অন্য আকাঙ্খা
অন্য আকাঙ্খা
স্নানের সময় নিজের চামড়া টাকে সাবান দিয়ে তো অনেক বার ঘষেছেন। ছুঁয়ে দেখেছেন কিন্তু চামড়া আর মাংসের তলায় যে দুর্বদ্ধ প্রাণীটি লুকিয়ে আছে সেটা কে কি আপনি সত্যি চেনেন আর চিনলেও ঠিক কত টা চেনেন। শরীরের কণায় কণায় যে লাগামছাড়া প্রাণের স্পন্দন তার ভাব গতিক আপনি কতটা জানেন । প্যাচের পর প্যাচ খেতে খেতে সর্পিল যে নারী ভুঁড়ি শরীরে ভূগর্ভে চলে গেছে তার মজ্জা পেশীদের খিদে আপনি ঠিক কত টা জানেন । ধমনী শিরায় যে রক্ত স্রোত বহমান তার উচ্ছাস তার চাহিদা তার পাশবিক খিদে আপনি ঠিক কত টা বোঝেন
আর শেষ প্রশ্ন হচ্ছে আপনার এই শরীর যেটা কে আপনি দিবা রাত্র আপনার নিজের শরীর ভেবে চলেছেন সেটা কি আদৌ আপনার নিজের।
খুব দ্রুত গতি তে এগিয়ে চলেছে কাজরী। ঠিক নয়টার মধ্যেই তাকে গন্তব্য স্থলে পৌঁছতে হবে।দক্ষিণ কলকাতার একটি সম্ভ্রান্ত পাড়ার একটি বাড়িতে। আজ থেকেই তার কাজ শুরু হবে।চব্বিশ ঘন্টার কাজ মোটা মোটি এক মাস মতন এখন থাকতে হবে ওই বাড়িটিতেই।এই তো এসে গেছে বাড়িটি ছাব্বিশের বি জীবন রায় সরনী কলকাতা তিরিশ।বাড়িটার সামনে আসতেই একটা অদ্ভুত জিনিস লক্ষ করলো কাজরী। দোতলার একটা বারান্দার রেলিংয়ে অজস্র কাক বসে আছে। কলকাতা শহরে কাক থাকা টা অস্বাভাবিক নয় কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো সব কটি কাক ই দাঁড়কাক। মিশ মিশে কালো এটা সচরাচর দেখা যায় না।সদর দরজার উপরে শ্বেত পাথরের সাদা ফলকের উপর লাল রঙে লেখা "আকাঙ্খা।"
সদর দরজার সামনে এসে বেল টিপল কাজরী।খুব জোরে কর্কশ একটি আওয়াজ শোনা গেল।বড় বাড়ি চাকর বাকোর রা মনে হয় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে তাই হয়তো তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্যই এরকম জোর আর কর্কশ আওয়াজ কলিং বেলটার।
দু বার জোরে বাজালো বেল টানা কোনো সাড়া শব্দ নেইএবার কাজরীর মোবাইল টা বেজে উঠলোএকটি ভিডিও কলকলটি ধরলো কাজরীকাউকে দেখা যাচ্ছে না কলে। কেমন একটা আলো আধারি হয়ে আছে।একটি বৃদ্ধার কন্ঠস্বর শোনা গেল মাত্র"আপনি কি এসে গেছেন মিস সেন""হ্যা আমি দরজার বাইরেই দাঁড়িয়ে আছি।"কাজরী দেখলো নিজেকে ভালোই লাগছে ক্যামেরায়।কিছুক্ষন বৃদ্ধা চুপ করে রইলেন।কাজরী ফোনের উপর উকি ঝুকি মেরে দেখতে চেষ্টা করলো কাউকে দেখা যায় কিনা। না একদম অন্ধকার। মনে হলো ওপরের বৃদ্ধা যেন কিচ্ছুক্ষন ধরে কাজরী কে দেখছেন।
একটা খুট করে শব্দ হলো কাজরী বুঝতে পারলো সামনের দরজাটা খুলে গেল
এবার বৃদ্ধার গলা শোনা গেল
"আমি দরজা খুলে দিয়েছি আপনি ঢুকে দরজাটা ঠেলে দেবেন তাহলেই আপনা থেকে বন্ধ হয়ে যাবে।সামনেই একটা সিঁড়ি পাবেন। সোজা দোতলায় উঠে এসে বাম দিকের বড় ঘরটায় চলে আসুন ওটাই আমার ঘর।"
লম্বা সিঁড়ি উপরে চলে গেছে। দিনের বেলায়ও আলো ঢোকে এত কম যে ঠিক করে দেখা যাচ্ছে না।সিঁড়ি উঠতেই কাজরী দেখলো বছর পঁচিশের একটি যুবক সিঁড়ির আলো ঠিক করছে।" আমি কাজরী সেন ।মিসেস বোস এর কাছে এসেছি।"লোকটি বিড়ি খাচ্ছেকাজরী র দিকে কেমন গম্ভীর ভাবে তাকালো।মাথা থেকে পা অবধি কেমন করে যেন দেখলো ওকে।খুবই গম্ভীর স্বরে লোকটি বললো"ম্যাডাম আপনার জন্যে উপরে অপেক্ষা করছেন...উপরে বা দিকে।"
বিড়ির গন্ধ টা কেমন অসহ্য লাগে কাজরীর একটা কাষ্ট হাসি হেসে উপরে উঠে গেল।বা দিকের ঘরটার সামনে এসে দাঁড়াতেই ভিতর থেকেবৃদ্ধা মিসেস বোস এর কণ্ঠস্বর ভেসে এলো"ভিতরে চলে আসুন মিস সেন।"ঘর টাতে ঢুকেই একটু অবাক হয়ে গেল কাজরীঅনেক দিনের পুরোনো আমলের বৈঠক খানার মতো। লাল শাঁখের মেঝে।বিশাল বড় বড় দুটো জানলা কিন্তু সেগুলো আপাদ মস্তক ভারী পর্দা দিয়ে ঢাকা। দুটো ঢাকা পর্দার মাঝখানের যে জায়গা টা সেটা দিয়ে দিয়ে যত টা আলো ঢুকছে ততটুকুই আলোর সম্বল এই বিশাল বৈঠক খানায়।মাথার উপরে একটা ঝাড় লণ্ঠন।ঘরের একদম কোনায় একটা হইল চেয়ারে বসে আছেন এক বৃদ্ধা।বৃদ্ধার মাথার উপর বিশাল একটা আয়না।
কাজরী ঘরে ঢুকতেই বৃদ্ধা বোস বলে উঠলেন"আমি আপনাদের সংস্থায় কালই ফোন করেছিলামআমার নতুন একজন নার্স দরকার ছিলপুরোনো টা বড্ড বেশি মুখে মুখে তক্কো করছিল।"
কাজরী দেখলো ঘরে আর কোনো আসবাব নেইবৃদ্ধা ওকে বসতে না বলে প্রথম দেখাতেই যেন বুঝিয়ে দিলেন বেশি কথার উপর কথা বললে তোমারও চাকরি ফট হয়ে যাবে।
চুপ চাপ দাঁড়িয়ে থাকলো কাজরীআবছা আলোতে বৃদ্ধার মুখটা ভালো করে দেখা যাচ্ছে না। তবে বোঝা যাচ্ছে ওনার সমস্ত চুল গুলো পাকা। পাকা চুল গুলো খোলাই রেখেছেন আর পরে আছেন সিল্কের সাদা শাড়ি। বৃদ্ধার গলায় একটা রুদ্রাখের মালা।
বৃদ্ধা নিজেই হইল চেয়ারের চাকা ঘুরিয়ে একটু সামনে চলে এলেন।কাজরীর মনে হলো বৃদ্ধা মিসেস বোসের চোখ গুলো যেন সাধারণ চোখ নয় বরঞ্চ এক একটা এক্স রে মেশিন। কাজরী কে যেন স্ক্যান করে যাচ্ছেন। মাংস মজ্জা হাড়।
বললেন"মিস সেন একটু পিছনে ঘুরুন"
একটু অস্বস্তি হলো কাজরীর উনি সংস্থা র কাছে কোয়ালিফাইড নার্স চেয়েছেন আর এ যেন পাড়াগাঁয়ে এসে মেয়ে দেখা হচ্ছে।
খুব পরিপাটি করে একটা ছাই রঙের জামদানি পরে এসেছে কাজরী। ফরমাল লুক আছে একটাকিছু না বলে পিছন ফিরে দাঁড়ালো।
"আর কখনো এই বাড়িতে ছাই রঙের কিছু পড়বেন না"
আদেশ করলেন মিসেস বোস।
উনি কি মানসিক রোগীনা সেরকম তো কিছু সংস্থা কাজরী কে বলেনিহ্যা ওনার স্নায়ুর কিছু রোগ আছে আর লোয়ার বডি একদম প্যারালাইসিস হয়ে গেছে এইটুকুই খবর আছে কাজরীর কাছে সংস্থা মারফত।
"আপনি ওমলেট বানাতে পারেন?"
একরকম জোর করে প্রশ্ন করলেন বৃদ্ধা।নার্স কে দিয়ে পরিচারিকার কাজ করাবে।একটু খারাপ লাগলো কাজরীর সংস্থা অবশ্য বলে টুকি টাকি এই সব করে দিতে তাতে ক্লাইন্টেল ধরে রাখতে সুবিধে হয়।
"আপনি কি একটু হালকা ভাজা খেতে পছন্দ করেন"
"না বেশি কড়া করে ভাজা পছন্দ করি"
কেমন যেন ধমকের স্বরে বললেন বৃদ্ধা।
"আমি সব বলে দেব তোমাকে। "
মিসেস বোস "তুমি" তে নেমে এলেন।কাজরীর খারাপ লাগলো না বরঞ্চ "আপনি" তে একটু অস্বস্তি হচ্ছিল।
আমি শংকর কে বলে দিচ্ছি ও তোমাকে তোমার ঘর দেখিয়ে দেবে। লাঞ্চ করে আমার ঘরে আসবে আমি ওষুধ পত্র কখন কি খাই তোমাকে বলে দেব।
শংকর লোকটা টা এখন যেন একটু বেশি মিশুকে মিশুকে ভাব দেখালো।কাজরী কে উপরে ওর ঘর দেখাবার সময় একটু বেশিই যেন ঘনিষ্ট হওয়ার চেষ্টা করছিল
মিসেস বোসের ঠিক উপরে একটা ছোট ঘরে কাজরীর থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। এই ঘরটা করিডোরের একদম শেষ প্রান্তেকরিডোরের একদম অপর প্রান্তেই শঙ্করের ঘর।লোকটা কে দেখে খুব অস্বস্তি হয়েছিল কাজরীরআর সব থেকে অসহ্য বিড়ি খাওয়া। করিডোরে ও বিড়ির গন্ধ।দুপুরে খাওয়ার পর কাজরী ধপ দুরস্থ নার্সের উনিফর্ম পরে নিলো। উনিফর্ম পরে মাথার বোনেট টাও সযত্নে লাগিয়ে নিলো ।সংস্থার নির্দেশ আছে কাজের সময় ফুল উনিফর্ম পরে থাকতে হবে।মিসেস বোস এর নামে একটা ফোল্ডার সংস্থা থেকেই কাজরী কে দিয়েছে। সেটা নিয়ে নীচে নেমে আসে কাজরী।
নীচে নেমে বাঁদিকের বৈঠক খানার ঘরটায় আবার ঢুকলো সে। আগে খেয়াল করেনি এখন দেখলো বড় আয়না টার পাশে একটা ফটো ফ্রেম। মিসেস বোসের অল্প বয়সের ছবি। ঘোড়ার পিঠে চেপে আছেন হর্স রাইডিং কস্টিউম আর লম্বা রাইডিং বুট জুতো পরেহাতে একটা হুইপ।মুখের আদল টা একই আছে কঠোর কঠিন ব্যক্তিত্ব পূর্ণ অভিব্যাক্তি । এখন শুধু চুল গুলো পেকে গেছে আর মুখের চামড়া টা ঝুলে গেছে মাত্র।
কানে বড় মাকরি পড়েছেন। চোখে পুরু কাজল গথিক লুক একটা। মাথার চুল টা খোলা কালো ঘন।
এই ঘরের ভিতর একটা দরজা দিয়ে পাশের ঘরে যাওয়া যায়। ওটাই মিসেস বোসের শোয়ার ঘর।কাজরী মিসেস বোসের শোবার ঘরে ঢুকলো।
এই ঘরটা টাতে একটা কিং সাইজের বিছানা আছে।বিছানার এক পাশে ঝুলছে একটা স্যালাইন ঝোলানোর স্ট্যান্ড। বিছানার ঠিক ডান পাশে একটা বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার।
সামনে একটা টেবিল সেটার উপর এলোমেলো ভাবে অগোছালো হয়ে আছে প্রচুর ওষুধের প্যাকেট আর ব্লিস্টার।
কাজরী দেখলো মিসেস বোস ওই হুইল চেয়ার টাতেই বসে আছেন। ওনার কোলের উপর একটা খানদানি পানের ডিবে রাখা রয়েছে। সেখান থেকে একটা পান বার করে মুখে দিলেন বৃদ্ধা মিসেস বোসতীব্র জর্দার ঘন্ধে ঘরটা ভরে গেল।এই ডিবে টা আগে খেয়াল করেনি কাজরী।
"প্রেসক্রিপশন গুলো সব হারিয়ে ফেলেছি বুঝেছোকখন কি ওষুধ খেতে হয় আমার বেশ মনে আছেআমি বলছি তুমি এক এক করে লিখে নাও।"
ফোল্ডার থেকে একটা এ ফোর সিট বের করে লিখতে থাকে কাজরী।
"দিনে সাত বার পনেরো মিলিগ্রাম করে মরফিন। ইনট্রামাসকুলার।"ডসেজ টা অদ্ভুত লাগলো কাজরীর
এত বেশি ওষুধ তো এরকম বৃদ্ধ বয়সে তো নেওয়া উচিত নয় তা ছাড়া শরীরের নেওয়ার ও তো একটা ক্ষমতা আছে।"আপনি শিওর আপনি সারা দিনে এত টা মরফিন নেন"
"বেশি কথা বলো না। আমি জানি আমি কি কখন ওষুধ খাই। চুপ চাপ লেখ। "
এত তো কখনো কোথাও কাউকে নিতে শোনেনি কাজরী। বৃদ্ধার ধমকে তাই লিখে নিলো এ ফোর সিট টায়।
"কখনো কখনো আমার মরফিনে কাজ হয় না তখন অন্য ব্যবস্থা দেখতে হয়।"কথা টা বলে কাজরী র দিকে তাকিয়ে চোখ টিপলেন বৃদ্ধা।আরেকটা পান মুখে পুড়ে নিলেন।
এবার কাজরীর মনে হলো বৃদ্ধা মনে হয় ওষুধে আসক্ত। কিছু কিছু ওষুধে নেশা হয়। ব্যাথা যন্ত্রনা ক্ষনিকের জন্য কমিয়ে দেয়। উনি মনে হয় ড্রাগ এবিউস করেন।
মরফিনের একটা ডোজ বৃদ্ধার ডান হাতে ইনজেক্ট করলো কাজরী।একটা গভীর দম নিলেন বৃদ্ধা।কিছুক্ষন চুপ করে বসে থাকলেন।হাত দিয়ে একবার গলার রুদ্রাক্ষ টাকে স্পর্শ করলেন।
তারপর বললেন"তুমি এখন তোমার ঘরে যাও আবার বিকেলে এসো আমি একটু বিশ্রাম করবো "একটু শংকর কে পাঠিয়ে দিওআমাকে বিছানায় তুলে দেবে"আচ্ছা"বলে কাজরী বেরিয়ে গেল।
উপরে উঠেই শঙ্করের ঘরে টোকা দিলো কাজরী। ঘরটার ভিতর থেকে ঘর ঘর করে একটা আওয়াজ আসছে।"শংকর তোমাকে একবার ম্যাডাম ডাকছেন।"আওয়াজ টার জন্য কাজরী কে অনেকটাই চিৎকার করে বলতে হলো কথা গুলো।ঘর ঘর আওয়াজ টা থামলো।দরজা খুলে উকি মারলো শংকর।খালি গা একটা লুঙ্গি পরে আছে।অসহ্য সেই বিড়ির গন্ধ।
"তোমাকে ম্যাডাম একবার নীচে ডাকছেন""আমি যাচ্ছি ম্যাডাম।আপনি খুব ভালো দিদিমণি"হটাৎ এই প্রশংসা আশা করেনি কাজরী।
"আপনি ম্যাডাম কে দেখলে আপনাকেও দেখবেন ম্যাডাম।" একটা বিচ্ছিরি মুখ ভঙ্গি করে কথা গুলো বললো শংকর।
কথা গুলো ঠিক বুঝলো না কাজরী। মুচকি হেসে বললো "তুমি তাড়াতাড়ি যাও ম্যাডাম কে শুইয়ে দাও বিছানায় উনি ঘুমাবেন"
মাথা নাড়লো শংকর।কাজরী নিজের ঘরের দিকে এগিয়ে গেলো।কে জানে কেন এই শংকর লোকটা টাকে পছন্দ হচ্ছে না কাজরীর।
বিকেলে আবার নীচে নেমে এলো কাজরী। মিসেস বোস কে ট্র্যাকশান দিতে হবে ।বৃদ্ধা বললেন ট্র্যাকশান দেয়ার জিনিসপত্র সব নীচে ভাড়ার ঘরে রাখা আছে উনি বেশ জোরে জোরে কয়েকবার শংকর কে ডাকলেন।
সিঁড়ি দিয়ে কারো নেমে আসার আওয়াজ শোনা গেল। শংকর যে অবস্থায় ঢুকলো কাজরী একদমই আশা করেনি এরকম টা।ভুর ভুর করে দেশি মদের গন্ধ বেরোচ্ছে ওর গা থেকে।মিসেস বোস কিন্তু এ ব্যাপারে ওকে কিছুই বললেন না। শুধু বললেন"দেরাজ থেকে ওনাকে ভাড়ার ঘরের চাবিটা দিয়ে দে।"
অনেকটাই টলতে টলতে শংকর বাইরে বেরিয়ে গেল।তারপর কিচক্ষন পর এসে এক গাছা চাবি কাজরীর হাতে দিয়ে গেল "সব থেকে ছোট চাবি টা দিদিমণি।"এবার বৃদ্ধা একটু ধমকের স্বরে বললেন"তোকে বলেছি না দিনে দুপুরে মদ না গিলতেআবার দেখতে পেলে ঘাড় ধরে বার করে দেব।"
হাত জোড় করে কুর্নিশ করে টলতে টলতে শংকর বেরিয়ে গেল।
কাজরীর দিকে তাকালেন মিসেস বোসকাজরীর মনে হলো মিসেস বোসের চোখ দুটো যেন হাসছে। শংকর কে বকা র আড়ালে যেন প্রচ্ছন্ন সম্মতি আছে আর ওর মদ খাওয়ার ব্যাপারটা যেন উনি উপভোগ করছেন।
কাজরী সিঁড়ি দিয়ে নেমে ভাড়ার ঘরে চলে এলো।
ঘরটা একটা লম্বা টানেলের মতন। একটা কম পাওয়ারের বাতি জ্বলছে। টানেলের ঐপাশে আরেকটা ছোট ঘর। তালা বন্ধ। তালা বন্ধ ঘরটার সামনেই মনে হলো একটা ডাইরি জাতীয় কিছু পরে আছে অন্ধকারে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না।
কাজরীর ঠিক সামনে একটা কাঠের আলমারি। আলমারির পালা গুলো খোলা। তার ভিতরেই ট্র্যাকশান দেওয়ার যন্ত্র পাতি গুলো দেখা যাচ্ছে।
ট্র্যাকশান দেওয়ার সব যন্ত্র পাতি এক এক করে নিচ্ছে হটাৎ মনে হলে পিছনে কেউ এসে দাঁড়িয়েছে।ভুর ভুর করে মদের গন্ধ বেরচ্ছেপিছন ঘুরে তাকাতেই কাজরী দেখলো শংকর কেমন বুদ হয়ে আছে। ওর দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে।খুব জোরে জোরে নিশাস পড়ছে ওর নাক দিয়ে।"একি শংকর তুমি এখানে কি করছোকাজরী জিজ্ঞেস করে উঠলো।"
"ভাড়ার ঘর বিছে মাকড়শা ইঁদুর সাপ খোপের উপদ্রব তাই এলাম দিদি মনি যদি দরকার হয়।"সেই বিচ্ছিরি ভাবে হাসছে শংকর।
"না কোনো দরকার হবে না আমি নিজের সাহায্য নিজেই করতে পারবো।"
একই ভাবে কুর্নিশ করে টলতে টলতে চলে গেলশংকর।
কাজরী সব যন্ত্র পাতি নিয়ে আবার ফিরে এলো মিসেস বোসের শোবার ঘরে।
কয়েক মিনিটের মধ্যেই সে গুলো সেট করে ফেললো কাজরী।ট্র্যাকশান নেওয়ার আগে বৃদ্ধা নিজেই রুদ্রাখের মালা টা টেবিলের উপর রাখলেন।মিসেস বোস কে ট্র্যাকশান দিতে শুরু করলো কাজরী।
"এই শরীর শুধুই ক্ষয়ে যাচ্ছে বুঝলে"বললেন মিসেস বোস
"শরীরে আর সেই শরীর নেই প্রতি নিয়ত বুঝতে পারি সেটা।"একটা আক্ষেপের সুর বেজে উঠলো বৃদ্ধার কণ্ঠে।সযত্নে বৃদ্ধার একটা হাত আলতো করে চেপে ধরলো কাজরী আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গে অনুভব করলো বৃদ্ধার কাঁপা হাতের মধ্যে থেকে কিছু তরঙ্গ ওর হাতে এসে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃদ্ধার হৃদয়ের স্পন্দন বেশ ভালো মতন বুঝতে পারলো কাজরী।ট্র্যাকশান হয়ে গেলে বৃদ্ধাকে সাজিয়ে গুছিয়ে রুদ্রাখের মালা টা পড়িয়ে আবার হুইল চেয়ারে বসিয়ে দিল কাজরী।উনি বৈঠক খানায় বসতে চাইলেনততক্ষনে অন্ধকার হয়ে গেছে। বৈঠক খানায় একটা খুব কম পাওয়ারের আলো জ্বলছে।"আমার হালকা ফটোফোবিয়া আছে তাই অল্প আলোয় থাকতে হয়" বললেন বৃদ্ধা।একটু মুচকি হাসি হাসলো কাজরীবৃদ্ধা বলে চললেন"ওই শংকর কিন্তু খারাপ ছেলে নয়ও খুব গুণী ছেলে। চাকরি বাকরি পাচ্ছে নাতাই এখানে আছে। বাড়িতে একটা পুরুষ মানুষের খুব দরকার হয় কি বলো?"
শেষের কথা গুলোর বলার ধরণ টা ঠিক ভালো লাগলো না কাজরীরবললো"আপনি একটু বসুন আমি চা করে আনছি।"কাজরী বৈঠক খানা থেকে বেরিয়ে উল্টো দিকের ঘর টায় চলে গেল।এটা কিচেন।কিচেনে একটা বড় ফিজ খুলে সেখানে বসে কি যেন ঢোকাচ্ছে শংকর।কাজরী দেখলো শংকর যেটা ফ্রিজে ঢোকাচ্ছে সেটাএকটা ট্রে
আর সেই ট্রে ভর্তি কাটা কাঁচা মাংসওর চোখ পড়ল ফ্রিজের ভিতরপ্যাকেট প্যাকেট খাসির কাটা মাংস রাখা আছে।"কিসের মাংস ওগুলো শংকর""খাসির মাংস দিদিমণি ম্যাডাম খাসির মাংস ছাড়া আর কিছু খেতে পারেন না।"মদ খেয়ে বুদ হয়ে আছে শংকর।"ম্যাডাম কি শুধুই খাসির মাংস খান আর কিছু খান না ?"প্রশ্ন করলো কাজরী।
"না দিদি মনি উনি শুধুই মাংস খান। তাছাড়া উনি আর কিছু খেয়ে হজম করতে পারেন না।"
খুব অবাক হলো কাজরী
বুধ হয়ে বসে আছে শংকর।
কাজরী আর সময় নষ্ট করল না।প্রথমে এক ঝলক দেখে নিলো কি কোথায় আছে তারপর চায়ের জল চাপিয়ে দিলো গ্যাসের ওভেনের উপর।
"আপনি দিদিমণি মানুষ খুব ভালো"জড়ানো গলায় বলে ওঠে শংকর
একটু হেসে কাজরী জিজ্ঞেস করে "তাই? কি করে বুঝলে।"
"আমি বুঝতে পারি দিদিমণি।"
ম্যাডাম বলছিলো "তোমার অনেক গুনকি কি করতে পারো শংকর"শংকর কে এখন ততটা খারাপ লাগছে না কাজরীর
"এক সময় পাড়াগাঁয়ে লাঠি খেলা করতাম দিদিমণি তারপর কেত্তন পালা গান প্রচুর করেছি তবে ম্যাডাম আমাকে রেখেছেন অন্য কারণে"
"কি কারণ?"
"সে পরে তোমায় বলবো দিদি মনি।"
ওদিকে বৈঠক খানায় চুপ করে বসে আছেন বৃদ্ধা মিসেস বোস। ওনার চোখ দুটো বন্ধ।হাতে রুদ্রাখের মালা টা নিয়ে জপ করছেন।কান গুলো কেমন অস্বাভাবিক রকম খাড়া হয়ে আছে।
চা গরম হয়ে ফুটছে।কাজরী শঙ্করের দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বললো"বলই না আমাকে আমি কাউকে বলবো না।"
এবার হাত দুটো জোর করে বলে "অভয় দেন তো বলি"চা ছাকতে ছাকতে কাজরী বলে ওঠে"দাঁড়াও আমি চা টা দিয়ে আসছি তার পরে শুনছি।"
"ঠিক আছে দিদি তবে এখানে নয় তুমি আমার ঘরে চলে এসো। বুড়ির কান খুব তীক্ষ্ণ"
বৈঠক খানায় ঢুকতেই একটা আওয়াজ শোনে কাজরী ঢুকেই দেখে হুইল চেয়ার থেকে পড়ে গেছেন বৃদ্ধা। সামনেই পরে আছে রুদ্রাখের মালা টা।কাজরী তাড়াতাড়ি কাপ আর ডিশ টা বড় আয়নার নীচে রেখে মিসেস বোস কে আবার উইল চেয়ারে বসতে সাহায্য করে।মিসেস বোসের জীর্ণ হাত টা ধরতেই আবার সেই স্পন্দন অনুভব করে কাজরী কিছু একটা প্রবাহের মতো ওর সারা শরীরে ঢুকে যাচ্ছে।বৃদ্ধা কে বসিয়ে ওর হাতে রুদ্রাক্ষ তুলে দেয় কাজরী।
"ম্যাডাম আমি একটু আসছি"মাথা হেলিয়ে সম্মতি জানান মিসেস বোস।
কাজরী চুপি চুপি উঠে শঙ্করের ঘরের কাছে চলে আসে বিড়ি আর হালকা মদের গন্ধ বেরোচ্ছে কিন্তু কেন জানি খারাপ লাগলো না কাজরীর।
হালকা টোকা মারলো এক বার দু বার এবার একটু বেশি জোরেই মারলো।না কোনো সাড়া শব্দ নেই।মদ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে মনে হয়।সেদিন রাতে আর শংকর কে দেখা গেল না।মিসেস বোস বললেন শংকর মাঝে মধ্যে প্রচুর মদ খাওয়ার ফলে এরকম করে। নিজেকে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে।
রাতে মরফিন দেওয়ার পর মিসেস বোস যেন কেমন নিস্তেজ হয়ে পড়লেন কাজরী কে বললেন " আমার হাত টা ধরো।"কাজরী হাত বাড়াতেই বৃদ্ধা ওর দুহাত দিয়ে চেপে ধরলেন হাত টাকাজরী এবার যেন সেই অদ্ভুত স্পন্দন আরো বেশি করে অনুভব করলো। একটা তরল স্রোত ওর ভিতর যেন ঢুকে যাচ্ছে। হঠাৎ মাথা টা ঘুরে গেল কাজরীরকোনো রকমে উঠে দাঁড়িয়েবৃদ্ধা কে বিছানায় শুইয়ে দিল।তার পর এক টা ঘোরের মধ্যে চলতে লাগলো ও।ও যেন আর ওর মধ্যে নেই কে বা কি যেন কাজরী কে নিয়ন্ত্রণ করছে।
নিচে ভাড়ার ঘরে চলে এসেছে কাজরীটিম টিম করে আলো জ্বলছে।পরে থাকা এলবাম টা কে তুলে নিলো।কিরকম যেন ঝিম মেরে আছে চারিধারবন্ধ দরজা টার দিকে এগিয়ে গেলো সে।
খুব জোরে জোরে নিঃস্বাস নিচ্ছেন মিসেস বোস।চোখ বন্ধ। শরীর অসার।
উপরে উঠে আসতেই কাজরী দেখলোশঙ্করের ঘর টা খোলা ।
নিজের ঘরে চলে গেল কাজরী।আয়নার সামনে দাঁড়িয়েছেবোনেট টা টেনে খুলে খাটের এক পাশে ফেলে দিলো।খোলা ঘন কালো চুলউনিফর্ম এর পকেট থেকে বের করে আনলো তিন টে জিনিষ। তিন টেই সে কিছুক্ষন আগে ভাড়ার ঘরটা থেকে পেয়েছে।দুটো কানের মাকরি আর একটা কাজলের পেন্সিল।
মদের নেশা অনেকটাই কেটে গেছে শঙ্করের।গুন গুন করে কি একটা গান করছিলো।একটা ভেজা ভেজা মিষ্টি মিষ্টি গন্ধ নাকে এলো"আরে দিদি মনিএসো এসো"
একটা তক্তপোষে শুয়ে ছিল শংকর উঠে পড়ল।এই বাড়ির সব ঘরেই অল্প আলো।
কাজরী কে দেখে চমকে গেল শংকরনার্সের উনিফর্মের সামনের উপরের বোতাম গুলো খোলা। মাথার বোনেট নেই কালো লম্বা মায়াবী চুল।কানে মাকরি।এই মাকরি গুলো শংকর আগে যেন কোথাও দেখেছে। আর চোখে অদ্ভুত কাজল বিভীষিকা ময় ভয়ঙ্কর তবুও সাংঘাতিক ভাবে আকর্ষণীয়।
সামনের একটা টেবিলে একটা কাঁচের গ্লাস সেখানে লাল রঙের মদ। অদ্ভুত লালচে আভা ছড়াচ্ছে ওই পানীয়।কি রকম যেন তেষ্টা নিয়ে তাকালো কাজরী ওই গ্লাস টার দিকে।
কাজরী কে দেখে কেমন যেন ভয় করতে শুরু করেছে শঙ্করের। ততলিয়ে বললো"একটু খাবেন নাকি দিদিমণি"এক মিনিট থমকে থেমে দাঁড়ালো কাজরীএটা সে কি করছেএকটা অচেনা লোকের ঘরে ঢুকে পড়লএকটা প্রচন্ড রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে সে কিন্তু একি করছে সে।কিন্তু পরক্ষণেই একটা অদ্ভুত ভালো লাগা মন টা কে হালকা করে দিলো আবার।শংকর ছেলে টা তো বেশঠিক যেন বোতলের ওই লাল পানীয় টার মতোচেখে দেখা যাবে।এখন কিন্তু আর একদমই খারাপ লাগছে না শংকর কে। মদ বিড়ি আর গায়ের গন্ধ টা যেন ভারী মিষ্টি
নিচে নিথর হয়ে শুয়ে আছেন মিসেস বোসনাকের ফুটো গুলো শুধু একটু বড় হয়ে এসেছেখুব সুন্দর সুগন্ধির ঘ্রাণ নিচ্ছেন যেন।
চোখ গুলো তুষের আগুনের মতো জলে উঠল কাজরীর"তোমার কোন গুন টার কথা আজ ম্যাডাম বলছিলো বলো তো"কথা বলতে বলতে খেয়াল করেনি কাজরী কখন যে সে শঙ্করের অনেক কাছে চলে এসেছে।ওর আঙ্গুল গুলো স্পর্শ করছে শঙ্করের খোলা বুক টা।"দিদি মনি আপনি ঘরে যান আপনি বোধ হয় খুব ক্লান্ত। "কাঁপা কাঁপা গলায় বলল শংকর
কাজরীর আঙ্গুল গুলো যেন এক একটি নৃত্য শৈলীঅবাধ স্বাধীনতার আবির ছড়াতে লাগলো শঙ্করের বুকের উপর।শংকর খাটে বসে পড়েছেওর কানের কাছে মুখ নিয়ে এসেছে কাজরী ফিস ফিস করে বলে উঠলো"ম্যাডাম তোমায় দেখেই তোমার গুন বুঝতে পেরে গিয়েছিলেন মেয়েরা সব বুঝতে পারে"কাজরীর আঙ্গুল গুলো আলতো ভাবে বুক টা বুলিয়ে শঙ্করের ঠোঁট স্পর্শ করল।হটাৎ শংকর বাধা দেয়ার চেষ্টা করলো"না না ম্যাডাম আপনি ভুল করছেন"সঙ্গে সঙ্গে একটা চড় এসে পড়ল শঙ্করের গালেভয় আর উত্তেজনায় ঘামতে শুরু করেছে শংকর
"চুপ একদম চুপ " সাপের মত হিসহিস করে উঠলো কাজরী "বেশি বেগরবাই করলে তোর চাকরি খেয়ে ছাড়বো" কাজরী নিমেষের মধ্যে টেবিল থেকে গ্লাস টা উঠিয়ে পুরো তরল পানীয় টা ছুড়ে মারলো শঙ্করের মুখেশংকর চোখ বন্ধ করে ফেললো কিছু টা হতভম্ব হয়ে গেছে সে। এবার কাজরী শঙ্করের চুলের মুঠি ধরে নিজের জীব দিয়ে চাট তে থাকলো শঙ্করের গাল মুখ ঠোঁট।তারপর কোনো হিংস্র পশুর ক্ষিপ্রতায় চুমু খেতে থাকলো শঙ্করের চোখ মুখ ঠোঁট।যেন আগুনের লাভা ছড়িয়ে পড়ছে শংকর কঁকিয়ে উঠলো।
শংকর শুয়ে পড়েছে তক্তপোষেএপ্রোন খুলে গেছে কাজরীরশংকর বুঝতে পারলো সভ্যতার ফিতে গুলো সব যেন আলগা হয়ে আসছে। অন্তর্নিহিত কোনো পশুর খিদের যন্ত্রনায় সে যেন ককিয়ে উঠছে ।জীবন দিয়ে পাশবিক খিদে মেটানোর উল্লাসে মেতে উঠলো ওরা। দেহ থেকে সরে গেল প্রত্যেক টা সুতোর কণা। বাইরে আচমকা উঠলো কাল বৈশাখী ঝড় শঙ্করের বুকের উপর উলঙ্গ উনমাদিনীর ঘোড়া ছুটে চললো দিক বিদিক। কাজরী র হাতে কখন যেন উঠে এসেছে শঙ্করের বেল্ট টা। সেটা যেন একটা হর্স হুইপ সেটা দিয়ে ফালা ফালা হয়ে যেতে থাকলো লোকটার বুক মুখ গলা । কাতর গলায় চিৎকার করে উঠলো মানুষ টা কিন্তু ততক্ষণে কাজরী একটা পিশাচিনির মতো ঠোট দিয়ে চেপে ধরলো শঙ্করের মুখ টা। চিৎকার আর বেরোলো না । কাজরীর মুখ থেকে যেন গরম আগুনের স্রোত বেরোতে থাকলো। অস্বাভাবিক রকম কেঁপে উঠলো শঙ্করের দেহ টা তার পর সব শান্ত। মৃত দেহটার বুকে চেপে বসে ওর মুখে মুখ ঢুকিয়ে পিশাচিনি কি যেন চুষে যাচ্ছে অনবরত।চুষে যাচ্ছে চুষে যাচ্ছে রক্ত মাংস মজ্জা।ধীরে ধীরে শঙ্করের দেহ টা কুঁকড়ে সংকুচিত হয়ে একটা বড় মাংস পিণ্ডে পরিণত হলো। মাংস পিন্ড টা হাতে তুলে নীচে নেমে এলো কাজরী। কিচেনে ঢুকে পরিপাটি করে পিস পিস করে কেটে একটা প্যাকেটে ঢুকিয়ে ফ্রিজে পুড়ে দিলো। মন্ত্র মুগ্ধের মত আবার সিঁড়ি দিয়ে উঠে এলো। যেন ঘুমের ঘোরে হাঁটছে। নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়লো। একটা অদ্ভুত প্রশান্তি কাজরীর মুখে।রাতে ঝড় জলের পর বৃষ্টি হলো বেশ কিছুক্ষণ ধরেঠান্ডা ঠান্ডা হাওয়া দিতে লাগলো।
নিচে শুয়ে আছেন মিসেস বোস। মন প্রশান্ত। ঠোঁটের কোনায় প্রাপ্তির আনন্দ। বড় আরাম হচ্ছে যেন।টেবিলের উপরে রাখা রুদ্রাক্ষের মালা টা।
আজ সকাল থেকেই ঝড় জল হচ্ছে মিসেস বোস বলে দিয়েছেন ফাই ফরমাস খাটবার জন্য নতুন একটি ছেলে আসবে।সিঁড়ির আলো টা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো সেটাই ঠিক করছিল কাজরী। একটা বেল বাজলো। উপর থেকে রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে দরজাটা খুলে দিয়েছেন মিসেস বোস। ছেলে টা ঢুকে পড়েছে বাড়িতে।সিঁড়ি দিয়ে উঠে এসে কাজরী কে জিজ্ঞাসা করলো"আমি শুভঙ্কর সরকার মিসেস বোসের কাছে এসেছি।"
"ম্যাডাম আপনার জন্যে উপরে অপেক্ষা করছেন...উপরে বা দিকে"
খুবই গম্ভীর স্বরে বললো কাজরী।
"আপনি ঠিক পরিষ্কার করে বলুন তো কোন বাড়িটার কথা বলছেন"ফোনে নার্স আয়া সংস্থাটির মালিককে জানতে চাইলেন ইন্সপেক্টর অমিত সেন"ওই তো ছাব্বিশের বি জীবন রায় সরণি কলকাতা তিরিশ, বাড়ির নামআকাঙ্খাবাড়ির মালিক মিসেস অনন্যা বোস।" অনন্যা বোস ছাব্বিশের বি আকাঙ্খাশব্দগুলো আওড়ালেন লোকাল থানার ইন্সপেক্টর অমিত সেন"কিছু একটা ভুল হচ্ছে আপনার নন্দী বাবুওরকম কোনো বাড়ি বা এড্রেস ওই পাড়ায় নেই"
"অসম্ভব আমার তিন তিন জন নার্স ওখানে ওই এড্রেসে নিয়োজিত ছিল ওদের একজনও সংস্থায় রিপোর্ট ব্যাক করেন নি বাড়িও ফেরেন নিএকজন তিন মাস একজন দু মাস আর একজন এক মাস ধরে নিখোঁজ"
"আমি তো বলছি মিস্টার নন্দী কোথাও কোনো মারাত্মক ভুল হচ্ছে ওই নামে কেন ওই নম্বরে কোনো বাড়ি নেই। ছাব্বিশ আছে আর ছাব্বিশের এ আছে ব্যাস।""আমার কাছে মিসেস বোস এর নম্বর আছে আমি আপনাকে দিচ্ছি ইন্সপেক্টর সাহেব"বললেন নার্স আয়া সংস্থার মালিক বরেন নন্দী
"ঠিক আছে দিন"
নিজের স্মার্ট ফোনে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও ওই নাম আর নম্বর পেলেন না বরেন বাবু।তাহলে গত তিন মাস ধরে উনি কার সাথে কি কথা বললেন। ফোনে সেভ ছিলো সে নম্বরি বা কোথায় গেল।
ফোন নামিয়ে ইন্সপেক্টর সেন ভাবলেন বরেন বাবুর মাথা টাই মনে হয় নষ্ট হয়ে গেছে।
বেগুনি আর লালের বাইরেও তো অনেক খিদে আছে। সময়ের কোন মাত্রার কোন গহবরে কত টা সেই খিদে কি ভাবে লুকিয়ে আছে কে জানে।