বাওয়ালির গুপ্ত বৃন্দাবন
বাওয়ালির গুপ্ত বৃন্দাবন


লোকবিশ্বাস অনুসারে বাউলেরা নাকি বাঘ-বাঁধা মন্ত্র জানে। #বাওয়ালি কথা অর্থ সুন্দরবনের কাঠকাটা মানুষ । এরা কাঠ কাটার সময় হিংস্র জন্তুর আক্রমণ ও অন্যান্য দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তারা বাউলদের সাহায্য নেয় বলে এদের নাম হয়েছে বাওয়ালি। তবে এ বাওয়ালি, কথাটা এসেছে 'বনে এলি গেলি’— থেকে । তবে এখানকার অধিবাসীরাও বাওল সম্প্রদায়। বন-জঙ্গলের ওপরই ছিল তাঁদের জীবন নির্ভরশীল।
দীর্ঘ অবহেলায় মন্ডল জমিদারদের প্রতিষ্ঠিত মন্দিরের হাল খুব খারাপ ছিলো একসময়। গোবিন্দজী এবং লক্ষ্মী-জনার্দনের মন্দির, দ্বাদশ শিবমন্দির,স্থাপত্য আর ঐতিহ্যের বাহক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাওয়ালি। ধন্যবাদ স্থানীয় মানুষের উদ্যোগ কে।
বাওয়ালির মণ্ডলরা কিন্তু আসলে রায় ।মুঘল সম্রাট আকবরের শাসনকালে শোভা রাম রাই বা রায় বাংলার দস্যুদের বিদ্রোহ দমন করেন। তখন তখন হিজলি রাজসরকারের সেনাপতি ছিলেন শােভারাম রায়। রাজবাহাদুরের কাছ থেকেবজবজ অঞ্চলে পঞ্চাশটি গ্রামের সনদ এবং মণ্ডল তিনি উপাধিটি পান । শােভারাম অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম দশকে বাওয়ালিকে তার জমিদারির মূল কর্মকেন্দ্র হিসেবে ঠিক করেন। তবে অনেক বলেন, বাসুদেব মণ্ডল এই জনপদের আসল প্রতিষ্ঠাএর বংশধর ‘শোভারাম মণ্ডল’-এর পৌত্র রাজারাম মণ্ডল-এর আমলে মণ্ডল পরিবার বাওয়ালিতে বসবাস শুরু করলেও , বাসুদেব রায় ও বংশধর ‘হরনন্দ মণ্ডল’ বাওয়ালি উপজাতির লোকেদের সাহায্য নিয়ে বাওয়ালি এলাকায় জমিদারি পত্তন করেন।
মণ্ডলদের ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে । ধীরে ধীরে বাওয়ালিতে গড়ে ওঠে একাধিক মন্দির, রাসমঞ্চ, দোলমঞ্চ , আর ইউরােপীয় রীতিতে তৈরি এক বিশাল রাজবাড়ি। সাথে এরা গড়ে তোলা টালিগঞ্জ অঞ্চলে ও তিনটি মন্দির ।
সম্ভবত ১৭৭২ সালে গড়ে ওঠে বাওয়ালির শ্রী শ্রী #রাধাকান্তজিউরমন্দির। ১৭৯৯ সালেশ্রী শ্রী গোপীনাথ মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় । নবরত্ন মন্দির, দ্বাদশ শিবমন্দির – প্রত্যেকটি মন্দিরেই প্রাচীন প্রায় ২৫০ বছরের। একে গুপ্ত বৃন্দাবন বলা হয়। স্থানীয় মানুষের উদ্যোগে এখানকার #বসন্তউৎসব বা #দোলউৎসব খুব সুন্দর এবং আকর্ষণীয়।