"ভালোবাসার বন্ধন"
"ভালোবাসার বন্ধন"
অনিলাদেবীর বার্ধক্য কাটে বিদেশ থেকে পাঠানো ছেলের মানি অর্ডার আর জরাজীর্ণ বাড়ি আগলে। স্বামী গত হওয়ার পর থেকেই তার দেখাশুনার ভার আরতির উপর।
সকালে এসে আরতি হাঁক দেয় " দিদা দরজা খোলো..রাত্রি জেগে পাহারা দিয়েছো বুঝি.."
একথা শুনে অনিলাদেবীও বলে ওঠেন "হতচ্ছাড়ি! মুখে বড় বড় কথা ! "
আরতি ডাগর চোখে তাঁর দিকে চেয়ে থাকে আর নিত্যকাজে ব্যস্ত থাকে। এমন খুনসুটির মধ্যেও অনিলাদেবীর মন পড়ে থাকে ফোনটা বেজে ওঠার অপেক্ষায়। তা দেখে আরতি অভিমানে বলে ওঠে "রক্তের সম্পর্কটাই আগে আমি কেউ না "।একথা শুনে অনিলাদেবী আরতিকে জড়িয়ে ধরে বলেন "ওরে ভালবাসি"...
একদিন দুপুরে অনিলাদেবীর শরীরটা কেমন ঝিমঝিম করছে। আরতি ডাক্তার
ডেকে আনে। ডাক্তারবাবু কয়েকটি ঔষুধ দিলেন আর বললেন বেশি চিন্তা করবেন না বয়স হয়েছে তো।
ডাক্তারবাবু চলে যাওয়ার পর শুরু হল আরতির খবরদারি।
সন্ধ্যেবেলায় আরতিকে কাছে ডেকে বললেন মুখপুড়ী কাছে আয় তো দেখি! আরতির হাতটা ধরে বললেন ছেলে আমার বিদেশ থেকে ফিরবে না।আমি চলে গেলে তোর কি হবে!
আরতি অনিলাদেবীর গলা জড়িয়ে বলে কি অলক্ষুণে কথা বলো কাল সন্ধ্যায়। অনিলাদেবী বললেন "শোন্ সই তুই গননকে বিয়ে করবি বড়ো ভালো ছেলে।"
পরেরদিন সকালে আরতি এসে দেখে দিদার এই জগতের মায়া ত্যাগ করেছে।
চিরকুটের লেখাটা পড়ে আরতি হাউ হাউ করে কাঁদছে।
"সবকিছুই তোকে দিয়ে গেলাম মুখপুড়ী রক্তের চেয়ে ভালোবাসার সম্পর্কটা বেশি দামি"।