Apurba Kr Chakrabarty

Tragedy Classics

3.5  

Apurba Kr Chakrabarty

Tragedy Classics

বংশ রক্ষা১পর্ব (২অধ্যায়)

বংশ রক্ষা১পর্ব (২অধ্যায়)

6 mins
1.4K



শাশুড়ি মা নারায়ণী, রীনাকে ফুলশয্যার রাতে ঘর ঢোকার ঠিক আগে এক গ্লাস ইষৎ গরম দুধ খেতে দিল। তারপর বলল, "এবার তুমি তোমার ঘরের ঢুকে কপাটের ভিতরের খিল দিয়ে শুতে যাও।ভানু বেচারীর খুব ঘুম ঘুম আসছিল ও আগেই শুয়ে পড়েছে, হয়ত ঘুমিয়ে গেছে। একটু কম রাতেই ঘুমানোর ওর অভ্যাস,আবার খুব ভোড়ে উঠে পরে। হয়ত তখন তোমায় জ্বালাতন করবে।" বলে একটু হেসে,রীনাকে শোবার ঘরের দরজা অবধি দিয়ে এল ।রাত তখন প্রায় এগারোটা, মাঘ মাসের বেশ ভালো রাত, অন্তত রীনার কাছে তো বটেই।

শাশুড়ির কথাই ঠিক স্বামী ভানু ঘুমিয়ে, লেপমুড়ি দিয়ে বড় খাটের এক পাশে পড়ে আছে।রীনারও বেশ সারাদিন ঝক্কী গেছে, খুব ঘুম আসছিল।এমন নরম গদিযুক্ত বিছানায় সে জীবনে ঘুমোয়নি। বিছানায় শোবার মাত্রই ঘুমিয়ে যায়।সকাল প্রায় আটটা ঘুম থেকে উঠে ভীষণ লজ্জা লাগছিল।

স্বামী কখন কোন ভোড়ে উঠে বিছানা ছেড়েছিল। তবে মানুষটি দুষ্ট, কথা কম বলে,প্রশ্ন করলে এক কথায় উত্তর দেয়। কিন্ত রীনার মনে হচ্ছিল তার ঘুমের মধ্যেই স্বামী নিজের সখ মিটিয়েছে। কম বয়স হলেও বড়রা তাকে বিবাহ ফুল শয্যার রাত বিষয়ে একটা ধারনা দিয়েছিল। তার পোষাক পরিচ্ছেদ তেমন খোলা খুলি না করলেও, বেশ বুঝতে পারছিল সে আর কুমারী নেই।

শাশুড়ি মা তাকে ঘর থেকে বের হতে দেখে একগাল হেসে বলে,"এত বেলা হল উঠতে ,শরীর ঠিক আছে তো বৌমা !"

রীনা লজ্জায় মুখ নত করে বলে "অনেক বেলা হয়ে গেল,খুব ঘুমিয়ে গেছিলাম মা।"

"ও মা এতে লজ্জার কী আছে! তুমি রাজরানী, যখন খুশী উঠবে । এটা তোমার পূর্ণ স্বাধীনতা , এবাড়িতে বৌ মানে ঝি নয়।মেয়েদের চেয়েও তার আদর বেশী। এবার মা স্নান করে এসো , তারপর কিছু খাবে ।"

দুই ননদ মুখ চাওয়া চাহি করছিল।মা এসব বলে কি! একদিনের মধ্যেই বৌমা বেশী আপন হল ! নারায়ণী বুদ্ধিমতী তাই মেয়েদের বলল।"তোরা আমার বেশী আপন, কিন্তু এ সংসারের আমার বৌমা লক্ষী, বড় সম্পদ,তাই আমি এ বাড়ীর গিন্নি হিসাবে রীনাই আমার বেশী আপন, এ বাড়ীর ভবিষ্যত ।"

শাশুড়ির যত্নে রীনা কেমন সংকোচ বোধ করে, ভালো খাবার তাকে বেশী করে খাওয়াতো, রাতে খীরের মত মিষ্টি দুধ নিজের হাতে যত্ন করে রীণার হাতে ধরিয়ে দিতো।

অষ্টমঙ্গালার দিন রীনা বাপের বাড়ি গেল,শাশুড়ির খুব প্রশংসা শুনে বাড়ির লোক খুশী। মা গোপনে জানতে চায় বরের কথা।লজ্জায় রীনা বলে "ওটা চুপ্পি শয়তান। উপরে ভালোমানুষ,কথা বলে না, আর আমাকে দিন রাতে গোপনে," বলে লজ্জা চুপ করে যায়।

মা বুঝতে পারে। বলে "মা সব তো সমান হয় না।   ও একটু অন্যরকম,পরে ঠিক হয়ে যাবে।" সেই রাতে রীনা তার বাপের বাড়ি থাকলেও ভানু তাদের বাড়ি ফিরে এল। শাশুড়ি রীনাকে বলে দিয়েছিল, "রাতে ঘুম না হলে ভানুর সমস্যা হয়।ডাক্তার বলেছেন ঘুমটা যেন ওর নিয়ম মত ঠিক রুটিন মেনে হয়। ওর অন্য কোথাও ঘুম হয় না, তাই বাইরে ভানু কোন দিন রাত কাটায় না।" শাশুড়ির কথা অবাধ্য রীণা নয়।ভানু নিজের বাড়িতেই ফিরে আসে ।

একই গ্রামে দুই বাড়ির দুরত্ব এক কিমি নয়,তাই সমস্যা হল না।আর ভানুকে নিয়ে রঙ্গ রসীকতা অষ্টমঙ্গালার দিন রীনাদের বাড়িতে করতে নিষেধ করেছিল শাশুড়ি। "ওর এসব পছন্দ নয়।রাগলে ও চন্ডাল হয়ে যায়। আমি সামলাতে পারি না।তুমি মা, ওর স্ত্রী,আমি তো কদিন, তুমিই তো ওকে দেখবে।ওকে আগলে রেখো মনে দুঃখ কষ্ট যেন না পায়।"

 রীনা শাশুড়ির নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে ।একদিন থেকেই রীনাও আর বাপের বাড়িতে মন বসে নেই।শক্ত বিছানায় মেঝের উপর এইটুকু সংকীর্ণ জায়গা গাদাগাদি করে দুই ছোট বোনের সাথে তার শোয়া।সারারাত তার ঘুমই হয়নি।শ্বশুর বাড়ির খাওয়ার মান অনেক ভালো, আর রাতে শোবার আগে খীরের মত গাঢ়,বড় গ্লাস ভর্তি দুধের লোভ কী সামলানো যায়! এ বাড়ীতে যা স্বপ্ন।সঙ্গে  গদিযুক্ত নরম বিস্তীর্ণ বিছানা। 

পরদিন রীনা শাশুড়ির আদর খেতে শ্বশুর বাড়ি চলে আসে।আর বাবা ভাবে খরচ কমল।তিন মাস পর রীনা গর্ভে সন্তান এল।শাশুড়ির আনন্দে আর ধরে না। ভানুর কোন হেলদোল নেই।রীনা ইদানিং ভানুর প্রতি বিরক্ত, যদিও মুখে প্রকাশ করে না।শাশুড়ি মা রাগে এমন কোন কাজ সে করে না।তবে আগে তবু ভানুর সাথে রীনা কথা বলত,ভানু এক দু কথায় বেরসিক উত্তর দিত।রীনার অভিমান হয়, ভানুর সাথে কথাই বলে না। চোরের মত আমার ঘুমের মধ্যেই গাদন দিয়ে গর্ভবতী করলে,আর তুমি ভাবী সন্তানের বিষয়ে উদাসীন!

শাশুড়ির আদরে আর পুষ্টিকর খাবারে রীনার শরীরে যৌবনে পরিপূর্ণতা এসেছিল।এই দুই তিন মাসেই,রীণা খুব সুন্দরী হয়ে ওঠে।আবার শ্বশুরের ঘরে আলমারি ভর্তি বাংলার কালজয়ী লেখকদের গল্প উপন্যাস তার পড়ার খুব ঝোঁক।এই সব গল্প উপন্যাস পড়ে মানসিক ভাবে সে অনেক পরিপূর্ণ হয়েছিল।শ্বশুর বাড়িতে কাজ কর্মই তেমন নেই, যা একটু শাশুড়িকে রান্নায় সাহায্য করা।বাড়ির বাকী কাজ করে,দুজন কাজের মাসী,ঘর পরিস্কার বাসন ধোয়া কাপড় কাচা,গাই ধোয়ানো থেকে সব কাজ তারাই করে।

এই রাগ ভানুর প্রতি রীনার কেটেছিল,তার বাচ্চার জন্মের পর। ঈশ্বর যেন শাশুড়ির মনের কথাই শুনল, এক ফুটফুটে পুত্র সন্তান হল।এরপর,রীনার আদর শাশুড়ির কাছে যেন দ্বিগুণ বাড়ল। সন্তান কে ভানু আদর করত, ওর মত করে। কিন্তু একদিন রাতে অসুস্থ বাচ্ছা মানিক তখন দেড়বছর বয়স, সারারাত ঘেন ঘেন করে রাতে কাঁদছিল,যে কারনে ভানুর ঘুম ভেঙ্গে রেগে চিৎকার চেঁচামেচি করছিল।সন্তানের শরীর খারাপ আর বাবার ঘুম নষ্ট হচ্ছে বলে এই অসহিষ্ণু আচরণে রীণা তো হতবাক।

নারায়ণী উঠে এসেছিল।রীনাকে দরজা খুলতে বলে, ঘরে ঢুকে ছেলেকে সামলায়,ভানুকে বলে "ঘুমো বাবা আমি মানিক কে আমার ঘরে নিয়ে যাচ্ছি।" রীণাকে নারায়ণী সঙ্গে যেতে বলে। ঘরের কোন অভাব নেই। তবু নিজের ঘরে বৌমা নাতীকে শোয়াল।রীনাকে বলে বৌমা তুমিও কচি ছেলের মা ঘুমোও , আমি মানিক কে সামলাচ্ছি।তার যেন জাদুর স্পর্শে আদরের নাতি কান্না থামিয়ে ঘুমুল।

নিতাই এক ঘরে শুলেও অন্য খাটে ঘুমোচ্ছিল। রীনার কেমন লজ্জা লাগছিল, অন্য খাট হলেও রাতে যদি তার ঘুমের মধ্যে শাড়ি সড়ে শরীরের কোন গোপন অংশ দেখা যায় !শ্বশুর দেখতে পাবে কী লজ্জার! কিন্ত বলতে কেমন লাগছে। 

শাশুড়ি যেন তার মনের কথা বুঝতে পারে।বলে, "দুই বাপ বেটা সমান, ঘুমুল কী মরল,ভানু ভোড়ে ওঠে সকাল সকাল শোয়,আর ওর বাপ রাত করে শোয় ,সকাল সাতটার আগে ওঠে না। তার আগেই তোমাকে তুলে দেবো,আরাম করে শোও।

দুচার দিন এভাবেই শোবার পর শাশুড়ি বলল, "বৌমা তুমি বরং ভানুর ঘরে শোবে।রাতের মানিকের ঝক্কী আমি নেবো।তোমরা আরামে নিরিবিলিতে শোবে।

রীনা বলে "এখনও তো মা রাতে মানিক আমার বুকের দুধ খায়।"

"দেড় বছর হল রাতে বুকের দুধ আর দরকার নেই, আমি মানিক সোনাকে গরুর দুধ বা কোটোর দুধ খাইয়ে রাতটা ঠিক ম্যানেজ করব। ভানুও একটু নিরিবিলিতে তোমাকে পাবে।বাচ্চার টেনশনে রাতে তোমারও ঘুম ভালো হয় না শরীরটা ভেঙ্গে গেছে।"

রীনার মনে হয় সত্যিই তার ছেলের জন্য আগের সেই ঘুম আর হয় না।সকাল আটটার আগে তার ঘুম ভাঙ্গত না। শাশুড়ি তাকে এজন্য কিছুই বলত না। শরীরটা দুর্বল লাগে।আর মানিক অন্ত ঠাকমার জীবন, নাতীও ঠাকমার বড় নেওটা।

সেইমত রীনা একটু রাত করেই ছেলেকে বুকের দুধ খাইয়ে, ঠাকমার ঘরে মানিককে রেখে,ভানুর সাথে নিরিবিলিতে শুতে লাগল।আবার রীনার সেই ঘুমে ব্যাঘাত হীন সকাল অবধি গভীর সুখনিন্দ্রা।আর দুদিন পর থেকেই , বুঝতে পারছিল স্বামীর দুষ্টমী ভোড় রাতে তাকে ঘুমুন্ত অবস্থায় সম্ভোগ করে। ও কি এসব তাকে জাগ্রত অবস্থায় করতে লজ্জা পায় ! মানসিক কম জোরি ! কত শত ভাবে রীনা, এসব ভানুকে বলার সময় পায় না।

তার ওঠার আগেই হাস্কিং মিলে স্বামী চলে যায়।দুপুরে এসে স্নান খাওয়ার পর একটু বারেন্দায় বসে রেডিও শোনে আপন মনে।একটু অন্যরকম মানুষ,নিজের মেজাজে সে থাকে,শুধু স্ত্রী কেন,মা বাবার সাথেও কথা না বলার মত। কিছু অনিয়ম হলে তবেই তার চেঁচামেচি, তাছাড়া তার গলা শোনাই যায় না।

সেই ফুল শয্যার রাত থেকে শাশুড়ির হাতে যত্নের গরম দুধ রীনা খেয়ে আসে।কোন বিরতি নেই।সবাই রাতে দুধ খায়, তবে তাকে যেন বেশী বড় গ্লাসে বেশী যত্নের খাঁটি ক্ষীরের মত দুধ শাশুড়ি নিজে হাতে পরম যত্নে খাওয়াতো।বলত "তুমি মা ঘরের জ্যান্ত লক্ষী, তোমার পূজো এই ভাবেই করব, যতদিন আমি এবাড়ীর গিন্নি। তবেই ঈশ্বরের কৃপা মা লক্ষীর করুনায় সংসারে মঙ্গল হবে।" ঋনার মনে হত  এমন শাশুড়ি মা সাত জন্ম তপস্যা করে পাওয়া যায়।

এমন স্নেহের জাদুতে শাশুড়ির কথা ঋনা সব মেনে নিত। শাশুড়ি নাকি ভীষণ রাগী তেজী দুঁদে মহিলা পাড়ার লোকে বলত। কিন্তু নারায়ণী স্বামী সন্তান আর বৌমাকে কি ভাবে বশে রাখতে হয়,তার এই ভালোবাসার কৌশল প্রতিবেশী জানতে চাইত না।

বাড়ির সবাই নারায়ণীর কথায় চলে। তাকে অমান্য করা আর বিপদ ডেকে আনা সমান।আর মান্য করলে সব বিপদ থেকেই মুক্তি অন্তত এ বাড়ীতে। এতদিনে রীনা জেনে গেছিল। সেদিন রাতে শাশুড়ি গরম দুধের গ্লাস হাতে রীনাকে ধরিয়ে খেয়ে নিয়ে ঘরে শুতে যেতে বলছিল।গরমের দিন রাত এগার টা বেজে গেছে ।হঠাৎই মানিকের কান্না আওয়াজ শুনে নারায়ণী ছুটে গেল।এখন নাতি তার বিছানায় তার সাথেই শোয়।

আচমকাই একটা আরশোলা ঊড়ে এসে পড়বি তো পড়,রীনার, ক্ষীরের মত গরম দুধের গ্লাসে! রীনা রান্না ঘর থেকে জল বের হবার নালিতে আরশোলা পড়া দুধ ঘৃনায় না খেয়েই ঢেলে, আরও জল ঢেলে দিল। শাশুড়ি যেন বুঝতে না পারে, রীনা দুধ খায় নি। তাহলে শাশুড়ি তার নিজের ভাগের দুধ আবার তাকে খাওয়াবে।এমন আগে সে দেখেছে। হাত থেকে দুধের গ্লাস আচমকাই পড়ে গেছে,না রেগে আবার স্বস্নেহে নিজের ভাগের দুধ রীনাকে গ্লাস ভরে খেতে দিয়েছে।

শাশুড়ি মানিককে কোলে তুলে এনেছিল। বলল ,   " দুধ খেলে বৌমা!"

" রীনা মিথ্যা করে বলে হ্যাঁ মা খেয়েছি ।"

" তবে তোমার ছেলেকে একটু বুকের দুধ দাও। তারপর শোবে।আমি বাকী কাজ সাড়ি।"

সেদিন রাতে হঠাৎই রীনার ঘুম ভেঙ্গে গেল কেউ তার শাড়ি সড়িয়ে যেন সহবাস করতে তাকে নানা ভাবে উত্তেজিত করার চেষ্টা করছে।স্বামীর মৃদু নাক ডেকে ঘুমুচ্ছে, রীনা বিষ্ময়ে ভয়ে বেড সুইচ জ্বলে দেখে শ্বশুর মশাই।রীনা চমকে ওঠে।বিব্রত নিতাই কি করবে বুঝতে পারে না।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy