ব্রেকআপ চাই
ব্রেকআপ চাই
ব্রেক আপ আগে প্রেমতো চাই। সবাই বলে, বাঙালি মানেই নাকি কবিতা লিখেছে এক দিন না একদিন। লোকজন ডাক্তার হতে চায়, ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় , কিন্তু আমি ছোট বেলা থেকেই কবি হতে চাইতাম। আসলে এর জন্য রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর দায়ী, পুকুর বলো ,রাস্তা বলো, গলি মহল্লা,ইউনিভার্সিটি সব কিছু ওনার নামে। অথচো আমার ভালো নাম পাড়ার চা ওয়ালা কাকু জানতো না।
একটা জিনিষ জানবেন হাজার টা কবিতা লিখেও আপনি কবি হতে পারেন না কখনও কখনও। আমি তেমন ই আমার লেখা পড়ে কিছু তে সন্তুষ্ট হতে পারতাম না কোন দিন ই।
সব কিছুতে যেমন গুরু ধরতে হয় তেমনি আমি কবি হবার জন্য গুরু খুঁজতে শুরু করলাম, ছন্দের বারন্দা, কবিতা ক্লাস কে পাশবালিশ করে ঘুমাতে শুরু করলাম। কিন্তু কবি হওয়া আর হলো না। এমন সময় এক , কবি বললো," মদ খেলেই কবি হওয়া যায় না। মদ খেলে মাতাল হাওয়া যায়"
দেখলাম উনি ঠিক বলেছেন, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে জানতে পারলাম , প্রেমে আঘাত না পেলে নাকি ভালো কবিতা লেখা যায় না।
সুতরাং ঠিক করলাম একটা প্রেম করতেই হবে। কিন্তু পাড়া পড়শীরা তো বুকিবয় হিসেবে দেখে। তাছাড়া মেয়েদের আকর্ষণ করতে রঙচঙে পোশাক চোখে কালো চশমা এঁটে বেড়ালে। প্রথমে পাড়ার কুকুর লালু আর ভুলুতো আমাকে তাড়া করবে চিনতে না পারে। আর পাড়ার লোকজন ভাববে নিশ্চিত মাথা খারাপ হয়েছে, সাথে চোখে জয় বাংলা হয়ে। যাইহোক। এ পাড়ায় প্রেমিক হতে আমি পারবো না। কিন্তু ব্যার্থ প্রেমিক না হলে কবি হবো কি করে??
শেষ মেশ , বন্ধুবান্ধব দের হেলপ লাইন ব্যবহার করে একজন লাভ গুরু কাছে ট্রেনিং নিলাম। আসলে তখন এখনকার মতো হঠাৎ প্রেম হতো না, আলাপ করতে চিঠি দিতে প্রেম হতে হতে, একটা দুটো পাঁচবার্ষিক পরিকল্পনা শেষ হয়ে যেতো। তাই এ গুরু জ্ঞান অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো ঠিক করলাম।
গুরু বলে দিয়েছিলো ", যখন তখন কোন মেয়েকে প্রেমে ফেলার চেষ্টা করলে লাভ নেই। তাই টামিংটা খুব জরুরী, অধিকাংশ ছেলের এটা ঠিক করতে পারে না বলেই তাদের গালে চর থাপর খেতে হয়। বরং সেই দিন টা বাছা ভালো যেদিন একটি মেয়ে ও চায় , একটা ছেলে তাদের প্রেমে পরুক।"
মানে বুঝতে পারলেন না, যেমন ধরুন অষ্টমির অঞ্জলী, বিয়েবাড়ি, সরস্বতী পূজা। যাইহোক রাশিফল বিচার, কুষ্টি বিচার করে সরস্বতী পূজাটা আমার পক্ষে শুভ মনে হলো। কারণ অন্য দুই টিতে চেনাজানা মুখগুলো থাকে। আর আমি চাই ছিলাম অচেনা মানুষকে প্রেমিকা বানাতে ব্রেক আপ হলে হুকআপ হবার সুযোগ না থাকে।
যাইহোক মামা বাড়ি গেলাম সরস্বতী পূজার দিন কারণ ওখানে অতো কেউ আমাকে চেনে জানে না। সঙ্গীতার আমার পছন্দ হলো, বেশ একটা চলাক চলাক হাসি।এ দিকে গত বছর থেকে ওকে নাকি ব্যাপক ঝারিমারে অভিজিৎ, কিন্তু এখনো পাত্তা দেয়নি, কিন্তু এবারে পটে যাবে মনে হচ্ছিল বলে বেশ খুশি অভিজিৎ। এদিকে আমি বেশ আত্মবিশ্বাসী। তাছাড়া যারা তাস খেলে তারা জানে , নিশ্চিত পিটকে ট্রাম করে কি মজা। তাই ওর হুবু প্রেমিকাকে নিজের প্রেমিকা করা চেলেঞ্জ ও নিয়ে ফেলাম। ও রাজী কারণ , ওতো জানে প্রেম করা জন্য নয় আমি ব্রেক করার জন্য প্রেমটা করতে চাই ছি।
মজার বিষয় হলো , আমি জানতাম না , আমার পাশের পাড়ায় ওর বাড়ি , আর আমার মামা বাড়ির ছাদে পায়চারি করতে করতে দেখা যায় ও ছাদে ব্যাডমিন্টন খেলে, ও স্কুলের যাওয়া পথে আমার বাড়ির সামনে দিয়ে যায়, আমি কলেজ যেতে শুরু করলাম। একটু আধটু চোখাচোখি, মিষ্টি হাসি ছুড়ে দেওয়া, ব্যপারটা পুরো জমে ক্ষীর। অভিজিৎ ভালো প্লেয়ার।ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অভিজিৎ উইকেট নিয়ে বুঝতে পেরেছিলাম সঙ্গীতার উইকেট আমি নিয়ে নিয়েছি।
যাইহোক পাড়াতুতো কবি হবার সুবাদে ওদের বার্ষিক সংস্কৃতি অনুষ্ঠানে , সঞ্চালনার সুযোগ পেলাম , না বলা কথা গুলো বলে ফেললাম, কবিতার ছলে। ও খুব ভালো নেচে ছিলো। একটা ক্যাটবরী দিলাম ওকে অভিনন্দন উপহার হিসেবে। হাসি মুখে নিয়ে নিলো। ওর বন্ধু বললো " ওর তোমার জন্য একটা উপহার রেখেছে" বলতে লজ্জায় গ্রীন রুম থেকে বেরিয়ে গেলো ও। ওর বন্ধু বললো " কাল যদি নাটক প্রতিযোগিতায় তুমি জেতো তাহলে ,ও ঝিল পারে দেখা করে তোমাকে কিস করবে। আর হ হারলে তুমি ওকে করবে। ব্যপারটা এরেনঞ্জার আমরা তাই আমাদের চকলেট খাবার জন্য টাকা পয়সা ছাড়ো।"
আপু তাড়াতাড়ি আমার পকেট থেকে টাকা বেড় করে ওদের বিদায় দিলো। আমি বেশ হতাশার শুরু বললাম " ভাই আমি তো কিস চাই না, আমি ব্রেক আপ চাই"
কথা শুনে আমার বন্ধুরা বিশেষ করে আপু আর বাপে আমাকে এমন ক্যালানি দিলো। বললো " ব্রেকআপ আগেতো প্রেম করতে হবে।" কিন্তু প্রেম তো কাঁঠালের আঠা লাগলে ছাড়ে না। তাই কবিতা র সাথে ব্রেকআপ করে নিতে হলো। তার পর থেকে গল্প লেখার চেষ্টা করেছি। বলবেন তাই আমার লেখা পড়ে কেমন লাগে আপনার।😊