ব্যেনানা ঘোস্ট
ব্যেনানা ঘোস্ট
ভারতবর্ষ কেন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে চিনার তাদের উপনিবেশ করে তুলেছে সেটা আপনার বোধায় জানেন। কোলকাতায় চাইনা টাউন রেস্টুরেন্ট নাম জানান সবাই। একটা রেস্টুরেন্টে নয় চীনাদের একটা কলনী আছে এখানে। বিশেষ করে চায়না নববর্ষের সময় রং-বেরংয়ের ড্রাগনের নাচে মেতে উঠে এই পুরো চায়না টাউন। কোলকাতায় এখন যে অঞ্চলকে চাইনা টাউন বলে সেটা আছে‘ট্যাংরা’অঞ্চল ।তবে পুরোনো যে অঞ্চলটা আছে বা ছিল সেটা ঠিক লালবাজারের পাশে। যেটা এখনো ‘তিরেটি বাজার’ বা ‘Old China Market’ নামে লোকজন জানান।
ইতিহাস বলে কোলকাতায় চীনাদের আসে ১৮২০ সালের দিকে। তারা মূলত তখন থেকেই ট্যানারি ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। কাল পরিক্রমায় ভারতীয়রাও এই ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ে। ট্যাংরার এই ‘চায়না টাউন’ অঞ্চলটি মূলত এই ট্যানারি এবং চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে সমৃদ্ধ। এখন আর চাইনিজরা সেইভাবে এখানে থাকেনা। অনেকেই বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। তাদের জমিগুলোতে ট্যানারি ব্যবসা চালাচ্ছে স্থানীয়রা।
যাইহোক আমাদের বন্ধু দিপঙ্কর এই চাইনা টাউন মাঝে মাঝে যাওয়া শুরু করলো। বিশেষ কিছু কাজ করে না কিন্তু ও কিছু দিন হলো ও টাকা পয়সা করছিলো বেশ। লটারির টিকিট কেটে ইনকাম করছিল। ট্যাংরা কাছে একটা চাইনিজ মেয়ের কাছে ও যাতো প্রতিদিন । আমরা কোন দিন বুঝতে পারিনি ওই মেয়েটি ওর মৃত্যুর কারণ হবে।
মাসখানেক আগে বাইপাসের ধারে ওর লাস পাওয়া গেলো রক্ত শুন্য ওর দেহ। কিছু টা ভৌতিক হলেও পুলিশ ওর খুনের কারণ বুঝতে পারলো না ওর কোন আত্মীয় স্বজন নেই। আমরা ওর পয়সা ব্যাবসা করতে শুরু করেছি। আমরা ওকে খুন করি নি কারণ ও আমাদের কাছে সোনার ডিম পাড়া হাঁস ছিলো।ও আমার ব্যবসার সবচেয়ে বড় ইনভেস্টর ছিলো।
আমার কেন যেন মনে হয়েছিল ঐ চৈনিক মেয়েটাকে ও ভালোবাসতো। কারণ ভালো বন্ধু হিসাবে ওই মেয়েটার ঠিকানা আমাকে দিয়ে ছিলো। তাই আমি হঠাৎ মনে হলো ও মেয়েটাকে আমার কিছু টাকা দিয়ে আসা উচিত। কারণ ও সব কিছু স্পষ্ট না বললে দীপঙ্করের ফোনে এক চৈনিক বাচ্চা কোলে ওর ছবি দেখেছি। ছবি দেখে আমার মনে হয়েছিল দীপঙ্কর ওকে বিয়ে করেছে।
বাড়িটাতে পৌঁছে আমার অদ্ভুত লাগছিল। শহরের বুকে এতো কলাগাছ কিভাবে এলো? মেয়েটি সব সময় কাঁন্না কাটি করছে হয়তো দীপঙ্কর শোকে। কিন্তু টাকা হাতে পেয়ে ও যে কথা বললো তাতে আমার আত্মারাম খাঁচা ছাড়া হয়ে গেলো।
টাকা পেয়ে ও বললো " তোমার বন্ধুকে মেরে তাহলে আমি ভুল করেছি? ওকি আমার সাথে মজা করছিলো। ও তোমার কাছে আমার পরিচয় বৌ হিসাবে দিয়েছে অথচো আমাকে বিয়ে করবে না বললছিলো। আমি ওকে রোজ লটারি টিকিটের নম্বর বলে দিতাম। ও তাই ও সব সময় লটারি জিতেছে। কিন্তু ও আমার সব কথা রাখলেও বিয়ে করতে চাইছিলো। না বলে মানুষ আর ভুতের নাকি বিয়ে হয়না। তাই আমি ওর ঘাড় মটকে ওর সব রক্ত খেয়ে ওকে মেরে ফেলেছি। আমি কি তাহলে ভুল করলাম । ও আমাকে ভালোবাসতো।"
ও কলাগাছের নিচে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকলো। আমি কোন কথা না বাড়িয়ে ওখান থেকে পালালাম কারন ওটা বেনানা ঘোস্ট ( চীনা পেত্নী)।
বেনানা ঘোস্ট সব গুন ওর মধ্যে আছে।দক্ষিণ চীন , থাইল্যান্ডের মত এশিয়ার অন্যান্য দেশে এদের দেখা যায়। লোক কথায় বলা হয় যে, সাধারণত একটা মেয়ে রাতের বেলা কলা গাছের নীচে একটি শিশু নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, শিশুটি সুর করে কাঁদে।এই মেয়ে ভুতের বৈশিষ্ট্য হল একটা শিশু নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় ৷ এই ভূত আপনাকে লটারি সংখ্যা পূর্বাভাস দিয়ে দেয় মানে লটারি কেটে টাকা পেতে সাহায্য করে। কিন্তু সতর্ক থাকুতে হয় এদের থেকে যদি আপনি আপনার প্রতিশ্রুতিটি পূরণ না করেন।এবং আপনার ইচ্ছার পরেই এদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন না করেন তাহলে সে আপনার বিপদ ।আপনি যদি তার প্রতিশ্রুতি পুরন না করেন আপনার ঘাড় ছিড়ে রক্ত খাবে।
