ভালোবাসার রঙ
ভালোবাসার রঙ
সুন্দর পরিবেশ। নির্জন দুপুরে বসে আছি পুকুর পাড়ে । কালকে রাতে একটি কবিতা লিখেছিলাম অনেক দিন পরে।সেটা একবার চোখ বুলাতে ইচ্ছে করলো।
জোৎস্না করেছে অভিযোগ
মন মরা আকাশ
ফেলছে দীর্ঘ শ্বাস,,,
হারিয়ে গেছে কোথায় ভালোবাসার রঙ।
কালও এ চোখে ছিলো
ভালোবাসার রঙে রাঙানো
কতো স্বপ্ন, কত আশা,
ভালোবাসা কিন্তু একটা নেশা।
সম্পর্ক ভাঙলে দেখি অভিযোগে ঠাসা।
ভালোবাসা বোধহয় একটা অভ্যাস,
ভগ্ন হৃদয় ভাগ্যের পরিহাস ।
ভালো বাসার রঙ ফিকে হতে ,
এখন শুধুই হা হুতাশ।
প্রকাশ্য কতো মিথ্যা করে বসবাস,
রুক্ষ পথে হাত ছেড়ে যাওয়া তুমি
তবুও আজো আছে অনুভবে ,
ভালো বাসার রঙ এখনো হয়নি ফিকে।
তুমি এখন স্পন্দন হয়ে স্পন্দিত হও এ বুকে।
সত্যি নীলাঞ্জনা চলে গেছে সাত বছর হলো। একাকিত্বটা গা সওয়া হয়ে গেছে। মা বাবা জন্য চিন্তা হয় মাঝে মাঝে। ওনাদের সেবা করার জন্য বিয়েটা করে ফেলতে পারিস তো বলে সে দিনো আত্মীয় স্বজনরা অনেক করে বললো। আমার একটু তন্দ্রা আসছিলো এমন সময়। পাতার মর্মর শব্দে ঘুম ভেংগে গেলেও। ছুটকি না। আড়াল থেকে দেখলাম, ও মাছ গুলো কে কিছু একটা খেতে দিচ্ছে।
আমাকে দেখে হঠাৎ চমকে উঠলো, যেনো ভয় পেয়ে গেছে। সামলে নিয়ে বলল " এই দুপুরে এখানটা কি করছো তুমি। আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।"
আমি জবাব দিলাম " মাছেদের গল্প শুনছিলাম। ওদের গল্প তো কেউ শোনে না, কারণ ওদের কান্না কেউ দেখতে পরে না। তাই আমি ওদের গল্প শুনি।"
ও হাসার চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না, শুধু বললো " তুমি সত্যি পাল্টালে না "
আমি বললাম " তুই অনেক পাল্টে গেছিস।"
ও বললো "না না দেখে মনে হয়। এখনো এক আছি..."
আমি বললাম " তুই কি ছবি আঁকা শুরু করলি আবার ? "
ও বললো " তুমি বলার পর চেষ্টা করেছি। ছয় মাসে মাত্র একটা ছবি এঁকেছি ।"
ওকে বললাম "দেখাবি"
ও রাজী হলো।ওর বাড়ির দিকে এগালাম।
ও বিয়ে করেছিলো আমাদের সাগরকে, আমার এক বন্ধুর ভাই সাথে। আমার বিয়েতেই আলাপ হয়েছিল। কিন্তু ওকে দুই বছরের মধ্যে বিধবা হতে হয়। যদিও ওকে মরতে হতো। সাগর ওকে বাঁচাতে গিয়ে মরা যায় সাগর। আসলে ছুটকির অপরাধ ছিলো, ও সাগরকে বিয়ে করেছে। সাগরের পরিবারের লোকজন অনেকবার ছুটকিকে মারবার চেষ্টা করেছিলো। সাগর সেই চেষ্টাটা বন্ধ করে । নিজের জীবন দিয়ে।
ছুটকির আঁকাটা দারুন হয়েছে। একটা মা তার বাচ্চাকে দুধ খাওয়াছে। কয়েকটা পুরুষ সেই উমুক্ত বুকের দিকে তাকিয়ে আছে।
অনেক দিন পর এ পাড়ার কারো বাড়িতে গেলাম।কাকু কাকিমা , অনেক আদর যত্ন করলেন। কোনো কুন্ঠা না রেখে আমি বললাম কাকু কাকিমা কে " একটা অনুমতি চাইবো দেবে। "
কাকু বললো " তুই আবার অনুমতি নিবি। ছোটবেলা তো এ বাড়ির সবকিছুই তো তুই নিয়ে যেতি নিজের ইচ্ছে মতো। তোকে এ বাড়ির ছেলের মতো দেখি আমরা।"
আমি বললাম" আমি সত্যি কারের ছেলে হতে চাই এ বাড়ির.। ছুটকির সম্মতি থাকলে ওকে আমি বিয়ে করতে চাই.. "
কাকিমার চোখে জল। বললো " তুই রাজী করাতে পারলে কথা বলল।"
ছুটকি নির্বাক , তবু যখন জিজ্ঞেস করলাম " তুই কি আমাকে তোর জীবন সঙ্গী হিসেবে যোগ্য মনে করিস। "
ও বললো " তুমি কি আমাকে দয়া করছো না তো..."
আমি বললাম " না নিজের উপর দয়া করছি। আমার ফিকে হওয়া জীবনে কি ভালোবাসার রঙ ভরিয়ে দিতে পারবি না তুই।"
ও চোখের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে চোখের কোণে থেকে বেরানো জলটা মুছে , হাসলো। ছুটকি কাকু কাকিমা প্রনাম করলো। বললো। "আমি ওর সাথে বেরালাম একটু। ওর বাবা ওষুধটা খাওয়াতে হবে। রাঙা মা বলে আমি বকুনি না দিলে উনি ওষুধ খাওয়াতে হবে। আর একটু মার্কেটিং যাবো ভাবছি। নয়তো হঠাৎ করে ও ফুরৎ করে বিদেশে কাজ চলে যাবে। তাই এক দুই সপ্তাহের মধ্যে যা করার করতে হবে।"