অদ্ভুতুরে গল্প
অদ্ভুতুরে গল্প
সব গল্পের শুরু এবং শেষ, যে ভূত এবং খুন নিয়েই হতে হবে, তার কিন্তু কোনো বাধ্য-বাধকতা নেই | এমনটাও তো হতে পারে, প্রমীলা নামক এক মহিলার ইনসোমনিয়া রোগ আছে! ধরাই যাক, নিদ্রাহীন রোগের এক রাতে নিদ্রাসাধনায় ব্যর্থ হয়ে তিনি ছাদে উঠলেন, আর ঠিক তখনই এক কালো বিড়ালকে অতর্কিতভাবে চলাফেরা করতে দেখে তাঁর হার্ট ফেল হয়ে গেল!
এমনটা হলে হতেও তো পারে!
কিন্তু, এই ঘটনাটিকে হয়ত এত সহজভাবে কেউ মেনে নিতেই পারবেন না | কেউ কেউ বলবেন, - "হয়ত মহিলাটি এমন কিছু দেখেছিলেন, যা দেখে তিনি অক্কা পেলেন! অলৌকিক কিছু নিশ্চয়ই!" আবার কেউ কেউ বলতে পারেন -" নিশ্চয়ই ছেলে বিষ খাইয়েছে! বৌয়ের জন্যে ছেলে মাকেও মেরে ফেলতে পারে! কত এরম দেখলাম! "
কি জানি, সহজভাবে আমরা এই আকস্মিক ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলিকে নানানরূপে সজ্জিত করতে থাকি!
আমাদের জীবনটাও হয়ত এতটাই সহজ! কি জানি!
এই প্রমীলার হঠাৎ করে মারা যাওয়াটাকে, আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারিনি | আমি প্রমীলার স্বামী | আমাদের ফ্যামিলি ডাক্তার, প্রমীলার ডেথ সার্টিফিকেট দেবার সময় আমায় আলাদাভাবে ডেকে বলেন, -" শুনুন ভবেশ দা, এটা ন্যাচারাল ডেথ! হার্ট ফেলিওর! "
পাড়ার কিছু লোক অবশ্য এই মৃত্যুটাকে সহজভাবে মেনে নিতে পারেনি | পুরো পাড়ায় রটিয়েছে, আমার বাড়িতে নাকি ভূতের বাস আছে |
কিন্তু আমি এটাই বিশ্বাস করি, যে আমার প্রমীলার মৃত্যু কোনো অলৌকিক কারণে ঘটেনি | সিম্পল ডেথ | টোটাল হার্ট ফেলিওর | সত্যি বলতে কি, আমি খুব একটা ভূতে বিশ্বাস করি না |
এই ঘটনার দুইদিন কেটে গেছে | আর আশ্চর্যের বিষয় কি জানেন? আমার প্রমীলা এখন আমার সামনেই বসে আছে | ওকে কম করে হাজারবার প্রশ্ন করেছি -" আমায় বলো তোমার মৃত্যু কি সত্যিই কোনো অলৌকিক কারণে ঘটে নি? তুমি তো জানো, আমি ভূতে বিশ্বাস করি না | "
প্রমীলা তখন থেকে একটি উত্তরই দিয়ে যাচ্ছে -" কালো বিড়াল দেখে মরেছি | কোনো ভূত দেখে নয় | আর হ্যাঁ, তোমার ঐ ভূতে অবিশ্বাসের কথা আমায় আর বলো না | আমায় দেখেই সেই কথায় বিশ্বাস জোগাতে পারো |"
নিজেকে পাগল বলার ক্ষমতা আমার নেই | তাই এখন বিচারকের ভূমিকা আপনারাই পালন করুন!
সমাপ্ত....