ছুটির আতঙ্ক
ছুটির আতঙ্ক
বিবাহিত পুরুষ কাছে কিন্তু ভাই ছুটিটা আতঙ্ক কিন্তু ভাবি এই বিয়েটা করতে আমি কতোটাই না কাঠখড় পুড়িয়ে ছিলাম যখন যুবক ছিলাম। ফুচকা বিক্রিতা পর্যন্ত হয়েছিলাম। সুবুর করো সে গল্পটাও বলছি।এটা আমার জীবনের একটা গল্প দুঃখের গল্প আছে। তখন কারিশমা কাপুরকে আমি বিয়ে করবো বলে ঠিক করেছি। সিনামাতে দেখেছি, এই একটা মাত্র নায়িকা যে, বড়লোক হয়েও চাকর বাকর, কুলিকে বিয়ে করছে। তাই ঝুঁকি টা নিয়ে নিলাম। পরিকল্পনা মাফিক, একটা ফুচকার দোকান খুললাম ওর বাড়ির সামনে। পরো রিলায়েন্স জিয়োর মতো দুই একদিন ফ্রিতেই খাওয়ালাম, প্রোপজ করতে হবে না। মজা পেয়ে গেছে ফ্রিতে খাওয়াই না। কিন্তু এখানেই বিপদ ও একদিন ওর বোন করিনাকে নিয়ে এলো। Zero ফিগার মেনটেন করে ও ফুচকাতো খেলো না । উল্লটে কারিশমার ফুচকা খাওয়াই বন্ধ করে দিলো।
ও দিন ওকে অভিশাপ দিয়েছিলাম, তাই তো ওর দুই ছেলের বাপ , একটা বুড়ো ভাম বর জুটলো।
যাইহোক এর আত্মীয় স্বজনরা ধরে করে একটা মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে দিলো। কিন্তু আমি অচেনা মেয়েদের সাথে কথা বলতে ভয় পেতাম একটা অচেনা মেয়েকে বিয়ে করবো কি করে সেটা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। সবাই বোঝাল " বিয়ে পর আমি নাকি শুধু একটা মেয়ে কেই ভয় পাবো।
বেজায় খুশি হলাম। আর বলে দিলো, "বই লোক গাথায় যা শুনেছো তা ভুল। সংসার সুখী হয় রমনীর গুনে কথাটা ভুল। আসলে সংসার সুখী হয় চলো যদি, রমনীর কথা শুনে।"
আমি ও আপনার মতো কথাটা বুঝতে পারিনি। একবার মাত্র বিয়ে করেছি কিনা। দুই চারবার করলে অভিজ্ঞতা হয়ে যেতো। তাই বললাম " বুঝতে পারলাম না।"
ঔ শুভাকাঙ্ক্ষী বললেন " রাস্তায় দুর্ঘটনা এড়াতে যেমন হেলমেট সব সময় মাথায় রাখতে হয়। সংসার সুখ শান্তি বজায় রাখতে স্ত্রীকে সব সময় মাথায় তুলে রাখতে হয়।"
তখন আমি বুক ফুলিয়ে বলেছিলাম যদিও "আমার এ বিষয়ে আপনার ভাবতে হবে না।নিজের স্ত্রীকে এতোটাই ভালোবাসবো যাতে স্ত্রীর বান্ধবীরা আমাকেই স্বামী হিসাবে পেতে চাইবে।"
এক বন্ধু এই কথা শুনে পরে দিন এক বাক্স পারফিউম দিয়ে গেলো। বললো " ভাই এটা কাজে লাগবে , বৌ আর গার্লফ্রেন্ডকে এক পারফিউম দিবি নয়তো ক্যাস খাবি।"
বিয়ের আগে শুনেছিলাম আমার স্ত্রী আবার নাকি কবি। বিয়ের পর ফুলশয্যার রাতে তাই স্ত্রীকে বললাম আজ থেকে
এক কবি বিয়ের পর ফুলশয্যার রাতে তার স্ত্রীকে বলল, আজ একটা কবিতা শোনাও।
স্ত্রী বললো " আজ থেকে তুমিই আমার কবিতা, তুমিই আমার কল্পনা, আমি তোমার রূপকথার রাজকন্যা।আজ থেকে তুমিই আমার সন্দীপ, তুমিই আমার কৌশিক, তুমিই আমার অতনু! তুমিই আমার বৃন্দাবনের কানু"
যাইহোক বিয়ে প্রথম সপ্তাহে তার হাতের রান্না কিছুতে রোচে না।মুখ ফুটে বলেই ফেললাম মায়ের হাত রান্না ভালো ছিলো। সাথে সাথেই দু ঘা বসিয়ে দিলো পিঠে , আর বললো " এবার দেখো মায়ের হাতের রান্নার স্বাদ পেয়ে যাবে।"
মায়ের হাতের মারে হইতো পিঠে গালে পাঁচ আঙ্গুলের দাগ পড়তো ঠিকই কিন্তু বউয়ের কথার মারে হাড়ে পর্যন্ত কালশিটে দাগ পড়ে যায়, যা এতো সহজে মেটেও না।
যাইহোক এরপর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সংসারে সব কাজ গুলো আমাকে দিয়ে করাতে শুরু করলো। তার পর থেকে ছুটি পাওয়াটা আমার কাছে আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। শেষ আমার বিচারালয় দরজায় কড়ানারি।
বিচারক জিজ্ঞেস করলো।তুমি ডিভোর্স চাইছো কেন ? -
আমি নিরূপায় হয়ে বললাম- ধর্মাবতার.. আমার স্ত্রী বসে বসে খালি সিরিয়াল দেখে, আর আমাকে দিয়ে ঘরের সব কাজ করায়। রসুন ছাড়ানো, পেঁয়াজ কাটা, বাসন মাজা, কাপড় কাচা, সব। কাজ করায়।
বিচারক বলেন - এতে প্রবলেমের কি আছে!? রসুন শুকনো খোলায় একটু গরম করে নাও, তারপর দু-হাতের চেটোয় হালকা ঘষে নিলেই ফটাফট খোসা উঠে যাবে। আর পেঁয়াজ কাটার আগে আধ-ঘন্টা আগে ফ্রিজে রেখে দেবে, কাটার সময় চোখ জ্বালা করবে না। বাসন মাজার দশ মিনিট আগে টাবে ভিজিয়ে রাখলে, বেশি ঘষাঘষি করতে হয় না, এমনিতেই সব তেল উঠে যায়। কাপড় ডিটারজেন্টে দেওয়ার আধাঘন্টা আগে প্লেন জলে ভিজিয়ে রাখবে, স্মুদলি নোংরা উঠে যাবে আর হাতও খসখসে হবে না। বুজেছো? -
আমি বললাম -হ্যা ধর্মাবতার বুঝেছি, খুব বুঝেছি।
বললেন- কি বুঝেছো? ·
আমি বললাম -আপনার অবস্থা আমার চেয়েও.খারাপ বুঝতে পেরেছি...ইয়ে, থাক, -- আমার আপিল উইথড্র করছি।"
এই বলে বিদায় নিলাম।
