Shyamasree (শ্যামশ্রী)

Tragedy Action Inspirational

3  

Shyamasree (শ্যামশ্রী)

Tragedy Action Inspirational

অপদার্থ

অপদার্থ

9 mins
342



আজকে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তপন রায় গ্রামে প্রথম পা রাখলো, তাও আবার গ্রামে যে বিদ্যালয়ে পড়তো বাল্যকালে সেই বিদ্যালয়ে। যেখানে আর্থিক অনটনের কারণে কম অপদস্ত হতে হয়নি তাকে, আজকে তারাই আবার কত মিষ্টি করে কথা বলছে, যারা বন্ধু বলতে লজ্জা পেতো, তারাই আজ বন্ধু বলে গালভরা কথা বলার ফুরসত পাচ্ছে না। আগে যাদের লুকিয়ে শুকনো মুড়ি চিবোতে হতো, নইলে ওরা দেখে ফেললে ঠাট্টা করবে, কখনো খাওয়ার অভাবে টিফিনের সময় জল খেয়ে কাটাতে হতো কারণ তখন তো আর মিড-ডে-মিলের ব্যবস্থা ছিল না, তখন কেউ খোঁজ পর্যন্ত নেয় নি, আজ কে কার বাড়িতে নিয়ে যাবে খাওয়ানোর জন্য তাই নিয়ে তরচা করছে, কারণ সে আজ বিডিও।অনেক মান তার,অনেক তার ক্ষমতা, তাই সবাই তৎপর তাকে হাতে রাখবার জন্যে।এর আগেও অনেকবার তাকে আসতে বলেছিল,যখন সে জয়েন্ট বিডিও ছিল, ধুর কে আসে এই গণ্ডগ্রামে। তার উপর আছে না ওরা, ওদের জন্যেই পা দিতে ইচ্ছে জাগে না এই গ্রামে,কে শুনবে ওদের ঘ্যানঘ্যানানি,প্যানপ্যানানি। সে বছর খানেক হল রুবিকে বিয়ে করেছে, ডাক্তার বাবার একমাত্র মেয়ে। যেমন সুন্দরী, তেমনি লাস্যময়ী। ওর বাবা-মা ওকে সুখ স্বাচ্ছন্দ্যে ভরিয়ে দিয়েছে। আজ তার কি নেই গাড়ি বাড়ি সব৷ সে আজ মানি লোকের জামাই।


সম্বর্ধনা শেষে ফিরে আসছিস সে, পথের মাঝে দেখা হলো অপুর সাথে।তার ছেলেবেলার বন্ধু ও, ঠিক তার পাশের বাড়িতে থাকে, সচ্ছল অবস্থা, লেখাপড়ায় মন্দ ছিল না,কতদিন অপুর মা ডেকে খাইয়েছেন ওকে, অবশ্য কারণ আছে প্রথমত সে লেখাপড়ায় ভালো ছিল, দ্বিতীয়ত তপনের বাবা ওদের চালের মিলের কর্মচারী ছিল, হয়তো বেশী করে কাজ করিয়ে নেওয়ার ছল । অবশ্য সবটাই তার নিজস্ব অভিমত। অপু ওরফে অপূর্ব বল্লো "আজ তো মানি মানুষ হয়েছিস, এই গ্রামকেই ভুলে গেলি,তা আজ থাকছিস তো? " তপনের এসব কথা সহ্য হয় না, সে থাকবে এখানে কি করে? কারণ শীততাপনিয়ন্ত্রিত ঘর ব্যতীত তার আজকাল ঘুমই আসে না আর তার চেয়ে বড় কথা কেনই বা থাকতে যাবে, কি আছে তার এই গ্রামে। সামান্য উত্তর দিল " না রে আজ ফিরতেই হবে, খুব চাপ, তা তুই কি করছিস এখন "।অপু উত্তর দিল " তেমন কিছু না, MBA পড়ে এসে স্বগ্রামেই একটা Project করছি, ওই আর কি,গ্রামের কিছু ছেলের কর্মসংস্থান হয়, যাতে গ্রাম ছেড়ে কাজের আশায় দূর-দূরান্তে যেতে না হয়।" " ও আচ্ছা" মুখে বলে তপন, মনে বলে ভালো চাকরি পায়নি তো তাই এই কথা। হঠাৎ করে কোনো কথা স্মরণ হলে মানুষ যেভাবে বলে উঠে তেমনি করে অপু বলল " ও হ্যাঁ, কাকিমার লেখা এই চিঠিটি নে, ভালোই হল এখানে দিয়ে দিতে পারলাম, নইলে আবার কাকিমার কথা রাখতে তোর বাড়ি ছুটতে হতো।" যখনি শুনলো তপনের বাড়ি চড়াও হতো এই সামান্য চিঠির জন্য, তাড়াতাড়ি নিয়ে নিলো চিঠিটা, নইলে থোড়াই বাইরের কথা বাড়ি পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতো! "আচ্ছা মা কি গ্রামেই আছে যায়নি? আর মা তো লেখাপড়াই জানতো না চিঠি লিখলো কি করে? "

অপু স্মিত হেসে বলল " তোর প্রথম প্রশ্নের উত্তরে বলি কাকিমা গ্রামে নেই, কোথায় তা হয়তো কেউই জানেনা আর তোর কোনো কথা না রেখে পেরেছে কি কাকিমা? আর দ্বিতীয়র উত্তর বয়ান কাকিমার লেখাটি আমার।" এই বলে এগিয়ে গেল অপু। চিঠি ও তার মায়ের হাতে কুটো সামান্য চিঁড়ে নিয়ে গাড়িতে উঠলো তপন। Full AC চালিয়ে Driver কে গাড়ি চালাবার নির্দেশ দিয়ে মাথা এলিয়ে দিল গাড়ির সিটে। ধুর সে এসব খায় নাকি আজকাল, এসব বয়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছেও করছিল না,তবু কি মনে করে রেখে দিল।এখন সে ২-২:৩০ ঘন্টার জন্য কর্মহীন। কিছুক্ষণ সে চোখ বন্ধ করে কাটানোর পড়ে দেখলো সামান্য ৩০-৪৫ মিনিট কেটেছে। কোন কাজ না পেয়ে চিঠিটা খুলে পড়তে শুরু করলো-


" প্রিয় বাবু,

তুই কেমন আছিস, ভালো আছিস তো, হয়তো ভালো নয় খুব ভালোই থাকবি তুই, তবুও মায়ের মন প্রশ্নটা না করে পারলাম না কিছু মনে নিস না, আমি কি ছাই লেখাপড়া জানি নাকি তাই মানি ব্যাটার মানটাও দিতে পারি না ঠিক মতো। বাবু তুই যখন জন্মালি তখন তোর বাবা সামান্য ভাগ চাষি আর আমি লোকের বাড়ির খই মুড়ি চিঁড়ে ভেজে দিয়ে সামান্য খোরাকি টুকু পাই। তোর আগে তপতী তোর দিদি, তোর চেয়ে বছর ছয়েকের বড়।তাকে ভাতের মার খাইয়ে বড় করেছি কারণ দুধ জোগান দেওয়ার মতো ক্ষমতা আমাদের ছিল না। তবে খুব তাড়াতাড়ি ভাত-মুড়ি খেতে ধরেছিল ও, এই রক্ষা।তুই হওয়ার পর তোর বাবা খাটুনি বাড়িয়ে দিল, আমি ছাগল পুষতে শুরু করলাম, তোর মুখে সামান্য দুধ তুলে দেওয়ার জন্যে।আজও মনে আছে ছাগলটা কিনেছিলাম অপূর্বর মায়ের কাছে থেকে ধার করে। অনেক দিন লেগেছিল সেই টাকাটা মেটাতে। নিজেরা না খেয়েও তোর মুখে তুলে দিয়েছি খাওয়ার। তোর দিদি সবে স্কুল যেতে শুরু করেছে।ওর জ্বালা নেই ভাত মুড়ি যা দিই তাই খায়, না দিলেও কিচ্ছু বলে না, তুই ছিলি ওর প্রাণ, অবশ্য আজকাল হয়তো সেসব কথা মনে পড়ে না, ও তো নিজেই ভালো কিছুই পেতো না,তাও যা পেতো তোর জন্য হাতে করে নিয়ে আসতো। এভাবে চললো, তোর বাবা অপুর্বর বাড়ির মিলে কাজ পেলো, আয় বাড়লো না, তবে একটাই লাভের লাভ হল সারাবছর কাজটা থাকে, তা দিয়ে তো আর সংসার চলে না, মাঝে মাঝে ভাগের জমিও করতে হয়, তবে ধার মেটাতেই সব চলে যায়।জমির পেছনে আমায় আর তোর বাবাকে দিন রাত করে খাটতে হয়।তোর বাবাকে মিলেও সময় দিতে হতো। তারপর তুই স্কুলে ভর্তি হলি, ভালো করে পাশ দিচ্ছিলি, অবশ্য তোর দিদিও ভালো পাশ দিতো তবে ওকে ঘরের কাজ সামলাতে হতো।

এরমধ্যে এক বর্ষায় খড়ের চালটা ভেঙ্গে পড়লো। তোর বাবা তোকে কোলে করে অপুর বাড়ির দালানে দিয়ে এলো, তোর দিদি আমি তোর বাবা মিলে ঘর পরিস্কারে লেগে পড়লাম। এমনও অনেক পরিস্থিতি গিয়েছে, সেসময় তোর গায়ে আঁচ টুকু লাগতে দিইনি। তুই গ্রামের স্কুলে পাস করে পাশের গ্রামে ভর্তি হলি, তোর জন্য চিঁড়ে ভেজে মুড়ি তৈরি করে নিয়ে যেতাম, প্রথম প্রথম নিতিস পড়ে মানা করে দিলি নিতে, কতদিন ফিরিয়ে দিয়েছিস, কাজের ফাঁকে ৩ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে খাওয়ার দিতে যেতাম, তুই জানতিস আমাদের সামর্থ্য, এখন বুঝি তুই সেসময় পরিচয় দিতে লজ্জা পেতিস, তখন তো বুঝতাম না, তোকে নিয়ে তো আমরা গর্বিত ছিলাম পাঁকে পদ্ম ভাবতাম তোকে। তোর দিদির তো আর চার ক্লাসের পর পড়া হলো না, মেয়েটা বলেছিল ঘর সামলেও পড়বো। ভাবলাম মেয়েদের পড়াশোনায় কি কাজ।তোকে পড়িয়েছি মুখের রক্ত তুলে। তোর দিদিকে ১৫ বছরেই বিয়ে দিয়ে দিলাম। সেই যে বিয়ে করে নিয়ে চলে গেল মেয়েটাকে, কোথায় আছে কে জানে? প্রথম প্রথম ফোন করত, তারপর আর কোনো খোঁজ নেই,জামাই তো ভালোই পেয়েছিলাম, পণ তো চায়নি উল্টে বেশ অনেকটা পয়সা দিয়ে গিয়েছিল।

তোর দিদির বিয়ের আগেই তুই পড়াশোনার অসুবিধা হচ্ছে বলে বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে চলে গেলি, দিদির বিয়ে তেও এলি না। তোর দিদি বিদায়ের সময় কত্তো করে তোকে দেখতে চেয়েছিল জানিস। বড়ো ছুটি আর টাকার প্রয়োজন ছাড়া তোর এই বাপ-মাটারে মনে পড়ত না।কতদিন তোর স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফিরে এসেছি, তোর দেখা পায়নি।কষ্ট করে তোর ঘরটা ভালো করেছিলাম সাধ্যমতো। তারপর তুই ১০ ক্লাস পাশ করে শহরে চলে গেলি,জলপানি নিয়ে। ,১২ ক্লাস পাশ করে কলেজ পাশ করলি,তুই দূরেই ছিলি আরও দূরে সরে গেলি, আমরা আরও ভয়ে সংকুচিত হয়ে পড়লাম। তুই ফোনে কেবলমাত্র টাকা চাইতিস, চাকরির কোচিং নিবি, খুব ভালো চাকরি পাবি, টাকা চাই অনেক টাকা,বিক্রি করে দিলাম শেষ সম্বল ১ বিঘা জমিটা, তুই ভর্তি হলি। তখন থেকে তোর বাবা ঠেলা চালাতে শুরু করল, মানা করেছিলাম,কোনো কথা শুনল না আমার, বললেই বলত 'ছেলে বড় হলে আমাদের কি ভাবনা, ছেলে আমার পাঁকে পদ্ম গো তপনের মা', তোর বাবার কাশ রোগ ধরা পড়লো তখন তুই সবে চাকরি পেয়েছিস, চাকরি পেয়ে কয়েকমাস টাকা পাঠিয়েছিলি,সেটার আনন্দে সারা গ্রামকে জানিয়েছিল মানুষটা জানিস! কিন্তু তুই ভুলে গেলি আমাদের। ডাক্তার বলল এখানে নাকি চিকিৎসা হবে না, তোকে কত ফোন করলাম ফোনে পেলাম না,একদিন ৩ মিনিটের জন্য ধরেছিলি, বল্লি ব্যস্ত আছিস, আর তোর বাবাকে সরকারি হাসপাতালে দেখাতে, কত লোকই দেখাচ্ছে আর সুস্থ হচ্ছে আর শেষে বল্লি যখন তখন ফোন করে না জ্বালাই যেন তোকে৷ সেবছরও গেলো না তোর বাবা আমায় ছেড়ে দূর দেশে পারি দিলো, মরার কালে কতবার দেখতে চেয়েছিল কিন্তু ফোনে পাইনি তোকে। না, তোকে বলিনি তোর বাবার চলে যাওয়ার বিষয়টি কারণ তুই সুখে থাক চাই, জ্বালাবার একটুও ইচ্ছে তোর বাবা কিংবা আমার কোনো কালেই ছিল না।শেষ রক্ত বিন্দু দিয়েও তোরই ভালো চেয়ে গিয়েছি। এসব কথাও তোকে বলতাম না যখন শুনলাম আমাদের কারণে তুই গ্রামে আসছিস না, আমার সরে গেলে আসবি, তখন আর নিজেকে সংযত রাখতে পারলাম না।তুই আসবি শুনে ছেঁড়া কাপড় আর নোংরা কাথাটাকে এই দূর্বল শরীর নিয়ে কেঁচেছি। ভাঙ্গা ঘরটাকে ঝাড় দিয়ে লেপেছি আমার এই অন্ধকার দৃষ্টি নিয়ে। তুই তুলাইপাঞ্জি চালের চিঁড়ে ভালোবাসিস, তুলাই চাল ধার করে এনে এই দৃষ্টিহীন চোখ আর ভাঙ্গা কোমড় নিয়ে চিঁড়ে ভেজেছি, তুই বলে দিলি আমাদের কারণে তুই আসছিস না, কেন রে কি করেছি আমরা? তুই হয়তো ভুলে গিয়েছিস যে চোখ দিয়ে দেখছিস তা আমার দান।শহরে গিয়ে রাস্তা পারাপার হতে গিয়ে তুই হারালি তোর চোখ দুটো, তোকে নিয়ে বাড়ি ফিরে এলাম আমরা ।সারাদিন মনমরা হয়ে বসে থাকিস আর কাঁদিস,মাঝে মাঝে একাকী বলিস আমার চোখের সাথে সাথে আমার স্বপ্নও শেষ। শেষ যেবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম ডাক্তারের পায়ে পড়ে গেলাম, বললাম আমার ছেলের চোখ কি কোনো ভাবে ফেরানো যায় না? ডাক্তার বলেছিল যায়, তবে খরচ আছে। তারও চেয়েও প্রয়োজনীয় একটা চোখ পাওয়া, কেউ যদি দান করে দেখতে পারি। আমি বলেছিলাম আমার দুটো চোখ নিয়ে ওকে দিয়ে দিন। ডাক্তার বাবু আমাকে শান্ত করলেন, বললেন দুইটা চোখের প্রয়োজন নেই একটাতেও চলে যায়, তবে কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষার করে বলতে পারবেন আমি দিতে পারবেন কি না? যাইহোক সেসব ঠিক হল তুই আমার একটা চোখ পেলি, সাথে পেলি জীবন। তারপর শহরে ফিরে গেলি, সাথে ভুলে গেলি সবটা।

আমি আর চাইনা তুই আমার মুখ কোনো দিনও দেখ।আমি চলে যাচ্ছি, কোথায় তা জানিনা, তবে তোর সামনে কোনদিনও দাঁড়াবোনা, ভয় নেই,আমার তোর কাছে কোনো দাবিও নেই সুখে থাক। আসলে আমি আমার পাপের শাস্তি পেয়েছি, মেয়েটা পড়তে চেয়েছিল বুঝিনি, ওকে আমরা বুঝিনি, বুঝতেও চায়নি,জোর করে বিয়ে দিয়েছি।খোঁজ নিই নি ঠিক মতো। আজ সে কোথায় বেঁচে আছে কি না জানি না।

আর বেশী কথা বলে তোর মূল্যবান সময় নষ্ট করলাম না।

 ইতি -

তোর জন্মদাত্রী "

চিঠিটা শেষ করেই তপনের হাত চলে গেলো চোখে হ্যাঁ তার ডান চোখটা তার মায়ের দান, সত্যিই সে কতটা অকৃতজ্ঞ সব ভুলে গিয়েছে সে। টাকা থাকলেই সব হয়? কত চেষ্টা করেও তো বাম পাথরের চোখটা আজও সারাতে পারল না। গাড়ির চালককে গাড়ি ঘোরাতে বলল, যদিও সে অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছে। চালক অবাক হয়ে গেলো "বলল এখন ওখানে গেলে বিকেল গড়িয়ে যাবে, রাতে ওই রাস্তায় ওখান থেকে ফেরা অসম্ভব। " তপন অধৈর্য্য হয়ে বলে উঠল " ফিরতে পারলে ফিরবো নইলে ফিরব না, যা বলছি তাই করো"। চালক গাড়ি ঘুরিয়ে চলতে আরম্ভ করল, কিন্তু মনে মনে সে বড় অবাক হল, যে মানুষ এসি ছাড়া নাকি থাকতে পারে না, এই গরমে আবার যাচ্ছে সেই জায়গায় যেখান থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে এসেছিল। তপন পরম মমতায় তার মায়ের হাতের চিঁড়েটা বুকে জড়িয়ে কেঁদে ফেললো আর আজ প্রথম অনুভব করল সে কি হারিয়েছে।

সন্ধ্যা গড়িয়ে গ্রামে প্রবেশ করল, সোজা গেল বাড়িতে। কতদিন আসেনি সে।কি হতশ্রী বাড়ির অবস্থা,চালায় খড় নেই বল্লেই চলে, এমন অবস্থা অন্ধকারেও বোঝা যাচ্ছে।আর ও থাকে অট্টালিকার 'পরে।সে ছুটে অপুর বাড়ি গেল,কেউই বলতে পারল না তপনের মায়ের খোঁজ। অপু ওদের বাড়ি থাকতে বলল না সে আজ মায়ের চৌকিতে ছেঁড়া কাথায় শোবে। হাজার কিছু বলেও তাকে খাওয়ানো বা অন্য বাড়িতে নিয়ে যাওয়া গেল না।

পরে ফিরে এসে তপন অনেক খুঁজেছে কিন্তু পায়নি খুঁজে তার মাকে। যে অপূর্বকে অপদার্থ ভেবেছিল, সেই তার মায়ের পাশে দাঁড়ায়, শুধু তার মা নয়,সবার পাশে দাঁড়ায়, সাহায্য করে।বাইরে থেকে পড়ে এসে নিজের গ্রামে ফিরে গ্রামের যুবকের কর্মসংস্থান করেছে সে দামি চাকরি ছেড়ে এসে।অপু অনেক সাহায্য করল খুঁজতে, কোথাও পাওয়া গেল না। অপূ বলল- " তপন তুই যে মহা মূল্যবান রত্ন হারালি হেলায়, সর্বস্ব দিলেও তা আর ফিরে পাবিনা।"

তপন মাথা নিচু করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবে প্রকৃত অপদার্থ কে??




Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy