STORYMIRROR

Apurba Kr Chakrabarty

Classics Crime Fantasy

4  

Apurba Kr Chakrabarty

Classics Crime Fantasy

অজানা পথে

অজানা পথে

4 mins
459

ময়না বিস্মিত হয়ে পিছন ফিরে তাকাল কিছুই সে দেখতে পেলো না। শরীরটা খুব দুর্বল লাগছিল খুব যেন হাঁপিয়ে গেছিল তার শর্তেও হন হন করে ঘরের মধ্যে গোপালের কাছে এসে দেখে গোপাল কেমন তাকে হতাশায় কাঁদতে কাঁদতে হন্যে হয়ে তাকে খুঁজতে খুঁজতে পাগল।

"এই তো বাবা আমি এখানে" এরপর ময়না তাকে কোলে তুলে আদর করতে লাগল।

অভিমানে না দুঃখে বা ভয়ে গোপাল কোন কথা না বলে ময়নার দিকে তাকিয়ে কেমন বিষন্ন মুখে এক ভাবে তাকিয়ে ছিল।

ময়না বলল "কী হল বাবা! কাঁদছিলে কেন!"

"তুমি কোথায় ছিলে! আমি পাশের ঘর বাথরুম রান্নার ঘর সব দেখলাম তুমি নেই! ভাবলাম তুমিও আমাকে ছেড়ে আগের মায়ের মত পালিয়ে গেছ!"

"না বাবা! আমি কোথাও পালাব না। আমি তো ছাদে উঠেছিলাম বাবা।"

"কেন কী জন্য!"

"তুমি তো বাবা ঘুমোচ্ছিলে একা একা ভাল্লাগছিল না তাই ভাবলাম একবার ছাদে যাই।"

"একা তোমার ভয় করছিল মা!"

"কেন বাবা!"

"আমার একা খুব ভয় করছিল। আমাকে তুমি ঘুম থেকে তুলে দিলে না কেন!"

"তুমি যে ঘুমোচ্ছিলে বাবা, কাঁচা ঘুম থেকে উঠলে তোমার শরীর খারাপ করবে কষ্ট হবে।"

"মা যেন আমি তখন একা ছিলাম আমার আগের মায়ের ছবিটা দেখে মনে হচ্ছিল মা আমার দিকে কেমন তাকাচ্ছে!তাই খুব ভয়ে কাঁদছিলাম ।"

ময়নার একটু যেন গা বাজছিল যখন সে একা একা ঘরে ছিল গোপাল তখন ঘুমোচ্ছিল। একটু নিঃসঙ্গতা কাটাতে আর ছাদের দরজায় একটা শব্দ শুনে উপরে উঠে ছাদে গেছিল। এবার গোপালের কথা শুনে একটু ভয় ভয় মনে গোপালের মায়ের ছবিটা দেখল। কত সুন্দরী হাসি হাসি মুখে স্বামী বিনয়ের সাথে কী সুন্দর মানাচ্ছে। ছবিটা দেখে এখন ময়নার ভয় করছিল না।তাই গোপালকে বলল,

"উনি তোমার মা,ওনার ছবি দেখে ভয় পায় না বাবা।কত তোমাকে ভালবাসতেন।"

গোপাল বলল,"আমার তো মায়ের ছবি দেখে ভয় করে না।আজ কেমন করছিল কেন জানি না,এখন আর তো করেনি।"

ময়না হেসে বলে,

"তখন তুমি আমাকে ওঘর ,রান্নার ঘর ,বাথরুম কোথাও খুঁজে পাওনি তাই একা একা মনে তোমার খুব ভয় করছিল।আমি ছাদে আছি বুঝতে পারোনি তাই তখন তোমার মনটা কেমন কেমন করছিল। তখন মায়ের ছবিটা দেখে তোমার অমন মনে হয়ত ভয় আসে।"

গোপালকে বেশিক্ষণ কোলে নিলেও তার কষ্ট হয়।তবু কষ্ট হলেও গোপালকে কোলে তুলে আদর করে ,তার যে গোপালকে ভীষণ ভাললাগে। কোল থেকে নামিয়ে বিনয়ের সাথে গোপালের মৃত মায়ের দিকে তাকিয়ে হাত জোড় করে বুকের মধ্যে রেখে মাথা হেঁট করে প্রণাম করল।গোপালকেও প্রণাম করতে বলল।

ময়না ভীষণ চাপা শামসুরে আঘাতে তার যোনি সংলগ্ন নরম অংশে ক্ষত এখনও আছে। বিনয়কে গোপন করে।যদি এতে তাকে কোন যৌন ব্যাধি ভেবে ঘরে না রাখে! গোপালের সাথে মিশতে না দেয়! একটা তীব্র হীনমন্যতা আর অনিশ্চয়তা কাজ করে।

বিনয়কে গোপন করে ময়না বাথরুমে গিয়ে মাঝে মাঝে ঐ ক্ষতে নারকেল তেল লাগিয়ে আর স্নানের সময় পরিস্কার করে করে একটু যেন ক্ষতটা শুকনোর দিকে।তবে আড়ষ্টভাব এখনও বেশ ছিল। 

শিবানীর দিকে ঘরে একা থাকলে তার মনে হয় সত্যি যেন তাকিয়ে আছে, ফটো নয় জীবিত। রাতে গোপাল ঘুমুলে শিবানীর দিকে তাকালেও এমন মনে হয়।তবে এ সব কথা বলতে বিনয়কে সাহস পায় না। বিনয় যে শিবানী তার মৃত স্ত্রীর প্রতি আজও তীব্র অনুরক্ত ! হয়ত তার বিষয়ে এমন বললে বিনয় অপ্রসন্ন হবে।তার প্রতি সহানুভূতি স্নেহ চলে যাবে।

ময়নার কোন উপায় ছিল না। এই একটাই তার নিরাপদ আশ্রয়স্থল এ গৃহ সে মরে গেলেও ছাড়তে চায় না।বিনয়ের মন জুগিয়ে থাকতে যা করতে হয় করবে।গোপাল আজ তার মৃত মাকে এমন দেখল কেন ! আমাকে না হয় বিনয়ের স্নেহ ভালোবাসা দেন, এই কারনে ওনার কোন ক্ষোভ থাকতে পারে কিন্তু গোপাল তার ছেলে!

ময়নার খুব ভয় করছিল।তবে গোপালকে বলল না।হঠাৎই ছাদে দমকা হাওয়া এসে তাকে ছাদ থেকে নামতে যেন বাধ্য করেছিল আবার সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় সে কেমন যেন উল্টে পড়ছিল, কেউ যেন তাকে পিছন থেকে আটকে দিল ময়না বেশ ভাল অনুভব করছিল।যাইহোক যেই হোক তিনি ভাল ,তার মঙ্গল চায় এমন ধারনা ময়নার আজ উপলব্ধি হচ্ছিল।

ভাবছিল সত্যিই যদি এ গৃহে কোন কিছু অলৌকিক শক্তি বিরাজ করে তিনি ভাল, আর এ গৃহে অলৌকিক শক্তি যদি থাকে হয়ত তিনি গোপালের মা শিবানী। তাই ময়না এমন পরম ভক্তিতে শিবানীর ছবির উদ্দেশ্য প্রণাম করল।গোপালকেও প্রণাম করতে বলল।


একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবল এসব কথা গোপালকে বলব না,ছোট ছেলে ভয় পাবে আর বিনয়কে বললে হয়ত রুষ্ট হবেন। বিনয়ের যে শিবানীর প্রতি ভালবাসা কত গভীর ময়না দেখে অবাক হয়।গোপালের মা তাকে মেনে নিয়েছেন। এমন কি তাকে রেজিস্ট্রেশন ম্যারেজ করে স্ত্রীর সম্মান দেবেন অধিকার দেবেন কিন্তু সহবাস সম্ভোগ করবেন না। কী ভীষণ পত্নী প্রেম ভেবে ময়নার,বিনয়ের প্রতি শ্রদ্ধা বহুগুন বেড়ে গেছিল।

সম্ভোগ সহবাসে ময়নার তীব্র অনীহা ভয় ভীতি তার কষ্ট যন্ত্রনা থেকে হয়েছিল। তার শরীরে কিছু বর্বর মানুষ কেউ কেউ শারীরিক আঘাত করেছে বিকৃত যৌন লালশায় ।শামসুর তো সবার উপর। নখ দিয়ে দাঁতের কামড়ে কত বার তার স্তন তার নিন্মের নরম যৌনাঙ্গ ক্ষতবিক্ষত করার কারণে রক্ত ক্ষরন হয়েছে,

ব্যাথা যন্ত্রনায় আড়ষ্ট হয়েছে সেই অবস্থায় আবার পরদিন মদ গিলে এসে শামসুর তাকে বিশ্রী ভাবে বিকৃত মনে সহবাসে মিলিত হত।

তার এসবের তার কোন প্রতিরোধ প্রতিবাদের উপায় ছিল না।নীবর কান্না,চোখের জল আর কাতর আবেদন ছাড়া করার কিছুই ছিল না। এমন মানুষের সঙ্গও পেয়েছে , যারা এমনটা হয়ত পাশবিক নয় ।কিন্তু তাদের শারীরিক ক্ষমতা সঙ্গ দিতে দুর্বল সতের আঠারো বছরের ক্ষীণ শরীরে কেঁপে উঠত, কষ্টে আনচান করত।মোটের উপর তার শারীরিক সম্ভোগে একটা ভীতি ছিল। তবু এ পেশা তাকে করতে বাধ্য করা হত।শামসুর তাকে দেখে হাসত যেন তীব্র রসীকতা।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics