Sourya Chatterjee

Comedy Drama Others

4.3  

Sourya Chatterjee

Comedy Drama Others

অদ-ভূত

অদ-ভূত

8 mins
357


বড় রাস্তা থেকে মিনিট পাঁচেকের রাস্তা। বাঁদিকে একটা পুকুর পড়বে, সেই পুকুর লাগোয়া একটা মন্দির আছে। বহু পুরোনো মন্দির! কবে কোন আমলে সে মন্দির তৈরি, সেই মন্দিরের ইতিহাস কি তা এলাকাবাসীদের কেউই ঠিকঠাক জানে বলে মনে হয় না। কেউ বলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য এখানে একটা জৈন মন্দির স্থাপন করেন, সেই মন্দিরই এখন এই হালে রয়েছে। আবার কারোর বক্তব্য আলেকজান্ডার যখন ভারত আক্রমণ করেছিলেন তখন “গঙ্গাহৃদয় ওয়ারিয়ার্স” তাকে পূর্ব ভারতে আটকানোর পরিকল্পনা করার সময় এইখানে এই স্থাপত্য গড়েছিলেন। আবার কেউ বলেন চিত্রসেনা যখন পান্ডবরাজ ভীমের সঙ্গে সমরের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন তখন চিত্রসেনার মঙ্গলকামনায় এই মন্দির স্থাপন হয়েছিল। যদিও প্রত্নতত্ত্ববিদরা এইসব তত্ত্বকে গল্পগুজব আখ্যা দিয়ে জানিয়েছেন এই মন্দিরের বয়স একশো থেকে দেড়শো বছর খুব বেশি হলে। এইসব নিয়ে হাজার বিতর্ক থাকবে, যে যা মত নিয়ে থাকতে পছন্দ করুক, সে সেই মত নিয়ে থাকুক। মত আলাদা হলে কি হবে! সব এলাকাবাসীরই মন্দিরটা নিয়ে এক অদ্ভুত নাড়ির টান আছে। অবশ্য এটা আদৌ মন্দির কিনা তারও কোনো প্রমাণ নেই। কেউ কেউ এটাকে মসজিদ বলেও দাবি করেছিল। হ্যাঁ, একটুও যে তাতে ঝামেলা হয়নি তা নয়। ঝামেলা হয়েছিল, তার সমাধানও হয়েছে। এই রে, এখন আবার জিজ্ঞেস করে বসবেন না যেন কিভাবে সমাধান হল! আমি ঠিক জানি না তার উত্তর। শুধু এটুকু জানি ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়, কারোর ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত না দিয়েই সমস্যাটার সমাধান হয়েছে। এখন জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একসাথে মিলেমিশেই আছে। মহাবীর জয়ন্তী হোক কিংবা দুর্গাপুজো হোক কিংবা ঈদ হোক, সব এলাকাবাসী এই মন্দিররূপী স্থাপত্যে এসে উৎসবে সামিল হয়, সবাই সবার আলিঙ্গনবদ্ধ হয়ে হৃদয়ের যোগসাজশকে আরো স্পষ্ট করে তোলে।


ধুলো উড়িয়ে একটা মারুতি গাড়ি এসে থামল মন্দিরটার সামনে। সময় তখন বেলা দুটো হবে। কিছু মাঝবয়সী লোকজন মন্দিরের সামনে তখন গল্পগুজবে মশগুল। মন্দিরের পিছনদিকটায় কিছু বাচ্ছা ছেলে লুকোচুরি খেলছে। এমন অসময়ে এখন কে এলো রে বাবা! বেশ হতবাকই হল প্রত্যেকে। উঁহু! গাড়ি থেকে যারা নামল, তাদেরকেও তো এরা কেউ চেনে না! চোখে গগল‌‌‌‌্স, পরনে নীল শার্ট, হোয়াইট প্যান্ট। দু হাতের দশটা আঙুলের সাতটিতেই আংটি পরা, মুখের মধ্যে পান চিবোচ্ছেন! বয়স কত আর হবে! পয়তাল্লিশ মত। সঙ্গে স্বল্পবয়সী তিন জন ছেলে, বয়স পঁচিশ, ছাব্বিশ মত হবে। নীল শার্ট পরা লোকটার ইঙ্গিতে বাকি তিনজন ফিতে দিয়ে জায়গাটা মাপার কাজ শুরু করল।


যেসব এলাকাবাসী গল্প করছিল তারা একটু নিজেদের মধ্যে মুখ চাওয়াচাওয়ি করল। এসব কি! এত নতুন উৎপাত! ফিসফিসিয়ে একজন জিজ্ঞেস করল 

-   কি ব্যাপার বল তো ভাই? কারা এরা?

-   মতলব তো সুবিধার ঠেকছে না গো।

-   এই, জিজ্ঞেস করবে নাকি গিয়ে?

-   তুমি যাও সুবল! তুমিই এসব ভালো পার! জিজ্ঞেস কর না মতলবটা কি!

-   প্রতিবার তো সেই আমাকেই যেতে হয়। পোষায় না বাবা! ঠিক আছে, তোমরাও এস। আমিই কথা বলব।

নীল শার্ট পরা লোকটার দিকে এগিয়ে গেল সুবল।

-   নমস্কার, এখানে কিছু দরকারে?

আপাদমস্তক সুবলকে খানিকক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে নীল শার্ট পরা লোকটি খ্যারখ্যারে স্বরে জবাব দিল

-   আপনি কে? আপনাকে কৈফিয়ত দিতে যাব কেন?

সুবল ভদ্রভাবেই পুনরায় জিজ্ঞেস করল

-   দেখুন, এখানে তো আপনাকে আগে কখনো দেখিনি। 

-   দেখবেন। এবার থেকে দেখবেন। রোজ আসব। 

-   মানে?

-   আরে মশাই! আপনি কে হে? ফুটুন তো। 

সুবলও গলার স্বরকে একটু জোরে করে এবার বলল

-   ভদ্রভাবে কথা বলুন, এটা ভদ্রলোকের পাড়া।

বাঁদিকের গালে টোল ফুলিয়ে একটা বাঁকা হাসি হেসে নীল জামা পরা লোকটা উত্তর দিল

-   আমাকে জ্ঞান দিতে এসেছে রে ভাই! সন্তোষ সিংকে জ্ঞান দিতে এসছে।

চোখ তুলে সন্তোষের চোখে কিছুক্ষন চোখ রেখে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল সুবল। সন্তোষ আগের থেকেও বেশি তাচ্ছিল্য করে সুবলকে জবাব দিল 

-   কি দেখছ কি? এখানে এসব পুরোনো মালকড়ি ভেঙে শপিং কমপ্লেক্স বানাবো। আপনাদেরই সুবিধা হবে। কাজ করতে দিন তো।

-   না, আপনি কিনেছেন নাকি জায়গাটা? আপনি যেখানে ইচ্ছে শপিং কমপ্লেক্স বানাবেন, সেটা তো হতে পারে না।

-   পারমিশন আছে বলেই বানাচ্ছি মশাই। এবার ভালোয় ভালোয় ফুটুন তো। কাজ করতে দিন।

-   পারমিশন মানে..

সন্তোষ বেশ চিৎকার করে বলল

-   ধুর মশাই! ফুটতে বললাম তো এখান থেকে।

আর কথা বাড়ানোর সাহস হল না। চুপচাপ ফিরে এল সুবল। এটা সত্যি একটা সিরিয়াস ইস্যু। সন্ধেবেলাই এটা নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে বলে মনস্থির করল ওরা।

যথারীতি সন্ধ্যাবেলা আলোচনাসভা ডাকা হলো ওই মন্দির প্রাঙ্গনেই। অনেকেই অনেকরকম পরিকল্পনা বলল, যেমন কারোর মাধ্যমে সরকারের উচ্চপদস্থ কোনো কর্মচারীর কাছ অবধি পৌঁছানো কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপারটাকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়া ইত্যাদি। কিন্তু যখন আলোচনা শেষের দিকে, তখন হঠাৎ করেই এক নতুন দিশা খুঁজে পেল সবাই। 

ভোম্বল ছোট ছেলে, দুপুরবেলা যখন এসব হচ্ছিল তখন মন্দিরের পেছন দিকটায় লুকোচুরি খেলছিল বন্ধুদের সাথে। সেই ভোম্বল এখন কি একটা দরকারে এই আলোচনা সভায় উপস্থিত হল। সম্ভবত তার বাবাকে ডাকতে এসছে। যখন সে বুঝল সকালে সেই অনাহুত অতিথির আগমন নিয়ে কথাবার্তা চলছে সে ফিক করে হেসে উঠল। 

-   তোমরা ওই ভীতু কাকুটাকে নিয়ে কথা বলছ?

-   এই ভোম্বল, দাঁড়া, দাঁড়া। হঠাৎ ভীতু বললি কেন? ওইসব লোকের কাছে রিভলভার থাকে, জানিস তুই?

-   সে যাই থাকুক। কাকুটা ভীতুই।

-   কেন! কি হয়েছে। বল তো একটু।

-   আরে, আমরা লুকোচুরি খেলছিলাম। সেদিন যে মেলাটা হল, ওখান থেকে একটা রাক্ষসের মুখোশ কিনেছিলাম। বাবলু চোর হয়েছিল। আমি লুকিয়ে ছিলাম। ওকে কনফিউজড করার জন্য মুখোশটা পরে ছিলাম।

-   হুঁ হুঁ। তারপর?

-   ওই ভীতু কাকুটা বোধহয় টয়লেট করার জন্য পেছনদিকটায় এসেছিল। ওরম রাক্ষসের মুখোশ পরে ছিলাম তো। ভয় পেয়ে “উরি বাবা!” বলে চেঁচিয়ে উঠেছে। তারপর দৌড় দৌড়! 

কথাটা শেষ করে হ্যা হ্যা করে হাসতে লাগল ভোম্বল।

আর পায় কে ওদের! ঠিক হল ভূতের ভয়ই দেখানো হবে সেই সন্তোষ সিংকে। এদিক ওদিক ঘেঁটে ফোন নম্বর জোগাড় করে সন্তোষকে ফোন করে আসতে বলা হল হোটেল “গ্রীন ইন” এ। না, হঠাৎ করে সন্তোষ রাজি হবেই বা কেন! অপরিচিত কে না কে ফোন করছে আর সন্তোষ এসে যাবে। তা হয় নাকি! ভালো করে সন্তোষকে বোঝানো হল যে দীপন এই এলাকারই ছেলে। জমিটাতে কিছু ডিসপিউট আছে। তো সেসব সমাধান দীপন করে দেবে। তো তার জন্য কথা বলতে হবে। কিছু সই-সাবুদেরও ব্যাপার আছে। দীপন সাহায্য করবে একথা এলাকাবাসী জানলে তারা আর দীপনকে আস্ত রাখবে না। তাই এসব কথাবার্তা খোলা আকাশের নিচে বা রেস্টুরেন্টে কিংবা সন্তোষের বাড়িতে বসে করা ঠিক নয়। হোটেল “গ্রীন ইন” এ বরং একটা রাত থাকুক সন্তোষ। সব ব্যবস্থা ওখানেই পাকা হয়ে যাবে। ব্যাস! প্ল্যান মাফিক ঠিক হল দীপন রাত দশটায় হোটেলে গিয়ে দেখা করবে সন্তোষের সাথে। 


প্রসঙ্গত বলে রাখি, ওয়াসিম আর পিয়ালী ওই হোটেলে চাকরি করে। ভূতের ভয়টা কিন্তু আসলে ওরাই দেখাবে। সন্তোষকে “গ্রীন ইন” এ আনানোর জন্য দীপনকে দিয়ে বাকি প্ল্যানটা ছকে নেওয়া আর কি। দীপন কিছু ফল্‌স কাগজে সই করিয়ে বেরিয়ে যাবে। আর তারপর শুরু হবে ভূতের ভয় দেখানো। সিকিউরিটি অফিসার পিয়ালীর চেনা পরিচিত। তাই আগে ভাগে ফোন করে ফার্স্ট ফ্লোরের ডানদিকের করিডোরটার সিসিটিভি ক্যামেরা অফ করিয়ে রাখতে বিশেষ বেগ পেতে হল না পিয়ালিকে। 

বেশি কিছু উপকরণ লাগবে না। একটা কঙ্কালের মাস্ক আর পিয়ালীর একটা সাদা পোশাক। খুব সহজেই জোগাড় হয়ে গেল। পিয়ালী আর ওয়াসিমের হোটেলে নাইট শিফট আছে আজ। দশটার আগেই ওরা হোটেলে পৌঁছে গেল। দশটা বাজতে চাদর চাপা দিয়ে হোটেলে ঢুকল দীপন। দীপনকে ওইভাবে দেখে কোনরকমে হাসি চাপল পিয়ালী।

দীপনের আরো দুটো কাজ ছিল বৈকি। এক হল কথাবার্তার মাঝে সন্তোষের ফোনটা হাপিস করে দেওয়া। আর মাঝে একবার ওয়াসিম হুইস্কি নিয়ে ঢুকবে। ওইটুকু সময়ে দরজা খোলা পেয়ে পিয়ালীও ঢুকবে আর বাথরুমে লুকাবে। তো, সেই সময়টুকু সন্তোষকে একটু ব্যস্ত রাখা। 

-   আসুন, কি ব্যাপার বলুন তো এবার।

এইভাবেই দীপনকে আমন্ত্রণ জানালো সন্তোষ।

-   দেখুন। আপনি কোথা থেকে পারমিশন পেয়েছেন জানিনা। জানতে চাইও না। কিন্তু বহু পুরোনো আমলের প্রপার্টি তো। তো বুঝতেই পারছেন। আপনি এলাকাবাসীর হেল্প পাবেননা। বরং অনেক অবস্ট্রাক্টশন আসবে। 

-   আমি বেশি কথা পছন্দ করি না। কত লাগবে আপনার?

-   এক লাখ দিন, ম্যানেজ করে দেব।

-   শুনুন। সন্তোষ সিং এসব পছন্দ করে না। পঞ্চাশ দেব। কুড়ি এখন রাখুন। বাকি তিরিশ কাজ শুরু হলে পেয়ে যাবেন। এবার আসুন।

ইতিমধ্যে ওয়াসিম হুইস্কি নিয়ে ঘরে ঢুকেছে। কথা মতই অত্যন্ত দক্ষভাবে সন্তোষের ফোনটা হাত সাফাই করে নিয়েছে ততক্ষণে দীপন। এইসময় কি একটা কাগজে সই করানোর জন্য ব্যস্তও রেখেছে সন্তোষকে। প্ল্যানমাফিক পিয়ালীও ঢুকে পড়েছে বাথরুমে। 

-   কিসের কাগজ এটা! এসব সই সাবুদ এখন করতে পারব না। কাগজ রেখে যান। 

পিয়ালী ইতিমধ্যে ঢুকে পড়েছে বাথরুমে। কঙ্কালের মুখোশ আর সাদা আলখাল্লার মত একটা পোশাক তৈরি করাই ছিল আগে থেকে। তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নিল পিয়ালী। 

আর সই করা নিয়ে জোর করল না দীপন। কাজ তো হয়েই গেছে। পরে কাগজপত্র দিয়ে যাবে বলেই জানালো দীপন। অবশ্য কুড়ি হাজার টাকাটাও সন্তোষ দেয়নি। সব পরে হবে বলেই ঠিক হল। সন্তোষ একটু অসন্তুষ্ট হয়েছে বৈকি। তাতে কিছু যায় আসে না অবশ্য।

দীপন বেরিয়ে যেতেই ফাঁকতালে বাইরে থেকে দরজাটা বন্ধ করে দিয়েছে ওয়াসিম। সন্তোষ ইতিমধ্যে চার পেগ হুইস্কি খেয়ে নিয়েছে। মাথাটা ঝিম ঝিম করতে শুরু করেছে। এই সুযোগ! বাথরুম থেকে ধীরে ধীরে বেরোলো পিয়ালী। প্রথমেই ঘরের মেইন সুইচটা অফ করে দিল। বাইরে থেকে যেটুকু চাঁদ আর বড় রাস্তার আলো আসছে, সেটুকুই শুধু ঘরের মধ্যে আসছে। সন্তোষ দেখল একটা সাদা পোষাক পরা ছায়ামূর্তি এগিয়ে আসছে। একবার চোখ কচলাল সন্তোষ। নিশ্চয় চোখের ভুল। একি! এগিয়ে আসছে তো। সন্তোষ একটু পিছিয়ে বসল। 

একটা ভয় পাওয়া গলা ফ্যাসফ্যাসে অবস্থায় চিৎকার করে বলল

-   এই, কে তুই?

-   চিঁনতে পাঁরছিস না?

সন্তোষের গলাটা আরো ফ্যাসফ্যাসে হল ভয়ে।

-   ওইইইই!

-   আঁজ সঁকালে কঁত ডাঁকলাম। পাঁত্তা দিঁলি না কেঁন সঁন্তু।

-   আমি সন্তু ন‌‌ই, আ..মি সন্তোষ। 

সন্তোষের দিকে আরো কিছুটা এগিয়ে এল সেই সাদা কঙ্কালটা। ভয়ে আরো খানিকটা পেছনে সরল সন্তোষ

-   ভাঁলোবেসে তোঁকে সঁন্তু বঁলে ডাঁকলে রাঁগ কঁরবি?

-   আমি কিন্তু পুলিশ.. 

-   তুঁই এঁখন আঁমাদের দুঁনিয়ায়। দ্যাঁখ, ইঁলেক্ট্রিসিটি নেই, তোঁর মোঁবাইল নেই। কিঁছু নেই। শুঁধু তুঁই আঁর আঁমি। আঁয় সঁন্তু।

সন্তোষ মোবাইলটা খুঁজল। সত্যিই তো আশেপাশে কোথাও নেই ফোনটা।

-   এই, তুই কে বল।

-   আঁজ সঁকালে মন্দিরে এঁসেছিলি না! ওঁখানে অঁশ‌‌্বথ্থ গাঁছে আঁমি থাঁকি। 

-   চলে যা বলছি।

-   তোঁকে যে ভাঁলো বেঁসে ফেঁলেছি সঁন্তু। তোঁকে তোঁ আঁমি নিয়ে যাঁবোই। এঁকসাথে সংসার কঁরব।

-   প্লিজ। তুমি কি চাও বল।

-   তোঁকে সঁন্তু। তোঁকে। তুঁই আঁমার পাঁর্টনার হঁবি! আঁমরা তাঁরপর প্রিঁন্সেপ ঘাঁট ঘুঁরতে যাঁব, প্রেঁম কঁরব। 

-   আপনি যান। কি চান বলুন?

দরদর করে ঘামছে সন্তোষ। এ তো তার চোখের ভুল নয় শুধু।

-   কঁতবার বঁলব শুঁধু তোঁকে চাঁই আঁমি। আঁয়, কাঁছে আঁয়। দূঁরে সঁরছিস কেঁন সঁমানে?

-   আমি যাব না। প্লিজ্….

-   আঁসবি না তোঁ। তোঁকে ফাঁসিয়ে দেঁব কিন্তু। আঁমি রেঁললাইনে গঁলা দেঁব, আঁর তোঁকে ফাঁসিয়ে দেঁব। 

-   না, প্লিজ! বাঁচাও

আর কিছু মনে নেই সন্তোষের। ইতিমধ্যে জ্ঞান হারিয়েছে সে। সকালবেলা তার চিকিৎসা করা হল। এখন ভালই আছে সন্তোষ। শুধু সেই রাতের কথা মনে পড়লে নিজের মনে মনেই শিউরে ওঠে সে। কাউকে বলতেও পারে না সেসব কথা। লোকে যদি পাগল ভাবে। তবে সন্তোষ জানে সেদিন যা ঘটেছিল তা নেহাতই চোখের বা মনের ভুল ছিল না। আর কোনোদিন ওই মন্দির চত্বরে ভুলেও পা বাড়ায় নি সন্তোষ। 

দীপন, পিয়ালী আর ওয়াসিমের সাফল্যে ছোট্ট একটা পার্টিরও আয়োজন হয়েছে। সবাই খুব পিঠ চাপড়াচ্ছে ওদের তিনজনের। তবে সত্যি কথা বলতে ভূত হয়ে রেললাইনে গলা দেবে, এরকম ভুলভাল ডায়ালগের জন্য পিয়ালী একটু বকাও খেয়েছে বটে।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Comedy