Priyanka Bhuiya

Tragedy

5.0  

Priyanka Bhuiya

Tragedy

বিবেক সঞ্চার - ৩

বিবেক সঞ্চার - ৩

2 mins
604


- থাকুক! আর তোতলামি না করলেও চলবে। আপনার বেশভূষা, আপনার চেহারাই বলে দিচ্ছে যে আপনি মুসলিম। ঠিক বললাম তো?

- আজ্ঞে বাবু, হ্যাঁ, আমি মুসলিম। কিন্তু হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন?

- ছিঃ! একজন মুসলিম হয়ে হিন্দু ধর্মের যুগাবতার স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তি বানাতে লজ্জা করল না!

- বাবু, আমার ধর্মের সাথে আমার শিল্পের কী সম্পর্ক?


কথাটা শুনেই ধীমানবাবু তো ভাস্করকে মারতে যাচ্ছিলেন। মণীশ জ্যেঠুই তাকে আটকালেন। তখন তিন ভদ্রলোক চড়াও হলেন অরবিন্দ কাকু আর মণীশ জ্যেঠুর ওপরে।

- আপনারা কী মানুষ? স্বামীজির মূর্তি নির্মাণের দায়িত্ব দিয়ে এলেন একজন মুসলিমের ওপর? ধিক্কার!

অরবিন্দ কাকু বলে উঠলেন, "দেখুন, আপনারা অকারণেই ঝামেলা করছেন। আমাদের তো ভাস্কর্য নিয়ে কথা। ভাস্করের সম্প্রদায়ে কী আসে যায়? আর ওনার কাজটা দেখেছেন? এত অপূর্ব কারুকার্যের পরেও আপনারা এই কথা বলবেন?"

- হ্যাঁ বলব, আলবাত বলব। কারণ, উনি ইসলাম ধর্মাবলম্বী।


গোলযোগ চরমে পৌঁছোলে মণীশ জ্যেঠু পুলিশে খবর দেওয়ার কথা বলেন। সেই কথা শুনে ক্ষান্ত হন ওই তিন ভদ্রলোক। তবে যেতে যেতে বলে যান, "কাজটা ভালো করলেন না কিন্তু। এর ফল ভালো হবে না।" তখনকার মতো এখানেই ঝামেলার নিষ্পত্তি ঘটেছিল। অরবিন্দ কাকু শিল্পী নাসির চাচাকে পাওনা টাকাটা দিতে যান। কিন্তু নাসির চাচার চোখে জল, উনি কেঁদে উঠে বলেন, "বাবু, আমি মুসলিম, এটাই আমার অপরাধ। আমি যে স্বামীজির মূর্তি বানালাম! আল্লা আমায় মাফ করবেন তো!"

মণীশ জ্যেঠু বলেন, "তুমি এত ভাবছ কেন? তোমার শিল্পেই তো স্বামীজির প্রতি তোমার ভক্তি ফুটে উঠেছে। আমরা মুগ্ধ। শোনো, বারোই জানুয়ারি মূর্তির আনুষ্ঠানিক উন্মোচন। তুমি অবশ্যই এসো কিন্তু ওই দিন।" টাকাটা হাতে নিলেও বিষণ্ণ মনে চলে যান নাসির আহমেদ।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy