Turn the Page, Turn the Life | A Writer’s Battle for Survival | Help Her Win
Turn the Page, Turn the Life | A Writer’s Battle for Survival | Help Her Win

আরিয়ানা ইচ্ছা

Classics Others

4  

আরিয়ানা ইচ্ছা

Classics Others

ভালোবেসে মনের মরণ

ভালোবেসে মনের মরণ

5 mins
332


 


***যেদিন থেকে শশুর বাড়ি পাঠিয়েছে টুনিকে সে দিন থেকেই কেমন যেনো একটা গা ছমছমে পরিবেশ তৈরি হয়েছে ঘরটা জুড়ে,,,

কই এর আগেও তো টুনি গেছে কখনো তো এমন টা ঘটেনি....

***খুব জোরে বৃষ্টি পড়ছে, জানালাটা বাতাশের ঝাপ্টায় গাছের ডালের সাথে বাড়ি খাচ্ছে,, থেকে থেকে আলোকিত হয়ে উঠছে ঘর টা কিন্তু আলোতে তাকাতে পারছেনা। 

,,বিয়ের এতো গুলো দিনেও তাকে দুইদিনের বেশি থাকতে দেয়নি। কিন্তু বয়স বেড়েছে সাথে কি কি যেনো ব্যধিতে আক্রান্ত, বাড়িতে একটাও মেয়ে মানুষ নাই, একা ছেলে মানুষ, সেখানে ভালো যত্ন হবে ভেবেই পাঠিয়েছে, আজ ছয়দিনের দিন কিন্তু একটা রাতও ঘুমাতে পারেনি ভালো করে দোয়েল, 

বিয়ের এতোগুলা দিন গেলেও বাচ্চা দিতে পারেনি টুনি, কিন্তু কোনো অভিযোগ ও নেই তার প্রতি। বরং যত্নেই রেখেছিলো... কোন কিছুর অভাব বুঝতে দেয়নি, বাচ্চার অভাব যেনো না থাকে এই ভেবেই ওকে একটা বাচ্চাও এনে দিয়েছিলো এডপশনের মাধ্যমে,,, কিন্তু রক্তের টানে বুঝি সে হারিয়ে গেছে, কোথায় যেনো.. আর পাওয়ায় যায়নি, তারপর আর বাচ্চার নামই নেয়নি টুনি। তাকে ওভাবেই খুশি দেখে আর জানতে ও চাইনি এ ব্যপারে...

***আজ এই ঝমঝমে বৃষ্টিতে একেবারেই ঘুম আসছেনা,, আলোর ঝলকানিতে তাকিয়ে থাকার সাহস ও হচ্ছেনা, কেনো জানি কিছু একটা দেখার আশংকা করছে ভীষণ...... 

খুব অস্বস্তি লাগছে তার... এমন টা নয় যে টুনি কে মিস করছে তাই ঘুম আসছেনা... কিন্তু অন্য কিছু তার মাথায় আর ব্রেনে একেবারেই গেথে গেছে আজ যেনো.. আজ কিছুতেই মাথা থেকে বের হচ্ছেনা এতো গুলো বছর পর.... 

'নাহ আর কতক্ষণ চোখ এভাবে বুজে থাকা যায়!! তাকিয়ে ফেলে অনেকক্ষন পর,, এই সময় জোরে বিদ্যুৎ চমকানোর আওয়াজ কাছে কোথাও বাজ পড়লো যেনো,, আর আকাশের ঝলসানো আলোর ঝলকানিতে ঘরে আছড়ে পড়লো একরাশ আলো.... আলোতে দেখলো একটা দৃশ্য যা সে কখনোই আশা করেনা এতো গুলো বছর পর..... সংগা হারালো তা দেখে.........




















✨✨✨✨✨✨








২৮ বছর আগে,,,,,,

***“তিথি আর দোয়েলের দুই বছরের সম্পর্কের পর পূর্ণতা পায় তা বিয়ের মাধ্যমে,,, "নতুন বউ" এর ঘোমটা সরিয়ে এতোদিনের চাওয়া পাওয়ার অবসান যেনো ঘটেছে ভেবে কতকিছু পরিকল্পনা করেই এক রাশ হাসি দিয়েছিলো সে,, সামনে তরুলতার মতো চিকন প্রেমিকা প্লাস বউ লজ্জায় নেতিয়ে একেবারে মাথাটা নিচু করে রেখেছে... এতোদিনের ভালোবাসায় ছিলো না কোন ত্রুটি কোনো অভিযোগ....

কত স্বপ্ন জল্পনা, কল্পনার পর এই বিয়ে.... বউয়ের চিবুকটা তুলে ধরে আলতো করে একটা চুমো দেয় কপালে, জাপ্টে ধরে এক সময়... আবার ছেড়ে পরবর্তী উদ্যোগ নেওয়ার সময় কেমন যেনো ভয়ে কুকড়ে যেতে থাকে তিথি। বিয়ের আগেও বলতো তার নাকি খুব ভয় করে বিয়ে নিয়ে, অনেক ভয় প্রকাশ আর সেসবের কারনও তাকে সে বলতো। তখন দোয়েল বলতো "পাগলি একটা,, তুমি এতো ভয় পাচ্ছো কেনো বলোতো !! আরে আমিতো",, আমার উপর বুঝি ভরসা নেই!!" দেখো আমি কিচ্ছু হতে দেবোনা। আমি সারাজীবন তোমাকে বুকে আগলে আগলে রাখবো, তুমি না চাইলে কিছুই হবেনা তেমন। তুমি দেখে নিও যেদিন তুমি পুরোপুরি সম্মতি দিবে সেদিনই আমি তোমাকে পুরো অধিকার থেকে আগলে ধরবো। সেদিন হাসিল করবো তোমাকে তার আগ পর্যন্ত এই বুকে একটু জায়গায় আকড়ে ধরে রেখো এতেই আমি খুশি "তুমিতো আমার পাশে থাকলেই শান্তি গো আর কি চাই আমার জান কে ছেড়ে!! " আরও কত রকম স্বপ্ন দেখাতো, তিথি একেবারে হাবুডুবু খেতো, তিথি অবাক হচ্ছে দোয়েল এরকম কেনো করছে তারতো এরকমটা করার কথা ছিলোনা!! ভয়ে কাঁপাকাঁপি শুরু তিথির আর দোয়েলের সেই বিরক্তি তার কাজে বাধা পাওয়ায়,, তিথি নিঃশব্দে কাঁদতে থাকে কিন্তু তাও দোয়েলের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই যেনো! পাষানের মতো নিরবে তার কার্য সিদ্ধি করে যেতে থাকলো.... এতো নির্মম ব্যবহার আর সহ্য হয়না তিথির ডুকরে কেঁদে ফেললো,, 

****"তোমার এসব নেকা কান্না বন্ধ করো কি প্রমান করতে চাইছো কেঁদে? চুপচাপ আমার কাজ করতে দাও নইলে ভালো হবেনা বলে দিলাম।" 

হ্যাঁচকা এক টাকে শাড়ি খুলে ফেললো, তিথি বিছানার চাদর আঁকড়ে গায়ে উঠাতে বিছানায় ছুড়ে ফেললো ওকে খুব জোরে, তিথি মাথায় অনেক জোরে ব্যথা পেলো। তারপরও নিস্তার পেলোনা ঝাঁপিয়ে পড়লো পশুর মতো হামলে তার পাওনা বুঝে নিতে গেলো,, তিথির করুন চিৎকার সারা ঘর মাতিয়ে রাখছিলো। হঠাৎ ঠাস করে গালে এক চড় মারল তিথিকে আর বললো "চুপ কর শা** তোকে কি বা** করতে বিয়ে করেছি তোর চেহারা দেখার জন্য, যদি তৃপ্তিই না দিস তো তোর কি প্রয়োজন!!"

অনেক গালমন্দ করেও শেষমেশ পারেনি জয়ী হতে,, ভয়ে, লজ্জায়, অপমানে, ব্যথায় এক সময় জ্ঞান হারায় তিথি....

**হঠাৎ পানির ঝাপ্টায় ঘুম ভাঙ্গে তিথির.... উঠে তার দিকে চেয়ে থাকা রাগান্বিত দোয়েল কে দেখতে পায়,, ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে কি সমস্যা!!" দোয়েল আরও ক্ষেপে যায় আর বলে "ভয়ে আত্মা তো একদম শুকিয়ে গেছিলো, ভেবেছি মরেই গেলে!" তিথির সব মনে পড়ে যায় কি কি হয়েছে ওর সাথে আর ঘৃনায় গা গুলিয়ে উঠে,, আর স্বাভাবিক ভাবে তাকাতে পারেনা তার দিকে, দোয়েল কে বলে "মরে গেলেই তো ভালো হতো!"

**কি আর হবে আমার আর কিছুই বলার নাই, যত দিন বেঁচে থাকবো জিন্দা লাশ হয়েই থাকবো , "আমার মনটাই মরে গেছে ,, আমার আর জীবনের কোনো খুশিই বেঁচে নেই হয়ে কাল রাতেই সব শেষ হয়ে গেছে। এতোদিনের এতো

এতোদিনের ইচ্ছা, আশা, সব কিছু এক নিমেষে শেষ হয়ে গেছে। আমি যা কখনো কল্পনাও করিনি না জেনে এক কাটাতারের বেড়ায় জড়িয়ে ফেলেছি। 

না জানি কিভাবে আমি এতো বড় একটা ধোকায় পড়লাম। তবে যতবড় আশা নিয়ে এসেছিলাম সব হতাশায় পূর্ণ হয়ে গেছে। আর নতুন করে ঠিক হবার কিছুই নেই, আমার এই শরীর নিয়ে আর কোন বাধা বিপত্তি নেই, এর প্রতি আর রোধ, অবরোধ কিছুই নেই যা খুশি করার করতে পারেন,, তবে আমার মন আর ছুতে পারবেননা। যে মনে জায়গা দিয়েছিলাম সেই মন টা কালই মরে গেছে চিরতরে....."

মনের সবটুকু শ্লেষ মিশিয়ে বলেছিলো কথাগুলো, রাতের অনেক টা সময় তিথি কে দেয়ালের দিকে মুখ করে ফুপাতে দেখা যেতো আর বাকি সময় গুলো নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিলো অন্যের খুশিমতো, কিন্তু তার টান আর ছিলোনা যা হতো সব এক পাক্ষিক। নৃশংতার পুরোপুরি রুপ তিথিকে দেখিয়েছিলো দোয়েল... দিন দিন তিথির চেহারা খারাপ হতে থাকে, শরীর ভেঙ্গে পড়ে,, হাঁসির কোনো রেখা আর তার মুখে ফুটে উঠেনি। কোন এক ঝড়ের রাতে ১৩ মাসের সংসার চলা কালীন তিথির উপর চড়াও হয়,, সে সবে সন্তান সম্ভবা। সহ্য করতে পারেনি রুগ্ন শরীর সেই রাতেই মরন হয়। অবসান হয় তার প্রতারনায় ভরপুর জীবনের... মুক্তি পায় সে কিন্তু মুক্তি পেয়েও বুঝি পায়নি আজও... 

সেই আলোতে দোয়েল দেয়ালের দিকে মুখ করে রাখা তিথিকে দেখতে পায়! জ্ঞান হারানোর কিছু ঘন্টা পর সকাল হয়..। আর টুনি এসে দরজায় ডেকে ডেকে না পেয়ে দরজা ভাঙ্গিয়ে নেয় কাউকে দিয়ে জ্ঞান ফেরানো হয় দোয়েলের.. কারন জানতে চাওয়া হলে বলে "রাতে ঝড়ের সময় বাজ পড়ে আর সেই সময় হয়তো জ্ঞান হারায়.." অবাক হয় টুনি "আরেহ কাল তো কোনো ঝড়ই হয়নি কি বলছো গো তুমি? মনে হয় স্বপ্ন দেখেছো কোনো " 

দোয়েলের চোখ যায় ক্যালেন্ডারের সেই তারিখে আর চোখের উপর ভেঁসে উঠে সেই দৃশ্য, গতকাল রাত ছিলো সেই নৃশংস রাতের ঘটনা..... 

এরপর থেকে প্রায় প্রতিটা রাতেই দেয়ালের দিকে চোখ যেতো আর তিথির ফুপিয়ে কান্নার আওয়াজ সহ তার ছায়া অন্ধকারেও যেনো জ্বলজ্বল করতো.........













||পরিসমাপ্ত||





Rate this content
Log in

More bengali story from আরিয়ানা ইচ্ছা

Similar bengali story from Classics