অবক্ষয়
অবক্ষয়
বিখ্যাত প্রাইভেট ব্যাঙ্কের ম্যানেজার সুতনু চৌধুরী গত দু’দিন অফিসের কাজে সুইজারল্যান্ডে কাটিয়ে দেশের মাটিতে পা রাখলেন আজ। বাবাকে বিমানবন্দর থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য হাজির ছেলে সুমন। পেশায় ডাক্তার ছেলে আজ নিজ কর্মক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত। বাবা আর ছেলেকে নিয়ে সেডান যাত্রা করল বাড়ির পথে।
পাড়ার মোড়ে প্রচন্ড ভিড়, জানলার কাঁচ নামিয়ে বাইরে তাকিয়ে কিছু একটা অনুমান করতে পেরেছে সুমন। ব্রেক চেপে গাড়ি থামাল ও।
- বাবু, এখানে এত ভিড় কেন? গাড়ি থামালি কেন তুই?
- বাপি, সামনে অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। একজন ভদ্রমহিলা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। আমাদের সাহায্য করা দরকার। ডাক্তার হিসেবে আমার কিছু কর্তব্য আছে।
- এতগুলো লোক আছে সাহায্য করার জন্য। আমরা পুলিশ কেসে জড়াব কেন? গাড়ি স্টার্ট কর।
বাড়ি ঢুকতেই ঠাম্মি কাঁদতে কাঁদতে বলল, "সর্বনাশ হয়ে গেছে! একটা ফোন এসেছিল। পাড়ার মোড়ে বৌমা'কে লরিতে ধাক্কা মেরেছে। অ্যাম্বুলেন্স আসতে আসতে সব শেষ!"
ওদের দু'জনের পায়ের তলার মাটিটা সরে গেল। ম্যানেজার আর ডাক্তার দু’জনেই আজ কিংকর্তব্যবিমূঢ়। মূল্যবোধের চাকাটা অবক্ষয়িত হতে হতে আজ ভেঙে গেল।