বৃষ্টির ছাঁট
বৃষ্টির ছাঁট
বৃষ্টির ছাঁটার জন্য, লোকটার মুখ আমি দেখতে পারি নি গাড়ি নম্বর, হয়তো তাই লোকটাকে
শাস্তি দিতে পারবোনা। কিন্তু আখি কোনভাবেই আমরা বাঁচতে পেড়েছি এটাই অনেক। অটো কাকু বললেন " ও খুব ভয় পেয়ে গেছে, যা ময়দানে , বাবু ঘাট থেকে ঘুরে আয় । ওর মনটা ভালো হলে বাড়ি দিয়ে আসবি..."
বৃষ্টি কমে গেছে, সন্ধ্যা নামবে নামবে করছে। তবুও বৃষ্টি ভেজা পাতা গুলো আরো সবুজ হয়ে ওঠছে। নতুন করে , শ্বাস প্রশ্বাস নিচ্ছে ওরা। আমরাও নিশ্চিত আবার নতুন করে শুরু করবো আমাদের বন্ধুত্ব টা আবার। আকাশের আলো নাভি যাবে। অন্ধকার হয়তো ঘুমিয়ে পরবে , কালো অন্ধকার পর, আবার সকালটা নতুন করে বাঁচতে শিখবে।
ও এখন কিছুটা শান্ত হয়েছে। আমার কাঁধে মাথা রেখে বললো " তুই না আমার পিছু না এলে আজ আমার কি হতো।"
আখি আমার পাড়ার মেয়ে বছর দুই এর ছোট। ছোটবেলা থেকেই এক সাথে মানুষ হয়েছি। ওর বাড়িতেই এখনো বেশি সময় কাটাতাই টিভি খেলা আর খবর দেখার জন্য। আসলে আমি গরীব ঘরে ছেলে । পড়াশোনা জন্যেও আমার হাতে কোন দামি মোবাইল ফোন পাইনি। কোনো কিছু নোট করতে এখন কলেজ স্টিট থেকে পুরাতন বই এনে পাহাড় করে বাবা আর দাদা। নয়তো লাইব্রেরিতে দৌড় করান। বেশি কিছু বলতে পারি না। কিছু বললে বলবেন, " মানুষের মনটাও একটা লাইব্রেরী, তাকে প্রশ্ন করে উত্তর খোঁজ। আর্কিমিডিস, নিউটন থেকে জগদীশচন্দ্র বসু কেউ তো মোবাইল চোখ দেখে নি তারা কি তাদের প্রশ্নের উত্তর গুলো খুঁজে পাইনি। Google সব কিছু না জিজ্ঞেস করে নিজে মেধাকে কাজে লাগাও।"
মোবাইল তাই আমার কপালে জুটল না। একটা বোতাম টেপা ফোন আছে সেটাও আমার উপর নজরদারি চালানোর জন্য।আর এই মোবাইলের জন্য আখির আমি best friend ও থাকলাম না বোধহয়। কারণ সোস্যাল মিডিয়ার জন্য, ওর জীবনে অনেক বন্ধু বান্ধব। তার ওর প্রশংসা করে সব সময়। অথচ আমি তো ওকে সব সময়, প্যেচি, বুচি,বলেই ডাকতাম। আমি ওর রিয়েল বন্ধু হলেও ও বোধহয় ওর রেলে লাইক কমেন্ট করা ডিজিটাল বন্ধুদের আপন বেশি করতে মনে করেছিলো।
তবে কয়েক দিন আগে আবার ও আমাকে যখন একা ডাকলো। তখন ভাবলাম আমাদের বন্ধুত্বটা বোধহয় ঠিক হয়ে যাবে এবার। কিন্তু ও সার্থপর, ফেসবুক কোন একটা ছেলে ওকে প্রোপজ করেছে অনেক দিন আগে ও তার সাথে দেখা করতে যাবে। আমাকে ওকে ওই বিষয়ে সাহায্য করতে হবে। ও প্রথম আমার কাছে ধরা চাইলো। আমি না দিতে পারলে হয়। ও ওর boyfriendকে টাইটানের ঘড়ি গিফট দেবে বলে ঠিক করেছে বলেতেই , আমার সমস্যার সমাধান হয়ে গেলো।
কারণ আমার ছাত্রের বাবা ঘড়ির দোকান । মত দামের খুশি নিক, পেয়ে যাবো। আখিকে নিয়ে গেলাম উনার দোকানে উনি খুব খোলামেলা। ও ওর বয়ফ্রেন্ডকে দিচ্ছে শুনে আমার ব্যাক্তিগত ভাবে বললো। " মেয়েটিকে তো ভালো মেয়ে বলে জানি, কারো সাথে ঘুরতে ও দেখি না। বাড়ি থেকেই তো বেড়ায় না, এর বয়ফ্রেন্ড কোথা থেকে জুটলো"
আমি বললাম " ফেসবুক থেকে। "
কাকু বললো " বাবা একটা কথা বলি তোমার তো বন্ধু চোখে চোখে রেখো , দিন কাল ভালো না.."
কাকুর কথায় আর অটো কাকু সাহায্য না করলে আজ ওকে তো গাড়িতে তুলে ফেলেছিলো ও লোকটা, যে এতোদিন ধরে ফেক আইডি থেকে ওর বয়ফ্রেন্ড হয়ে বসে ছিলো।
ভাদ্র মাস আবার বৃষ্টি বাড়তেই। আমরা ছুটে একটা দোকানের তলায় আশ্রয় নিলাম। বৃষ্টিছাট ওকে ভিজিয়ে দিয়েছে। ও যে বড় হয়ে গেছে, সে আমি এতোদিন খেয়াল করি নি। মনে মনে কতো গুলো গান ভেসে ওঠেলো, ভীগি হে বর্ষা থেকে টিপ টিপ বর্ষে পানি।
এমন সময় ও বললো " তুই আমাকে এতো বড়ো বিপদ থেকে বাচালি , তোর হাতটা একটু বাড়াতো দেখি"
আমার কল্পনার আয়নায় ঠিল মেরে চুরমার করে দিলো আমার সব স্বপ্ন। রক্ষা করেছি বলে নিশ্চিত রাখি পরিয়ে দেবে। কিন্তু কি করবো চোখ বুজে হাতটা এগিয়ে দিলাম। ও আমার হাতে ঘড়িটা পড়িয়ে দিয়ে বললো " বেষ্ট ফ্রেন্ড থেকে বয়ফ্রেন্ড হবি?"

