বিবেক সঞ্চার - ২
বিবেক সঞ্চার - ২


সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। হঠাৎই অনাকাঙিক্ষত গোলযোগে ছন্দপতন। দুই মাস আগে ফ্ল্যাটের অধিবাসীদের সম্মতি সাপেক্ষে প্রবেশদ্বারে স্বামীজির একটি পাথরের আবক্ষ মূর্তি প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতো সকলের কাছ থেকে চাঁদা তোলা হয়। ফ্ল্যাট কমিটির তরফ থেকে প্রতিবেশী অরবিন্দ কাকু আর মণীশ জ্যেঠুই এক ভাস্করের কাছে গিয়ে তাঁকে দায়িত্ব দিয়ে এসেছিলেন। অবন্তিকার তো খবরটা শোনার পর থেকেই আনন্দ আর ধরে না। মূর্তিটা আসার অপেক্ষায় ও দিন গুনতে থাকে।
অবশেষে সেই শিল্পী তাঁর বাড়িতেই মূর্তিটা এতদিন ধরে যত্ন সহকারে বানিয়ে গত সপ্তাহে নিয়ে আসেন প্রতিষ্ঠা করার জন্য। অবন্তিকা সেই মূর্তি দেখেই তো অবাক। কী আশ্চর্য হাতের কাজ! নিখুঁত তুলির টান। অবিকল অবয়ব। দু'চোখ জুড়ে সেই আত্মবিশ্বাস। এ যেন জীবন্ত স্বামী বিবেকানন্দ! মূর্তিতে স্পষ্ট প্রস্ফুটিত এই ভাস্করের নিষ্ঠা। শুধু অবন্তিকা নয়, এমন নিখুঁত ভাস্কর্যে শ্রদ্ধাবনত হয়ে গিয়েছিল ফ্ল্যাটের সকল অধিবাসী। হঠাৎ বাধ সাধলেন ফ্ল্যাটের তিন ভদ্রলোক - অতনু মুখার্জি, রাজেশ দত্ত আর ধীমান ঘোষ। অতনুবাবু সেই ভাস্করকে জিজ্ঞেস করলেন, "আপনি হিন্দু না মুসলিম?" এমন প্রশ্নে থতমত খেয়ে সেই ভাস্কর আমতা-আমতা করতে লাগলেন।