সম্ভব। বাস্তবে পঞ্চ ম-কারের সাধনা করা সাধকের সংখ্যা অতি বিরল। এই শ্মশান কালীর পূজায় অন্যান্য সবকিছু দক্ষিণা কালিকা পূজার অনুরূপ। পূজা যন্ত্রে সামান্য কিছু প্রভেদ বর্তমান।বীজমন্ত্র দক্ষিণা কালিকার মন্ত্র হতে ভিন্ন। তবে মা কালীর মূল বীজ যে কোন রূপভেদেও এক ও অভিন্ন। শ্মশান কালীর পূজা প্রতি শ্মশানে হয়ে থাকে। এই কালীর পূজা গৃহস্থ বা পাড়ার মণ্ডপে হয় না।
দেবী কালীর দশটি নামও আছে বাঙ্গালীদের কাছে তারা আমার জ্ঞান অনুসারে এইরকম
১) সতী: এই নামে তিনি শিবের প্রথমা স্ত্রী হিসেবেই পরিচিত। সতী দক্ষপ্রজাপতির কন্যা ছিলেন এবং তাঁর স্বয়ংবরে শিবকে বর হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। তিনি দক্ষকে তাঁর পতির অপমানের জন্য তাঁর নিজেকে আগুনে আহুতি দিয়েছিলেন দক্ষ এর যজ্ঞে।
২) জয়া: এই নামে তিনি শিবের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে পরিচিত। তিনি সতীর পুনর্জন্ম হিসেবে হিমালয়ের কন্যা পার্বতী হিসেবে জন্মেছিলেন। তিনি শিবকে পুনরায় প্রেমে পড়েছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে বিবাহ করেছিলেন। তিনি শিবের সহচরী হিসেবে তাঁর সঙ্গে অনেক লীলা করেছিলেন।
৩) সত্যানন্দস্বরূপিণী: এই নামে তিনি সত্যের আনন্দের স্বরূপ হিসেবে পরিচিত। তিনি সত্যের মাধ্যমে আনন্দ দান করেন এবং আনন্দের মাধ্যমে সত্য প্রকাশ করেন। তিনি সত্যের সাথে একত্ব বোধ করান এবং সত্যের প্রতি আত্মসমর্পণ করান।
৪) ভবানী বা ডাকাত কালী: এই নামে তিনি ভব বা শিবের স্ত্রী হিসেবে পরিচিত। তিনি শিবের সঙ্গে শক্তি ও শান্তির প্রতীক হিসেবে পূজিত হন। তিনি শিবের অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে তাঁর সঙ্গে সম্পূর্ণ মিলিয়ে যান। আগেকার দিনের ডাকাতরা ডাকাতি করতে যাবার পূর্বে এই কালীর পূজা করতো
৫) চন্দ্রঘণ্টা: এই নামে তিনি চন্দ্রকে ঘণ্টা হিসেবে ধারণ করেন। তিনি নবরাত্রির তৃতীয় দিনে পূজিত হন। তিনি যুদ্ধের শঙ্ক ঘোষ করেন এবং শত্রুদের ভয় দেন। তিনি শান্তি ও সৌভাগ্যের দাত্রী হিসেবেও পরিচিত।3
নিত্যা: এই নামে তিনি নিত্য বা অনন্ত হিসেবে পরিচিত। তিনি সময়ের উপর নির্ভর করেন না এবং সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তিত হন না। তিনি সময়ের স্বামী হিসেবে পরিচিত মহাকালের শক্তি হিসেবে পূজিত হন।
৬) দক্ষকন্যা: এই নামে তিনি দক্ষপ্রজাপতির কন্যা হিসেবে পরিচিত। তিনি দক্ষপ্রজাপতির সতী নামে পরিচিত একমাত্র কন্যা ছিলেন। তিনি শিবের প্রথম স্ত্রী হিসেবে পরিচিত
৭) ত্রিনেত্রা: এই নামে তিনি ত্রিনেত্র বা তিনটি চোখ বিশিষ্ট হিসেবে পরিচিত। তিনি তিনটি চোখ দিয়ে তিনটি লোক বা ভুলোক, ভুবরলোক ও স্বর্গলোক দেখেন। তিনি তিনটি গুণ বা সত্ত্ব, রজস ও তমসের প্রভাবের উপর নির্ভর করেন না।
৮) চিত্রা: এই নামে তিনি চিত্র বা রঙিন হিসেবে পরিচিত। তিনি বিভিন্ন রঙের সাজে সাজায় থাকেন এবং বিভিন্ন রঙের অনুভূ
৯) ছিন্ন মস্তক কালি -: ছিন্ন মস্তক কালি হলেন মা কালীর আরো একটি রূপ, যেখানে তিনি তাঁর নিজেরই ছিন্ন মস্তক বা মুণ্ড নিজের হাতেই ধরে থাকেন। এই রূপে তিনি মুক্তির প্রতীক হিসেবে পরিচিত। তিনি তাঁর আগ্রহ ও আসক্তির মুণ্ড হাতে ধরে তাঁর নিজের আত্মা থেকে মুক্তি পান। ছিন্ন মস্তক কালির রূপের উল্লেখ পাওয়া যায় বিভিন্ন পুরাণ ও তন্ত্রে। যেমন, কালিকা পুরাণে বলা হয় যে, কালী দেবী তাঁর নিজের মস্তক কেটে ফেলে তাঁর হাতে ধরে রাকলেন। একেই ছিন্ন মস্তক কালি বলা হয়।ছিন্ন মস্তক কালির রূপের আরও কিছু বিশেষত্ব হলো নিম্নলিখিতঃতিনি তাঁর বাম হাতে তাঁর মস্তক ধরে থাকেন এবং তাঁর ডান হাতে একটি জুতো ধরে থাকেন। জুতোটি তাঁর আগ্রহ ও আসক্তির প্রতীক হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়।তিনি তাঁর বাম পায়ে শিবের উপর দাঁড়িয়ে থাকেন এবং তাঁর ডান পায়ে তাঁর নিজের মস্তকের উপর দাঁড়িয়ে থাকেন। এটি তাঁর মুক্তির স্থিতি হিসেবে বোঝানো হয়।তিনি তাঁর মুখে একটি হাসি রাখেন এবং তাঁর চোখে একটি করুণাময় দৃষ্টি থাকে। এটি তাঁর ভক্তদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ ও আশীর্বাদ প্রকাশ করে।
কালীপূজা ও দীপাবলী প্রায় সদর্থক পশ্বিমবঙ্গে
কালীপূজা ও দীপাবলী উৎসব একইসঙ্গে প্রধানত ভারতবর্ষের পশ্চিমবাংলা অঞ্চলেই পালন করা হয়। কার্তিকমাসের অমাবস্যা তিথিতে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয় এবং সেইজন্য এটা দীপান্বিতা ( দীপাবলী) কালীপূজা নামেও পরিচিত। এইদিন প্রতি প্যান্ডেল প্যান্ডেলে , রাস্তায় রাস্তায় , বাড়ি বাড়িতে, নানারকম ধরনের আলোকসজ্জা, মণ্ডপসজ্জা ও নানা রকমের বাজি ও আতসবাজির পোড়ানোর উৎসবের মধ্য দিয়ে সারা রাত্রিব্যাপী মণ্ডপে, মণ্ডপে বাড়িতে এবং মন্দিরগুলিতে কালীপূজা অনুষ্ঠিত হয়।
কালীপূজার ইতিহাস খুবযে একটা পুরনো সেটা নয়। দেবীকালীর উল্লেখ পাওয়া যায় মহাভারতে, যেখানে তিনি হত যোদ্ধা ও পশুদের আত্মাদের বহন করেন। তাই সেখানে তাঁর নাম কালরাত্রি বা কালী।
কালীর আবির্ভাব সম্পর্কে যে তথ্য আমি পেয়েছি, তা হলো, পুরাকালে শুম্ভ ও নিশুম্ভ নামের দুই দৈত্য পৃথিবীজুড়ে তাদের ভয়ংকর ত্রাসের সৃষ্টি করেছিল। সকল দেবতারাও নাকি এই দুই দৈত্যের কাছে যুদ্ধে আত্মসমর্পণ করে। ফলে দেবলোক তাদের হাতছাড়া হয়ে যায়, । তখন দেবরাজ ইন্দ্র দেবলোক ফিরে পাওয়ার জন্য ক্ষীরসাগরে নারায়ণের শরণাপন্ন হলে, বিষ্ণুর নির্দেশ অনুসারে সকল দেবতাগণ একসাথে আদ্যশক্তি মা মহামায়ার তপস্যা করতে থাকেন, তখন দেবী মহামায়া সন্তুষ্ট হয়ে তাঁদের কাছে যে রূপে আবির্ভূত হন সেই দেবীই হচ্ছেন কালী।
ষোড়শশতাব্দীর প্রথমদিকেও কালীপূজার উল্লেখ পাওয়া যায় । কালীপূজার প্রবর্তক হিসাবে মনেকরা হয় নবদ্বীপের প্রসিদ্ধ তান্ত্রিক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশকে, যিনি নিজেই মাটির কালীমূর্তি তৈরী করে পূজা করতেন। তার আগে উপাসকেরা তামার পটে খোদাই করে কালীর সাধনা করতেন। অষ্টাদশ শতাব্দীতে নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় মাটির মুর্তি কালীপূজাকে জনপ্রিয় করে তোলেন। ঊনবিংশ শতাব্দীতে কৃষ্ণচন্দ্রের নাতি ঈশানচন্দ্র ও বাংলার ধনী জমিদারদের পৃষ্ঠপোষকতায় কালীপূজা ব্যাপক হারে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বর্তমানে একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে দীপাবলী এবং কালীপূজা এখন বাংলায় দুর্গাপূজার মতোই এক বিরাট উৎসব হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ জিজ্ঞেস করতেও পারেন যে কালিপূজার প্রয়োজন কি ? এই প্রশ্নের উত্তরটা বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে। কালিপূজা হল হিন্দু ধর্মের একটি শাক্ত উৎসব, যেখানে শক্তির দেবী কালির প্রতি শ্রদ্ধা ও ভক্তি প্রকাশ করা হয়। কালি পূজার প্রয়োজন হতে পারে নিম্নলিখিত কারণে:
১) কালিপূজা হল একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী উৎসব, যা পশ্চিমবাংলা অঞ্চলেই প্রধানত পালন করা হয় এবং সেটা দীপাবলীর সাথেই । এটি বাঙালি সংস্কৃতির একটি অবিভাজ্য অংশ। কালি পূজা করে বাঙালিরা তাদের ঐতিহ্য ও ধর্মানুষ্ঠানের মর্যাদা রক্ষা করে।
২) কালি পূজা হল একটি আধ্যাত্মিক ও তান্ত্রিক উৎসব, যা নাকি মানুষের মুক্তি ও সিদ্ধির পথকে প্রশস্ত করে। কালি পূজা করে মানুষ মা কালির কৃপা ও আশীর্বাদ পায়, যা তাদের জীবনে শান্তি, সুখ, সমৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, সুরক্ষা ও সফলতা আনে।
৩) দীপাবলি এবং কালিপূজা হল একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসব, যা মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব, সহযোগিতা, সহানুভূতি ও আনন্দের ভাব জাগ্রত করে। দীপাবলী আর কালিপূজাতে মানুষ তাদের পরিবার, বন্ধু, প্রতিবেশী ও সমাজের সঙ্গে মিশে যায়, যা তাদের মানসিক ও সামাজিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
দীপাবলী ও কালিপূজো
সমস্ত পশ্চিমবঙ্গেই কালীপূজা আর দীপাবলী অনুষ্ঠান প্রায় সদর্থক। কালীপূজার আগেরদিনটা পশ্চিম বঙ্গবাসীরা চোদ্দ রকমের শাক খায় আর সন্ধ্যা বেলায় প্রতিটি ঘরেঘরে প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালায় আর কালীপূজারদিন ও প্রদীপ আর নানা রকমের আলো জ্বালিয়ে আলোর রোশনাই করে কালীপূজা ও দীপাবলী একইসাথে পালন করে। এই দুদিন ধরে নানা রকমের বাজি, আতসবাজি পোড়ানো হয়। প্রকৃতপক্ষে তাই দীপাবলীও হলো হিন্দুদের একটি প্রধান ধর্মীয় উৎসব, যাকে আমরা আলোর উৎসব বা দীপোৎসব হিসেবেও বলতে পারি। এই উৎসবের পেছনে অনেকরকম ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় ঘটনা ও কাহিনী রয়েছে, যেমন:
১) শ্রী রামওসীতা রাবণবধের পরে হনুমান, লক্ষণ বিভীষণ ,সুগ্রীব , সহ রামসীতা তাদের বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে নিজের রাজ্য আয়োধ্যায় ফিরে আসেন। তাই এই দিনটা অনেক হিন্দু রামের জয় ও আলোর প্রতীক হিসেবে দেখেন। আয়োধ্যার লোকজন শ্রীরাম সীতা লক্ষ্মণ এদেরকে স্বাগত জানাতে আয়োধ্যার ঘরেঘরে নাকি সেদিন সকল রাজ্যবাসী দীপ জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন । এই দীপগুলি নাকি আয়োধ্যাতে রামের পথ প্রকাশ করেছিলো এবং তাঁকে নিরাপদে আয়োধ্যার রাজপ্রাসাদে যেতে সাহায্য করেছিলো।
২) ভগবান বিষ্ণু বামন অবতার রূপে মর্ত্যে জন্মগ্রহণ করেছিলেন দীপাবলীর পুণ্যদিনেই। তিনি বলিকে দমন করে দেবতাদের উদ্ধার করার জন্য বামনরূপে মর্ত্যে জন্মগ্রহণ করেন, কশ্যপমুনির ঔরসে তাঁর স্ত্রী অদিতির গর্ভে।
৩) পাণ্ডবরা অমানুষিক কষ্টকর বারোবছর বনবাস আর একবছর অজ্ঞাতবাস করেছিলেন পাঞ্চাল রাজের কন্যা পাঞ্চালীকে নিয়ে। কালের নিয়মে বনবাসের মেয়াদ শেষ হয়েছিলো। তাঁরা ফিরে এসেছিলেন কালীপুজোর দীপাবলীর দিনে। হস্তিনাপুরবাসী তাঁদের অভ্যর্থনা করলেন প্রদীপ জ্বালিয়ে চারদিক আলোকিত করে, আলোর উৎসব করে।
৪) জৈন মতে, ৫২৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মহাবীর দীপাবলির দিনেই মোক্ষ বা নির্বাণ লাভ করেছিলেন।
৫)১৬১৯ খ্রিষ্টাব্দে শিখদের ষষ্ঠ গুরু হরগোবিন্দ ও ৫২ জন রাজপুত্র দীপাবলির দিন মুক্তি পেয়েছিলেন বলে শিখরাও এই উৎসব পালন করেন।
৬)আর্য সমাজ এই দিনে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর মৃত্যুদিন পালন করে। তারা এই দিনটি "শারদীয়া নব-শস্যেষ্টি" হিসেবেও পালন করেন।
এছাড়াও দীপাবলীর আগে এবং পরে আরও কয়েকটি উৎসব পালিত হয়, যেমন ধনত্রয়োদশী, বা ধন্তরাজ, কালীপূজা, গোবর্ধন পূজা এবং বিস্বর্জনের পরদিন প্রতিপদ এবং দ্বিতীয়াতে ভাইফোঁটা। এই উৎসবগুলি ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশে বিভিন্ন নামে ও রীতিনীতিতে পালন করা হয়।
“দীপাবলি"নামটির প্রকৃত অর্থ হলো "প্রদীপের সমষ্টি"। এইদিন হিন্দুরা ঘরেঘরে ছোটো মাটির তেল বা সোলার বা ব্যাটারি চালিত প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালেন। দীপাবলির অনুষ্ঠানে সারি-সারি প্রদীপের আলোতে স্বর্গের দেবতাকে গৃহে বরণ করে নেন। পুর্ব পুরুষদের আত্মারাও নাকি এই প্রদীপের আলোর শিখা দেখে মর্তে নেমে আসেন নিজেদের আত্মীয়দের কাছে। এই প্রদীপ জ্বালানো আসলে অমঙ্গল বিতাড়নের প্রতীক। উত্তরভারতে দীপাবলির সময় নতুন পোশাক পড়া, পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণের প্রথাও আছে।
এটি হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে কার্তিকমাসে অনুষ্ঠিত হয়, যা গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জির নভেম্বর মাসে পড়ে। এটি আধ্যাত্মিক "অন্ধকারের ওপর আলোর বিজয়, মন্দের ওপর ভালোর, এবং অজ্ঞতার ওপর জ্ঞানের প্রতীক"। দীপাবলি ভারত,নেপাল, মরিশাস, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, গায়ানা, সুরিনাম, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ফিজিতে একটি সরকারি ছুটির দিন। বাংলাদেশেও এই দিনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি দেওয়া হয়।এছাড়া, নেপাল-ভারত-বাংলাদেশের সকল সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যেই এই উৎসব নিয়ে উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়।২০২৩ এ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এর ডাউনিংস্ট্রিটের বাড়িতেও ও দীপাবলী অনুষ্ঠান পালিত হয়েছে পুরুলিয়া তে দীপাবলীর পরিবর্তে সেই দিনে বন্দনা উৎসব পালন করা হয়ে থাকে এটাকে রঙ্গলি উৎসব ও বলা হয়। এদিনে পুরুলিয়ার গ্রামে বাড়ির দেওয়ালের গায়ে উঠোনে নানা রকম রং দিয়ে চিত্র আঁকা হয়। সব মহিলারা বিভিন্ন রঙের শাড়ি পরে লোকাল সঙ্গীত গেয়ে নাচ করেন।
