ড্রাকুলা রাজত্ব
ড্রাকুলা রাজত্ব
ছোটো বেলা থেকেই ঠাম্মি দাদান এর কাছে ড্রাকুলার গল্প শুনে বড়ো হয়েছে অনেক বাচ্চারাই । ভূত্তুম ও সেরম ভাবেই বড়ো হয়েছে ।ভূতুম ওরফে নিহারিকা সেন , ঠাকুরদা ছিলেন এক কালের জমিদার বংশের বংশধর । জমিদারি আর নেই তারাও ভিটে জমি বেচেঁ চলে এসেছে দক্ষিণ কলকাতায়। ভূতুমের বাবা ডাক্তার মা ইনকাম টাক্স অফিসর। ছোটো থেকেই ভুতুম তার ঠাম্মা দাদুর কাছেই বড়ো হয়েছে। তার এক অদ্ভুত নেশা ছিল সে ভুত ধরবে ভূতের সাথে কথা বলবে। নিহারিকা প্যারানরমাল সাইন্স নিয়ে পড়াশোনা করছে এখন। এর ক্ষেত্রে অনেক সময় অনেক জায়গায় যেতেও হয় তাকে ।
প্রতি বার তার আশা ভঙ্গ হয় । ভুত সে দেখতে পায়না । একবার তো একজায়গায় গিয়ে নেগেটিভ এনার্জি পায় কিন্তু সেই এনার্জি এতই ক্ষীণ যে তার সাথে যোগাযোগ করা হয়না। খুব ই হতাশ হয়ে পড়ে নিহারিকা । তবে কি তার ঠাম্ম যা বলতো সবই মন গড়া। তারপর ওই অন্নাবেল, এক্সোর্সিস্ট সব মিথ্যে। বাড়ি ফিরে চান সেরে একটা সিগার ধরালো সে। দু টান দিয়ে ছাদে বসে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে বসে রইলো । মন ভেঙ্গে গেছে , একটাও ভুত পায়নি সে। ভুত কি তবে সারা দেয়না?
নিহারিকা ফেরার পথে একটা প্ল্যানচেট এর বোর্ড কিনে আনে। সেটা নিয়ে সে ঘরে ঢুকে দরজা দিয়ে ওটা নিয়ে নারা ঘাটা করতে করতে সেটিকে শুরু করে। খবরের কাগজে যার মৃত্যুর খবর দেখতে পায় প্রথম সেটাই তার গেস্ট । বাতি নিভিয়ে সে মম বাতি ধরায়। খেলার শুরু তে কিছুই হয়না পরক্ষনেই মম বাতি নিভে যায় ঘরে এক অদ্ভুত ঠান্ডা হাওয়া জানলা বন্ধ টাও ঘরটা হিম পর্বতের মত শীতল। এক অদ্ভুত অস্বস্তি হয়, এইবার বোধয় ভূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবেই ।
হটাৎ বাইরে চিৎকারের শব্দ সব ছেড়ে ছুটে বেড়িয়ে দেখে ঠাম সিড়ি থেকে পড়ে গেছে। অল্প চট পেয়েছে তার কপালে, একটু ফুলে গেছে তাকে উঠিয়ে ঘরে নিয়ে গিয়ে একটু জল দিয়ে তার পর তার কপালে একটু । মলম লাগিয়ে দেয়। প্ল্যানচেট ভঙ্গ হয়েছে আর করা যাবেনা। তবে প্ল্যানচেট করার ফলেই কি ঠাম্মা ! না না তা কিভাবে সম্ভব। সব গুছিয়ে তুলে রাখলো । খাটে শুয়ে শুয়ে ব্যাপার টা ভাবতে লাগলো ।
সেই দিন রাতের কথাটা নিহারিকা কাউকেই বলেনি কিছু। তবে মনে মনে তাকে সেটা ভাবায় নি তেমন টা নয়। বিষয়টা কেমন অদ্ভুত ছিল , হটাৎ বাতি নিভে যাওয়া তারপর সেই বন্ধ ঘরে ঠান্ডা হাওয়া ঠাম্মা র পরে যাওয়া সবটাই একটু অদ্ভুত অশ্বস্তিজনক।
প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটির জন্য একটা প্রজেক্ট করতে নিহারিকা কে মাস 2 এক এর জন্য যেতে হবে ব্যাঙ্গালোরে। বাড়ির পরিবেশ বেজায় গরম । নীহারিকার বাবার কোনো দিন ইচ্ছা ছিলোনা মেয়ে এইসব নিয়ে পড়াশোনা করুক কারণ সে একজন সাইন্স এর ছাত্র সে এইসবে বিশ্বাস করেনা সেখানে তার মেয়ে কিনা প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটির প্রজেক্ট করতে যাবে ব্যাঙ্গালোরে। তবে নিহারিকা কে আটকানোর সহজ না সে তার যাওয়ার ব্যবস্থা আগেই করে ফেলেছে , ফ্লাইটের টিকট টা সে তার কলেজের প্রফেসর কে দিয়ে আগেই কাটিয়ে নেয়, আর থাকার ব্যাবস্থা সেটা জেরম করে হোক সে থেকে যাবে দুমাস ।
পরশু ফ্লাইট টাই ব্যাগ পত্র গুছিয়ে নেয় সে। ঠাম্মি তার ঘরে আসে , কথায় কথায় সে জানতে পারে এক অদ্ভুত শক্তি যেনো সেই দিন তার ঠাম কে সিড়ি থেকে ঠেলে ফেলে দেয় , গুরুতর চোট না লাগলেও মাথায় সে একটু আঘাত পায়। সে নিহারিকা কে সাবধান করে যে সে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে যেনো একটু ভেবে চিন্তে কাজ করে।
যথারীতি দিন এসে পড়ে এয়ারপোর্টে পৌঁছে দেখে প্রফেসর রয় তার জন্যই অপেক্ষা করছে তারও যাওয়ার কথা নিহারিকার সাথে । ফ্লাইট টা আধঘন্টা লেট করেছে ,নিহারিকা এইপাস ঐপাশ ঘুরতে থাকে হটাৎ তার নাকে একটা খুব মিষ্টি অচেনা গন্ধ এসে পৌঁছায় । গন্ধ টা অনুসরণ করতে করতে সে এয়ারপোর্টের উত্তরপূর্ব দিকে পৌঁছে যায়। বেশ শান্ত একটা জায়গা তবে খুব অস্বস্তি জনক ও বটে। কেউ নেই সেই জায়গায় অবহাওয়া বেশ ভারী। এইজায়গা টায় যেনো সব কিছু কিরম থমকে গেছে। কাঁচের উইন্ডো দিয়ে বাইরেটা দেখা যাচ্ছে যতদূর একটা বড়ো মাঠ মত কিন্তু নির্জীব সবুজের রেস মাত্র নেই । শুকনো একটা গাছ একা দাড়িয়ে আছে ঠিক যেনো পুড়ে গেছিলো কোনো কালে । সে একটু ওয়াশরুম এর দিকে যায় কল খুলে মুখে চোখে জল দেবে ঠিক সেই সময় হটাৎ ওয়াশরুম এর সব আলো গুলো একসাথে অফ অন হতে থাকে কল টা বন্ধ করতে পারছেনা সে কিছুতেই অনবরত কল দিয়ে জল পড়েছে , সব কটা কল একসাথে খারাপ হয়েগেছে। সে পুরো ভিজে গেছে , চারিপাশ সব অন্ধকার দরজা ধক্কালেও কেউ শুনতে পাবে না কারণ এইদিকে কেউ আসেই না । জল পড়ার শব্দ যেনো খুব জোড়ে জোড়ে হচ্ছে খুব অস্বাভাবিক শব্দ । সে ভীতু না , কাজে সে ভয় পাবে না এটা খুব সাভাবিক তবে এরম হলে তো সে ব্যাঙ্গালোরে ফ্লাইট মিস করে ফেলবে। আয়নার ওপর হাত রেখে সেটা একটু পুছে নিজেকে দেখার চেষ্টা করলো নিহারিকা। খুব অস্পষ্ট ভাবে পিছন টাও দেখতে পাচ্ছে , একটা কালো ছায়া মূর্তি , কোনো আলো ছাড়া ছায়া তহ দেখা যায়না তবে এই ছায়া নিমেষে সেই ছায়া সরে যেতেই আয়না টা হটাৎ ভেঙে চূর্ণ হয়ে পড়ে সে একটু চোট পায় তার হাতে। হাতের তালু বেয়ে রক্ত মেঝে তে পড়ছে । এক বিকট হাসি ফেটে পরলো গোটা ওয়াশরুম জুড়ে। কিরে ভূত খুঁজবি আর ! হা হা হা হা হা। হটাৎ একটা হাত পিছন থেকে নিহারিকার কাঁধ স্পর্শ করে। নিঃশ্বাস না ফেলেই নিহারিকা তার দিকে ফিরে চেয়ে দেখে একটা মহিলা এয়ারপোর্টে কাজ করে সে ।
- "এমা তুমি এইদিকে কি করছো গো দিদি। এইদিকে তহ কেউ আসেনা । এইখানে অদ্ভুত সব শব্দ পাওয়া যায় তুমি ঠিক আছো তো ? তোমায় ওইদিক থেকে দেখতে পেয়ে ছুটে এলাম দেখি তুমি একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছো সেই থেকে। কিছু হয়েছে?"
- ইয়ে মানে না কিছু না ।
নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে তার জামাটা ভিজে গেছিলো জলে কিন্তু সেটা আর ভিজে নেই শুকনো , হাত বেয়ে যে রক্ত ঝরছিল সেটাও আর নেই উধাও হয়ে গেছে নিমেষে।
সে চলে যায় আবার প্রফেসর রয় জিজ্ঞেস করলে সে ঠিক কোনো উত্তর দিতে পারেনা , আর কি বা ব্যাখ্যা করবে তার সাথে কি ঘটেছে কোনো প্রমাণই নেই তার কাছে ।
ফ্লাইটে বিজনেস ক্লাসে তাদের রিজার্ভেশন । তারা উঠে তাদের জায়গায় বসে পড়ে সিটবেলট লাগিয়ে একটা ম্যাগাজিন হাতে পড়তে থাকে । একজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট তাদের কাছে এসে অর্ডার নিয়ে যায়। সকাল থেকে কিছু পেটে পড়েনি দুজনের। একটা করে চিজ স্যান্ডউইচ আর কফি অর্ডার করে তারা। স্যান্ডউইচ এ কামড় দিয়ে ম্যাগাজিন টা পড়ছে এমন সময় ম্যাগাজিনের বা দিকের পাতাটার লেখা গুলো কেমন বদলে যায় ইংলিশের ম্যাগাজিন কেমন যেনো হিব্রু হয়ে যায়। দেখে প্রায় ঘবরেই যায় নিহারিকা হাত থেকে ম্যাগাজিন টা পড়ে যায় কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে তার। নিহারিকার এই অস্বস্তি দেখে রয় তাকে প্রশ্ন করে কি হয়েছে তার । উত্তর দিতে পারেনা সে কারণ ম্যাগাজিনের লেখা তহ আগের মতন হয়ে গেছে । ঘাড় নেড়ে জানায় তার শরীর টা ভালো লাগছেনা সে একটু চোখ বন্ধ করে রেস্ট নিতে চায়। মনের মধ্যে তার সব চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে সে কিছুই মেলাতে পারছেনা ।
যথা সময় ফ্লাইট বাঙ্গালোর পৌঁছায় । সে তার ঠাম্মী কে ফোন করে তার পৌঁছানোর খবর দিয়ে দেয়। হোটেল আগেই দেখা ছিল রয়ের ।এয়ারপোর্ট থেকে মিনিট পঁয়তাল্লিশ দূরে,
তারা হোটেলে উটে আগে একটু ফ্রেশ হয়ে নেয়। নিহারিকা তার ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে কিছুক্ষণ সব কিছু নিয়ে ভাবে । তার পর সে তার খাতা খুলে তার প্রোজেক্টে সে যে জায়গা গুলোর বেপারে রিসার্চ করবে বলে এসেছে সেগুলোর নাম গুলো দেখে ney---
1) The Hoskote Route
2) terra vera
3) bangalore international airport
এই তিনটি জায়গায় তাকে গিয়ে রিপোর্ট কালেক্ট করতে হবে। কাজটা যতটা সোজা দেখাচ্ছে ততটা সোজা নয়। অনেকের নাম উটে আসবে যারা সত্যি দেখেছে সেখানে অদ্ভুত কিছু ঘটনা। সেই গুলো লিখতে হবে। আর সব থেকে বেশি কোথায় নেগেটিভ এনার্জি আছে সেটাও তার ডেটাবেসে দিতে হবে।
এক গ্লাস জল পান করে নিহারিকা তার মাথা ঠাণ্ডা করে তার ল্যাপটপ খুলে আজকের সব ঘটনা বিস্তারিত ভাবে লিখে রাখলো। কম্পিউটার টা আদ্দেক বন্ধ করে সে স্নানে চলে যায় । সাওয়ার চালিয়ে সে স্নান করছে এমন সময় সে বাইরে কার পায়ের শব্দ পেল। মুখ বের করে সে দেখার চেষ্টা করলেও কিছু দেখতে পায়না। স্নান শেষে সে তোয়ালে জড়িয়ে মাথায় গায়ে বাথ্রব পড়ে চুল মুছতে মুছতে বেরিয়ে দেখে সে যা লিখেছিলো সেই সব কিছু নেই শুধু আছে একটা ব্লাঙ্ক পেজ এর তাতে লেখা কিছু হিব্রু ভাষা। তোয়ালে টা ছুড়ে ফেলে সে ওই শব্দ গুলো গুগুলে সার্চ করে জানতে পারে এই ভাষা প্রায় বহু বছর আগে হারিয়ে গেছে এটা হিব্রু নয় কোনো অন্য ভাষা যার ফলে কি লেখা আছে টা কেউ জানেনা।
বাইরে ব্যালকনি তে দাড়িয়ে দাড়িয়ে সে নিজের মনে ভাবছে কি ঘটছে তার সাথে এমন সময়.......
ব্যালকনি দিয়ে যত দূর দেখা যায় অনেক নারকেল গাছের সারি ঠিক তার পিছনেই আছে একটা কবরের জায়গা । এই জায়গাটা রয় খোজ লাগিয়ে বার করেছে তারা যদি এখনে কোনো প্যারানরমাল কিছু পায় তবে সেটাও অ্যাড করা যাবে । নিহারিকা এখানে আসে রয় কে এসিস্ট করতে । কলেজে সবাই কে আলাদা আলাদা প্রজেক্ট দেওয়া হয় । তবে নিহারিকা যেহেতু তাদের মধ্যে খুব সাহসী তাই তাকে রয় তার টীমে নয় তাকে এসিস্ট করার জন্যে।
সন্ধে হয়ে গেছে সূর্য ডুবে গেছে আকাশে যেনো এক বেগুনি আভা। খোলা চুলে সে দাড়িয়ে আকাশ আর চারিপাশ কে উপভোগ করছে । হটাৎ একটি বিড়াল সাদা ও কালো মেশানো গায়ের রং সে ঝাঁপিয়ে উঠলো ব্যালকনির রেলিঙে । তার গা টা ভিজা কেউ যেনো তার গায়ে জল ঢেলে দিয়েছে। নিহারিকা বিড়ালটিকে দেখে প্রথমে চমকে গেলেও তাকে পরে কোলে নিয়ে খাটে গিয়ে বসে তোয়ালে টা দিয়ে ওর গায়ের জল টা মুছে ব্যাগ থেকে একটা বিস্কুট বার করে ওকে দেয়। ওর খাওয়া হয়ে গেলে ওকে কোলে নিয়ে একটু আদর করে মেঝে তে নামিয়ে হাত ধুতে বাথরুমে যায় হটাৎ সব অন্ধকার হয়ে যায় সে দৌড়ে বেরিয়ে আস্তে গিয়ে দেখে বিড়ালটার চোখ জ্বলছে যদিও সেটাই সাভাবিক তভু যেন কেমন অদ্ভুত , সে তীব্র ভাবে চিৎকার করছে ল্যাপটপটির পাশে বসে, ল্যাপটপ টা খোলা, সেটা তহ বন্ধ ছিল খুললো কিভাবে? সে দৌড়ে যায় তার ল্যাপটপটির দিকে , ওটা ক্র্যাশ করে গেছে বিড়ালটা ঘরটা তছনছ করেছে ঘরে রাখা ফুলদানি টা উল্টেছে বিছানার চাদরটা ছিঁড়েছে । নিহারিকা ভয় পেয়ে গেছে হোটেলের লোক কে সে কি জবাব দেবে আর প্রফেসর।
দরজার কলিং বেলটা বেজে উটলো -
রয়ের গলা ,
দরজা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে প্রফেসরকে দেখে তাকে ভেতরে ঢোকার আগেই সবটা বলতে রয় একটু আশ্চর্য হয় , ঘরে ঢুকে ডাকতে চাওয়ায় নিহারিকা তাকে নিয়ে গিয়ে দেখে সব আগের মতই রয়েছে। দুজনেই অবাক। রয় প্রথমটায় তাকে অবিশ্বাসী করে করে কারণ একটা বিড়াল ঢুকলে তার গায়ের লোম পাওয়া যাবে ঘরের কোথাও না কোথাও তবে লোম তহ দূর ফুলদানি থেকে চাদর যেইকার সেই রয়েছে কিছুই হয়নি। রয় নিহারিকা কে একটু রেস্ট নিতে বলে, বলে সে চলে যায় নিজের ঘরে।
নিহারিকা বুঝতে পারছে যা তার সাথে ঘটছে সেই সব মিস্ট্রিওয়াস, তাকে এই রহস্যের পর্দা ফাঁস করতেই হবে । রহস্যের চাদর তাকে ক্রমশ ঢেকে ফেলছে।
নিহারিকা খাটে বসে তার ঠাম্ কে ফোন করে। ঠাম্মার কাছ থেকে সে সব খবর নেয় বাড়ির । ঠাম্মা কে সে যদিও কিছুই বলেনি তার সাথে কি কি ঘটছে। ফোন টা রেখে সে ল্যাপটপে একটু গান চালিয়ে গান শুনছিল ঘড়িতে প্রায় তখন সন্ধ্যে ৭:৫৯ ডিনার এর অর্ডার টা ঘরে বসেই সে দিয়ে দেয় । রয় তার ঘরে আসে মিনিট পাঁচের মধ্যে। একসাথে ডিনার করবে তারা। টেবিল টা গুছিয়ে রাতের খাবারটা টেবিলে রেখে তারা এটা ওটা গল্প করছে , রয় তার ছোটো বেলার একটা গল্প বলতে শুরু করে নিহারিকা কে, -
তখন সে বেশ ছোটো প্রায় বছর ৭ বয়স তখন তার । একবার সে তার পিসিমার বাড়ি গেছিলো, একটা চিলেকোঠার ঘরে সে কারুর পায়ের শব্দ শুনতে পায় কাউকে না বলেই সে ছুটে চলে যায় সেখানে , গিয়ে কিছুই দেখতে পায়না বেরিয়ে আসার সময় হটাৎ দরজাটা বন্ধ হয়ে যায় সে অনেক ডাকার পরেও কেউ শুনতে পায়না তার ডাক , সে দেখে একটা বাচ্চা খুব কাঁদছে তাকে কাছে ডাকছে , ভয় ভয় রয় তার দিকে এগোলো , বাচ্চা টা জানায় যে তার দেহ বাড়ির পাশের পুকুরে আছে সে মুক্তি পায়নি আগের রবিবার সে আম পড়তে উঠেছিল গাছে ওখান থেকে পড়ে যায় দুপুরের দিকে সবাই ঘুমায় তাই কেউ টের পায়নি , সাতাঁর না জানায় সে ডুবে যায় বাড়ির লোক তার অনেক খোঁজ করেও পায়নি তাই সে রয় কে দেখা দিতে পেরেছে তাকে উদ্ধার করার জন্যে। রয় সেই সব কিছু শুনে তাকে কথা দেয় যে সে তার দেহ উদ্ধার করে তার বাড়ির লোককে দিয়ে দেবে। দরজা খুলে যায় রয় ছুটে নীচে নেবে বাড়ির লোকেদের সব জানায়। তার কথা কেউ বিশ্বাস করেনা প্রথম টায় তার পর লোক লাগিয়ে তল্লাশি চালাতে সেই বাচ্চাটির দেহ পাওয়া যায়। তার বাড়িতে খবর দিয়ে তার দেহ তাদের হাতে তুলে দেন তারা। এই ঘটনা রয়ের মনে দাগ কেটে যায়। তার মনে হয়েছিল প্যারানরমাল সাইন্স নিয়ে পড়লে হয়ত আরো কাউকে এইভাবে উপকার করতে পারবে, পেরেওছে অনেক জায়গায় গিয়ে সে অনেক রহস্যের উদঘাটন করেছে এবং অনেক অশরীরী দের উপকার করেছে।
রয়ের গল্পটা নহারিকা মন দিয়ে শুনছিল এতক্ষন ধরে শুনছিল মন দিয়ে, চিলি চিকেন টায় এক কামড় দিয়ে নিহারিকা বলে উঠলো আচ্ছা আপনি কি কখনো ল্যাপটপ ভূত দেখেছেন?
- ল্যাপটপ ভূত হাহাহা কই না তো!
কেনো কোনো সমস্যা?
- হ্যাঁ সমস্যা ঠিক না তবে এখানে এসে থেকে ল্যাপটপ হ্যাং করছে আর তা ছাড়া আজ সন্ধ্যে বেলা আমি যা বলেছিলাম তার কোনো টাই আমার মনের ভুল ছিলোনা স্যার , আমি জানি এইসব আপনার অদ্ভুতুরে মিষ্ট্রিওস লাগছে কিন্তু এটাই ফ্যাক্ট আমি ফ্রেশ হতে যাই বেরিয়ে দেখি ল্যাপটপ টা নিজে নিজে অন ওপেন হয়ে তাতে হিব্রু ভাষায় কিছু লেখা আছে শাট ডাউন করে রিস্টার্ট করি তার পর একটা ডকুমেন্ট লিখছিলাম ল্যাপটপ ক্লাস করে যায় তারপর বিড়াল ! আমি কিছু বুঝতে পারছিনা স্যার । আমি ভয় পাইনি তবে খুব স্ট্রেঞ্জ ব্যাপার কিছু যদি বলতেই চায় তবে এই ভাষা কেনো র এই ভাষা অনেক কাল আগেই ব্যাবহার করা বন্ধ হয়ে গেছে, তবে কি কেউ অনেক অতীত থেকে..
.. ?
ডিনার সেরে হাত মুখ ধুয়ে রয় তার ঘর থেকে বেরিয়ে গেল । সেরম কিছু তাকে বললো না রয় মনে মনে বেপারটি নিয়ে বেশ চিন্তা করলো সে..... নিহারিকা কে কি সে এখনে এনে ভুল করেছে তবে কোনো বিপদ আছে কি।
নিহারিকা খুব ক্লান্ত সকালের এ্যারপোর্ট তারপর এখনে ল্যাপটপ। বিছানায় গা এলিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলো সে।
নাহ্ ঘুম আসছেনা । যোগ থেকে গ্লাসে জল ঢেলে খেতে যাবে এমন সময় দেখলো জলের বদলে রক্ত ভরা । ল্যাপটপটা জ্বলে উঠেছে চারিদিকে শুধু রক্ত ল্যাপটপ টির গায়েও রক্ত লেগে । নিহারিকা ল্যাপটপটা খুলে চমকে উঠলো । একটা ড্রাকুলার ছবি সাথে ছবিটার ড্রাকুলার দাত বেয়ে রক্ত বেরোচ্ছে ভাসছে পুরো ঘর।
কান দুটো হাত দিয়ে চেপে মাটিতে বসে পড়লো সে ভয় তার গলা দিয়ে কোনো শব্দ বেরোচ্ছেনা । ভূতের জায়গায় ভ্যামপেয়ার। তাদের তঃ কোনো উদ্দেশ্য থাকেনা তারা শুধু খাদ্যের জন্যে রক্ত চুষে পালিয়ে যায়।
এবার কি করণীয় তার। পালানোর মত মেয়ে নিহারিকা নয়। সে এটাও বুঝে গেছে পালাতে সে পারবেনা এই ড্রাকুলা তাকেই খুঁজছে কলকাতা থেকে ব্যাঙ্গালোর তাকে খুঁজতে খুঁজতে এসেছে। ল্যাপটপে চার্জ শেষ । ফোন খুলে সেইদিনের খবরের কাগজ টা খুঁজে বার করলো যেটা দিয়ে সে সেই দিন প্ল্যানচেট করেছিল।
আর্টিকেল টা পড়ে ও যা বুজলো তার পর তার চোখ কপালে ওঠে আর কি। পেপারে স্পষ্ট লেখা আছে -
লোকটি গত 2 সপ্তাহে 12 জন কার ঘাড়ে কামড়ে তাদের রক্ত শূন্য করে মেরে ফেলেছে। সেই জেলার লোক ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে পিটিয়ে মেরেছে। তবে কি সে কোনো ভয়ানক ড্রাকুলা কে আহ্বান করেছে।
নিহারিকা একটু ঘুমিয়ে পরের দিন বেরিয়ে যায় হোটেল থেকে রয় কে না জানিয়েই , একটু খোঁজ খবর নিতে হবে তাকে যে সে যাকে প্ল্যানচেট করে ডাকছিল সে কে? তার উৎপত্তি কথা থেকে , লোকটির বাড়ি কর্ণাটকে , নিহারিকা দেরি না করে নিউজ পেপার অফিস থেকে তার ঠিকানা নিয়ে সেখানে রওনা দেয়। সেখানে পৌঁছে আসে পাশের লোকেদের থেকে তার বাড়িটা চিনহিত করার সাহায্য নেয় । বাড়িতে ঢুকে সে দেখে পুরো ঘোর অগোছালো অন্ধকার কোনো আলো প্রবেশের পথই নেই সেই জায়গায় । ঘরের ভিতর একটা চাপা দুর্গন্ধ , একটা ফ্রীজ আছে ঘরের এক কোণে । ফ্রিজ টা খুললো নিহারিকা। এবার চোখ কপালে ওঠার যোগ্য, বিভীষিকাময় দৃশ্য দেখে তার গা গুলিয়ে উঠলো। অনেক গুলি সচ্ছ কনটেইনার সব কটিতে লাল রঙের তরল কিছু আছে কোনোটা শুকিয়ে গেছে কোনোটা নড়ছে।
তার বুঝতে বাকি রইলনা সেগুলো কি।
সে জানে রক্তর রঙ সে চেনে এই গন্ধটাও , সেইদিনের এ্যারপর্টে এই গন্ধটাই সে পেয়েছিল।
আশেপাশের লোকজনকে প্রশ্ন করতে তারা বললো এই লোকটি সকালে কোনো দিন বাইরে বেরতোনা, সন্ধ্যে বেলায় তাকে দেখা যেতো প্রায় রোজই সবাই ভাবতো তিনি কাজে যান তাই দেখা যায়না কিন্তু একদিন পাশের পাড়ার এক বাচ্চা খেলতে খেলতে ভুল বসত সেখানে ঢুকে পড়ে এবং ওই লোকটাকে রক্ত সেবন করতে দেখে ভয় পায়। ছেলেটা বাড়িতে গিয়ে সব বলে কিন্তু কেউ তার কথায় বিশ্বাস করেনা , বাচ্চা দিন তিনেক পর মারা যায় কেউ যেনো ওর সারা শরীরের রক্ত নিংড়ে বের করে নিয়েছে। এর পর আরও দুইবার এরম হয় এবারে বাচ্চা না একজনের কুকুর আর একজনের স্বামীকে ওই পিশাচ খেয়ে ফেলে। পাড়ার লোক এই নিয়ে আলোচনা করে এবং ওকে টপ দিয়ে হাতে নাতে ধরে ফেলে তখন তাকে পিটিয়ে খুন করে সবাই।
নিহারিকা একটা কনটেইনার সেখান থেকে সংগ্রহ করে বেরিয়ে যায়। বেলা হয়েছে অনেকটাই, রয় তাকে ফোন করেছিলো কিন্তু সে ধরেনি , সে ফিরে গিয়ে রয় কে বলে একটু কাজে বেরিয়েছিল একটু স্টাডি করতে। এবার সে আর্টিকেল গুলো লিখবে। রয় প্রথমে সেটা বিশ্বাস না করতে পারলেও তার কাছে অন্য কোনো রাস্তা ছিলোনা প্রমাণ করার যে নিহারিকা তাকে পুরো সত্যি টা বলছেনা। দুপুরে লাঞ্চ শেষে রয় তার ঘরে চলে যায় নিহারিকা রয়না দেয় লাইব্রেরির দিকে , শহরের সব থেকে পুরনো একটা লাইব্রেরির সন্ধান করে সেখানেই যায় নিহারিকা -
Seshadri Iyer Memorial Hall ।
সে সেখানে পৌঁছে বেশ কিছু পৌরাণিক তথ্য সংগ্রহ করে । কিছু ড্রাকুলার বই রূপকথার গল্প কিছু কিছু বাস্তব আর্টিকেল। ল্যাপটপে সে সব ডেটা কালেক্ট করে টাইপ করে রাখে। কিছু বই আর নিউজ পেপার কাটিং নিয়ে যায় কিছু দিনের জন্য।
হোটেলের ঘরে বসে একটা বিয়ারের বোতল খুলে এক চুমুক লাগিয়ে মাথা ঠান্ডা করে নিহারিকা একটা সিগার ধরালো যদিও তার নেশা নেই তভূ আজ তার খুব স্ট্রেস লাগছে।
ল্যাপটপ খুলে একটু সার্চ করলো পৌরাণিক যুগে ড্রাকুলার ব্যাপারে।
কথায় কথিত আছে যে ড্রাকুলা কাউকে কামড়ালে সেও ড্রাকুলা হয়ে যায় তবে এই ক্ষেত্রে ত সেরম টা হলনা এমনকি লোকটা তঃ যাদের কামড়েছে তারা সবাই মরে গেছে। ফেরার আগে একজনের নম্বর নিয়ে আসে নিহারিকা, ফোন করে জিজ্ঞেস করে তাদের ঘাড়ে কি কোনো দাতের দাগ আছে , জানতে পারে যে শুধু ঘাড়ে না কারুর পায়েও ছিল ।
অঙ্ক টা ঠিক মিলছেনা । রক্ত পিপাসু রক্ত খেতো তাহলে রক্ত সংগ্রহ করে ফ্রিজে কেনো রাখতো আর লোকটার তো কোনো বড়ো দাঁত ছিল না ভাম্পায়ারের থাকে । ভ্যাম হলে তহ তারাও কামড় খাওয়ার পর সেরম ই হয়ে যেত।
না না গণিতে গরমিল হচ্ছে। মিলছেনা কিছুই মিলছেনা।
পরেরে দিন সকাল বেলা, রয় আসে নিহারিকার ঘরে , দরজা ধাক্কা দিয়ে ডাকতে সে ঘুম থেকে উঠে বেরিয়ে এসে দরজা খোলে,
- ভেতরে আসবো?
- হ্যাঁ , এতে প্রশ্ন করার কি আছে আগেও তহ আপনি এসেছেন মানা তহ করিনি
- না আসলে ঘুম থেকে উঠে এলে তহ তাই।
টায়ার্ড লাগছে খুব তোমায় দেখে , এনি প্রবলেম?
- নাহ্ সেরম টা ঠিক না , তবে .................
ভিতরে আসুন বলছি
ভিতরে গিয়ে বসলো রয়,
একগ্লাস জল পান করে রয় আবার প্রশ্ন করে ," এনি থিং রং?"
- আপনি ড্রাকুলা তে বিশ্বাস করেন?
- কি!
- করেন?
- এনি থিং ইস পসিবেল ইন প্যারানরমাল ওয়ার্ল্ড।
- আমি একদিন প্ল্যানচেট করি একজন কে ডাকার জন্য । নিউজ পেপারের কাটিং থেকে পেয়েছিলাম । প্ল্যানচেট সাকসেস পায় কিন্তু শেষ মুহূর্তে ঠাম্মার পড়ে যাওয়ার শব্দে মাঝ পথে সব আটকে যায় কিন্তু তার পর থেকেই এইসব ...!
- কি বলছো তুমি, এইসব আগে বলনি কেন তুমি?
বেশ চিন্তার চাপ রয় এর মুখে লক্ষ্য করলো নিহারিকা।
রয় কে সব আর্টিকেল যেগুলো লাইব্রেরির থেকে সংগ্রহ তথ্য গুলো দিল, একটা বই হাতে নিয়ে রয় পড়তে শুরু করলো বেশ পুরনো বই -
Bram stroke - dracula 1897 এ বইটি পাবলিশ হয়। ড্রাকুলা কি সেইটা প্রথম এনি তুলে ধরেন এটা ধরা হয় যে ড্রাকুলা শুধুই একটি ফ্রিকশনাল ক্যারেক্টার কিন্তু অনেকেই বিশ্বাস করে ড্রাকুলার অস্তিত্ব আছে ।
অনেক কাল আগে কর্ণাটকে এক গ্রামাঞ্চলে দিনের পর দিন মানুষ গায়েব হতো এটা কথিত আছে নিউজ পেপার ঘটলেই পাওয়া যাবে। অনেকেই ড্রাকুলার শিকার হয় এবং তারাও সেরমটাই হয়ে যায়। এক বীরপুরুষ আবির্ভূত হয় এবং পূর্ণিমার রাতে সিলভার বুলেট দিয়ে তাদের বংশ ধ্বংস করে। তবে এই ড্রাকুলা বংশে একজন কে কেউ খুঁজে পায়নি তিনি সন্তান সম্ভবা ছিলো । সেই মা ও তার সন্তানের সন্ধান করা হলেও আসা হত হয়ে সবাই হাল ছেরে দেয়।
এক মহিলার ছবি ও আঁকানো হয়েছিল .......... ইন্টারনেট থেকে সেই ছবি রয় ডাউনলোড করে নেয়। এক কপি নিহারিকা আর এক কপি তার কাছে রাখে।
পরের দিন ভোর বেলা তারা বেরিয়ে পড়ে ।
Terra verra
এই পুরনো, নির্জন অট্টালিকাটি বেঙ্গালুরুর সবচেয়ে বিখ্যাত ভূতের বাড়ির মুকুট পরে। এটি 1943 সালে ইজে বাজ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল, যিনি এটি তার দুই মেয়ে - ডলস এবং ভেরাকে উপহার দিয়েছিলেন। গল্পটি ২০০২ সালে একটি ভয়াবহ দিন নিয়েছিল যখন একটি পিয়ানো শিক্ষক ডলসকে ঘরে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছিল; অজ্ঞাত হামলাকারী তার লাশ চত্বরে দাফন করে। ভেরা বাসা থেকে বেরিয়ে আসার পরপরই সেখান থেকে চলে গেল। লোকজন শীঘ্রই বাড়ির ভিতরে পিয়ানোতে বাজানো গান সহ ভূতুড়ে চেহারা দেখতে শুরু করে। এক গুচ্ছ ভূতবাসী ঘরের ভিতরে যিশু ও মেরির একটি উল্টানো ক্রস এবং মাথাবিহীন মূর্তিও পেয়েছে বলে জানা গেছে। কয়েক বছর আগে ভবনটি মাটিতে ভেঙে ফেলা হয়েছিল, তবুও কেউ এই এলাকার কাছাকাছি যাওয়ার সাহস পায়নি।
Hoskote route-
হসকোটে রুটে গাড়িচালকরা প্রফুল্লতা দেখেছেন এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে। একটি জনপ্রিয় শহুরে কিংবদন্তির মতে, এই পথে একজন অটো চালকের কাছে লিফট চেয়ে এক বৃদ্ধা মহিলা থামিয়েছিলেন। ভাড়া দেওয়ার জন্য টাকা না থাকায় ভদ্রমহিলা লিফটের জন্য ভিক্ষা করলেন। চালক রাজি হলেন, কিন্তু যখন তিনি তাকে অটোতে উঠতে বললেন, তখন তিনি তাকে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হওয়ায় বাইরে আসতে এবং তাকে ভিতরে যেতে সাহায্য করতে বললেন। চালক তার অটো থেকে নামতে অস্বীকৃতি জানালেন এবং তারপর হঠাৎ করেই বৃদ্ধা হাস্যোজ্জ্বল হাসিতে ফেটে পড়লেন। তিনি চালককে বলেছিলেন যে যদি তিনি অটো থেকে বেরিয়ে আসেন তবে তাকে হত্যা করা হতে পারে। তিনি তাকে আরও বলেছিলেন যে অটোতে মূর্তি এবং অন্যান্য পবিত্র উপাসনার কারণে তিনি অটোর ভিতরে প্রবেশ করতে পারেননি। যদিও গল্পটি অনেকের কাছে হাসির মতো মনে হলেও রাস্তার দুপাশে কবরস্থানের উপস্থিতি কিছু লোককে রুটে উপস্থিত আত্মার উপস্থিতিতে বিশ্বাস করে।
Bangalor airport-
বিমানবন্দরগুলি দিনের বেলা যেকোনো সময়ে অত্যন্ত ভালভাবে আলোকিত এবং মানুষের সাথে উপচে পড়ে। সুতরাং, বিমানবন্দরে ভূত বা ভূতের মতো ছবি দেখা কারো প্রত্যাশার বাইরে। কিন্তু, বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে, মানুষ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অকল্পনীয় প্রত্যক্ষ করেছে। কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি একটি সাদা শাড়িতে পরিহিত এক মহিলার আত্মার বাসস্থান বলে জানা গেছে। ট্যাক্সি চালক, যাত্রী, এমনকি পাইলট সহ অনেকেই অনুমান করা হচ্ছে একটি সাদা শাড়িতে একজন মহিলাকে দেখেছেন যিনি কাছে গেলে অদৃশ্য হয়ে যান। এই দৃশ্যগুলির প্রতিবেদন অনেকের কাছে একটি প্রতারণা হতে পারে, কিন্তু বিমানবন্দরের ইনফ্রারেড ক্যামেরা আত্মার ছবিটি ধারণ করেছে, এবং মানুষ বিশ্বাস করে যে সে সত্যিই এই জায়গাটিকে এখন হান্ট করছে। আসলে, স্পিরিটটি একবার রানওয়েতে ডুবে যাওয়া একজন পাইলটের দ্বারা দেখা যায়। একটি ভিন্ন অনুষ্ঠানে, গ্রাউন্ড স্টাফরা তাকে বিআইএএল -এর কার্গো বিভাগে দেখেছিল। এই দৃশ্যগুলি ছাড়াও, মাথাবিহীন ভূতের উপস্থিতি নিয়েও গুজব ছড়িয়েছে। এই ভূতটিকে বিআইএএল -এর এসকেলেটরগুলির আশেপাশে দেখা গেছে বলে জানা গেছে।
এই সব তথ্য সংগ্রহ করার পর কিছু লোক তাদের রূপ ও বর্ণনা করে সেগুলো একটা অডিও রেকর্ড করে তারা হোটেলের ঘরে ফিরে আসে।
একটা স্ট্রং কফি খেয়ে তারা ড্রাকুলার তথ্য নিয়ে ঘাটা ঘটি শুরু করে । এই তথ্য থেকে এক অনেক বয়স্ক লোকের সন্ধান পায় তারা । তার কাছে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয় । সন্ধের জলখাবার খেয়ে তারা রওনা দেয় তার বাড়ির দিকে ।
তারা প্রায় সন্ধের দিকে এক সাধু বাবার দারস্ত হলো , চিন্নাস্বামী পত্তরঞ্জন, অনেক বয়স তার তেনার পূর্ব পুরুষ এই রক্তচসকের বংশ কে ধ্বংস করেছিলো এক কালে। তেনাকে ওই ছবিটা দেখায় যেটা তারা পেয়েছিল সাথে ওই লোকটির ও ছবি দেখায় যাকে কেন্দ্র করে এত ঝামেলার উতপত্তি । চিন্নাস্বামী বললেন যে এই মহিলা সেই মহিলা যিনি সেখান থেকে পালিয়ে গেছিলেন তিনি ছিলেন গর্ভবতী , তাকে কেউ খুঁজে পায়নি তাই এটাই আশঙ্কা করা যায় তেনার পরিবারের কেউ না কেউ বেচেঁ আছে এবং সেও একজন ড্রাকুলা ।
আমেরিকাতে কিছু দিন আগে একজন লোককে পাওয়া যায় যে শয়তানের পুজো করতো আর রক্ত পান করত , কিন্তু সেই লোকটা আসলেই এক রক্তচসক নয় সে কারুর জন্য রক্ত সংগ্রহ করতো যে আসল রক্তচোসক । তাকে পুলিশের হাতে মরতে হয় শরীর এর ময়না তদন্তের পরও কিছু পাওয়া যায়নি , এমন কি সেই দাঁত ও নেই যার দ্বারা কাউকে আহত করে তার রক্ত পান করা যায় ।
নীহারিকার কেবল মনে হত সে এই মহিলার ছবি এর আগেও কোথাও দেখেছে মনে করতে সে অক্ষম । চিন্নাস্বামী জানান এই বংশকে যদি তাড়াতাড়ি উৎখাত না করা যায় তবে পৃথিবীর সব মানুষ আস্তে আস্তে রক্তচোষা রাক্ষস হয়ে উঠবে । এই পৃথিবীকে বাঁচানোর একমাত্র উপায় হলো তাদের খুঁজে বের করা আর তাদের শেষ করা তাও যে সে উপায় না, পূর্ণিমার রাতে রুপোর অস্ত্র দিয়ে চাঁদের আলোয় আঘাত করতে হবে তবেই তাদের মৃত্যু সম্ভব। এরা সবাইকার রক্ত খেয়ে অনেক আয়ু বাড়াতে সক্ষম হয়েছে এবং অনেক শক্তিশালীও ।
রয় আর নিহারিকা সবটা শনে তার পর সেখান থেকে হোটেলের পথে পারি দেয়। পরের দিন ফ্লাইট সক্কাল বেলা বেরিয়ে যেতে হবে এ্যাইরপোর্টের উদ্দেশে। ব্যাগ গুছিয়ে নিলো তারা, গোছগাছ শেষে নিহারিকা রয়ের ঘরে গেলো । বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছে দুজনকেই ।
কে সেই পিশাচ কেনো সে নিহারিকা পিছনে পড়েছে কি বলতে চায় কিছু বুঝতে পারছেনা তারা । এক গ্লাস কোল্ড ড্রিংকস নিয়ে নিহারিকা কে দিল রয় ।
- মাথা টা ঠান্ডা করো। শান্ত হও এত অশান্ত মনোভাব নিয়ে কাজ টা করবে কি ভাবে ।
আমাদের কে আগে খুঁজে বার করতে হবে তারা কথায় থাকতো কিছু তহ আমরা পাবো তাদের নাম বা কোনো এভিডেন্স যার ভিত্তিতে তাদের খুঁজে পাবো।
- আমাদের কাছে এই মুহূর্তে একটাই এভিডেন্স সেটা হলো ওই ছবি !....
ওই ছবি ধরেই এগোতে হবে আমাদের আমেরিকাতে কে আছে বলতে পারবনা তবে আমাদের দেশে যে আছে তাকে ঠিক ধরে নেব । আমাদের কলকাতা ফিরে একবার লাইব্রেরির দারস্ত হতে হবে তারা অনেক সময় অনেক কিছু জানে , তার পর গভার্মেন্ট এর কাছে যেতে হবে যদি তারা কিছু জানে এই মহিলার সম্মন্ধে।
সক্কাল বেলা তারা কলকাতার দিকে রওনা দেয়। নির্দিষ্ট সময় কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছায় । নিহারিকা আবারও সেই জায়গায় গিয়ে কিছুক্ষণ থেমে যায় যেনো কিছু তাকে বার বার ডাকছে , কে কারা তাকে দুহাত দিয়ে ডাকছে এক অন্য জগতে । সে রয় কে বলে ছবিটা নিয়ে আগে লাইব্রেরী যেতে সে একটু পরে আসছে । এইবলে সে চলে যায় সেই দিকটায় আবার । বাতাস বেশ ভারী । নিস্তব্দতা গ্রাস করেছে চারিপাশ । হটাৎ এক বিকট হাসি
- যা খুঁজছিস তার অনেক বেশি ভয়ঙ্কর কিছু পাবি ! হাহাহাহাহা
এক অস্পষ্ট কথা শোনা গেলো পাস থেকে r tar বিকট হাসি যেনো তার কানে তালা লাগিয়ে দিল সে জানে সে বাদে এইটা আর কেউ শোনেনি । নিহারিকা সাহস করে আবার এগিয়ে যায় গিয়ে সেই অন্ধকার জায়গায় গিয়ে দাড়ায় একটা কালো ছায়া মূর্তি লম্বা কালো একটা মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকা দিয়ে দাড়িয়ে।
- ওয়েলকাম টু আওয়ার ল্যান্ড মিস নিহারিকা।
- কে আপনি?
- খুঁজে নাও বা ছেড়ে দাও এইসব ।
- কে আপনি কি চান টা কি? কেন পিছু নিয়েছেন আমার কি করেছি আমি আপনার ।
- যে দল নিঃশব্দে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল তাদের তুমি জাগিয়ে তুলেছ আবার একবার তাদের এই পথে আসতে বাধ্য করেছো।
- আমি?
- হ্যাঁ তুমি।
তুমি প্ল্যানচেট করে অনিক কে জাগিয়ে তুলেছ সে যে আমাদের সেবক । আমাদের সে জানিয়েছে সব ।
নিহারিকা সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। টাক্সি ধরে বাড়ি ফিরে বাথরুমে জোড়ে সাওয়ার চালিয়ে চুপ করে সেখানে বসে বসে ভাবতে থাকে কে সেই ছায়া ?কে অনিক ? কেনো এতো কিছু হচ্ছে।
ঠাম্মি দরজায় কড়া নাড়ল দুবার ।
- কীরে ঘুমালি নাকি । ভুতুম এই ভুতুম বেরো এবার খাবার টা ঘরে রেখে দিলাম বেরিয়ে খেয়ে নিস।
- আচ্ছা ঠাম্মি
নিহারিকা বেরিয়ে তোয়ালে দিয়ে চুল মুছতে মুছতে ঘরে গিয়ে পাউরুটি টা খেয়ে ঠাম্মির ঘরে গেলো ,ঠাম্মি কে জড়িয়ে ধরে খানিকক্ষণ বসে রইলো ।
- কিছু হয়েছে নাকি ভুতুম সোনা
- না ঠাম্মি কিছু না সেরম ।
- সাবধানে করিস কাজ কিছু গন্ডগোল নিজের লোকের ক্ষতি না হয় যায় আবার।
- কি যে বলনা ঠাম্মি । নিজের লোকের কি ক্ষতি ?
ব্যাগ থেকে জিনিস বার করে গুছাতে গুছাতে একটা অদ্ভুত চুলের কাঁটা খুঁজে পেলো এর আগে তো এরম টা সে দেখেনি । তার চুল যত ছোটো তাতে চুলের কাঁটা লাগবে না । অনেক পুরনো লাল রঙের বড়ো খোঁপার কাঁটা । ঠিক যেমন টা পুরনো যুগের মানুষ না না পিশাচ রা ব্যাবহার করত তেমন কেমন টা ঠিক ওই মহিলার চুলে ছিল। নিহারিকা একবার ওপরের স্ট্রোর রুম টায় গেলো পুরনো কাগজের সন্ধানে । ধুলো জমেছে খুব কেউ আসেনা পরিষ্কার ও করেনা। মাকড়সার জাল সরিয়ে একটা বাকসো কাঠের। এটাই পুরনো ছোটো সামগ্রী আছে। কোনোদিন সেটা খোলে নি সে । আজ তার কেনো জানিনা জানার আগ্রহটা অনেক বেশি । কৌতূহলের বসে সে সেটা খুলে বসে ।
বাক্সের ওপরে কিছু খুব ছোটো ছোটো হাতের গয়নার মত তার পর ছোটো ছোট ইংরেজি পুতুলের মডেল তারপর চুলের সামগ্রী আছে চিরুনির মত একটা চুলে আটকানোর ক্লিপ আছে কাঠের চিরুনি আছে কাঁটা । অনেক টা সেইরকম জেরম টা ওই কাঁটা টা । স্ট্রেঞ্জ বেশ স্ট্রেঞ্জ । আরো কিছুটা হাতড়ে সে একটা ছবি খুঁজে পেলো একটা মা ও তার 3 সন্তান ট্রিপ্লেট এই বাচ্চাটি তহ তার ঠাম্মা ,এই মা যিনি তিনি তহ সেই মহিলা
মুহূর্তে তার সারা শরীর ঠাণ্ডা হয়ে গেলো। তার দেহ কম্পন দিয়ে উঠলো । নিঃশ্বাস নিতে পারছেনা সে। তার ঠাম্মা যে তার মানে ..............
- কি করছিস ?
পিছন ঘুরতে দেখে ঠাম্মা দোরগোড়ায় দাড়িয়ে
হাতে ছবিটা সে লক্ষ্য করেছে। এবার আর নিস্তার নেই।
- কিছু না ওই একটু গোছ গাছ
- তাহলে সবটা চোখে পড়ে গেলো। জেনে গেলি সব।
আমরা করা আমরা কোথা থেকে এসেছি সব জানিস তুই।
- ঠাম আমায় ছেড়ে দাও আমি কিছু করিনি । বিশ্বাস করো আমি কিছু করবনা । তোমরা কেনো নিরীহ লোকেদের মেরে রক্ত খেয়ে নাও । আমি আর পারছিনা কেনো আমায় এই ভাবে সবাই সব জায়গায় বিরক্ত করে ।
- কারণ তোর বয়স হয়নি সবটা জানার তোর 25 বছর হলে তুই ও আমাদের মত হবি আমাদের একজন তার আগে তুই নাবালিকা তুই জানার চেষ্টা করেই যাচ্ছিল ভয় দেখিয়ে তোকে দমানো যাচ্ছিলনা । এটাই আমাদের পরিচয় আমাদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছিল ওরা তাদের কাছে গেছিলি তুই। এবার তোকে এর শাস্তি পেতে হবে ।
25 নয় এবার তুই আজ রাতেই আমাদের একজন হবি।
- না আমি কখনোই হবনা । আমি চাইনা মানুষের ক্ষতি আমি চাইনা কারুর রক্ত । শান্তি চাই।
নিহারিকা অজ্ঞান হয়ে যায় জ্ঞান ফেরে রয় এর জলের ঝাপটায় । ঘরে খাটে শুয়ে সে পাশেই রয়।
- আপনি চলে যান এখান থেকে আপনিও মরে যাবেন যান চলে যান।
- না নিহারিকা না আমি যাবনা তোমায় ছেড়ে ।
শান্ত হও এক্তুবকি হয়েছে বল । আমায় ফোন করেছিলে তার পর পাস থেকে কি সব শুনতে পাচ্ছিলাম তাই।
- আপনি জানেনা , এখানে কি আছে ওরা আপনাকে মেরে ফেলবে ।
- কি বলছো টা কি?
- আমি সব জেনে গেছি আমার ঠাম্মা আসলে সেই সন্তান যে পেটে থাকতে তাকে তার মা নিয়ে পালিয়ে যায় । ওরা 3 জন ছিল । এরা সবাই ড্রাকুলা। ওরা আপনাকে মেরে ফেলবে। সন্ধ্যে হয়ে আসছে আজ পূর্ণিমা আজ ওরা শক্তি পায়। নতুন শিকার করে আপনি চলে যান।
- তাহলে তুমি সবটা জেনে গেছো নিহারিকা সেন।
আজ সন্ধ্যায় তোমার মাথায় মুকুট দেওয়া হবে আজ থেকে তুমিও এই পরিবারের একজন । ওয়েলকাম টু আওয়ার ড্রাকুলা রাজত্ব ।
- আপনিও ।
- ইয়েস মাই সুইট হার্ট।
গোটা পরিবার তাকে দেখে মুখে মুচকি হাসি সবার । নতুন রানী কে অভিষেক করা হবে আজ।
পূর্ণিমার রাত । উজ্জ্বল রাত বাড়িটা চাঁদের আলোয় যতটা আলোকিত হয় ততটাই আলো ।
লাল গাউন পড়ে সিড়ি দিয়ে নেবে এলো নিহারিকা। শান্ত মুখশ্রী আজ যেনো উৎসৃঙ্খলতা মাখা। লাল হয়ে গেছে তার চোখ জোড়া । তার
ঠাম্মি তার মাথায় একটা কালো মুকুট পরিয়ে দিল। সবাই বাড়িতে এসেছে আজ । হাতে রেড ওয়াইন না না রক্ত আজ তাদের আনন্দের দিন তাদের ড্রাকুলা রাজত্বে রানী এসেছে আজ।
রয় তার ঘাড়ে আলতো করে তার বড়ো বড়ো দাঁত দিয়ে একটু আলতো স্পর্শ করে বললো। আমি কি এই রানীর রাজা হতে পারি । ঘাড় নেড়ে সম্মতি দেয় সে। ড্রাকুলা রাজত্ব কে কেউ শেষ করতে পারে নি পারবেনা। দূর থেকে একটা নেকড়ে চেঁচিয়ে উৎলো যেনো রানী আসার আনন্দে আজ তাদের ও উৎসব।
