অদ্ভুত এক পিকনিকের গল্প
অদ্ভুত এক পিকনিকের গল্প
আজ একটা অদ্ভুত পিকনিকের গল্প বলি। সেবার শীতকালে হঠাৎই ঠিক হলো, কাছাকাছি কোথাও একদিনের জন্য ঘুরে আসলে হয়। বেড়ানো হবে, আবার পিকনিকও হবে। আমরা নেচে উঠলাম। সদ্য বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এটাই তো আনন্দের সময়।
ভোরবেলায় বেরিয়ে পড়লাম সকলে ।গন্তব্য মাদ্রাল পার্ক । রেল লাইন পেরিয়ে ওপারে যেতে হয়। আমাদের বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে। বিশাল একান্নবর্তী পরিবার আমাদের। বাবা, জ্যেঠাদের পরিবার মিলিয়ে প্রায় কুড়িজন। জল টলটলে সুন্দর ঝিলের ধারে জমে উঠল পিকনিক। যেদিকে তাকাই, সবুজে সবুজ। চোখ জুড়িযে যায়। এখানে প্রাচীন ঘোষাল বংশের পুরোনো প্রাসাদ ও মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। সেগুলো দেখতে অনেকেই আসেন, আজ যেমন আমরা এসেছি।
পৌঁছেই মায়েরা লেগে গেল রান্নার যোগাড়ে। রান্না হবে মাংস, ভাত আর চাটনী। আমরা ছোটরা মেতে উঠলাম খেলায়।
দুপুরে খাবার সময়ে এক ঝামেলা। কোত্থেকে এক পাগলী এসে হাজির। বলে, "আমিও খাবো। খুব খিদে লেগেছে"। পুরুষের দল ওকে তাড়িয়েই দিচ্ছিল। আমার মা আর বড় জেঠিমা বাধা দিলেন। "তাড়িও না ওকে। দেখছ না, ও মা হতে চলেছে! কার পাপের বোঝা বইছে কে জানে!* যত্ন করে ওকে খেতে দিলেন বড় জেঠিমা। খুব তৃপ্তি করে খেল সে ।
সন্ধ্যার আগে সামান্য চা পর্ব সেরে আমরা তখন ফেরার পথে। পাগলী মাকে আবার দেখতে পেলাম। একটা গাছতলায় বসে সন্ধ্যার আকাশের দিকে তাকিয়ে আপনমনে গুনগুন করে গান গাইছে, হয়তো তার অনাগত সন্তানের উদ্দেশ্যে। আজও দৃশ্যটা মনে পড়লে চোখে জল চলে আসে।